বাইক বা মোটরসাইকেল চালানো যেমন ফ্যাসানেবল অধবা রোমাঞ্চকর ঠিক তেমনি এতে দুর্ঘটনার ঝুকিও কিন্তু কম নয়। সড়ক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞদের ত্যথ্য অনুযায়ী চার চাকার বাহনের তুলনায় মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ গুণ বেশি। হতাহতের পরিমান বাস দুর্ঘটনায় বেশি হলেও দুর্ঘটনার দিকদিয়ে মোটরসাইকেলই এগিয়ে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় সড়ক দুর্ঘটনার ৩১ দশমিক ৮৭ শতাংশই ঘটছে বাসে, ২৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ ট্রাকে। বাকি প্রায় ৩৮ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে প্রাইভেট কার, জিপ, ট্যাক্সি ও মোটরসাইকেলে।
রাস্তায় আমাদের সকলের নিরাপত্তা এবং বাইকের নিরাপত্তার লক্ষে, সর্বপোরি দুর্ঘটনা রোধে আমাদের কিছু পরামশ্য।
** ভ্রমনের পূর্ব প্রস্তুতি নিন, জ্বালানি তেল, ব্রেক, হেডলাইট, হর্ন এবং চাকার হাওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হউন।
** হেলমেট ব্যবহার করুন, বাইকারদের ৭৫ ভাগ হতাহতের কারন এই হেলমেট ব্যবহার নাকরা।
** যথাযথ পোশাক পরুন, যেটি অতিরিক্ত টাইট অথবা অতিরিক্ত ডিলা নয় এবং সাথে হাতমুজা এবং বুট জুতা পরুন।
** বাইক চালনায় সম্পূর্ণ মননিবেশ করুন।
** ট্রাফিক আইন মেনে চলুন।
** বাইক চালনার ক্ষেত্রে আক্রমনাত্মক না হয়ে প্রতিরক্ষামূলক হউন।
** যাত্রাপথে কোন রকম প্রতিযোগীতা নয়।
** চলন্ত বাইকে মোবাইল ব্যবহার করবেন না।
** হর্ন এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
** পেছনের যানবাহন দেখার জন্য লুকিং গ্লাস ব্যবহার করুন।
উপযুক্ত পোশাকঃ খুব বেশি ছোট বা খুব বেশি ঢিলেঢালা কাপড় পরা একেবারেই যুক্তিসংগত নয়। ব্যাক্তিগত নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শীতে ছিদ্রযুক্ত জ্যাকেট অথবা গ্রীষ্মে টি শার্ট পরতে পারেন। পরনে জিন্স এবং পায়ে বুট থাকলে ভালো।
লাইসেন্স সহ প্রয়জনীয় কাগজপত্র সাথেই রাখুনঃ বাইক নিয়ে বেরোনোর সময় অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস সনদ, ট্যাক্স টোকে্ন, নিবন্ধন সনদসহ বাইকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গেই রাখুন।
মোটরসাইকেল নিয়মিত পরীক্ষা করুনঃ নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবেই কোথাও বেরনোর আগে মোটরসাইকেটির সব কিছু ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা অবশ্যই পরীক্ষা করে নিন । বাইকের চেইন, ব্রেক হর্ণ জ্বালানী ইত্যাদি যথাযথভাবে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন যে সবকিছুই ঠিকমতো কাজ করছে, আর তা নাহলে যেকোন সময় যেকোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
অনুকূল আবহাওয়া : কোথাও যাওয়ার আগে আবহাওয়া অনুকূলে আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিন। ভারী বৃষ্টিতে মটরসাইকেল চালানো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কারণ রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে মোটরসাইকেলের চাকা যে কোনো সময় স্লিপ করতে পারে। গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে মহাসড়কে বৃষ্টির মৌসুমেই প্রায় ৩৮% মোটরসাইকেলকে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছে।
ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জানুনঃ বাংলাদেশের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখুন এবং শ্রদ্দাশীল হোন। যেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গাড়ি চালানোর সাধারণ নিয়ম গুলো জানুন এবং মেনে চলুন।
মোবাইলে কথা বলা ও হেডফোন পরিহার করুনঃ ড্রাইভিং এর সময় সম্পূর্ণ মনোযোগী হতে চেষ্টাকরুন। বাইকে চলাকালে ফোনে কথা বলা, হেডফোনে গান শোনা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারন একটু অসতর্কতা আপনাকে ঠেলে দিতে পারে বড় কনো দুর্ঘটনার দিকে।
প্রযুক্তির ব্যবহার : নতুন প্রযুক্তির অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম আপনার বাইককে দিচ্ছে দ্রুত ব্রেকিং এর সুবিধা। নতুন প্রযুক্তির এই অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম প্রথমদিকে আধুনিক কিছু বাইকে ব্যাবহৃত হলেও এখন অনেক বাইকেই এ সুবিধা থাকছে।
ওভারটেকিং করার সময় যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করুনঃ ওভারটেকিং এর সময় অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। বাস, ট্রাক অথবা কার ওভারটেকিং এর সময় বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এই সময় হর্ণ এর যথাযথ ব্যাবহার করা, পাসলাইট ব্যাবহার করা এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায়রাখা যা আপনাকে রাখবে দুর্ঘটনা মুক্ত।
সঠিক সহযাত্রীঃ মোটরসাইকেলে আপনার সহযাত্রী হিসেবে বেছে নিন এমন কাউকে, যিনি আপনাকে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সঠিক সির্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। যে সির্ধান্ত হয়তো আপনাকে অনেক বড় দুর্ঘটনা থেকেও রক্ষা করতে পারে।
সঠিক ভাবে নিয়ম মেনে বাইক চালান। নিজে নিরাপদে থাকুন অন্যকেও নিরাপদ রাখুন।
নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়ে আরো বিস্তারিত দেখুন--
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:০৯