তাকিয়ে থাকতে থাকতে রাশেদের দৃষ্টির প্রলেপ পড়ে গেছে ছবিটির ওপর। মেয়েটিও তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে প্রণত চোখে। আনত আঁখির ভাষায় রহস্যময়তা ছড়ানো। হয়তো এই একটা চাহনির হাজারটা অর্থ হতে পারে। অথচ অতিসাধারণ রাশেদের কাছে তা ধরা পড়ছে না বিশেষ কোনো অর্থময়তায়। অন্তরিন্দ্রিয়ে সে শুধু অনুভব করে বেগনি বিষণœতা ছড়িয়ে বিজ্ঞাপনের মেয়েটি কী যেন বলতে চায় তাকে। বর্ণমালার ভাষায় কিছুই হৃদয়ঙ্গম করতে পারছে না সে। তার অতীন্দ্রিয় অনুভূতি জুড়ে খেলা করে চলছে এক অপার্থিব মোহমায়া। ধীরে ধীরে অমর্ত্য মৌতাতে মেতে ওঠে প্রেমরহিত রাশেদের উড়– উড়– মন।
ইন্দ্রজালিক আকর্ষণে অলৌকিক আবেশে আ”ছন্ন আধা-বোহেমিয়ান রাশেদ। মোহগ্রস্তের মতো দ্র“তপায়ে অগ্রসর হতে থাকে রাস্তার ওপাশের বিলবোর্ডের দিকে। অন্যমনস্কতায় ম্যানহোলের উঁচু ঢাকনায় হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় সে। উঠে দাঁড়িয়ে একদৌড়ে চলে যায় মেয়েটির কাছে। বারবার উঁকি মেরে মডেলের চৌম্বক চোখগুলো ছুঁতে চেষ্টা করে। প্রতিবারই অল্পের জন্য নাগাল পায় না খর্বকায় রাশেদ। পরম মমতায় হাত বুলাতে থাকে পরমাসুন্দরীর গোলাপি ঠোঁটে। ঠোঁটযুগলে যেন মৃদুমধুর কাঁপন জেগে ওঠে। হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায় শিহরিত রাশেদের।
অ¯ি’রতায় কিছুণ দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়ার বেলুন উড়ায় সে। লম্বা লম্বা নিঃশ্বাস ছাড়ে। কাঁধ থেকে ঝোলা নামিয়ে বিলবোর্ডের নিচে রাখে। স্ফীত ঝোলাটার ওপর দাঁড়ায় দু-পা তুলে। মেয়েটির কোমল কর“ণ চোখ দুটি স্পর্শ করে সন্তর্পণে। সাথে সাথে চোখের তারায় কাঁপন জাগে। ঠোঁটেও হাসির ঝিলিক ফোটে। পাতলা ওড়নায় ঢাকা মেয়েটির বুক থিরথিরিয়ে নড়ে ওঠে। নারীভীর“ রাশেদ নিঃশব্দে পিছিয়ে আসে পাছে মেয়েটি তাকে বাজে মানুষ ভেবে বসে।
সদ্য সিদ্ধিসেবী রাশেদ ম্যানহোলের ঢাকনায় সটান দাঁড়ায়। ঘোরলাগা চোখে দেখতে পায় মেয়েটির ঠোঁটে গোলাপ, চোখে প্রজাপতি। বর্ণিল প্রজাপতিটা উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে নীল গোলাপের ওপর বসছে।
ধোঁয়ার নেশায় র“পের নেশা তীব্রতর হয়ে ওঠে। মডেল মেয়েটিকে ভীষণ ভালো লেগে যায় রমণীসঙ্গবঞ্চিত রাশেদের। এ ভালোলাগা তার ভালোবাসার উৎসমূল থেকে উৎসারিত। দু-হাত বাড়িয়ে ‘এসো’ বলে তারস্বরে মডেলকে কাছে ডাকে সে। মেয়েটির দৃষ্টিপ্রজাপতির পালক খসে পড়ে; হাসিফুলের পাপড়ি ঝরে পড়ে। বিলবোর্ডের বাঁধন ছিন্ন করে আলোর গতিতে নেমে আসে সে। এতে তার সেকেন্ডের হাজার ভাগের এক ভাগও লাগেনি, মনে মনে বলে রাশেদ।
নারীস্পর্শবর্জিত রাশেদ তার পৌর“ষে ভয়ানক কামোত্তেজনা অনুভব করে। ত্বরিতগতিতে নিবিড় আলিঙ্গনে আটকে ফেলে মেয়েটিকে। উতপ্ত চুমু খেতে থাকে চোখে মুখে বুকে। চুম্বনসুখে কতণ যে কেটে যা”েছ একটুও হুঁশ নেই তার। আচমকা মেয়েটি দুর্বোধ্য ধ্বনিতে চিৎকার শুর“ করে দেয়। শঙ্কিত শাহেদ বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে দেয় তাকে।
কোত্থেকে একটা স্কুটার এসে বিলবোর্ডের পাশে থামে। পলায়নপর রাশেদ চড়ে বসে তাতে। চালক জানায় মিটারে যা ভাড়া আসে তারচেয়ে বিশ পারসেন্ট বেশি পরিশোধ করতে হবে। দরাদরির সময় নেই রাশেদের। চালককে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হাত ইশারা করে সে। স্কুটারটি গতি পাওয়ামাত্রই বিজ্ঞাপনের মেয়েটি লাফিয়ে উঠে পড়ে। অজাগতিক কণ্ঠস্বরে বলে, আমার সম্ভ্রম কেড়ে নিয়ে চম্পট দিতে চাও, ওহে লম্পট কোথাকার?
