somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর দ্বিতীয় টেস্টটিউব বেবী এবং এক বাঙ্গালী ডাক্তারের আত্মহত্যা

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গুটি গুটি পায়ে গ্যালিলিও এসে বিচারকক্ষে প্রবেশ করলেন।কক্ষটিতে বিচারকদের আসনে বসে আছেন ধর্মীয় যাজকরা।বাইরে অনেক মানুষ এসে জড়ো হচ্ছে।বিচার শুরু হলো। প্রধান ধর্মযাজক চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন।গ্যালিলিওর দিকে আঙ্গুল তাক করে জিগ্যেস করলেন,'এই মহাবিশ্বের কেন্দ্র হলো পৃথিবী।সকল গ্রহ-নক্ষত্র এমনকি সূর্যও একে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। আপনি কি বাইবেলের এই মহাসত্যকে অস্বীকার করছেন?"।গ্যালিলিও তাঁর মাথাটা উঁচু করলেন।শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ প্রধান যাজকের দিকে।হঠাৎ তাঁর চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো, ভ্র জোড়া কুঁচকে ফেললেন।কি যেন ভাবলেন।এরপর মাথাটা নীচের দিকে নামিয়ে কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে আস্তে আস্তে বলে উঠলেন,'না'।যাজকদের মধ্যে বিজয়ের ক্রুর হাসি দেখা দিলো।দশর্কদের মধ্যে মৃদু গুজন উঠলো। একজন কে জানি বলে উঠলো, 'সত্যকে হত্যা করা হলো'।

ঠিক একই রকম আরেকটি ঘটনা ঘটেছিলো কলকাতার অদূরেই।১৯৭৮ সালের ১৮ই নভেম্বর।পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে গঠিত একটি 'বিশেষজ্ঞ কমিটি'কে নিযুক্ত করলেন ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় নামক এক অভিযুক্তের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য।তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি দাবি করেছেন তিনি দূর্গা নামে এক টেস্টটিউব বেবির স্থপতি।দ্বিতীয় অভিযোগ তিনি তাঁর গবেষণার কথা দপ্তরের আমলাদেরকে আগে না জানিয়ে কেন মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন?কিভাবে তিনি তাঁর সার্দান অ্যাভিনিউর ছোট ফ্ল্যাটে সামান্য কিছু উপকরন আর একটা ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করে এমন একটি অসম্ভব কাজকে সম্ভব করলেন যেখানে অন্যরা গবেষণার সকল উন্নত সুযোফ-সুবিধা পেয়েও সে চিন্তা করতে পারছেননা?? আর সবচেয়ে বড় অভিযোগ এই যে, তিনি কারো কাছে মাথা নোয়াতেন না।এই বিশেষজ্ঞ কমিটির সভাপতি ছিলেন একজন রেডিওফিজিসিস্ট।কমিটির সদস্যদের মধ্যে একজন গাইনোকলোজিস্ট,একজন ফিজিওলোজিস্ট আর একজন নিউরোফিজিওলোজিস্ট ছিলেন।মজার বিষয় হলো এদের কারোরই আধুনিক প্রজনন পদ্ধতি(আইভিএফ-ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিলোনা।একজন বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন করলেন,'আপনি ওই ভ্রূণগুলো কোথায় রেখেছিলেন?।ডাঃ মুখোপাধ্যায় জবাব দিলেন,'সীল করা অ্যাম্পুলের মধ্যে'।উল্লেখ্য অ্যাম্পুল হলো ইনজেকশনের ওষুধ রাখার জন্য ছোট কাচের বোতল।ফের প্রশ্ন করা হলো,'অ্যাম্পুলটাকে সীল করেছেন কিভাবে?'।জবাব এলো,' সাধারণভাবে যেভাবে করে। তাপ দিয়ে'।এভাবেই শুরু হলো জেরা-পাল্টা জেরা।কিছু অবান্তর ভিত্তিহীন, গবেষণার সাথে সম্পর্কহীন প্রশ্ন করে তাঁকে অপমানের চুড়ান্ত করা হলো।বলা হলো,'ওহ-তার মানে আপনি বলতে চাইছেন তাপের কারনে ভ্রুনগুলো নষ্ট হয়ে যায়নি??
এই কমিটি কি রায় দিবে তা যখন পূর্বনির্ধারিতই তখন এটা আর বলা প্রয়োজন নেই যে এ সব কিছুই আমলাতান্ত্রিক কূটনৈতিক চালের কারনে হচ্ছে।আর সেজন্য কমিটি চূড়ান্ত রায় দিলো যে,''Everything that Dr. Mukhopadhyay claims is bogus.''


