শহীদ শিশুদের স্মরণে:
গগনবিদারী চিৎকারে কেঁপে উঠল আকাশ-বাতাস।
এক ঝলকে নেমে এলো অগ্নি বর্ষণ—
একটি যুদ্ধবিমান এসে ভেঙে পড়ল স্কুলের ছাদে।
এক মুহূর্তে আগুন গ্রাস করল কাঁচা রঙিন খাতা, শিশুহাসি,
আর ভস্ম করে দিল কত শত স্বপ্ন।
ওরা ছিল ছোট ছোট ফুটফুটে বাচ্চা—
কারো হাতে ছিল নতুন বইয়ের গন্ধ,
কারো চোখে ছিল ভবিষ্যতের আলো।
কেউ ভাবত—
“বড় হয়ে বাবার মুখে হাসি ফোটাবো।”
কেউ বলত—
“মায়ের কষ্ট একদিন কমিয়ে দেবো…”
আর কেউ ভাবত—
“মানুষ হবো, আলোর মতো হয়ে চারপাশে ছড়িয়ে পড়বো।”
কিন্তু… কে জানত,
জীবনের এত তাড়াতাড়ি সমাপ্তি ঘটে!
কে ভাবতে পেরেছিল,
স্কুলের মাঠেই হয়ে যাবে বিদায়ঘণ্টা
হে নিষ্পাপ ফুলেরা,
তোমরা চলে গেলে এক করুণ অথচ নিরাপদ গন্তব্যে।
এই রক্তমাখা দুনিয়া তোমাদের ছুঁতে পারল না আর।
হায়! আমিও যদি তোমাদের মতো শিশু অবস্থায়ই মরে যেতাম!
এই পাপের পাহাড় আজ আমার কাঁধে চেপে বসত না।
তোমাদের জন্য পরকাল হোক শান্তিময়,
তোমাদের রুহ যেন জান্নাতের বাগানে খেলে বেড়ায়।
তোমাদের নাম আমরা হৃদয়ে রাখব,
আকাশের তারা হয়ে তোমরা থাকবে আমাদের রাতের সাথী।
কিন্তু বলো তো, এই দুনিয়ায় বেঁচে থেকে কী লাভ?
যেখানে মাস্টার্স পাশ করেও যুবকরা বেকার,
কত পরীক্ষা দেয়, কত লাইনে দাঁড়ায়, তবুও—
চাকরি হয় না,
বয়স ত্রিশ পেরিয়ে যায়, তবুও সংসার গড়তে পারে না।
রাজনীতি আজ সেবার নয়,
ক্ষমতার খেলাঘর।
প্রশাসন এক লোভী নাট্যমঞ্চ—
যেখানে নীতি নেই, দায়িত্ব নেই,
শুধু জুলুম আর নির্লজ্জতা
রাস্তার পাশে পড়ে থাকে রক্তাক্ত দেহ,
নদীতে ভাসে অজ্ঞাত লাশ,
অপরাধীরা হেসে চলে যায়,
আর নিরপরাধরা ঘামে-রক্তে জেল খেটে মরে।
প্রতিদিন দুর্ঘটনা—
স্কুলে, সড়কে, বাড়ির পাশে।
যেন এ দেশ এক রক্তস্নাত যুদ্ধক্ষেত্র।
তাই বলি, হে শহীদ শিশুরা…
তোমরাই সৌভাগ্যবান।
তোমরা এই ঘৃণিত, নিষ্ঠুর পৃথিবীর কলুষতা দেখার আগেই বিদায় নিয়েছো।
তোমাদের প্রাণ আজ আকাশ ছুঁয়েছে,
আর আমরা, যারা বেঁচে আছি—
প্রতিদিন একটু একটু করে মরছি…

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


