অবশেষে শখের সাংবাদিকতা ছেড়েই দিলাম। আলাদা মর্যাদা পাওয়ার তৃষ্ণা আর সৃজনশীলতার নেশায় ধীরে ধীরে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছিলাম। কেবল পেশা নয়, দেশ জাতির সেবাÑএই মানসিকতা নিয়ে কাজ করেছি, সত্য অনুসন্ধান করেছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরেছি, নিপীড়িত-ষোষিতের পাশে দাঁড়িয়েছি। কারণ, আমরা যে জাতির বিবেক। সেই ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে আজ অনেকদিন হয়ে গেল। এরই মধ্যে দেশ-জাতির যেসব সমস্যা নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন করেছিলাম, কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে তার অনেকগুলোই হয়ত সমাধান হয়ে গেছে। আমার শৈশবের নদী মাতামুহুরীতে অনেক জল গড়িয়ে গেছে, নতুন চর জেগেছে, কূল ভেঙ্গেছে, গতি পরিবর্তন হয়েছে। সময়ের ভেলায় আরো অনেককিছুই পরিবর্তন হয়েছে। জাতির বিবেক হিসেবে এসবে আমার কি ভূমিকা ছিল জানিনা কিন্তু আমার জীবনের কোন পরিবর্তন হয়নি। মফস্বল থেকে দুরু দুরু বুকে পড়ালেখার উদ্দেশ্যে শহরে চলে আসা সেই ছোট ছেলেটির বিগত এক যুগের জীবনের ডায়েরিতে হয়ত অনেক ঘটন-অঘটনের বর্ণনা পাওয়া যাবে। গভীরভাবে উপলব্দি করলে কিছু অর্জনও হয়ত চোখে পড়বে কিন্তু তা কেবলই মেকি কৃত্রিম। আমাদের দেশে গুণীর সমাদর হয় মৃত্যুর পরে। অর্থসংকট বা নানা কারণে ধুকে ধুকে মরার আগে কেউ খবরও রাখে না কিন্তু মরে গেলেই বড় হয়ে যায়। আরো কিছুদিন যদি এ পেশায় থাকতে পারতাম অথবা বাকি জীবন সাংবাদিকতায় কাটিয়ে দিতাম তাহলে জীবনের অর্জনটা হিসেব করলে কল্পনায় কিছু আনুষ্ঠানিক কৃত্রিমতা ভেসে ওঠতে দেখি। তাহলো, আমার মৃত্যুর পর কয়েকটি সামাজিক সংগঠন ও এনজিও শোক প্রকাশ করে পত্রিকায় দু একটি প্রেসরিলিজ পাঠাবো আর আমার কোন কলিগ হয়তো ‘একজন নির্ভীক সাংবাদিক শিরোনামে ছোট একটি স্মরণ বাণী লিখবেন, কয়েকটি শোকসভার আয়োজন হবে, সেখানে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হবে-এই। এগুলোও মূলত জীবনের অর্জন হযে, যারা শোক প্রকাশ করে পত্রিকায় বিবৃতি দেবে আমি জীবিত থাকতে তাদেরকে আমিও কিছু দিয়েছি অর্থাৎ এই তার প্রতিদান। আসলে কৃত্রিমতার জগতের সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা স্বার্থের বেড়াজালে আবদ্ধ।
সাংবাদিকতা এক অস্থির পেশা। সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা যতটা ভূমিকা রাখছি ঠিক কিন্তু নিজের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। দায়িত্বশীল, নিষ্ঠাবান মানুষের এ পেশায় কর্তব্যজ্ঞানকে যথাযথ অনুসরণ করতে গিয়ে আমাদের ছুটি মেলে কদাচিৎ। ঈদ আর কয়েকটি জাতীয় দিবস ছাড়া ছুটি মেলে না সহজেই। ছুটি পাই না বলেই মা ও গিন্নি দু জনেরই আমি এবং আমার পেশার প্রতি বেশ রুষ্ট। বাড়ি গিয়ে কখনোই দু দিনের বেশি মায়ের সহচর্যে থাকতে পারি না। পেশার তাগিদে ফিরতে হয় শহরে। এখানে জীবিকার চেয়ে কর্তব্যের টান ঢের বেশি। মা প্রায়ই অভিযোগের সুরে বলেন, ঈদের সময়ও দুই দিনের বেশি থাকতে পার না, কী চাকরি যে কর ? এটি ছেড়ে নাও। মায়ের স্নেহের সুর ফারহানার কাছে অধিকারের সুরে পরিণত হয়ে বেশ জোরালো রূপ ধারণ করে। রাত করে বাড়ি ফিরলেই ফারহানা অভিযোগের সুরে বলে ওঠে, তুমি কিন্তু আমার প্রাপ্য, আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছ ! দেশ জাতির সেবা করতে গিয়ে অফিসের কর্তব্য যথাযথভাবে সম্পাদন করতে গিয়ে একজন স্বামী হিসেবে স্ত্রীকে যথেষ্ট সময় না দিয় তাকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করছি, ঠকাচ্ছিÑএ অস্বীকার করার উপায় নেই। মায়ের স্নেহের প্রতিদান দেওয়া না হয় দূরে থাক। একজন দায়িত্বশীল স্বামীও কি হতে পেরেছি ?
