somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিথ অফ নর্মাল - গাবর মাটে

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গাবর মাটে'র (উচ্চারণ ফ্যাক্ট না, কেউ গাবো মেইটও বলে) এই বইটাতে চাইল্ডহুড ট্রমা নিয়ে ধারণা পাই। চাইল্ডহুড ট্রমা কীভাবে আমাদের জীবনের সকল ডিসিশনে, আচরণে প্রভাব ফেলে। আমাদের চিন্তাভাবনায় চাইল্ডহুড ট্রমার প্রভাব আমরা হয়তো টের পাই না, বিশেষত অনেক ট্রমা আছে যেগুলোকে ট্রমা হিসেবে আমরা ধরতেই পারিনা। কিন্তু এর প্রভাব আমাদের মধ্যে থেকে যায়।

এই হাঙ্গেরিয়ান-কানাডিয়ান ফিজিসিস্ট অনেক উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, কিভাবে তার চাইল্ডহুড ট্রমা তার জীবনে প্রভাব ফেলেছে। একটা সাক্ষাৎকারে এমনও বলেছেন যে ৭০ বছর পরেও চাইল্ডহুডের প্রভাব (হোলোকাস্টের সময় যে তাঁর মা তাকে ফেলে রেখে চলে যান) তাঁর চিন্তায় রয়ে গেছে। এটা তাঁকে সবসময় অনিশ্চয়তায় রাখে। এমনকি মাইনর কোনো কারণেও কারো উপরে রাগ হয়, মনে হয় এই বুঝি সে আমাকে ছোট করলো।

ট্রমা হচ্ছে একটা সাইকোলোজিকাল আঘাত যেটা মানুষ পোষণ করে। এটা কনশাসলিও হতে পারে আবার সাবকনশাসলিও হতে পারে। বিশেষত বাচ্চারা বেশি ট্রমার শিকার হয়। কারণ, বাচ্চারা সবকিছু পার্সোনালি নেয়, একটা বাচ্চার সাথে ঘটা যেকোনো ঘটনা (মকারি, মনোযোগ না দেওয়া, কান্নাকাটি করলে ফেলে রাখা, কথা বললে সেটা না শোনা, এবিউজ, সেক্সুয়াল এবিউজ, এরকম আরো অনেক) ট্রমাতে পরিণত হয়, এবং এটা সারাজীবন সাস্টেইন করতে পারে। মানুষের সাথে কী ঘটছে সেটাই ট্রমা তৈরি করতে পারে এমন না, কোনোকিছু না ঘটেও ট্রমা হতে পারে (যখন কেউ চাহিদার জিনিসটা পায় না)।

এই বইটা থেকে অনেক ইন্টারপ্রিটেশনে আসা যায়। যেসব শিশুরা ইন্ট্রোভার্ট হয়, তার কারণ হচ্ছে তার সারাউন্ডিংস। সারাউন্ডিংস যদি সামহাও এক্সেপ্টেবল না হয়, এবং শিশুর সাথে মকারি করে, রেসিজম করে, জাজমেন্টাল কমেন্টেসের মাধ্যমে শিশুকে ইনফেরিওর করে, তাহলে সে বড় হয়েও এই ট্রমা অভারকাম করতে পারেনা। সারাক্ষন এই ইন্সিকিউরিটি মাইন্ডে থাকায় ইন্ট্রোভার্ট হয়ে যায়। তখন সারাউন্ডিংস তাকে আরো বেশি প্রেশার দেয় (ইন্ট্রোভার্ট হবার কারণে শোনা জাজমেন্টাল কমেন্টস)। আল্টিমেটলি ওই ইন্ডিভিজুয়ালের ইনিসিকিউরিটি আরো বাড়ে, সে আরো নিজেকে গুটিয়ে রাখে। সোস্যাল এক্সেপ্টেন্স পেলে হয়তো ব্যাপারটা হিলিং এর দিকে যেতে পারতো।

গাবর মাটে এডিকশন নিয়েও আলাপ করেছেন। মূলত এডিকশন কেনো হয়, এর সাথে ট্রমার কী সম্পর্ক, চাইল্ডহুডের কী সম্পর্ক। এডিকশন শুধুমাত্র এল্কোহল কিংবা কোনো ড্রাগসে হয় এমন না, ক্ষমতা, সম্পদ, ফুড, শপিং, ফ্যাশন, যেকোনোকিছুতেই এডিকশন হতে পারে। মূলত কোনো ইনকমপ্লিটনেস ফিলাপ করতেই মানুষ এডিকশনের আশ্রয় নেয়। এই ইনকমপ্লিটনেস তৈরি হয় চাইল্ডহুডের কোনো মেমোরি থেকে, কোথাও অপমানিত হবার মেমোরি অথবা কোন সাবকনশাস ট্রমা। একটা টেড-টকে দেখলাম মাটে ওয়ার্ল্ড লিডারদের ডিসিশন মেকিং আর এক্সপ্লয়টেশন নিয়ে এনালাইসিস করলেন। ক্ষমতার অসমাপ্ত লোভ একচুয়ালি ইনকমপ্লিটনেস থেকেই আসে। পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি ইনকমপ্লিটনেস আর ইনফেরিওরিটিতে ভোগে। যেটা তাকে অবিরাম ক্ষমতার দিকে দৌড়াতে বলে। যেকারণে পাওয়ার প্র্যাক্টিস, ইগো প্র্যাক্টিস চলতেই থাকে।

ত চাইল্ডহুড ট্রমা থেকে আমরা কীভাবে হিলিং করতে পারি। একটা উপায় হতে পারে যে আমাদের আচরণের পিছনে কী কাজ করছে সেটা ফাইন্ড আউট করা। এতে সচেতনে আমরা এটা এভয়েড করতে পারি। এক্ষেত্রে, ট্রমা আমাদের উপরে কী প্রভাব ফেলে এটা ভাবার চেয়ে এই ট্রমার প্রভাবে আমাদের আচরণে কী প্রভাব আসতেছে সেটা ভাবা জরুরি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৫২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×