স্পেনের জালিম সম্রাট রডরিক
তার
আঞ্চলিক গভর্ণর কাউন্ট
জুলিয়ানের
মেয়ে ফ্লোরিডার সম্ভ্রমহানি
করেছে..! কন্যার এমন অপমান সহ্য
করা
যেকোন পিতার পক্ষেই কঠিন।
তিনি জানতেন ন্যায়বিচারক
হিসেবে খ্যাত একজনই আছেন।
আফ্রিকার গভর্ণর মুসা বিন
নুসাইর। কোন উপায় না পেয়ে
তিনি
মুসার কাছেই যাবার সিদ্ধান্ত
নিলেন।
জুলিয়ান এসেছেন মুসার কাছে।
এক অসহায় পিতার মুখে কন্যার
নির্মমতার কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে
গেলেন মুসা। জুলিয়ানের কথা
শেষ
হবার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে
নিলেন। নিজের বিশ্বস্ত
সেনাপতি
তারিক বিন যিয়াদকে জরুরী
তলব করে
বললেন,
চরিত্রহীন রডরিককে হটিয়ে
সমগ্র
স্পেন জয় করতে। জুলিয়ান অবাক
হয়ে দেখলেন, সেদিনই স্পেন
দখলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে
গেল তারিকের বিশাল
বাহিনী..!
.
.
গভর্ণর হাজ্জাজ বিন ইউসুফের
কাছে দেবল [বর্তমান করাচী]
থেকে
একটি চিঠি এসেছে।
দেবলের রাজা দাহির মুসলিম
বণিক কাফেলাকে আটক
করেছে।
সেখান থেকে এক বন্দী মেয়ে
চিঠিটি
পাঠিয়েছে।
মেয়েটি লিখেছেঃ
"মুসলমানদের
তলোয়ার যদি ভোতা না হয়,
তারা
যেন আমাদের ডাকে সাড়া
দেয়..!"
অসহায় মেয়েটির চিঠি পড়েই
দাড়িয়ে যুদ্ধের ঘোষণা দিলেন
হাজ্জাজ বিন ইউসুফ।
নিজের জামাতা ও ভাইয়ের
ছেলে
মুহাম্মদ বিন কাসিমকে বললেন,
যত দ্রুত সম্ভব সিন্ধু জয় করতে..! .
.
মসনদে বসে আছেন আব্বাসি
খলীফা
মু'তাসিম বিল্লাহ। পানি পান
করার জন্যে গ্লাস হাতে
নিয়েছেন। সেই মুহুর্তে একজন
ছুটে
এল দরবারে..
হে আমীরুল মুমিনীন..!
সীমান্তে রোমানরা আক্রমণ
করেছে। ঘটনা মন দিয়ে
শুনছিলেন
খলীফা....
বর্ণনার একপর্যায়ে লোকটি বলল-
আমি দুর থেকে শুনেছি
হাশেমি এক বন্দী নারী আর্তনাদ
করে বলছিল,
খলীফা মুতাসিম বিল্লাহ..! তুমি
কোথায়..?
এটা শুনেই খলীফা পানির গ্লাস
ছুড়ে
ফেলে দিয়ে বললেন:
'লাব্বাইক' [আমি হাজির]।
নিজেই
দ্রুতগতিতে ছুটলেন
সীমান্তের দিকে।
কাউকে বলতে হলনা,
পেছনে ছুটল হাজার হাজার
সৈন্য।
কিন্তু ততক্ষণে বন্দীদের নিয়ে
রোমানরা তাদের দূর্গে পৌঁছে
গেছে।
একমুহুর্তও থামলেন না খলীফা,
একই
গতিতে সীমানা পেরিয়ে
সরাসরি
হামলা করে বসলেন রোমানদের।
তাদের সবচেয়ে
শক্তিশালী দুর্গ 'আমুরিয়া' দখল
করে সকল বন্দীদের উদ্ধার করে
নিজ
এলাকায় ফিরে এলেন।
.
.
স্পেনের শাসক
মনসুর আল-হাজিবের চোখে ঘুম
নেই।
তিনি খবর পেয়েছেন, তার
সীমান্তের
বাইরে একটি গীর্জায়
এক
মুসলিম নারী বন্দি অবস্থায়
আছে..!
সীমানার ওপারে বলে তিনি
চিন্তিত।
শেষে একটি মেয়ের জন্যই যুদ্ধের
ঘোষণা দিলেন। সমস্ত শক্তি
নিয়ে
হটাৎ আক্রমণ করে বসলেন...!
. .
যারা নিজেদের মুসলমান
ভাবেন,
তাদেরকে 'মুসলিম' শব্দের অর্থ
বুঝাতে ঘটনাগুলি দিলাম।
এরা ছিলেন মুসলিম শাসক..!
আজ যখন আবু গারিব থেকে
ফাতেমার চিঠি আসে।
সাদিয়া
মুবিন আমাদের ডাকে, তখন
আমরা বধির..! যখন আফিয়া
সিদ্দীকি বা মিশরের আসমা
বেলতাগীর আর্তনাদ শুনি,
তখনও আমরা নীরব। এক বোনকে
বাঁচাতে যুদ্ধের ঘোষণা
দেয়। আর হাজারো বোন
ফিলিস্তিনের রাস্তায় মারা
পড়ছে।
হাজারো বোন কাস্মীরে
ধর্ষিত হচ্ছে।
হোক, হতে থাক.......
চোঁখে ছানি পড়েছে। তাই
কিছুই
দেখি না, আমি বধির, কানে
চিৎকার
আসে না।
ইতিহাস তখন ঘৃণার, অপমানের,
তুচ্ছার্থ ব্যঙ্গাত্মক ভাব নিয়ে
বলে ..
তোরা মুসলমান বটে.!!