somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

হতচ্ছাড়া বালক
ব্লগিং করাটা আমার শখ, শখের মধ্য দিয়ে আমি অনেক কিছু জানতে চাই, জানাতে চাই, নিজে উপকৃত হবো এবং অন্যকেও আমার দ্বারা উপকৃত করার চেষ্টা করবো। অহেতুক ঝুট ঝামেলা আমার পছন্দ নয়, আমার লেখায় কোন অসংগতি দেখা গেলে ব্যাক্তিগত আক্রমণ না করে সুন্দরমার্জিত

হিজাব পরিধান করবে, অপকর্মও করবে, কেন???

২৩ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হিজাব অপকর্ম থেকে বিরত থাকার রক্ষা কবচ, কিন্তু হিজাব পরিধান অপকর্ম করে কেন? এই প্রশ্নটা সবার মনে কম বেশি ঘুরপাক খায় এবং প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিক বটে। প্রায়শই দেখা যায়, হিজাবধারী কোন নারী পার্কে বসে আপত্তিকর কাজ করছে, পকেটমার, রাস্তায় যৌন ঔষধ বিক্রি করে বোরখা পড়ে, পতিতা পতিতাবৃত্তি করে হিজাব পড়ে, এতোসব দেখেও কেন মানুষ প্রশ্ন তুলবেনা হিজাব অপকর্মের সহায়ক? প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। তারা বলবেই হিজাব অপকর্মের সহায়ক, বিরত রাখার রক্ষাকবচ নয়।

আমার মনেও প্রশ্ন জাগে, আমি উত্তর খুঁঝে বেড়াই, কেন হিজাব পরিধান করে অপকর্মে লিপ্ত হয়? হিজাবের কাজ তো বিকৃত যৌনতা থেকে রক্ষা করা , কিন্তু হচ্ছে তার উল্টো, কেন? হিজাবের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অতি উত্তম, যদি না সে নারী হিজাব পরিধান করে উত্তম উদ্দেশ্য সাধনের জন্য নয় বরং অপরাধ ঢাকার উদ্দেশ্যে, সহজে লোকের চোখে ধুলা দিয়ে নিজেকে ধরা ছোয়ার বাইরে রাখতে।

এখন আসি কেন হিজাব পরেও অপকর্ম করে বেড়ায়। কারণ অনেক মেয়ে হিজাব পরে পারিবারিক চাপের কারণে, বাবা মা ধর্মকর্ম পালন করে, মৌলভী বাড়ী, অনিচ্ছা সত্বেও সবার কাছে ধার্মিক পরিচয় পাকাপোক্ত করার জন্য হিজাব পড়ে, মাদ্রাসায় পড়লে অঘোষিতভাবে চাপ থাকে মেয়েদের উপর হিজাব পড়ার, কেওবা অন্যের দেখাদেখি পড়ে, বাজারে নানা স্টাইলের হিজাব পাওয়া যায়,যা পড়লে সাধারণ জামা কাপড়ের চাইতে বেশি আকর্ষনীয় মনে হয়, তাই অন্যের চোখে আকর্ষণীয় করার তোলার অংশ হিসেবে।

অধিকাংশ হিজাবধারী নারী পর্দার সঠিক বিধান, গুরুত্ব অথবা পালন না করার পরিণাম সম্পর্কে না জেনেই শুধু পারিবারিক বা প্রাতিষ্ঠানি অথবা সামাজিক চাপের কারণে পরিধান করে থাকে। তারা তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে অথবা অজ্ঞতাবশত গার্ডিয়ানদের চাপচাপিতে হিজাব পরিধান করে বলে যখনি সুযোগ পায়, গা থেকে হিজাব খসে পড়ে। যেমন বাড়ি থেকে দূরে কোন বান্ধবীর বাসায়, বিশ্ববিদ্যালয়, বিয়ে বাড়ীতে গেলে হিজাবের নিশানা আর খুঁঝে পাওয়া যায়না যেন বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়েছে।