সকাল থেকে শুরু করে সারাদিন সংবাদের পেছনে ঘুরি, উৎসের সন্ধান করি, সংশি¬ষ্টদের কাছে ধর্ণা দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনের গঠন মজবুত করি। তারপর গভীর রাতে যখন বাসায় ফিরি তখন বেশ ক্লান্ত। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই গভীর ঘুমে টলে পড়ি অথবা ইচ্ছে করেই ঘুমিয়ে পড়ি। কারণ সকালে যে আবার বেরিয়ে পড়তে হবে। এ নিত্যদিনের রুটিন, এ ক্লান্তির শেষ নেই। সুতরাং একজন নারীকে আমি প্রতিদিন ঠকাচ্ছিÑ এ আমিও বুঝি। তারপরও সৃজনশীলতার নেশা, সেবার মানসিকতা, সৃষ্টি সুখের উল¬ার ঘরের টগবগে যৌবনা নারীটির প্রতি আমার যে অবিচার, অন্যায়ভাবে ঠকানো তা ভুলিয়ে দেয়। কেবল ফারহানার কড়া অভিযোগের অগ্নিসুর কখনো কখনো আমার মাঝে কিছুটা বোধোদয় তৈরি করে কিন্তু পেশার নেশার কাছে স্ত্রীকে শারীরিক-মানসিক সুখীর করার চিন্তাটি স্থঅয়ী হতে পারে নাা। তাই ওর সমস্ত অভিযোগ পদদলিত করে আমি প্রতিদিন ছুটে চলেছি খবরের পেছনে, উৎসের সন্ধানে সৃষ্টির নেশায়। এ পেশায় এসে সমাজ, জাতি, রাষ্ট্রকে হয়ত অনেককিছুই দিতে পারছি কিন্তু নিজের পরিবার পরিজনকে কি দিতে পেরেছি সেই হিসেব করা হয়না কখনোই। কারণ, আমরা তো জাতির বিবেক, এখানে প্রাপ্তির হিসাব কষা চলে না। ‘জাতির বিবেক’ নামক আবেগে বিভোর হয়ে বেমালুম ভুলে যাই আমিও রক্ত মাংসে গড়া একজন মানুষ। যার কর্তব্যজ্ঞান ও সমাজসেবাই শেষ কথা নয়, পরিবাবর নামক একটি প্রতিষ্ঠান আছে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিও কিছু দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে।
ঈদের সময় অফিস থেকে মাত্র দুদিন ছুটি মেলে, ফারহানাকে সঙ্গে নিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি যাই। ঈদের একদিন পর শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতেই ফারহানা বাধ সাধে। এতবছরে মা অবশ্যই বিষয়টি নিয়ম হিসেবে মেনে নিয়েছে। ফারহানা বলল, সারাজীবন সময় পাও না, ঈদের সময় হলেও অন্তত এক সপ্তাহ আমাকে বেড়াতে নিয়ে যাও, সময় দাও। আমি বললাম, ছুটির পরে অফিসে অ্যাটেনকরা নিয়ম, সবাই অফিস করবে আমি না গেলে খারাপ দেখাবে। এ নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হতে চললে আমি বললাম, বিয়ের আগে তো যথেষ্ট সময় দিয়েছি. তোমার সাথে তো দীর্ঘ চার বছরের প্রেম, তখন অনেক সময় দিয়েছিলাম তো।
জীবন নাটকের প্রথম দৃশ্যে ফারহানা ছিল আমার প্রথম ও শ্রেষ্ঠ অর্জন। কলেজে ও ছিল আমার দুই বছরের সিনিয়র। প্রথমে তাকে আমি আপু বলেই সম্বোধন করতাম, ও আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখত। প্রতিদিন দেখা হতো, কথা হতো, আড্ডা জমাতাম। দুষ্টুমি, খুনসুটিরর মাঝে কখন যে আমার হৃদয়টি তার প্রতি এত দুর্বল হয়ে পড়েছিল বুঝতেই পারিনি। তাকে কত ভালোবাসতাম, তার সমস্ত কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতাম। এই বয়সটি ছিল আবেগের। সারাক্ষণ একটু