বিশ্ব ফুটবলের তিন শিরোমণির মধ্যে একমাত্র রোনালদোই সেরা বলে এখন পর্যন্ত প্রতিয়মান হচ্ছে। বাকিরা না খেলা, না গোল...!!! অবাক হয়েছি, যেমনি মেসি পেনাল্টি শর্ট নিয়েও ব্যর্থ হয়! আবার বার বার ফাউল শর্ট করে কোনো সফলতা দেখাতে পারেন নি! তেমনি নেইমার বেটাও একই ভাবে ব্যর্থতা দেখালেন! বার বার ফাউল শর্ট নিয়েও ব্যর্থ! যদিও নেইমার গতকালকে কোস্টারিকার বিপক্ষে একটি গোল পেয়েছেন। অথচ এছাড়া ডিবক্সের ভিতরে প্রবেশ করেও মেসি এবং নেইমার উভয়েই তাদের প্রত্যাশিত ফলাফল সমর্থকদের উপহার দিতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন! অথচ সেই দিক থেকে রোনালদোই সেরা। সে যেই কয়টাই শর্ট করেছিলো প্রায় শর্টগুলোকেই সফল বলা চলে।
এরপর আর্জেন্টিনা তার সমর্থকদের তো আরো বড় প্রশ্ন জাগা খেলাটি উপহার দিলেন ক্রোয়েশিয়ার সাথে! কি বাজে পারফর্ন্সেটাই না দেখালো আর্জেন্টিনা! একটা ফেবারিট দল হিসেবে যদি এই অবস্থা তার সমর্থকদের সইতে হয়, তাহলে একজন ভালো ফুটবল প্রেমী হিসেবে আমি আর্জেন্টিনার সমর্থকদের বলবো; মনে হয় দল পরিবর্তন করার সময় ঠিক এখনই। কারণ আমরা কোনো ব্যক্তির প্রতি আকর্ষিত না হয়ে বরং সুন্দর খেলার প্রতি আকর্ষিত হলেই সবাই সুন্দর খেলাকেই স্বাগত জানাবে। মূলত ফুটবল হচ্ছে একটি নান্দনিকতায় ভরপুর খেলার জগৎ। সেখানে আবেগ তাড়িত হয়ে ব্যক্তি বিশেষের প্রতি টান অনুভব মানেই হচ্ছে আপনি খেলাকে সমর্থন করছেন না! সেই যাই হোক-
আমি মনে করি ব্যক্তিগত কোনো ফুটবলারকে পছন্দ যদি করতেই হয় তবে রোনালদো কে করা উচিত। আর যদি দলীয় কোনো ফুটবল দলকে করতেই হয় তবে সেটা করা উচিত ব্রাজিল দলকে। কারণ ঐ ব্যক্তির খেলায় এবং এই দলের বুঝাপড়ার মাঝেই কেবল নান্দনিকতা উপভোগ করা যায়। যেখান থেকে একজন শুভাকাঙ্খি তার প্রত্যাশিত ফলাফল অর্থাৎ গোলটি উপভোগ করতে পারেন। অন্যথায়, ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অন্যদেরকে আমি গ্রহণই করতে পারছিনা।
ব্যক্তিগত ভাবেই আমি একজন ব্রাজিলিয়ান সমর্থক। তবে আমি পুরোপুরি নেইমারের বিরোধিতা করছি। আমার জানা মতে ব্রাজিলের ইতিহাসে নেইমারের মতো এত অভদ্র ও বেয়াদব খেলোয়াড় আর একজন ছিলো কিনা সন্দেহ আছে! যেমনি এই খেলোয়াড়ের অভদ্র আচরণ তেমনি আবার খেলতে গিয়ে হাল্কা অজুহাতে বায়না ধরে! শুধু তাই নয়, মাঝে মাঝে রেফারির কলকেও বিতর্কিত করে ফেলে এই ফুটবলার! যদিও গতকালকেই বেটারে উচিত শিক্ষাটাই দিয়েছেন রেফারি বিয়র্ণ কুইপার্স। তবে কটিনহো কে হলুদ কার্ড দেয়াটা উচিত হয়নি আমার মতে। কারণ আমি যেমনি মাঠে সুন্দর ও নান্দনিক খেলার সমর্থক তেমনি একটি ভদ্র ফুটবল দলের ও সমর্থক।
তবুও ভালো দলের কাছে আমরা সব সময় ভদ্র আচরণ ও তাদের পায়ের জাদুকরী নান্দনিক ফুটবল খেলা দেখতেই পছন্দ করি। যেখানে নেইমারকে মাঝে মাঝে অসংগতি করে ফেলতে দেখা যায়। একজন ভক্ত হিসেবে আমি কখনোই নেইমারের এমন আচরণ গ্রহণ করতে পারিনা। ফুটবল হচ্ছে ১১ সদস্যসের খেলা, সেখানে বল পায়ে ফেলে নেইমার মনে হয় একাই খেলবে! বল নিয়ে আস্তে আস্তে মুভমেন্ট এবং পাস দিতে দেরি; উভয়টাই বিরক্তিকরে ভরপুর! আবার তার কাছ থেকে যখন প্রতিপক্ষ বল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তখন হাল্কা অজুহাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আবেদন জানাতে থাকে! যেটা আমি একজন ভক্ত হয়ে ও সহ্য করতে পারি না। সেই যাই হোক, গতকালকের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কেউ কারো চেয়ে কম যায়নি। যেমনি কোস্টারিকা তেমনি ব্রাজিল। মাঠে মনে হয়েছে বাঘা তেঁতুল আর বুনো ওলের যুদ্ধ চলছে। তবে এক্ষেত্রে ব্রাজিলের খেলার মান বিগত দিনগুলোর চেয়ে খারাপ বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে। কারণ এতটা সুযোগ পাওয়ার পরেও তারা কাঙ্খিত ফলাফল আদায় করে নিতে ব্যর্থ হয়েছে!
অন্যদিকে অতিরিক্ত ৬ মিনিটের জন্য মনে হলো ব্রাজিল দল মাঠে নেমেছিলো ফুটবল খেলতে। তা না হলে যারা ৯০ মিনিটে কিছুই করতে পারলো না তারা ৬ মিনিটে, কিভাবে সম্ভব?! তাও আবার ২ টা??!! এটাই প্রমাণ করেছে ব্রাজিল, যে তারা এখন ও বিশ্ব সেরা ফুটবল দল। আমরা চাই, এই ধারা অভ্যাহত রেখে আগামী ম্যাচগুলো জিতে তাদের ভক্ত সমর্থকদের আনন্দে ভাসাবেন। ব্রাজিল ফুটবল দলের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে আগামী দিনের খেলাগুলোতে উপভোগ্য খেলা উপহার দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
অন্যদিকে মেসির ব্যাপারে আপসোস করছি, তিনি ক্লাব ফুটবলে যতটা সফল ঠিক ততটা ব্যর্থ দেশের হয়ে খেলোয়াড় হিসেবে! এখন দেখা যাক, আগামী ম্যচে তিনি কি করতে পারেন? আমি চাই তিনি পরবর্তী ম্যাচে গোল করে সবাইকে জানান দিবেন যে আর্জেন্টিনা ও একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। শুভ কামনা থাকলো মেসির প্রতি।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৮ সকাল ১১:২৫