যে মেয়ে বলে একদিন হিজাব পরিধান না করলে কিছু হয়না, সে আদতে জানেনা, একদিন কেন এক মিনিটের জন্যও (যেসব কারণে পর্দায় শিথিলতা আনা যায়, সেসব কারণ ছাড়া যেমন ডাক্তারকে অসুস্থ শরীরের বিভিন্ন অংগ দেখানো ইত্যাদি) পর্দার বিধান শিথিল করার কোন সুযোগ নাই অথবা বিরুদ্ধাচারন করাই তার উদ্দেশ্য! যে শিক্ষক বলে ক্লাসে পর্দা করা জরুরী নয়, তিনি আদতে জানেন না, তার ছাত্রীর জন্য তিনি গায়রে মাহরাম কিনা অথবা পর্দার বিরুদ্ধাচারণ করাই তার উদ্দেশ্য! যে মেয়ে কোন গুরুজনের কথা শোনেই হিজাব খুলে ফেলে, সে আদতে হিজাব পরিধান করতে চায়না অথবা হিজাবের অপমান করাই তার উদ্দেশ্য! হিজাব খুলেই মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়ে বেড়ায়।

আমি খুব জোরের সঙ্গেই বলতে পারি, কোন মেয়ে যদি পর্দার শরয়ী বিধান সম্পর্কে আংশিক নয় বরং পরিস্কার জ্ঞান রাখে, বাস্তব জীবনে অনুশীলনের প্রচেষ্টা চালায়, উপলব্দি করে তা অবশ্য পালনীয়, তার দ্বারা অপকর্ম হতে পারেনা, তবে হতেও পারে তখনি যখনি সে শয়তানের প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়, অনুশীলনে শিথিলতা অবলম্বন করে থাকে।

হিজাব পতিতা, চোরাচালানি, অপরাধীদের পোশাক ইত্যাদি ঢালাওভাবে মুখে না আওড়ায়ে ভেবে নেয়া উচিত, বুঝতে চেষ্টা করা উচিত, সমস্যা হিজাবের নয়, সমস্যা ব্যক্তির। হিজাব পরিধান করেও ব্যক্তির মনে শয়তানের প্ররোচনা কাজ করতে পারে, সবার আগে ভাবতে হবে, হিজাব ধারীও একজন মানুষ, অন্যান্য নারীদের মত তারও বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, একজন মানুষ একজন নারী হিসেবে তারও জৈবিক চাহিদা, তাড়না, শয়তান যা অবৈধ পন্থায় তাকে দিয়ে মেটাতে চায়, সে বিভ্রান্ত হয়। সে যদি একথা মনে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এবং স্মরণ করে পর্দা করার উদ্দেশ্যইতো এইসব যাবতীয় অনাচার থেকে বিরত থাকা, তাহলে বিরত থাকা তার জন্য হবে। এই জন্যই শয়তানের পক্ষে হিজাবের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝে হিজাব পরিধান করে এমন নারীদের নারীদের বিপথগামী করা পাহাড়সম কঠিন।

সে সব মা বোনদের উদ্দেশ্যে বলছি, যারা হিজাবের অপব্যবহার করে থাকেন, আপনারা উলঙ্গ হয়ে চলাপেরা করেন, আপনার শাস্তি আপনার জন্যই, আল্লাহ আপনার প্রতি কর্মের হিসেব রাখেন, এটা বুঝেও যদি বেপর্দায় চলেন তা আপনার ব্যাপার, কিন্তু হিজাব পরে হিজাবের পবিত্রতা নষ্ট করবেন না! যে হিজাব পরে আপনি নষ্টামি করছেন, সে হিজাব পরেই কিছু মা বোন চরম প্রতিকুল পরিবেশে প্রাণান্তকর চেষ্টা সাধনাকরে যাচ্ছেন পর্দার বিধান পালন করতে। আল্লাহ তাদের উপর সন্তুষ্ট হবেন, তারাও আল্লাহর নিকট অসামান্য পুরস্কার পেয়ে ধন্য হবে। আপনারা বাদ থাকবেন কেন, আপনিও তাদের সাথে সামিল হোন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে নিজেদের ধন্য করুন।
আমার আজকের লেখাটি তাদের জন্য যারা হিজাবের অপব্যবহার করে থাকেন, তাদের জন্য নয় যারা হিজাবের টোটালি বিরোধী।

উল্লেখ্য যে, হিজবা মানে শুধু লম্বা বোরখা হতে হবে তেমনটা জরুরী নয়, বরং লম্বা এমন যেকোন কাপড়,যা দিয়ে শরীরকে ভাল ভাবে ঢেকে দেয়া যায়, যাতে পর্দার নিয়ম পুরোপুরি পালন করা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×