"নবী কারীম (সাঃ) এরশাদ ফরমাইয়াছেন যে ব্যক্তি কোন অন্যায় কাজ হইতে দেখে, যদি হাত দ্বারা বন্ধ করিবার শক্তি রাখে তবে উহাকে হাত দ্বারা বন্ধ করিয়া দিবে। যদি এই পরিমাণ শক্তি না রাখে তবে জবান দ্বারা উহার প্রতিবাদ করিবে। যদি এই ক্ষমতাও না থাকে তবে অন্তরে উহাকে ঘৃণা করিবে। আর ইহা ইমানের সর্বনিম্ন স্তর।(মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)"
জামাত ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের, তাদের বাপ-ভাইদের পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছে। বাংগালী মা-বোনদেরকে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছে। জামাতের যুদ্ধাপরাধ দিনের আলোর মত পরিষ্কার। কিন্তু জামাতি ব্লগাররা প্রায়ই বলে যে জামাত নাকি কোন যুদ্ধাপরাধ করেনি। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে জামাত শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। জামাতিরা বলে যে বংগবন্ধু নাকি তিন লক্ষ বাংগালী হত্যাকান্ড বলতে গিয়ে ভুলে ত্রিশ লক্ষ বলে ফেলেছে। এটা যে কত বড় মিথ্যা সেটার জন্য লাইটহাউজের ব্লগে যুক্তিন্ঞের লেখা "ত্রিশ লক্ষ শহীদ: মিথ নাকি বাস্তবতা" পোস্টটা দেখুন। কিন্তু তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে তিন লক্ষ হত্যাকান্ড ঘটেছে। এবং আরো ধরে নিলাম এই হ্ত্যাকান্ডে জামাতের কোন সহযোগীতা ছিলনা। তার মানে জামাতিদের মতে:
১. মুক্তিযুদ্ধে জামাতিদের বিরোধিতা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, জামাত কোন যুদ্ধাপরাধ করেনি।
২. মুক্তিযুদ্ধে তিন লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছিল পাকিদের দ্বারা, সেখানে জামাতিরা তাদেরকে কোন সাহায্য করেনি।
এখন যদি এরকম ধরেই নিই, তাহলে কি দাঁড়ায়? জামাত ৭১ সালে মানব ইতিহাসের অন্যতম বড় অপরাধের/অন্যায়ের সময় অন্যায়ের পক্ষে নিয়েছে। তারা দলগতভাবে অথবা জামাতিদের বড় নেতারা কেউই ব্যক্তিগতভাবে এরকম লার্জ-স্কেলের একটা অন্যায়ের হাত দ্বারা প্রতিরোধ করেনি, জবান দ্বারা প্রতিবাদ করেনি। এমনকি অন্তরেও ঘৃণা পোষণ করেনি, এখনও করেনা। হাত দ্বারা প্রতিরোধ করেনি সেটা স্পষ্ট, কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি। জবান দ্বারা প্রতিরোধ করেনি সেটাও স্পষ্ট, কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হত্যাকান্ডের বিপক্ষে কোন বক্তব্য-বিবৃতি দেয়নি। অন্তরে ঘৃণা পোষণ করেনি সেটাও স্পষ্ট, কারণ কাউকে ঘৃণা করলে আপনি তার সাথে বসে নয়মাস যাবৎ তার পক্ষে থাকেননা। শুধু এটাই নয়, মুক্তিযুদ্ধের পরেও কোন সময়ই তারা ৭১-এ তাদের ভুমিকার জন্য ক্ষমা চাইনি। তার মানে তারা এখনও সেই অন্যায়কে ঘৃণা করেনা। মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ সহীহ হাদিস গ্রন্থ বলে জামাতিরাও মেনে নেয়, এমনকি উপরের হাদিসটা শিবিরের পাঠ্যসূচীতেও আছে। তাহলে এটা বুঝা যায় জামাতিদের নেতাদের ইমান খুব বেশির বেশি হল সর্বনিম্ন পর্যায়ে। সর্বনিম্ন পর্যায়ের ইমানদ্বার লোকরা কিভাবে ইসলাম আনবে? ইসলাম আনার মহান কর্মটির নেতারাই যদি সর্বনিম্ন ইমানের অধিকারী হয় তাহলে ইসলাম কিভাবে আসবে? নেতাদেরই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে পাতিনেতা, কর্মী এদের ইমানের অবস্থা কি?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:১১