তসলিমা নাসরিনকে একজন নারীবাদী লেখিকা হিসেবে জানি। তার বই পড়ি, ফেসবুক স্ট্যাটাস পড়ি এবং সে জায়গাটি থেকেই তাকে সম্মান করি! কিন্তু তার মানে এই নয় যে তিনি যখন যাকে ইচ্ছা যা তা বলবেন। তার কাছ থেকে কাদের সিদ্দিকীর বিষয়ে এমন মন্তব্য আশা করিনি। তসলিমা নাসরিন মুখে ও কাগজে-কলমে অনেক দেশপ্রেমের কথা বলেছেন অথচ কখনও প্রমাণ দিয়েছেন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবে? এখন হয়তো বলবেন, সুযোগ পায়নি। কিন্তু যারা মুখে ও লিখে অনেক বড় বড় কথা বলে তাদের যুদ্ধের ময়দানে পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় বইয়ের ঘরে মদের টেবিলে......! কিন্তু কাদের সিদ্দিকী নিজে যুদ্ধ (মুক্তিযুদ্ধ) করেছেন, অন্যকে উদ্বুদ্ধ করেছেন এমনকি অন্যকে সাহায্য করেছেন। আর তাঁকে অপমান করে আজ তসলিমা সব মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করেছেন। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তসলিমা নাসরিন বলেছেন, " কাদের সিদ্দিকী খালি খালি কৃষক শ্রমিক পারটি খুলেছেন কেন? জামাতে ইসলামিতে জয়েন করলেই তো পারেন! দেখতে তো লাগে পুরো জামাত নেতা, শরীর ভরতি দাড়ি টুপি তসবিজ তাবিজ আতর সুরমা। শুনেছি আবে জমজমের পানি ছাড়া নাকি অযু করেন না। আল্লাহ বিল্লাহ তো নিরবধি করেই যাচ্ছেন। জেহাদি জামাতিদের ফাঁক পেলেই সাপোরট করছেন। তবে আর দেরি কেন বা দ্বিধা কেন। শুভস্য শীঘ্রম।" ভালো কথা কিন্তু এও মনে রাখা প্রয়োজন আপনিও একজন জামায়াত নেতার সন্তান! কারণ আপনার মা-বাবা পাঁচ ওয়াক্ত নামজ পড়তেন এবং নিয়মিত কোরআন তিলোয়াত করতেন। যা আপনার লেখা থেকে জানতে পারি। আমাদের বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নিয়মিত তজবি ও নামাজ পড়েন তার মানে এই নয় তিনি জামায়াত করেন। অতএব কথা বললে এমন কথা বলবেন যার একটা ভিত্তি থাকে। আপনাদের মতো লেখিকাদের কাছ থেকে এমন ওজনহীন কথা একেবারেই আশা করি না।
আপনার বর্তমান লেখাগুলোতে সাম্প্রতিক বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে...... যা সত্যি ইতিবাচক। কিন্তু আপনি যে সরকারের পক্ষে গীত গেয়ে যান না কেন আপনাকে কেউ-ই দেশে ঢুকতে দেবে না। যারা আজ ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলে আজ তারা-ই বেশি ধর্মকে আঁকড়ে ধরে আছে ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য। এও বুঝতে হবে। দ্বিতীয় মেয়াদে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে আপনি দেশে আসার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু কই, দেশে আসার অনুমতি পেয়েছেন? পাননি এবং পাবেনও না। তবে আপনি কাকে মৌলবাদী (আপনাদের ভাষায়) থেকে বাদ দিবেন, কাকে আপনাদের মতো কথিত দেশপ্রেমিকদের দলে রাখবেন? ও হ্যাঁ! দাড়িগোঁফ থাকলেই সে জামায়াত নেতা হয় না যদি হতো তবে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহও জামায়াতের নেতা হতো। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো নয়। পথে ঘাটে প্রতিদিন মানুষ পুড়ছে, মানুষ মরছে যা একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে কাদের সিদ্দিকী চোখে টিনের চশ্চমা দিয়ে বসে থাকতে পারিনি। রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন তবে কোনো সহিংস বার্তা নিয়ে নয়, শান্তির বার্তা নিয়ে। যা আপনার, আমার মতো নির্বোধ, মুর্খ, গোঁয়াররা যা নিয়ে আসতে পারিনি। লিখলেই হয়তো জনপ্রিয় ও বড় লেখক হওয়া যায় কিন্তু প্রকৃত দেশপ্রেমিক হওয়া যায় না। আপনি লেখেন, ভালো থাকেন সেই কামনাই করি কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটূক্তি থেকে নিজেকে সংযত রাখবেন এই আশাটুকু আপনার কাছে রাখি।