বিশ্বাস করো আমি সেরকম নই। ভালোবাসি তোমাকে। পেতে চাই জীবনেও। অবশ্য তোমার আপত্তি না থাকলে।
তাহলে পালা”িছলে কেন মশাই?
সম্ভবত তোমার চিৎকার শুনে টহল পুলিশ আর বেওয়ারিশ কুকুর ছুটে আসছিল। আমি বোধহয় ভড়কে গিয়েছিলাম। এরপর চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম তুমি কোথাও নাই। ভাবলাম তুমি সত্য নও। হয়তো অলীক মানবী।
তা যাই ভেবে থাকো, আজ ছাড়ছি না তোমাকে। আমাকে তোমার শোবার ঘরে নিয়ে চলো।
কে তুমি না চাইতেই ধরা দাও? যেচে বিলিয়ে দিতে চাও যৌবন তোমার?
তোমার কামনা হতে উঠে আসা এক নারী যার দিকে হাত বাড়ালেই ছুঁতে পারো তুমি। মিলিত হতে পারো যখন খুশি, যত খুশি।
আচমকা মেয়েটি অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। হাস্যতরঙ্গ যেন গলিত লোহা ঢেলে দেয় রাশেদের কানে। বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে সে দেখে মেয়েটির হাতে একটা চকচকে চাকু। চাকুটা আমূল বিদ্ধ করে ফেলে চালকের পিঠে। অথচ চালকের কোনো সংবেদন নেই। মসৃণ গতিতে এগিয়ে নিয়ে যা”েছ বাহনটি।
মেয়েটির অস্বাভাবিকতা ও চালকের নির্লিপ্ততা একদম মনঃপুত হয়নি সংশয়িত রাশেদের। অল্পণ আগে ঘটে যাওয়া অলীক ঘটনাকে দৃষ্টি ও শ্র“তির বিভ্রম বলে মেনে নেয় সে। থমথমে পরিবেশটা সহজ করতে সাধারণ প্রশ্ন করে মোহিনী মেয়েটিকে, কী যেন নাম তোমার?
অনেক নাম আমার। আলেয়া, এলিনা, ঐন্দ্রিলা আরো কত কি।
আমি তোমাকে এলিনা বলেই ডাকব। আ”ছা তুমি মডেলিংয়ে এলে কেন?
পেটের দায়ে, শখের বশে, কেরিয়ারের টানে কিংবা অন্য কারণেও হতে পারে।
মডেলিং ছাড়া আর কী করো এলিনা?
পড়ি বা পড়াই। চাকরি কিংবা সংসার করি। নাচি, গান গাই, ছবি আঁকি অথবা কিছুই করি না। তুমি করোটা কী?
আমি এক অবসরপ্রাপ্ত বেকার। মানে বেকারত্ব থেকে ক’দিন আগে অবসর নিয়েছি। এখন আটটা পাঁচটা কেরানিগিরি করি।
তোমার ফ্রি টাইম কীভাবে পাস করো তুমি?
প্রেমের উপন্যাস পড়ি, নেশাটেশা করি, নীল ছবি দেখি, কল্পনায় মেয়েদের...
লাভার বা গার্লফ্রেন্ড নাই তোমার?
আমি কদাকার বলে মেয়েরা আমার ধারেকাছেও ঘেঁষে না।
সেক্স ওয়ার্কারদের কাছে তো ইজিলি যেতে পারো।
সিফিলিস, গনোরিয়া, এইডসের ভয়ে অনিরাপদ মিলনের কথা ভাবিনি কখনো।
আমাকে ইমপ্রেস করতে অসত্য বলছ না তো?
