সর্বক্ষেত্রে সম্পদশালী লোকদের সাথে হতদরিদ্রের আকাশ-পাতাল পার্থক্য।এমনকি জানাযার নামাজেও!!!!
যা আমি গতকাল নিজ চোখে দেখলাম।
আসরের নামাজ পড়ে এক দরিদ্র মহিলার জানাযায় সামিল হওয়ার জন্য ঈদগাহে গেলাম।মহিলার বাড়ি সম্ভবত সুনামগঞ্জ এলাকায়।দুই ছেলে আছে।ছেলেরা বিয়ে করে সন্তান-সন্ততি নিয়ে আমাদের গ্রামের এক বাড়িতে বসবাস করছে।
আগে থেকেই জানা ছিল জানাযার অবস্থা কেমন হবে।সম্পদশালীদের জানাযা হলে ১ঘন্টা আগে এখানে শত শত লোকের সমাগম ঘটত।কিন্তু এই নিম্নবিত্তের জানাযায় খুব কমসংখ্যক লোকের সমাগম লক্ষ করলাম।কয়েকজন বুড়ো সাওয়াবের আশায় কোনমতে লাঠিতে ভর দিয়ে জানাযায় এসেছেন।আর সামান্য সংখ্যক যুবক ও শিশুদের উপস্থিতও লক্ষ করলাম।
একটা কাঠের খাটে করে লাশ নিয়ে আসা হল।যেখানে বিত্তবান লোকের লাশের খাট ধরার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে।সেখানে খাটের চার কোণায় মাত্র চারজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করলাম।জানাযা শেষ করে বাড়ি ফিরলাম।
এটা যদি কোন সম্পদশালীর জানাযা হত,তাহলে চিত্রটা পুরো উল্টো পরিলক্ষিত হত।দলে দলে লোক জমা হত।দূর-দূরান্ত থেকে মানুষের আগমণ ঘটতো।অঞ্চল জুড়ে শোকের মাতম উঠতো।লাশের খাট ধরার জন্য মানুষ ক্ষুধার্ত বাঘের মত ঝাঁপিয়ে পড়ত।
একটা জিনিস আমায় খুব ভাবায়,এই দুই শ্রেণীর মানুষের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?
বিত্তবানরাও মানুষ,এরাও মানুষ।শুধু টাকা নামক দেয়ালটি এই দুই শ্রেনীকে দু’ভাগে ভাগ করে ফেলেছে।
বিত্তবানদের শোকের সময় আমাদের সুশীল সমাজ কেঁদে বুক উজাড় করে দিতে পারে।শোক সভার আয়োজন করে অন্যের শোকে শোকাহত হতে পারে।কিন্তু এদের (নিম্নবিত্ত) শোকের সময় নিজেদের ৫মিনিট খরচ করাকেও সময়ের অপব্যবহার মনে করে।