somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাইটার্স ব্লক

১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাগজে খসখস করে দু’লাইন লিখতে গিয়ে মনে হলো আমি যেন কলম ভাঙ্গার আসরে নেশায় চূর- কলম ভাঙ্গাই সার কিন্তু আসর জমছে না। দোয়াতে শুকিয়ে যাওয়া কালির মতো মাথায় ঘুরপাক খাওয়া শব্দকল্পগুলো জমাট হয়ে আছে। আড়ষ্ঠভাব ঝেড়ে ফেলতে পারছি না কিছুতেই। কিন্তু তোমার মত এমন করে কেউ আমার লেখা চায়নি সে অনেকদিন হলো।

আমি কোনো কেউকেটা লেখক নই। একটি সাপ্তাহিকীতে কাজ করার সুবাদে লেখালেখির কাজে অভ্যস্ত হয়েছি অনেক পরে। কিন্তু আমার লেখায় অবলম্বন করে তোমার সাথে জড়াবো এমন আবদার ছিলো আমার নিয়তির চিন্তারও বাইরে। কি অদ্ভুত ভাবে তুমি স্বেচ্ছাবন্দী হলে আমার লেখার ঘেরাটোপে।

অনেকদিন পর তোমার চাপাচাপিতে লিখতে বসলাম। রেডিও বন্ড কাগজ, শিফারের নিবে পেলিক্যানের রয়েল ব্লু কালির সেই মসৃণ আঁক - আহ সেই আবেগ এখনো কত তাজা! টানা হাতের হেলে পড়া জড়ানো হাতের লেখা রয়ে গেছে অবিকল আগের মতো - বদলায়নি এতটুকুও। আমূল বদলে গেছে লেখার উপায়। কি বোর্ডের ঝকমারিতে কাগজে কলম পাতাই দুস্কর।

আমাদের সামনাসামনি দেখা করার সুযোগ হতো না - দু‘জন থাকতাম ভিন্ন শহরে; বলা চলে দেশের দুই প্রান্তে। পারিবারিক কারনেই আমাদের এই যোগাযোগ-সম্পর্ক অপ্রকাশিত রাখাটা ছিল জরুরী। আমাদের পরিচয়ের শুরুটা ছিলো দৈবাৎ - আমাদের উভয়ের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের দূর্ঘটনার কল্যাণে। সময়ের গ্রাফে আমাদের সম্পর্কের পরিপক্কতা ছিলো দ্রুততার সাথে কেবল উর্ধ্বমুখী। তার চেয়েও আশ্চর্যের ছিলো একজন আরেকজনকে কাছে পাবার খোলামেলা রাখঢাকহীন আকাঙ্ক্ষার তীব্রতা। এখনও ভাবতে অবাক লাগে যে কি দুঃসাহসই না দেখিয়ে ছিলে তোমার তরফ থেকে আগ বাড়িয়ে যোগাযোগের ইচ্ছা জানিয়ে। আমাদের মাঝে কোনো বাক্যবিনিময় হয়নি প্রথম দেখায়। কিন্তু তুমিই কিনা চিরকূটে জানালে আমাকে তোমার উদ্দেশ্যে নিয়মিত লিখতে হবে। তুমি নিশ্চিত ছিলে যে আমি তোমাকে লিখবই। যে সম্পর্কের শুরুই হয়েছিলো তোমার লেখা প্রত্যাশী অভিলাষে তার জের ধরে আমার কাছে তুমি প্রথাগত চিঠির চেয়েও বেশী কিছু আশা করবে তাইতো স্বাভাবিক! আমিও পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে যেতাম যেন ফরমায়েশি পান্ডুলিপি লেখার দায় সারতে! তোমার গুছিয়ে কথা বলতে না পারার অজুহাত কিংবা দূরালাপনী ব্যবহারের সুযোগ-সম্ভাব্যতার অভাবের মাঝে পত্রালাপই আমাদের মিতালি পাতালো।

সময়ের হিসেব রাখতে আজকাল তালগোল পাকিয়ে ফেলি তবু চল্লিশ বছর তো হবেই তুমি আর আমাকে লিখতে বলো নি! যখন সবকিছুর শুরু আমাদের দু‘জনের বয়স তখন বিশের কোটা পেরিয়ে গেছে। তাই বয়োঃসন্ধি বা কৈশোরের ভাবাবেগের অপরিমিত চপলতায় রাশ চেপেছিলো সতর্ক সংকল্প। এই মাঝরাতে তোমার উপস্থিতি যেন সব নতুন করে সাজানোর প্রতিজ্ঞা। আমাদের সম্পর্কের মতোই অতিমাত্রায় বাস্তব আর সত্য ছিলো তোমার না ফেরা। তোমার চলে যাবার এতো সুদীর্ঘ সময় পেরোলেও কোনোদিন আমার স্বপ্নে ভীড়নি তুমি। সব উল্টে পাল্টে আজ হঠাৎ কেন জাগালে আমায়? নতুন লিখা সৃষ্টির তোমার সেই আকুল করা অনুরোধের ঘোর যেন কাটছে না। লিখতে পারার শক্তির বিনিময়ে হলেও স্বপ্নে তোমার সঙ্গ অথবা বাস্তবে ঘটে চলা ঘুম ভাঙ্গা ঘোর চিরস্থায়ী হোক। আমি যে এখনো তোমার স্বপ্নে বিলীন।
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×