পৃথিাবটা বড়ই বিচিত্র।
তারচেয়ে বিচিত্র আমরা।
প্রকৃত পক্ষে কখনো দেশ বা ভূখন্ড কোনরূপ অদ্ভূত আচরণ করতে পারে না। বরং আমরাই (মানুষ জাতি) সকল কর্ম অপকর্মের হোতা। যার দায় নিতে হয় আমাদের দেশ মাতাকে। করি আমরা আর সহে কে?
আসল কথায় ফিরে আসি,
আমার এক আত্নিয় ঈদের পূর্বে ঢাকা যাবেন। টিকিট কাটার দায়িত্ব প্রদান করলেন আমাকে। ঘটনাটা গত রোজার সময়। রোজা রেখে বিকাল ৫টায় স্টেশনে গেলাম। দেখি বিশাল লাইন। সাভাবিক ঘটনা, তবে যে বিষয়টি অস্বাভাকবক যে বিষয়টি ছিল তা হল মানুষের লম্বা লাইন সত্বেও কাউন্টারে কোন লোজন উপস্থিত ছিল না। ভাবলাম হয়ত কাউন্টার একটু পরে খুলবে তাই সবাই আগে ভাগে লা্ইন ধরে আছে। একজনকে জিজ্ঞেস করতে বললেন তিনি এসেছেন মহানগর গোধূলীর টিকেট নিতে। ভদ্রলোক ঢাকা যাবেন আজই। ট্রেনের টিকেট নিতে একটু আগে ভাগেই এসেছেন। কিন্তু স্টেশনে এসে দেখেন বিদু্ৎ নেই, লোড সেডিং। কম্পিউটার ও বন্ধ, বিদুৎ কখন আসবে কেউ যানে না। এদিকে আবার ভদ্রলোকের ট্রেনের সময় হয়ে যাচ্ছে। আমি ভেবে অবাক হচ্ছিলাম একটা জেলা শহরের এত বড় একটি স্টেশন অথচ বিদু্ৎ এর জন্য একটি জেনারেটরের ব্যবস্থাও নেই। লাইনে দারিয়ে লাভ হবেনা যেনে ভাবলাম একটু ঘুরে আসি। প্রায় এক ঘন্টা পর বিদুৎ মহাসয়ের সদয় প্রাদুর্ভাব ঘটল। আমি ও হাফ ছেরে বাচলাম। আবার সেই লাইনে গিয়ে দারালাম। এবার লাইনের পরিসর আগের চাইতে বেরেছে। তবে আগের ভদ্রলোকটিকে আর দেখতে পেলামনা। বোধয় দেরি দেখে বাস স্টপে চলে গেছে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা আর লাইন ভেঙ্গে কতিপয় পেশী শক্তিবান ভাইদের দৌড়াত্ব দেখে অতপর প্রায় আধা ঘন্টা পর বহুল প্রতিক্ষিত কাউন্টারে পৌছলাম। কাউন্টারে ২৩ আগস্টের টিকিট চাইলাম। সকালের মহানগরের। কাউনটারে যিনি টিকিট দিচ্ছিলেন তিনি আমাকে বললেন, ২৩ তারিখের টিকিট আজ ছাড়ে নাই, আগামিকাল ছাড়বে। অগত্য কী আর করা নৈরাশ বদনে বাড়ি ফিরে আসলাম। পরদিন আবার সকাল দশটায় যথাযথ ভাবে লাইনে গিয়ে দারালাম। ধিরে ধিরে ক্উন্টারের নিকট পৌছে হাসি মুখে ২৩ তারিখের টিকিট চাইলাম। কিন্তু যা শোনলাম তাতে অবাক হওয়ার পালা। রাতারাতি সকল টিকেট ভোজবাজির মত গায়েব একটি টিকেট ও নেই। আমি কাউন্টারে জিঙ্গেস করলাম, কাল বলেছেন আজ টিকেট দিবেন অথচ আজ বলছেন টিকিট নাই। কিন্তু ভদ্রলোক আমার মত সাধারন মানুষকে গুরোত্ব দেবার প্রয়োজন বোধ করলেন না। অগত্য স্টেশন মাস্টারের সরনাপন্ন হলাম, তিনিও আমার বিষয়টাকে কোন গুরুত্ব দিলেন না। আমি বুঝতে পারলাম না ১০ দিন আগেই কিভাবে টিকেট শেষ হয়ে যায়?
আসল ঘটনা হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা বাস ভাড়া ১৫০ টাকা, ট্রেন ভাড়া মাত্র ৬৫ টাকা। সভাবতই ট্রেনের টিকেটের চাহিদা অত্যাধিক, ফলে প্রতিটি টিকেটই চলে যায় কালো বাজারিদের হাতে, যা পরবতির্তে ১৫০ টাকা প্রতিটি বিক্রয় হয় স্টেশনের ভিতরেই। এসবের সাথে জরিত থাকে রেলওয়ে পুলিশ সহ স্টেশনের কতিপয় অসাধু কর্ম কর্তা। প্রশাসন এসব দেখেও পালন করছে নিরব ভূমিকা।
পরবর্তিতে আমার এক ছাত্রের মাধ্যমে তিনটি টিকেট ৪০০টাকায় কিনে সে যাত্রা নিজের ইজ্জত রক্ষা করেছিলাম।
তাই বেকার ভাইদের প্রতি অনুরুধ যদি কোন কাজ না পান, চলে আসুন ব্রাক্ষণবাড়িয়া স্টেশনে, টিকেট কিনুন বেচুন। টিকেট প্রতি লাভ ৮৫ টাকা। প্রতিদিন ৭ টি আন্ত: নগর ট্রেন আসা যাওয়া করে। সেই হিসেবে আপনার দৈনিক আয় হবে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার। পুলিশ এবং স্টেশন কর্তৃপক্ষকে ভাগ দেয়ার পরও যা থাকবে তা দিয়ে অনায়াসে হয়ে যাবেন কোটি পতি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