তোমার মাথা ছুঁয়ে বলছি এ ব্যাপারে একেবারেই অবিজ্ঞ আমি।
আজ রাতেই অভিজ্ঞ হয়ে উঠবে তুমি।
বোটানিকেল গার্ডেন পেরিয়ে যেতে যেতে পুলকিত রাশেদ নিজেকে স্বর্গের উদ্যানে কল্পনা করে। সেখানে এলিনা নামের এক অপ্সরার উষ্ণ সান্নিধ্য পা”েছ সে। নিমেষেই তার সঙ্গে মিলনদৃশ্যে মশগুল হয়ে ওঠে।
কল্পনাপ্রবণ রাশেদের মগ্নতা ভেঙে এলিনা বলে, কাউকে প্রেম নিবেদন করোনি?
সুন্দর মেয়ে দেখলেই আমি প্রেমে পড়ে যাই। তবে নিবেদন করতে পারি না। প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ে অন্তরাত্মা শুকিয়ে যায়।
বুঝলাম, বলে এলিনা অনেকণ চুপচাপ থাকে। মৌনতা ভাঙাতে রাশেদ প্রশ্ন করে, কী ভাবছ এলিনা?
আজ অবধি তুমি কনফার্মড বেচেলর। তা ভেবে বেশ ভালো লাগছে, অবাকও হ”িছ। আজকালকার ছেলেরা তো যৌনতাকে জীবনযাপনের অবি”েছদ্য অংশ মনে করে। নৈতিক অনৈতিকের বাচবিচার ছাড়াই জড়িয়ে পড়ে যৌন সম্পর্কে। নারীদেহকে ওরা জানে প্রেমের আধার হিসেবে। ওদের ধারণা দেহকে ছুঁয়ে ছুঁয়েই সন্ধান মিলবে প্রেমের। ওদের থেকে তুমি অনেকটাই ব্যতিক্রম, তাই না?
ঠিক তা নয়। কিছু মানুষ সুযোগের অভাবে চরিত্রবান থাকে। আমি তাদেরই একজন। আমার দেহকামনা কখনো এতটাই উদগ্র হয়ে ওঠে যে ধর্মে মিলননিষিদ্ধ নারীদের প্রতিও কাতর হয়ে পড়ি। উত্তেজনায় তখন বাথর“মে গিয়ে হাত চালাই।
তবু ভালো যে তুমি ধর্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হও না।
পুর“ষ ও পাঁঠার আচরণ একরকম হলে চলে?
জবাবে এলিনা মৃদু হাসে।
মেঘের গুড়–গুড়– ডাক শুনে ভাববিলাসী রাশেদের মনে হয় এলিনাকে এর আগেও অনেক দেখেছে, তার কণ্ঠস্বরও শুনেছে। কিš‘ কখন, কোথায় ও কীভাবে― স্মরণে আসছে না তার। স্মৃতি হাতড়ে কোনো তথ্যসূত্র না পেয়ে রাশেদ এলিনার প্রকৃত পরিচয় জানতে চায়। সদুত্তর মিলে না। দূরাগত স্বরে এলিনা বলে, যে কোম্পানি আমাকে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছে তাদের নিকট আমার বায়োডাটা জমা আছে। ই”েছ হলে তোমার কাজের ফাঁকে নিয়ে আসতে পার গিয়ে।
কাজ ফাঁকি দিয়ে হলেও কালেক্ট করে নেব। অবশ্যই কালকের মধ্যে।
এজন্য অন্তত আরেকটা আগামীকাল তোমার জীবনে আসতে হবে।
আলাপচারিতার এক পর্যায়ে রাশেদ ল করে এলিনার কণ্ঠস্বর বদলে যা”েছ। তার চেহারাও একরকম থাকছে না। আজগুবি ব্যাপারটা রাশেদের মাথাব্যথা সৃষ্টি করে। ব্যথানাশক টেবলেট কিনতে সে স্কুটার চালককে ফার্মেসির দিকে যেতে বলে। যেতে যেতে চোখ রাখে স্পীডোমিটারে। ঊনত্রিশ কিলোমিটার পেরিয়ে যা”েছ।
রাশেদের বাঁ কাঁধে মাথা রেখে এলিনা বলে, তোমার বয়সও তো ঊনত্রিশ পাস।
বিস্মিত রাশেদ কিছু বলার আগেই একদল ছিনতাইকারী পিস্তল উঁচিয়ে পথ আগলে দাঁড়ায়। স্কুটার থামিয়ে রাশেদকে নামিয়ে মানিব্যাগ কেড়ে নেয়। স্কুটারঅলার ভাড়া মিটিয়ে ওরা অদৃশ্য হয়ে যায় অন্ধকারে। যাওয়ার আগে তাকে হুঁশিযারি সংকেত দেয়, চিলাচেলি করলে তোর কলা কাইট্যা ফুটবল খেলমু। অথচ কী আশ্চর্য, বদ লোকগুলো কিছুই করেনি এলিনাকে। এমনকি একবার ফিরেও তাকায়নি তার দিকে। এলিনাও ছিনতাইয়ের ঘটনায় একদম নির্বিকার। আয়েশি কায়দায় হাই তোলে। স্ট্রীট বাল্বের আলোয় কব্জিঘড়িতে সময় দেখে। রাশেদও চোখ ফেরায় ঘড়িতে। সময় উধাও হয়ে গেছে। তবু সে অনুমান করতে পারে রাত পোহাবার বেশ দেরি আছে।
