somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ আমার জন্মদিন এবং সদ্য প্রতিষ্ঠিত সামু বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম ছাত্রের স্বীকৃতি পাবার আনন্দে আমার বাড়িতে সবাইকে নিমন্ত্রণ।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জন্মদিনের সনেট:

জন্মদিনে কেন নিভে মোমবাতি আলো?
জীবনের মানে হলো হবেই মরন,
কবরের পাশে কেন প্রদীপটা জ্বালো?
মরনে অমর হয় গুণীর জীবন।
ধক্ করে উঠে বুকে জন্মদিন এলে
যতদিন চলে যায় ফিরে নাহি আসে,
ত্বরাপদে এই বুঝি মৃত্যু এলো চলে
জীবনের তারকারা আস্তে পরে খসে।

এমন জীবন চাই ধরনীর বুকে
মরনেও থাকে যেন মৃদুহাসি মুখে
প্রশান্তির আত্মা যাচি আল্লাহর কাছে।
আমা' হতে হয় যেন মানুষের ভালো
ছড়িয়ে পড়ুক এই জীবনের আলো
বাকীটা জীবন যেন ঈমানেই বাঁচে।


জন্ম বৃত্তান্ত:

বাবার বয়স কুড়ি যখন মায়ের ছিলো নয়
এই বয়সে কেমন করে মায়ের বিয়ে হয়?
অল্প বয়স তাইতো মায়ের স্বল্প ছিলো বুঝ
কান্না করে চলে যেত বাপের বাড়ি রোজ।
ভাল্লাগেনা শ্বশুর বাড়ি ভাল্লাগেনা কাজ
স্বামীর ঘরে যাবেনা সে চোখে মুখে লাজ!
অনেক বড় পরিবারে ঠিকমতো নাই খানা
মাঝে মাঝে খাবার নিয়ে আসতো আমার নানা।
বাবা দাদার বড় ছেলে আম্মা নানার ঘরে
আম্মা বাবার চাচাতো বোন তাকেই বিয়ে করে।
তখন অনেক অভাব ছিলো অল্প নুনে-ভাতে
এতেই কি আর পেটটা ভরে কাজ করতো তাঁতে।
সারাটাদিন কাজে যেন বসার সময় নাই
সকালবেলা ভাগ্যে জুটে শুধু আটার জাই।

একদিন মা রাগ করে তাই খাবারটা না খেয়ে
খানিকবাদে মামা এলে ভাতটা দিলো দিয়ে।
সকাল গিয়ে দুপুর হলো আর কিছু না জোটে
হাঁটতে গিয়ে মা পরে যায় ভীষণ ক্ষুধার চোটে।
কেউ জানেনা কেন এমন কান্ড ঘটে গেল
মাও বলেনা না খেয়ে তার প্রাণটা বুঝি গেল।
আঁচলে মা চোখটা মুছে ভীষণ জঠর জ্বালা
পরীর মতো সুন্দরী মা কয়েক দিনেই কালা।

এমনি করে আট টা বছর সন্তান কেহ নাই
বাবা-মায়ের ঘুম আসেনা সন্তান কোথা পাই।
মসজিদে দেই খীর-খিচুরী মোমবাতি-বাতাসা
পাড়ার হুজুর দোয়া করে পূর্ণ হবে আশা।
ক'দিন বাদেই আমি পেটে খুশির অন্ত নাই
কত কিছু মান্নত করে খুশি হয়ে মায়।
নানা এসে নিয়ে গেল সন্তান হবে বলে
আট মাসে তাই আমি এলাম আমার মায়ের কোলে।

অগ্রায়হনের আট তারিখে অল্প শীতের কালে
বড় বন্যার পরের বছর ঊননব্বই সালে।
ইংরেজী মাস কেউ রাখেনি যত্নে স্মরণ করে
তারিখ দিয়ে কি আর হবে অনেক অভাব ঘরে।
আমায় দেখে বলে দাদু আস্তা চিকার ছা'
ভীষণ কালো রোগা পাতলা ছিলো আমার গা'।
যেমনই হয় আদুরে বেশ সবার কাছে ভারি
কারন আমি প্রথম সন্তান দাদা-নানার বাড়ি।
চল্লিশদিন পরে আমায় আনতে গিয়েছিলো
ব্যান্ড পার্টি একটা মাইক সাথে নিয়েছিলো।

মেঝো খালা ভীষণ কান্না আমায় আনে দেখে
কেঁদে বলে মাকে আমার যাও বাবুটা রেখে।
দৌঁড়ে আসে গাড়ির পিছু তবু নাহি রাখে
খালাম্মা তাই অনেক বকা দিয়েছিলো মাকে।
আমি মায়ের বাধ্য ছেলে আঁচল তলেই থাকি
আটটি বছর গেল তবু মায়ের সাথেই থাকি।

এই জীবনে আটটি থাপর খেলাম আছে মনে
অল্প ছিলো তাইতো আমি রেখেছিলাম গুনে।
একটা থাপর মা দিয়েছে ছোটকে মারি বলে
আরেকটা দিল আব্বা আমায় সম্ভবত গালে।
নাইতে ছিলাম কাদা জলে কাকা দিল তাই
পরিবারের অন্যকেহ আমায় মারে নাই।
বাকি পাঁচটা খেয়েছিলাম স্কুলে যেই পড়ি
তাতেই যেন ভীষণ জিদে প্রথমস্থান করি।
জন্মদিনটা হয়নি করা অভাব ছিলো তাই
আমিও তাই জন্মদিনের উইশ করি নাই।

নামটি আমার ৮ অক্ষরে হাবিবুর রহমান
এক কুড়ি ৮ পেরিয়ে উনত্রিশ বহমান।

আমার জন্মের ৮ কাহন:

আমার জন্ম: মা-বাবার বিয়ের ৮ বছর পর ৮ মাস মায়ের পেটে থেকে '৮৮ বন্যার পরের বছর, বাংলা বছরের ৮ম মাস অগ্রহায়নের ৮ তারিখ মঙ্গলবার বেলা ৮ টার সময় আমার জন্ম। ৮ বছর পর্যন্ত মাকে ছাড়া একদিনও থাকিনি। তাই বলে আমি কিন্তু ৮ কপালে নই। দুই হাজার ৮ সালে এসএসসিতে উপজেলার মধ্যে প্রথম হয়েছিলাম। ২০১৮ সালে এমএস কমপ্লিট করি, সালটার শেষেও কিন্তু ৮ আছে। আমার চাচা ফুফু সব মিলে ৮ জন ছিলো, একজন মারা গিয়ে ১ কমে গেছে। মা-খালারা ভাই-বোন মিলে আট থেকে দুই কম। চাচাতো ভাইবোন ৮ হতে এখনো একজন বাকি। মামাতো খালাতো ভাই মিলে সর্বমোট ৮ জন এখনো।জীবনের প্রায় সব জায়গায় ৮ আছে বলে ব্লগটাও দিলাম সকাল ৮ টার সময়। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা আমি যেন ৮ বেহেশতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বেহেশতে স্থান পাই। হে আল্লাহ তেমনই আমল করার তাওফিক দিন। আমিন।

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১১
৪৯টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×