ছোঁয়া, স্পর্শ, সান্নিধ্য পাওয়ার আশায় ব্যাকুল থাকতাম। কিন্তু কখনো এই ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে পারিনি। নীরবে ভালোবেসেছি। দীর্ঘ চার বছর অস্বীকৃত নীরব প্রেম। ফারহানা কখনো বুঝতে পারেনি আমি তাকে কত ভালোবাসি। এতদিন আমি তার সাথে ছায়ার মতো থেকেছি, অন্ধ ভালোবেসে অনুসরণ করেছি, তার প্রতীক্ষায় নীরব প্রহর গুণেছিÑএ কথা একদিন জানতে পারল ফারহানা। সেদিন বেশ আবেগী কণ্ঠে ‘বনলতা সেন’ কবিতাটি আবৃত্তি করে তাকে শুনিয়েছি, তারপর বলেছি, আরো হাজার বছর অভাবে পথ চলতে চাই যদি তুমি...। সেদিন আমাকে নিষ্ঠুরের মত শূন্য ফিরিয়ে দেয়ার বা ব্যাকুল প্রেমের আকুলতা প্রত্যাখ্যান করার শক্তি সম্ভবত ফারহানার ছিল না। এতদিন একসাথে পথ চলে হঠাৎ দুজন দু পথের পথির হবোÑএও যেন প্রতারণা হিসেবেই ভেবেছিল সে। তারপর বেশিদিন পার হয়নি, আমরা যুগল জীবনে আবদ্ধ হলাম।
নেশায় বিভোর হয়ে জড়িয়ে পড়া সেই সাংবাদিকতা এখন আমার পেশা। জীবনের তাগিদেই যেন পুরোদস্তুর প্রফেশনার সাংবাদিক হয়ে গেছি এই আমি। এদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই, নিশ্চয়তা নেই সাংবাদিকতা পেশারও। বড় বড় দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক, আমলা, কালোবাজারী, সন্ত্রাসী সবার শত্র“ সাংবাদিক। অথচ এই শত্র“ হওয়ার দোষ তার নিজের নয়, দেশ জাতির মঙ্গলার্থে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কলম ধরেই সাংবাদিকরা সবার শত্র“ হয়ে যান। সন্ত্রাসীদের টার্গেটও সাংবাদিক। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন এদেশের সাংবাদকিরা। তারপরও এ পেশায় যারা আছেন তাদের জীবনের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাও কিছুই নেই। কোথাও শ্রম অসন্তোষ দেখা দিলে আমরা পত্রিকায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখি, ‘অমুক কারখানার একজন শ্রমিকের বেতন মাত্র বারোশত টাকা, এত অল্প টাকায় তাদের সংসার চলছে না, মাসে দুই দিনও ছুটি মেলে না তাদের, ইত্যাদি...।’ কিন্তু আমরা কত বেতন পাই, কী সুবিধা পাই তা কখনো লিখি না। কারণ আমরা জাতির বিবেক, করছি দেশের সেবা ভালো কাজ। প্রকৃতপক্ষে দেশ জাতির সেবা করার মতো এই মহৎ পেশায় আমরা কি পাই, কিভাবে চলছে আমাদের দিনকাল তা কখনোই পত্রিকায় লেখা হয় না। এই বিনিময়, কেবল মৃত্যুর পর দু একটি শোকসভা, এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালনই আমাদের প্রাপ্য। বাস্তব জীবনে সংবাদের পিছে ঘুরতে ঘুরতে আমরা নিজেদের পরিবার পরিজনকে তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করছি, বিরাগভাজন হচ্ছি এ আমরা বুঝি না, আমাদের বোধোদয় হয় না। কারণ সাংবাদিকদের মধ্যে পেশাগত দায়িত্বের প্শাাপাশি এক ধরনের নেশাও কাজ করচে। প্রতিযোগিতার বিশ্বে এ পেশায় প্রতিদিন মোকাবিলা করতে হয় নতুন চ্যালেঞ্জ। ‘আজকের প্রতিবেদনটি লিড হতে পারে কিংবা ভালো ট্রিটমেন্ট পাবে’Ñ এমন আশায় সকাল থেকে