somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আমি সম্মানের পাত্র নই
চারদিকে নদী বেষ্টিত বৃত্তাকৃতির দ্বীপের মত, চির সবুজের সমারোহ বিকেল বেলায় পশ্চিমা আকাশে রুদ্রের লুকোচুরি খেলা এক অজপাড়া গাঁয়ের নাম নিজ ছেংগার চর।জনম দুঃখিনী মায়ের অন্ধেরযষ্টি এলএলবি সমাপ্ত করে সম্মান জনক পদে অধিষ্টিত থাকায় নিরন্তর সংগ্রাম অব্যাহত।।

লাল-সবুজের মহাকাশ জয় এবং নৈরাশ্যবাদীদের প্রশ্ন

১৩ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহাকাশে লাল-সবুজের পতাকা উড়ানো এতদিন যা ছিল স্বপ্ন, সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সত্যি হল সেই স্বপ্ন। শুক্রবার রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় বহুল আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। জয় বাংলার শ্লোগান দিতে দিতে মহাকাশ পানে ছুটে জাতির জনকের নামাঙ্কিত কৃত্রিম উপগ্রহটি। স্যাটেলাইটটির সফল উৎক্ষেপণের ফলে ৫৭তম সদস্য হিসেবে আমরা যুক্ত হলাম অভিজাত মহাকাশ ক্লাবে।

কৃত্রিম উপগ্রহের গর্বিত মালিক হলাম, গর্ব করলাম। কিন্তু জনমনে দেখলাম কিছু প্রশ্নও রয়েছে। জনগণের কষ্টার্জিত টাকায় নির্মিত এ উপগ্রহ আমাদের কী কাজে আসবে, এটা দিয়ে জনগণের কী লাভ হবে – এসব প্রশ্ন। এ বিষয়ে আমার মত হচ্ছে, কেবল বিরোধিতার জন্যই প্রশ্নকারীরা বিরোধিতা করছেন। আমাদের উচিত স্রোতে গা না ভাসিয়ে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বোঝা। এই পার্থক্য বুঝতে গিয়েই কিছুদিন যাবত জ্ঞান আহরণের চেষ্টা করছি, কিন্তু বিজ্ঞানের ছাত্র নই বিধায় তথ্য-প্রযুক্তির এসব বিষয়ে পাকা ধারণা নিতে পারিনি। কিন্তু সামান্য যা কিছু জেনেছি তার আলোকে নিজস্ব কিছু মতামত উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি এখানে।

স্যাটেলাইট এবং ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সম্পর্কে ধারণা না থাকলে সে বিষয়ে তর্কে লিপ্ত হওয়া বাতুলতা ছাড়া আর কিছুই না। ফাইবার অপটিক দিয়ে সরবরাহ করা ইন্টারনেটের তুলনায় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট অনেক ব্যয়বহুল। ১৯৯২ সালে একটি ফাইবার অপটিক কোম্পানি আমাদের দেশের সীমানা ব্যবহারের অনুমতির বিনিময়ে বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করার একটা প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে খালেদা জিয়া সরকারের অদূরদর্শিতায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়, যার মাশুল হিসেবে জনগণকে আজও চড়া দামে নেট কিনে ব্যবহার করতে হচ্ছে। তবে আশার বাণী হলো, কারো লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে এবং উদ্দেশ্য যদি সৎ থাকে তাহলে কেউ তাদের দাবিয়ে রাখতে পারে না। পারেনি মুক্তিযুদ্ধে, পদ্মাসেতু নির্মাণে, সমুদ্রসীমা বিজয়ে, ছিটমহল বিনিময়ে এবং সর্বশেষ মহাকাশ বিজয়ে।

দেশের ৩০টি স্যাটেলাইট টেলিভিশনকে ফ্রিকোয়েন্সির জন্য এখন আর বিদেশিদের উপর নির্ভর করতে হবে না। বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের পেছনে এর আগে পাঠানো ‘ব্র্যাক অন্বেষা’ নামক ন্যানো স্যাটেলাইটের উদ্দীপনাও কাজ করেছে। আশার কথা যে, সরকারের যথাযথ সহায়তা পেলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশি প্রযুক্তিবিদরা নিজেরাই স্যাটেলাইট নির্মাণ করতে পারবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এর আগে যেসব উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে তাদের ধরণ ও কাজ ছিলো নির্দিষ্ট করা। তবে বঙ্গবন্ধু-১ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এটা যোগাযোগের কাজে ব্যবহার করা হবে। এ ধরণের স্যাটেলাইটকে জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বলে।

মহাকাশ বিজয়ের ফলে স্পষ্টত তিনটি সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। প্রথমত, এ স্যাটেলাইটের সক্ষমতা বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও খরচ সাশ্রয় করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে স্যাটেলাইটের মাধ্যেমে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবার সম্প্রসারণ হবে। তৃতীয়ত, দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা ও ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু-১। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজেও এ স্যাটেলাইটকে কাজে লাগানো যাবে। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সম্ভবনা হচ্ছে, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। বঙ্গবন্ধু-১ এর মাধ্যমে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির অভিজাত দেশগুলোর ক্লাবে বাংলাদেশ প্রবেশ করলো।

বঙ্গবন্ধু-১ উপগ্রহে থাকা মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২৬ কেইউ-ব্যান্ড, ১৪টি সি-ব্যান্ড। প্রতিটি থেকে ৪০ মেগাহার্টস হারে তরঙ্গ বরাদ্দ পাওয়া যাবে। এদের মাঝে ২০টি ট্রান্সপন্ডার ভাড়া দেওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে ভাড়ার নিয়ে কথাও চলছে। তাই নেতিবাচক কথা না বলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু-১ উপগ্রহের সফল প্রয়োগ দেখার জন্য নিন্দুকদের অপেক্ষা করা উচিত।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×