অনশন করে আন্দোলন সফল হবার দিন বাংলাদেশে আর নেই। এই কথাটির প্রমাণ পেলাম আরো একবার। হামলা-মামলা-অনশন শেষে শাবির শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ইতি টানলেন। ভিসি মহোদয় ফিরলেন তার কার্যালয়ে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দফায় দফায় মিটিং করে কোন সমঝোতায় আসতে না পারলেও শেষমেশ অধ্যাপক জাফর ইকবাল স্যারের কথায় অনশন ভেঙেছেন। আরো আগেই অনশন ভাঙা উচিত ছিল। সত্যি কথা বলতে অনশনে বসার সিদ্ধান্তটাই ভুল ছিল। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকহাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজনের অনশন আর আন্দোলনে কিচ্ছু হবে না তা আগেই ভুঝেছিলাম। যেমনটি হয়নি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। সামগ্রিক ভাবে আন্দোলন করতে পারলে আশানুরোপ ফলাফল আসতো। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা মুখে ললিপপ দিয়ে মায়ের কোলে ফিরে গেছেন। বাসায় বসে বসে আন্দোলনের আপডেট দেখেছেন পত্রপত্রিকায়। আর বোকার মতো গুটিকয়েক শিক্ষার্থী আন্দোলন চালিয়ে যাবার দু:সাহস দেখিয়েছেন।
২০১১ সালের কথা। আমার বিশ্ববিদ্যালয়েও (মাভাবিপ্রবি) এমন একটি আন্দোলন হয়েছিল। জাফর ইকবাল সাহেব আমাদের আন্দোলন নিয়ে একটি কলামও লেখেছিলেন তখন। কলামটি ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমরণ অনশন নামে প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছিল। স্থানীয় নেতানেত্রীদের হস্তক্ষেপে আমরা অনশন ভেঙেছিলাম। কোন স্যার আসেননি সেদিন। আমাদের সেই আন্দোলনও ব্যর্থ হয়েছিল। প্রতিটি আন্দোলনেই মীর জাফর টাইপের কিছু পোলাপাইন থাকে। যাদের কারনে ফলাফল শুন্য থেকে যায় আন্দোলন।
বাংলাদেশের কথিত বিরোধী দলও নাবালক টাইপের আন্দোলন কর্মসূচী পালন করেন। কখনো প্রতিকী অনশন, কখনো অবস্থান কর্মসূচী, কখনো বা কম্বলের নিচে শুয়ে শুয়ে কাঁদা ছুড়ে মারেন। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য যে দেশে সরকারের কাছ থেকেই অনুমতি নিতে হয় সে দেশে আর যাই হোক আন্দোলন করে সরকার পতনের ডাক আর গ্রাম্য বিড়ালের হুংকার সমান কথা।
ছাত্র আন্দোলন দেশে আরো হবে। বিভিন্ন দাবীতে ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথে নামবে, মিছিল স্লোগানে আকাশ কাপিয়ে তুলবে। তবে তাদের প্রতি একটাই অনুরোধ আন্দোলনের নামে তারা যেন অনশনে না যান।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২৬