মুমিনের তো একটি ‘নেযামুল আওকাত’ বা রুটিন আছেই। কারণ আল্লাহ তা’আলা পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করে সে ব্যবস্থা নিজেই করে দিয়েছেন। নামাযের সময়গুলো এমনভাবে নির্ধারিত যেন সব কাজ তারই অনুগামী! আর আসলেই বিষয়টি তা-ই। নামাযের সময় মুমিনের দৈনিক সময় বিন্যাসে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখে। মুমিন নামাযকে নির্দেশক বানিয়ে কাজ করলে সেটা সহজ ও শান্তিদায়ক।
সময়ের মূল্যকে মুমিন বুঝে বলেই প্রতিদিনের সাধারণ একটি রুটিন তার থাকা উচিত। এমন নয় যে শুধু নামায, যিকির, তেলাওয়াতের রুটিন, জাগতিক কাজগুলোরও রুটিন থাকা উচিত। রুটিন থাকলে কাজে বরকত হয়। কিছু কাজ জীবনে নিয়মিত করতেই হয়, কিছু আছে সাধ্য অনুযায়ী নিয়মিত করা উচিত। আবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ এককালীন কাজ একবারে শেষ করা যায় না। করা হলে তাতে ত্রুটি থাকে। থাকে অসম্পূর্ণতা। বিশেষ করে যে কাজ যত গুরুত্বপূর্ণ সেই কাজগুলো বেশি মনোযোগ ও নিয়মতান্ত্রিকতা দাবী করে। আজ এই আলোচনা অবশ্য উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য এমন কিছু কাজ উল্লেখ করা, যা প্রত্যেকে নিজের দৈনিক রুটিনে সহজে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে পারি। এবং এটা সবাই পারি। বরং সবার পারা উচিত, কারণ কাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি কাজের সওয়াব এবং এমনকি জাগতিক লাভ পর্যন্ত অশেষ! এমন কাজ বহু আছে। এখানে মাত্র তিনটি কাজের কথা বলছি:
⧠ রাসূলে আকরাম ﷺ এর কোনো একটি সীরাত (নবীজি ﷺ -এর জীবনী) থেকে প্রতিদিন কিছু পড়ুন। প্রতিদিন ১ পৃষ্ঠা, অর্ধেক পৃষ্ঠা বা এক প্যারাই হোক। শায়খুল হাদীস মাওলানা ইদ্রীস কান্ধল্ভী রহ. এর সীরাতুল মুস্তফা ﷺ পড়ুন! বাংলায় অনেক তরজমা আছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মদীনা পাবলিকেশন্স অন্যতম। এমনকি ওয়েবে বইটির PDF পাওয়া যায়!
⧠ রাসূলে আকরাম ﷺ এর সুন্নতসম্বলিত কোন একটি বই থেকে প্রতিদিন কিছু পড়ুন। কমপক্ষে একটি ঘটনা অথবা একটি সুন্নতের আলোচনা পড়া হোক। উসওয়ায়ে রাসূলে আকরাম ﷺ পড়ুন! বইটির মূল লেখক: শায়খ আবদুল হাই আরেফী রহ.। মুফতী তাকী বলেন, এটি যেন সুন্নতের এক ডায়েরী। মাদীনা মুনাউওয়ারা সফরে সাথে রাখতে বিশেষ তাগিদ দেন তিনি। বাংলায় এ বইটিরও একাধিক তরজমা রয়েছে। হাফেয মুহাম্মাদ খালেদ দা. বা. এর (মুহাম্মাদী লাইব্রেরী) অথবা মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. (মদীনা পাবলিকেশন্স) এর তরজমা পড়ুন।
⧠ প্রতিদিন রাসূলে আকরাম ﷺ এর প্রতি নির্দিষ্ট বা অনির্দিষ্ট সংখ্যক বার দুরূদ পাঠের অভ্যাস করে নেয়া। কম হোক, কিন্তু বিশেষে ভালোবাসা, ভক্তি ও যত্নের সাথে দুরূদ শরীফ পড়া হোক। মাওলানা রশীদ আহমাদ গঙ্গুহী রহ. বলেছেন, কেউ যদি প্রতিদিন ৩০০ বার দুরূদ শরীফ পড়ে, সে অধিক দুরূদ পাঠকারীদের মধ্যে গণ্য হবেন ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তা’আলা নিজ ফযল ও করমে আমাদেরকে এ কাজগুলো দৈনিক করার তাওফীক দিন। আমীন।
Subscribe here: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:৫৭