গভীর রাত অবধি লেগে থাকি। বাসায় ফারহানা একা অপেক্ষার প্রহরণ গুণতে গুণতে বিরক্ত হয়, ফোন করে তারপর বিছানায় একাকী শুয়ে একজন পুরুষের সান্নিধ্য স্বপ্নে আঁকে। তার স্বপ্নের নিষ্ঠুর পুরুষটি তখনো অফিসের কম্পিউটারে মাউস কী-বোর্ড নিয়ে যুদ্ধ করছে, ফোন রিসিভ করছে, হাঁফিয়ে উঠছে। যখন বাসায় ফিরি শরীরটা বেশ ক্লান্ত। এভাবে চলতে থাকে আমাদের যুগল জীবন। এরই মধ্যে ফারহানার অভিযোগ অভিমানেরও ক্লান্তি এসেছে। হয়ত ভেবেছে ‘এই তো জীবন’ কিংবা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘এভাবে আর নয়’। বিয়ের পর থেকেই ওকে সময় দিতে পারছি না। কখনো তার বান্ধবী বা আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করে কিন্তু আমার ছুটি মেলে না। শেষমেষ গিফটটা কিনে দিয়ে বলি ‘তুমি যাও আমি আসছি’। আমার আর যাওয়া হয় না। আমারই বা কি দোষা, অফিসের কর্তব্য ফেলে তো আর বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া যায় না। অনুষ্ঠান থেকে ফিরে এসে অভিমানে মুখ ভার করে থাকে। আমি বুঝিয়ে বলি একটা ‘ইমপরটেন্ট অ্যাসাইনমেন্ট’ ছিল।
ফারহানা আরে কিছুদিন হয়ত ধৈর্য ধরতে পারত। ততদিনে ওর কোলজুড়ে নতুন অতিথি আসত, আমাদের ঘরটি আলোকিত হতো। হয়ত তাতে ফারহানার একাকীত্ব অনেকটা ঘুচত। কিন্তু তা হলো না, ফারহানার ধৈর্য্যরে বাঁধ বাধা মানিল না। ধৈর্যই আর কতো ? নদীভাঙ্গনে বাস্তুহারা মানুষের কান্না যেমন ভাঙ্গন ঠেকাতে পারে না, তেমনি একজন টগবগে যৌবনা নারীর পুরুষের বাস্তব সঙ্গোপনের আকাক্সক্ষাও ‘ধৈর্য্যরে বাঁধে’ দমিয়ে রাখা যায় না। একরাতে ফারহানা উধাও হয়ে গেল বিছানায় ছোট একটি চিরকূট রেখে। ‘তোমার সাংবাদিকতা ও ইমপরটেন্ট অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে তুমি থেক, তোমার দিকে চেয়ে নিজের প্রতি অনেক অবিচার করেছি, আর কত ? আমি চললাম ?’ বেশ কয়বার পড়ে নিজেকে বিশ্বাস করালাম, বাস্তবতা সবার প্রতি সমান আচরণ করে।
২৫ রমজান, পাঁচদিন পর ঈদ। প্রতিবছর ঈদ করতে ফারহানাকে সাথে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যেতাম, এবছর ও নেই। অফিসে ‘রিজাইন’ দিলাম। সম্পাদক অফিসের ছিলেন না, তিনি থাকলে আমার রিজাইন গ্রহণ করতো কিনা সন্দেহ ছিল। অফিস ত্যাগের সময় গার্ডকে বললাম, আমাকে কেউ খুঁজলে বলিও ছুটিতে আছি। বাড়িতে পৌঁছে মাকে কদমবুছি করে বললাম, ‘মা এবার অনেকদিন থাকতে পারব।’ মা বললেন, ‘চাকরিতে কোন সমস্যা হবে না ?’ বললাম, ‘চাকরিটা চলে গেছে।’ মা বললেন, ‘চাকরি চলে গেছে, নাকি ছেড়ে দিয়েছ ?’ বললাম, ‘সে যা-ই হোক ফলাফল একটাই, চাকরি নেই।’ মা বললেন, ‘বৌমা কই ?’ বললাম, ‘মা, চাকরি চলে গেছে, ফারহানাও চলে গেছে!’ আমার মুখে হাত চেপে ধরে মা বললেন, ‘এসব কি বলছ তুমি, বৌমা কি চাকরি যে চলে যাবে ?’ আমি হাসতে হাসতে মাকে বললাম, ‘আত্মপ্রয়োজনে সবাই চলে যায়, মা। আপন স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কেউ পাশে থাকে নাÑএটাই জগতের নিয়ম।’