আজ একটা কুকুরের গল্প শুনাই , সত্যিকারের কুকুরের ।
এন জি ও কোম্পানী গুলোতে কাজ করা আর পা*র বাকল খুলা একই কথা , তবুও বাধ্য করে করতে হয় । এই কাজের মত প্যারাময় কাজ আর নেই , কি বৃষ্টি, কি কড়া রোদ , কি কাদার মাঝে মটর সাইকেল ঠেলে ঠেলে নিয়ে যাওয়া কোন কিছুই বাদ রাখা হয় না ।
দিনাজপুরে এমন এক কোম্পানিতে কাজ করতাম । সকাল ৭ টায় শুরু করে রাত ১২ঃ৩০ পর্যন্ত কাজ করতে হতো । দিনাজপুর, ঠাকুরগা, পঞ্চগড় এর প্রতিটা গ্রামে চষে বেড়ানো লাগতো কিস্তি তুলতে ।
একদিন বেশ বৃষ্টি হচ্ছিলো , জুলাই মাসের বৃষ্টি । রাত প্রায় একটা বাজে ,প্রচন্ড ক্ষিদায় পেত গুড়্গুড় আওয়াজ হচ্ছিলো । বাধ্য হয়ে রেইনকোট লাগিয়ে বাসার দিকে হাটা দিলাম । পাশে এক বেকারি থেকে একটা পাউরুটি নিয়ে গলি রাস্তা দিয়ে হাটা শুরু করলাম ।
রুটি এক কামর লাগিয়ে বুঝলাম নষ্ট রুটি , ছুড়ে ফেলে দিলাম , কোথা থেকে একটা কুকুর দৌড়ে এসে রুটি টা চিবিয়ে খাওয়া শুরু করলো । আমিও দ্রুত চলে এলাম ।
পরদিন সেই গলি দিয়ে যাচ্ছি , দেখি সেই কুকুর টা আমার দিকে দৌড়ে আসলো । এসে থেমে গেলো । বুঝলাম কিছু খেতে চাচ্ছে । পিছনে গিয়ে বেকারি থেকে একটা রুটি নিয়ে ওকে খেতে দিলাম ।
এভাবে মাঝে মাঝেই ওকে খেতে দিতাম । কখনো কখন পারতাম না , যখন পারতাম না প্রায় ওকে মিস করতাম । একটা কুকুরের সাথে বেশ জমে গিয়েছিলো আমার , কারন জব ছাড়া আমার কোন বন্ধু ছিলো না সে সময় ।
একদিন প্রায় রাত ১:৩৫ বেজে গেছে । ম্যানেজারের হিসাবের ভুলে আমাদের কষ্ট , শেষ মেষ যখন বাসায় ফিরছিলাম তখন একটা রুটি কিনে নিলাম ।
গলির মাথায় এসে কুকুর টাকে খুঁজতে লাগ্লাম । আগের দুইদিন কিছু খেতে দেই নি । কিন্তু কুকুর টাকে দেখছি না । আর গলি রাস্তায় কোন লাইটের ব্যাবস্থা নেই , তাই শুধু কোন কিছুর অববয় বুঝা যায় ।
দূর থেকে একটা কুকুর দৌড়ে আসছে, আমি ভাবলাম এটাই আমার কুকুর টা । কিন্তু যেই কুকুর টা আমার সামনে এসে গেল , আমি ভয় পেয়ে গেলাম , দাঁত গুলো বের করে তেরে আসছে , কিন্তু ভাগ্য ভালো , দাঁত বের কাছে আসতেই আমার পিছন থেকে অন্য একটা কুকুর লাফ মেরে ওর উপর ঝাপ দিয়ে পড়লো । বেশ কিছুক্ষন চিল্লাচিল্লির পর দাঁত বের করা কুকুর টা চলে গেলো । আর অন্য কুকুর টা আমার সামনে এসে দাড়ালো , আর এটাই আমার কুকুর টা ছিল ।
তবে আমি একটা বেঈমানী করেছি , যেদিন দিনাজপুর ছেড়ে চলে এসেছি সেদিন আর কুকুর টার সাথে দেখা করি নি , কেন করি নি জানি না