somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন পাকিস্তানি জেনারেল, সৈনিক ও রাজনীতিবিদের মন

১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"সাব হাম দেখা হ্যায় খামাখা আদমিকো উনহুনে মাঁরা হ্যায়, তওবা তওবা। । এ রমজান কা মাহিনা হ্যায়। কিতনা আওরাত লোগকো বেইজ্জত কিয়া। এ কেয়া হোতা হায়!! হাম লোগকো বোলা এধারমে হিন্দু হ্যায়। আভি কেয়া দেখতা হ্যায়, এধারমে রোজা নামায আযান ভি হো হ্যায় ""।।।।

ময়মনসিংহে মুকুল নিকেতনে অধ্যক্ষ আমির আহমেদ ৭১ সালে যখন পাক কারাগারে বন্দি ছিলেন তখন তিনি পাক হাবিলদার সুফির কাছে এই তথ্য পেয়েছিলেন। ।।
বুঝতে পারছেন একজন পাকিস্তানি হাবিলদারের মানুসিকতা? ??
তারা একপ্রকার শিক্ষা পেয়েছে বাঙালিরা হিন্দুয়ানি মুসলমান !

জিন্নাহের ভাষায় পোকায় খাওয়া পাকিস্তান!! অর্থাৎ সে দেশের স্রষ্টা পূর্ব পাকিস্তান কে একটি কলোনি হিসেবে তখন থেকে দেখতো।।। আমাদেরকে বলা হতো আমরা হলাম অর্ধেক হিন্দু অর্ধেক মুসলমান!!! একজন পাকিস্তানি ঠিক এই ধরণের শোষক হিসেবে বেড়ে উঠে। ।।

৪৭ সালে দেশভাগের পর পাকিস্তানিরা
আমাদের মুসলমান হিসেবে স্বীকৃত দিতে বলতো আমরা নাকি হিন্দুয়ানি মুসলমান। ৫৩ সালের দিকে যখন মাওলানা ভাসানি ও শেখ মুজিবের
উদ্যোগে অসাম্প্রদায়িক চেতনায়
যখন আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামীলীগ গঠন হয়, তখন ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেই
পাকিস্তান। বাংলা এ কে ফজলুল হক আর মাওলানা ভাসানীর যুক্ত ফ্রন্ট যখন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ায় তখন

পাকিস্তানের
সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতারা ফতোয়া
দিয়েছিলো-

''যুক্তফ্রন্ট মুরতাদের দল,
যুক্তফ্রন্টকে ভোট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে
ভোটদাতার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে"

একবার পূর্ববঙ্গের গভর্নর মালিক
ফিরোজ খান
বলেছিলেন-
"বাঙালী মুসলমানরা অর্ধেক মুসলমান
অর্ধেক
হিন্দু,
তারা মুরগীর মাংসটাও হালাল করে
খায়
না।"

এই অপমানে মাওলানা ভাসানী তীব্র
ভাষা
ব্যবহার করে বলেছিলেন-
"লুঙ্গী উঁচা করিয়া দেখাইতে হইবে
আমরা
মুসলমান কি না..."

৭০ এবং ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের লোকদের তারা কাফের, হিন্দুয়ানি, ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্মহীন তথা নাস্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করতে
থাকে পাকিস্তান (মুসলিম লীগ,
জামাত, সামরিক জান্তা) । এন্তনী ম্যাসকান একজন খ্রিষ্টান
সাংবাদিক( পাকিস্তানের নাগরিক)
তিনি তাঁর বই রেইপ অব বাংলাদেশে
লিখেছেন, আমি বাঙালি
মুসলমানদের অন্যত্র বসবাসকারী
মুসলমানদের থেকে বেশি ধর্ম ভীরুতা
দেখেছি যা পশ্চিম পাকিস্তানিদের
ছিল না।
পূর্ব বাংলায় মদ বিক্রি কঠোরভাবে
নিয়ন্ত্রিত ।পাকিস্তানের ইসলামাবাদে শুক্রবার মদের দোকান খোলা থাকতো যা পূর্ব বাংলায় ঘটে
না। করাচি বা লাহোরে যৌন আবেদন মূলক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হতো। ক্যাবারের নাচ হোটেলে চলে
এগুলো যদি ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের
সিনেমা হলে দেখানো হলে জনগণ মারপিট লাগিয়ে দিতো।
১৯৭০ সালে পূর্ব বাংলার সম্পদশালী
ব্যক্তিবর্গ কঠোরভাবে রোযা পালন
করতো যা একই শ্রেণির
পাকিস্তানিরা করতো না। নির্বাচনের সময় শেখ মুজিব অতি গরম
আবহাওয়ায় রোজা পালন করতো কিন্ত পাকিস্তানি নেতারা তা পালন করতো না, রাওলপিন্ডি ও করাচিতে এইরকম ২ জন নেতার সাথে এন্তনী মেসকান নিজে খাবার এবং মদ্যপানে
শরীক হয়েছিলেন যা তিনি নিজেই
বলেছেন। আজ অবধি পাকিস্তানিরা আমাদের
কটাক্ষ করে কিন্ত ক্রিকেটে আই লাভ
ইয়ু আফ্রিদি বলতে আমরা ভুলি না।

৭০ সালের ৭ জানুয়ারি,
বঙ্গবন্ধু এই ধর্মব্যবসায়ী বলেন,

"৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট কে ভোট দিলে বিবি তালাক হয়ে যাবে, যুক্তফ্রন্ট জিতেছে কিন্ত বিবি তালাক হই নি, "

৫৬ সালে যুক্ত নির্বাচন সমর্থন করলে ইসলাম বরবাদ হয়ে যাবে, কিন্ত ইসলাম বরবাদ হই নি।

মেয়েলোক রাষ্ট্র প্রধান হলে
'গায়েবি ইসলামি কাজ 'হবে এক
কালে তোমরা বলেছো আবার ৬৫
সালে মাদারে মিল্লাত কে সমর্থন
দিয়েছো।

বুঝাই যাচ্ছে শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তৎকালীন নাপাকির শুয়োর রাজনীতিক নেতারা পবিত্র ধর্মকে ব্যবহার করেছে।।।

প্রথমে লিখেছিলাম একজন পাকিস্তানের হাবিলদারের কথা ৭১ সালের। ।।

পাকিস্তানি জেনারেলরা যেভাবে বাঙালিদের দেখতো :

১।মুজিব হলো বাস্টার্ড - জেনারেল ইয়াহিয়া।
২। তাজউদ্দীন ছিলেন ব্রাম্মণপুত্র -- রাও ফরমান
৩।মুসলমানদের বাঙালিরা পছন্দ করতো না, পছন্দ করতো হিন্দুদের। --জেনারেল ফজল মুকিম খান।
৪। বাঙালিরা জারজ -- জেনারেল ওমর।
৫।২৩ শে মার্চ ধানমন্ডি ৩২ নং থেকে একদল হিন্দু বের হলো -- মেজর জহির।
৬।বাঙালিরা প্রচন্ড হিন্দু প্রভাবিত -- মতিন উদ্দিন।।
.
অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন যতবার আমরা অধিকার চেয়েছি নাপাকিদের নোংরা মস্তিষ্কজাত আমাদের উপর পবিত্র ধর্মকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে।।। হত্যা, ধর্ষণ, লুঠপাট এবং একজন নাপাকিস্তানি জেনারেল এবং রাজনীতিবিদ পৃথীবির সব থেকে ঘৃণ্য বস্তু।।।।।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:১১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×