চিত্রঃ ডাক্তার সুভাষ মুখোপাধ্যায়

ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের অধীনে টেস্টটিউব বেবির জন্মের মাত্র ৬৭ দিন আগে ১৯৭৮ সালের ২৫ জুলাই রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ইংল্যান্ডের ওল্ডহ্যাম জেনারেল হাসপাতালে পৃথিবীর প্রথম টেস্টটিউব বেবী লুইস ব্রাউন জন্ম নেয়।স্থপতি ছিলেন রবার্ট এডওয়ার্ডস এবং প্যাট্রিক স্টেপটোএ প্রক্রিয়ায় তাঁরা ল্যাপোরোস্কোপি যন্ত্রের সাহায্যে ডিম্বাণু সংগ্রহ করেন। এর আগে দীর্ঘ সময় নিয়ে ডিম্বাণুর বিভাজন ও পরিস্ফুটন পর্যবেক্ষন করেন।এরপর কর্তন প্রক্রিয়ায় ডিম্বাণু সংগ্রহ করে একটা ডিস্কে শুক্রাণুর সাহাযে সেটাকে নিষিক্ত করেন।এরপর এ থেকে ভ্রূণ উৎপন্ন হলে সেটাকে আবার জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করেন।


চিত্রঃ ডাঃ প্যাট্রিক স্টেপটো এবং ডাঃ রবার্ট এডওয়ার্ডস

কিন্তু ডাঃ মুখোপাধ্যায় এক্ষেত্রে ল্যাপোরোস্কোপি যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই ডিম্বাণু সংগ্রহ করেন।এজন্য তিনি এক প্রকার হরমোনের সাহায্যে ডিম্বাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটান এবং ওখানেই এর বিকাশ সাধন করেন। এর পর ছোট একটা অপারেশনের সাহায্য নিয়ে ডিম্বাণু সংগ্রহ করেন।আর একারণে গর্ভধারণের সম্ভাবনাও অনেকাংশে বেড়ে যায়।
কিন্তু সহকর্মী এবং সরকারের রোষানলে পড়ে তাকে বরণ করে নিতে হলো করূন পরিণতি। প্রথমে তাকে বদলী করে দেয়া হলো কলকাতা থেকে বাঁকুড়ার একটি হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে যাতে তিনি আর পরবর্তী গবেষণা করতে না পারেন।এরপর হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কলকাতায় ফিরে এলেন।চারতলার সিঁড়ি বেয়ে তাঁকে রোজ কাজ করতে হতো। জাপান থেকে তাঁর কাজের উপর একটা সেমিনারে বক্তৃতা করার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন।কিন্তু তাঁকে যেতে দেয়া হয়নি। চুড়ান্ত অপমান,উপহাস আর লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করার পর ১৯৮২ সালে ১৯শে জুন এই মহান প্রতিভা নিজ বাসভবনে আত্মহত্যা করেন।আরো একবার যেন সত্যকে হত্যা করা হলো।
ভারতের সরকার স্বীকৃত প্রথম টেস্টটিউব বেবীর স্থপতি হলেন ডা: টি এস আনন্দ কুমার যিনি ছিলেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিচার্সের ডিরেক্টর।১৯৮৬ সালের ১৬ই আগস্ট তাঁর অধীনে জন্ম নেয় ভারতের প্রথম( হায়! পড়ুন দ্বিতীয়) টেস্টটিউব বেবী হর্ষ।১৯৯৭ সালে ডাঃ আনন্দ একটা বিজ্ঞান সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন।তখন ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের গবেষণার সকল কাগজপত্র তাঁর হাতে তুলে দেয়া হয়।নিখুঁতভাবে যাচাই-বাছাই করে এবং সেই টেস্টটিউব বেবী যার জন্ম হয়েছিল ডাঃ সুভাষের অধীনে-দূর্গা সেই শিশুটির মা-বাব্র সাথে আলাপ-আলোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়-একজন বাঙালী- ছিলেন ভারতের প্রথম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় টেস্টটিউব বেবীর স্থপতি।ডাঃ টি সি আনন্দ কুমারের উদ্যোগেই তিনি পরে ভারতবর্ষের স্বীকৃতি পান।


