চলন্ত রিক্সায় বসে প্যাডেলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিশাদ।নিশাদের পাশে বসা রিচি তাকিয়ে আছে নিশাদের দিকে। রিচির সাথে নিশাদের সম্পর্ক কি তা জানা যায়নি। তবে তারা প্রেমিক প্রেমিকা নয়। আর যদিও বা প্রেমিক প্রেমিকা হয় তাহলে তারা আধুনিক ভালবাসার সংবিধান এড়িয়ে চলে।
- নিশাদ তুমি কি রিক্সা চালানো শিখছো?
- উহু।
- তাহলে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন!
- ভাল লাগছে তাই।
- পাশে আমি বসে আছি, আমার চেয়েও বেশি ভাল লাগছে ওই প্যাডেল!
- হুম।
- আমি নামবো। চাচা রিক্সা সাইড করেন।
রিচি রেগে গেছে। সামান্য একটা রিক্সার প্যাডেলকে এখন তার শত্রু মনেহচ্ছে। এটা স্বাভাবিক, পছন্দের মানুষ যদি একটি গাড়ির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেয়েদের চোখে তখন ওই গাড়িও শত্রু হয়েযায়।
নিশাদের হাতে একটি লাল রঙের খাম। ভেতরে চিঠি আছে কি না জানা যায়নি।হয়তো নেই, যদিও বা থাকে তাহলে সেটি কোন প্রেমপত্র হতে পারেনা।নিশাদ ভিতু ছেলে, প্রেমপত্র লিখতে সাহস লাগে।রিচি হাত থেকে খামটা কেড়ে নিয়ে নেমে গেল। ভেবেছে নিশাদ হয়তো তাকে উদ্দেশ্য করে কিছু লিখেছে। রিচি খাম খুললো। ছোট একটি কাগজে লেখা -
" যান্ত্রিকতার ঢেউয়ে ডুবেগেছে মনুষ্যত্বের রবি। চারদিকে ঘুটঘুটে অসভ্য অন্ধকার। মরিচা ধরেছে ভালবাসাবাদীদের মনে, ঘুনে খেয়ে ফেলছে সভ্যতা।আধুনিক ভালবাসার সংবিধানের বিরুদ্ধে অমরন অনশনে থাকা ভালবাসাবাদীরা মুখে খাবার তুলে নিয়েছে।আমিও তাদেরই দলে। "
রিচি কিছুই বুঝলো না। সব তার মাথার ওপর দিয়ে গেল।কাগজটা মুচড়ে ফেলেদিল রাস্তায়।নাগরিক হাওয়ায় গড়াতে লাগলো ভারি ভারি কিছু কথা। আসলে মেয়েরা বোঝে না, বোঝার চেষ্টাও করেনা ।