রাশেদের বাসা আর তেমন দূরে নয়। পকেটে ভাড়া না থাকায় বাকি রাস্তাটা হেঁটেই যেতে চায় সে। রাজি হয় না নিশুতিরাতের সাথিটি। একটু সামনে গিয়ে যানবাহন খোঁজে রাশেদ। একটাও নেই। এলিনার গা ঘেঁষে অপোয় থাকে সে। একটা রিকশা দেখে হাতের ইশারায় কাছে ডেকে আনে। তাতে উঠে এলিনার কোমর ধরে বসে।
অলিগলি পেরিয়ে লক্কড়ঝক্কড় রিকশাটি এগিয়ে চলছে খটরমটর শব্দে। নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে রাশেদ। তার দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে এলিনা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। নিঃশ্বাসের হাওয়ায় ঝড় নামে। বাতাসের প্রবল প্রবাহে রিকশার গতি বাড়ে। উলটে যেতে চা”েছ মাঝেমধ্যে।
ধনুকের মতো বেঁকে ইনজিনবিহীন চক্রযানকে প্রাণপনে টেনে চলছে বুড়ো রিকশাঅলা। অল্পণেই তার আরোহীকে পৌঁছে দেয় নিরাপদ গন্তব্যে।
ঘরের তালা খুলতে খুলতে রাশেদ বলে, চাচা বারান্দায় চলে আসুন। অপো কর“ন একটু। ঝড়টা থামুক।
ঘরে ঢুকে রাশেদ ঝাড়– টেনে বিছানা ঝাড়তে থাকে। পোশাক বদলে এলিনাকে হাতমুখ ধুয়ে আসতে বলে। পেছনে তাকিয়ে দেখে মেয়েটির গায়ে একটা সুতা পর্যন্ত নেই। বাস্তবে বিবস্ত্র নারীদেহ এর আগে দেখেনি সে। বিব্রত রাশেদ মশারি খুলে বীভৎস শরীরটা ঢেকে দেয়। বিবমিষা নিয়ে দৌড়ে যায় বেসিনের কাছে। একগলা বমি করে গলগলিয়ে।
ফিরে এসে রাশেদ প্রতিদিনের অভ্যেসমতো দিনলিপি লেখতে বসে। আজকের রাতটাই আমার জীবনের সবচে’ ভয়ংকর সুন্দর রাত। অলৌকিক এমন কিছু ঘটেছে এবং ঘটছে যা সর্বকালের...
কালো কালো বর্ণগুলো সাদা পিঁপড়েতে রূপান্তরিত হ”েছ। খাতার পাতা থেকে পিলপিল পায়ে হেঁটে যা”েছ এলিনার দিকে। যেতে যেতে দলছুট দুয়েকটি পিঁপড়ে উড়াল দি”েছ জোনাকি হয়ে।
চমকিত রাশেদের ধরা মাথাটা চক্কর দিয়ে ওঠে। কীসব সে দেখছে এবার!
মোহনীয় মেয়েটি বিপৎসঙ্কুল হয়ে গেছে। তার চোখের মাঝে ভিমর“লের হুল। ঠোঁটের ভাঁজে ধুতরার ফুল। বুকের খাঁজে ইস্পাতের শূল।
ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যটাকে আড়াল দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে ভয়ার্ত রাশেদ। একলাফে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ভাবে। পেছন থেকে সামনে এসে এলিনা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।
ঝড়ো হাওয়ায় রাশেদের আর্তস্বর ভেসে আসে।
ইতস্ততায় দরজার দিকে এগিয়ে যায় বুড়ো রিকশাঅলা। একটু দেরিতে হলেও ভেজানো দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে পড়ে। তার আরোহী যুবক চিৎ হয়ে মেঝেতে পড়ে রয়েছে। রক্তমাখা মুখে, অচেতন অব¯’ায়।
রিকশাচালক হাত ধরে নাড়ীর স্পন্দন অনুভব করে। বুকে কান পেতে হৃৎকম্পন শোনে। সে বুঝতে পারে ধুকধুকিয়ে বেঁচে আছে মানুষটা। তার চোখে মুখে জলের ঝাপটা মারে সে।
রাশেদের গলায় গোঙানির আওয়াজ। একবার চোখ মেলে সে শুধু একশব্দের একটা নাম উ”চারণ করে, এলিনা!