দূর্গা-যার মা বাবার দেয়া নাম-কানুপ্রিয়া আগরওয়াল এখন দিল্লীতে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মরত আছেন।তিনি তাঁর ২৫তম জন্মবার্ষিকীতে প্রথম মিডিয়ার সামনে আসেন এবং নিজের জনক ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ব্যাপারে কথা বলেন।সেইসাথে এটাও প্রমান করে দেন যে ডাঃ সুভাষের দাবী নিতান্তই অমূলক ছিলোনা-বোগাস ছিলোনা।
ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন প্রকাশিত মেডিক্যাল ‘ডিক্সেনারী অফ মেডিক্যাল বায়োগ্রাফি’ প্রকাশিত বইতে পৃথিবীর ১০০ দেশের ১১০০ মেডিক্যাল সায়েন্টিস্টের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে যারা এই চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নয়নে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন।আর এই তালিকায় ডাঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের নামও রয়েছে।

যুগে যুগে মানুষের কাজের স্বীকৃতি পেতে মানুষকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে,বরণ করে নিতে হয়েছে লাঞ্ছনা,অপমান আর উপহাস-ব্যঙ্গবিদ্রূপ।যেকোন নতুন কাজের শুরুতেই সমাজ বাধা দিয়ে এসেছে।কাজের যথাযথ স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে।আর আমরা বাঙালীরা এই কাজে অনেকটাই এগিয়ে।কি সাহিত্য কি বিজ্ঞান কি অন্য কোন বিষয়-সবক্ষেত্রেই আমরা জীবদ্দশায় কৃতী ব্যক্তির সম্মান দিতে অপারগ থেকেছি।ডাঃ সুভাষের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।উল্লেখ্য,ডাঃ সুভাষের কাজের উপর ভিত্তি করে গুণী পরচালক তপন সিনহা ১৯৯০ সালে একটি সিনেমা বানিয়েছেন।নাম-'এক ডাক্তার কি মউত'।এই সিনেমার জন্য তিনি বেস্ট ডিরেকশনের অ্যাওয়ার্ড পান।


চিত্রঃ 'এক ডাক্তার কি মউত' সিনেমার একটি দৃশ্য

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের প্রথম টেস্টটিউব বেবীর জন্ম হয় ২০০১ সালে ২৯মে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে।একই সাথে হীরা,মণি আর মুক্তা নামে তিনটি শিশুর জন্ম হয়।ডাক্তার ছিলেন পারভীন ফাতেমা।


চিত্রঃ মা-বাবার কোলে হীরা,মণি আর মুক্তা
আর ২০১০ সালে স্যার রবার্ট এডওয়ার্ডকে ইন-ভিট্রো পদ্ধতি উদ্ভাবন করে চিকিৎসাশাস্ত্রে অবদান রাখার জন্য নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।

বিঃ দ্রঃ ইহা The Great Scientist Dr.Subash Mukhopadhyay লেখাটির স্বেচ্ছাচারী অনুবাদ।সাথে অন্যান্য সূত্র থেকেও সাহায্য নিয়েছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৫
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×