আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন। ক্লাস টিচার এসে স্বাগত বক্তব্য শেষে হাজিরা ডাকা শুরু করেছেন।
শিক্ষক:- রোল এক...!
ছাত ১:- স্যার, রোল কল করলে কি জানি কইতাম!
ছাত্র ২- লাব্বাঈক ক' বেটা লাব্বাঈক!
শিক্ষক - লাব্বাঈক কিরে? এটা কোথায় শিখলি?
— স্কুল খুলেনা দেইখা আব্বায় কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করাই দিছিল, সেখানে শিখছি!
শিক্ষক - রোল দুই!
ছাত্র- হাজির জনাব!
শিক্ষক -সেটা কি?
ছাত্র- নুরানি মাদ্রাসায় শিখছি!
শিক্ষক - রোল তিন!
— নাই স্যার।
— কেনো,শায়মা আসলো না কেনো?
— স্যার,শায়মা এখন শ্বশুর বাড়িতে আছে। গত কাল হ্যার পোলার আকিকা খাই আইলাম!
— ও, আচ্ছা। রোল চার...!
ছাত্র:- চার রোল কার স্যার?
চশমাটা একটু ঠিক করে নিয়ে শিক্ষক বললেন:-ভৃগু কোথায়?
কাঁদো কাঁদো গলায় এক ছাত্র বললো:- ভৃগু আমাদের মাঝে আর নেই!
— নেই মানে! কবে মরলো?
— মরবে কেনো?
— তাহলে?
— সে ভেবেছে হয়ত এই জনমে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে না, শুধু খোলার তারিখই দিয়ে যাবে। তাই সে গার্মেন্টসে ভর্তি হয়ে গেছে!
— বলিস কী রে! কী সাঙ্ঘাতিক! আচ্ছা, তারপর পাঁচ...!
পিছনে বসা এক ছাত্র:- এটা আবার কার রোল?
— রাজিব নুর কোথায়?
— আমিই তো রাজিব নুর। আমার রোল পাঁচ! আমি এত ভালো ছাত্র ছিলাম! ওরে বাবা! যাইহোক, লাব্বাইক স্যার!
— দেখো ছাত্রদের অবস্থা!
স্যার কিছু বলতে যাবেন, হঠাৎ একটা ছোট বাচ্চার কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো। স্যার অবাক হয়ে বললেন:- এই ছোট বাচ্চার কান্নার আওয়াজ আসলো কোত্থেকে?
ছাত্রী মনিরা সুলতানা উঠে দাঁড়ালো। তার কোলে একটি ফুটফুটে বাচ্চা।
মনিরা বললো:- আমার বাবু। ভাবলাম প্রথম ক্লাসটা ওকে নিয়ে এক সাথেই করি। স্যার, ওকেও না হয় এই ক্লাসে ভর্তি করিয়ে নেন। আমরা মা-সন্তান এক সাথেই ক্লাস করবো!
সবাই একযোগে হেসে ওঠলো। শুধু স্যার হাসলেন না।
এমন সময় চাপ্পা দাড়িওয়ালা আলখাল্লা পরা এক লোক দরজায় দাড়িয়ে স্যারকে সালাম দিল।
সালামের জবাব দিয়ে স্যার হাক দিলেন - নুর মোহাম্মদ নুরু কইরে? তোর আব্বা এসেছে!
চাপ্পা দাড়ি বলল- স্যার আমিই নুর মোহাম্মদ নুরু!
- তোর এ অবস্থা কেন?
- চিল্লায় গেছিলাম স্যার, তিন চিল্লা!
পেছন থেকে আরেক ছাত্র দাঁড়িয়ে বললো:- স্যার, দেখেন তো হাজিরা খাতায় আমার নাম আছে কি না!
— তোর নাম কী?
— পদাতিক চৌধুরী! ।
স্যার অনেক্ষণ ধরে গবেষণা করেও হাজিরা খাতায় পদাতিক নাম উদঘাটন করতে পারলেন না। বিরক্ত হয়ে বললেন:- এই নাম তো এখানে পাওয়া যাচ্ছে না। হাজিরা খাতায় তোর অন্য কোন নাম লেখা ছিলো?
পদাতিক:- তারমানে আমি এই ক্লাসে পড়ি না। হায় হায়! তাহলে আমি কোন ক্লাসে পড়তাম?
স্যার সবাইকে লক্ষ্য করে বললেন:- এই ক্লাসে ছাত্রের সংখ্যা অল্প কয়েকজন ছিলো; কিন্তু আজ এত বেশি বেশি লাগছে কেনো?
কয়েকজন ছাত্রী দাঁড়িয়ে লাজুক কণ্ঠে বললো:- স্যার! নতুন ক্লাসে স্মরণীয় হয়ে থাকার জন্য আমাদের হাসব্যান্ডও আমাদের সাথে এসেছেন।
স্যার খুবই আশ্চর্যান্বিত হলেন। আরে বলে কী এরা!
দরজার সামনে হন্তদন্ত হয়ে এক ছাত্র এসে বললো:- স্যার, আমি চাঁদগাজী,কয়েকবছর আগে আমাকে কি এই বিদ্যালয়ে দেখেছিলেন?
অবাক হয়ে স্যার বললেন:- কেনো?
— না, ইয়ে, মানে...! আমি কোন বিদ্যালয়ে পড়তাম সেটাই ভুলে গেছি। যদি আপনি দেখে থাকেন তাহলে বুঝবো আমি এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র।
স্যারের মাথায় যেন বিদ্যালয়ের ছাদ ভেঙে পরছে! তিনি এসব কী শুনছেন!
(আইডিয়া সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:০৩