আমার ছেলে আরিশ রহমান।
আরিশ রহমান ছাড়াও ওর আরো একটা নাম রয়েছে। আসওয়াদ। নামটি রেখেছেন আরিশের নানু। আসওয়াদ নামে ডাকলে সাড়া দেয় বেশি। ছেলে আমার হাঁটতে শিখেছে প্রায় এক মাস হলো। বাসায় এক রুম থেকে আরেক রুম ঘুরে বেড়াবে সারাক্ষণ। ঘুমানোর আগ পর্যন্ত হাটতেই থাকবে। ছেলে আমার বেজায় শক্ত মাশাআল্লাহ! সহজে কান্না করে না। কখনো যদি দেয়ালে আঘাত পায় তাহলে দেয়ালকে মাথা দিয়ে আঘাত করতে থাকে। ইদানিং বেশ রাগ করা শিখে গেছে। কোন কিছু চাইলে যদি না পায় তাহলে কামড় বসিয়ে দেয়। এমন কামড় যে কামড়ের চোটে রক্ত বের হয়। আমি এবং আরিশের মা দুজনই বেশ কয়েকবার ওর কামড় খেয়েছি। শুধু যে রাগ করে কামড় দেয় এমনটিও নয়। মাঝে মাঝে কোন কারন ছাড়াই কামড় দেয়। আরিশের এখন উপরে নিচে মিলে দুই হালি দাঁত।
৯ জুন ২০২০ খ্রি: বিকাল ৪.১৫ মি.।
আমাদের ঘর আলো করে পৃথিবীতে আসে আমাদের প্রথম সন্তান। প্রথম বাবা হওয়ার অনুভূতি বলে বুঝানোর মত নয়। আরিশের আম্মু সব সময় বলত বাচ্চা হওয়ার সময় তোমাকে আমার পাশে চাই। আমিও চাইতাম যেন ওর পাশে থাকতে পারি। চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতাম তখন। প্রেগনেন্সির সময়টাতে লকডাউন থাকায় ঠিকমত বাড়িতেও যেতে পারিনি। তবে ফোনের এপাশ থেকে ওকে সাহস যোগাতাম। আল্লাহর ইচ্ছায় আরিশ হওয়ার সময়টাতে ওর পাশে থাকতে পেড়েছিলাম। বাবা হওয়ার পর বুঝেছি একজন মা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কতটা কষ্ট সহ্য করে!
৯ জুন ২০২১ খ্রি:।
আজ আমার ছেলের এক বছর পূর্ণ হলো। সেই জন্মের সময় থেকে এই পর্যন্ত একটু একটু করে বেড়ে উঠার সাক্ষী আমি। প্রথম বসতে শেখা, প্রথম দাঁত উঠা, প্রথম দাঁড়াতে শেখা, হাটতে শেখা এই সব কিছুই আমার সামনেই হয়েছে। উপভোগ করেছি প্রথম বাবা হওয়ার স্বাদ। উপভোগ করছি ওর প্রতিটা পদক্ষেপ। অফিসে আসার জন্য বাসা জামা কাপড় পড়তে দেখলেই কোলে উঠার জন্য পাগল হয়ে যায়। নামতেই চায় না সহজে। এই বয়সেই বাবার প্রতি ওর কত টান। আর অফিস থেকে বাসায় সে কি খুশি! ওর খুশি দেখে মনে হয় যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে। জানিনা ছেলের জন্য কতটা মসৃণ করতে পারবো ওর চলার পথ। তবুও নিজের সর্বোচ্চটা দিতে কোন কার্পণ্য করবো না। মহান সৃষ্টিকর্তা ওকে নেক হায়াত দিক, এই কামনা করি সব সময়।
ছেলে হওয়ার আগে অনাগত ছেলেকে নিয়ে আমার লেখা কবিতা: আমি যখন বাবা হবো
বাবার কোলে আরিশ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:০৯