somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাই গণমুখী রাজনীতি

০৮ ই মে, ২০১১ রাত ১২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অতীত থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত রাজনীতিই মানব সভ্যতা ও সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। কিন্তু এই রাজনীতিই কখনই সম্পূর্ণ ভাবে মানুষের কথা বলেনি। রাজা-রানিদের কাল তো ছিল প্রকাশ্য স্বৈরতন্ত্রের যুগ। রাজার কথাই ছিল আইন,ফলে রাজাদের রাজনীতি গণমুখী হবার কোন সুযোগ ছিল না। ইতিহাসে কিছু জনহিতৈষী রাজাদের কথা পাওয়া গেলেও তা ছিল হাতে গোনা কয়েকজন।
আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জায়গা করে নিয়েছে গণতন্ত্র। কিন্তু ভয়ঙ্কর কথা হল এই গণতন্ত্রই গণ-মানুষের কথা বলে না। গণতন্ত্রের রাজনীতিতে আজও উপেক্ষিত মানুষের ইচ্ছা আর অধিকার।
গণতন্ত্রের রাজনীতিতে ক্ষমতায় আসাই দলগুলোর মুখ্য উদ্দেশ্য। ক্ষমতায় আসার জন্য তারা ধারণ করে নানা আদর্শ আর তত্ত্ব। এসব আদর্শ আর তত্ত্ব গুলো কি মানুষের পছন্দের কিনা তা কখনও যাচাই করে দেখে না। আবার কোন কোন দলের সত্যিকার আদর্শ বলে কিছু নেই। এমন আদর্শের কথা বলে যার অনুসরণ নিজেরাই করে না। যেমন কিছু দল ধর্ম নিরপেক্ষতাকে তাদের আদর্শ হিসাবে প্রচার করে। অথচ এই ধর্ম নিরপেক্ষতাকে এ দেশের মানুষ কখনই তাদের আদর্শ হিসাবে মেনে নেই নি। দেখা যায় নির্বাচনে জেতার জন্য এসব দল ধর্মকে ব্যবহার করে। মূলত দল গুলো নির্বাচনে জিতাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। জনগণের ইচ্ছার কোন দাম নেই। ভোটে জিতার জন্য কথার ফুলঝুরি দিয়ে মানুষের মনকে ভুলায়। এখন রাজনীতি মানেই ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি। জনগণ যত বেশি ঘুমিয়ে থাকবে গণতন্ত্র-পন্থীদের তত বেশি লাভ। তাই দেখা যায় আমাদের মত তৃতীয়বিশ্বের দেশ গুলোতে সরকার কখনই জনগণকে সব জানতে দেয় না কিংবা শিক্ষিত হতে দেয় না। কারণ শিক্ষিত হলেই জনগণ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবে। সাথে সাথে রাজনীতিকে এমন একটি দুষ্ট চক্রের মধ্যে ফেলে দেয় যাতে কোন ভাল নেতৃত্ব গড়ে না উঠে।
আমরা চাই গণমুখী রাজনীতি। জনগণের আশা আর ইচ্ছা নির্ভর রাজনীতি। চাপিয়ে দেয়া রাজনীতি নয় বরং জনগণের পছন্দের আদর্শই হবে রাজনীতির আদর্শ।
এমন রাজনীতি যা মানুষের কথা বলবে, জাতি ও দেশের মঙ্গলের লক্ষ্যে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল স্বাধীনতার আগে এরকম রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক দল থাকলেও স্বাধীনতার পর সব যেন হাওয়া হয়ে গেল। কতগুলো বাতিল আদর্শকে মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া হল কিংবা চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করা হল। তারপর এক সময় প্রতিষ্ঠা পেল গণতন্ত্র। কিন্তু তা শুধু শাসক পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে থাকল। বাংলার মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হল না।
গণতান্ত্রিক দল গুলোর মধ্যে নেই গণতন্ত্রের চর্চা। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি, বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব, দুর্নীতিবাজ আর সন্ত্রাসীদের অভয় আশ্রম হয়ে উঠেছে দল গুলো। এরা আমাদের ঐতিহ্যবাহী ছাত্ররাজনীতিকে করেছে কলুষিত।
আমাদের দেশ আজ বেকারত্ব, দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি আর সন্ত্রাসের কবলে। ন্যায় বিচার আজ সুদূর পরাহত।
জনগণের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। শিক্ষাব্যবস্থায় চরম অচলাবস্থা। সরকার গুলো এসব সমস্যা সমাধানে কি করেছে? দলগুলো নির্বাচনে জেতার জন্য মাঝে মাঝে লোক দেখান কিছু করে। কিন্তু সমস্যা সমাধানে সরকারগুলো ধারাবাহিক কিছু কি করেছে কখনও? এক সরকার এসে আগের সরকারের উপর সব দোষ চাপায়, কিন্তু তারা কি করল তা কি খতিয়ে দেখে? যা করে তার চেয়ে বেশি বকে। আর বিরোধীদল সরকারের সব কাজেই বিরোধিতা করে। জনগণের সমস্যা সমাধানে কোন ঐক্যে এরা পৌছাতে পেরেছে কি কখনও? না পারেনি।
মূলত গণবিমূখী এসব দলের আদর্শ একটাই তা হল, ক্ষমতায় যাও আর তা ব্যবহার কর। রাজনীতি তাদের কাছে অর্থ উপার্জনের এক শটকার্ট রাস্তা। মানুষের কোন আস্থা নেই এসব গণবিমূখী দলগুলোর উপর। শুধু বিকল্পের অভাব।
বিকল্প গণমূখী রাজনৈতিক আদর্শ আর গণমূখী রাজনৈতিক দল এখন এদেশের জন্য অত্যাবশকীয়। এমন দল যার আদর্শ নির্ভর করবে এদেশের মানুষের মতের উপর, যা হবে গণমানুষের দল, যারা রাজনীতির নামে কোন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসবে না।
আসুন বিকল্প গণমূখী রাজনৈতিক আদর্শ আর গণমূখী রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হই।

“আমাদের দাবী- ন্যায অধিকার, ন্যায় বিচার, উন্নায়ন”।

Facebook Page

আমার আগের লেখা গুলোঃ
২. বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি – সময়ের দাবি।

১.গণতান্ত্রিক স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি চাই

৭টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×