somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ধোকায় পরে বেশীরভাগ মানুষ জাহান্নামী হয়

১০ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ সুবহানাতায়ালার জন্য এবং শান্তি বর্ষিত হোক নবী সঃ এর প্রতি । সাধারনত সুফী মতবাদের কারনেই বেশীরভাগ মানুষ জাহান্নামের খাতায় অগ্রীম নাম লেখায়। এছারা বর্তমান জামানার নব্য জাহিলিয়াত ও সীমাহীন ফিতনার মাঝে মানুষ যখন কিছুতেই নিজেদেরকে পাপমুক্ত রাখতে পারে না আবার ধর্মকেও সুফীবাদের সাথে একাকার করে ফেলে, ঠিক তখনই মানুষ জাহান্নামী হয় গনহারে। এখন আমাদের জানতে হবে সুফীইজম আসলে কি জিনিস । ১মত সুফীইজম বলতে সাধারনত যেটি সবাই বুঝে তা হল সন্যাসবাদ বা ইসলামের শরীয়তকে বা সামাজিক রাষ্ট্রীয় বিধিবিধানকে সম্পুর্নরুপে পরিত্যাগ করে বিদাতী তরিকা মারফতের মাধ্যমে নাজাত পাওয়ার চেষ্টা করা । ২য়ত সুফীইজম বলতে আসলে যা বুঝা উচিত তা হল- শুধুই আধ্যাতিক জগতে বাস করা সম্পুর্নরুপে দুনিয়া বিমুখ হয়ে । এই ২য় পদ্ধতিটি ইসলামে জায়েজ করা হয়েছে প্রতিবছর রমজান মাসে ১০/২০ দিন পর্যন্ত মসজিদের মাঝে, তবু শুধুই ইতিকাফকারীর জন্যে। এছারাও যখন প্রচন্ড ফিতনার জামানা এসে যাবে এবং সকল দলই জাহান্নামের দিকে আহব্বান করবে এবং বিশেষ করে যখন মুসলিমদের কোন ১খলীফা ও তার দল পাওয়া যাবে না তখন সর্বসময়ের জন্যেই মসজিদ ছারাও ১মত বনে জঙ্গলে বা প্রয়োজনে সারাজীবন ১টি গাছের তলায় ২য়ত পাহাড় পর্বতের গুহায় ৩য়ত নিজের ঘরেই সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার সহী দলীল পাওয়া গেলেও দেখা যায় সুফীবাদিরা সমাজের মাঝে অবস্থান করেই যেভাবে কুরান সুন্নাহকে বাদ দিয়ে মারফতের উপর চলছে তা সত্যিই জাহান্নামের পথ এবং বর্তমান পরিবেশের উপর ভিত্তি করে কুরান হাদিস অনুযায়ি তাদের এভাবে জীবন ধারন মোটেই জায়েজ নয় আর তাছারা কুরান হাদিসের কোথাও মারফত বলতে কোনকিছুরই উল্লেখ নেই এই পদ্ধতিটি পরবর্তীতে কিছু অল্প জানা সুফি নতুন আবিস্কার করেছে । আর যারা হাদিস অনুযায়ি ফিতনা হতে বাঁচতে আধ্যাতিক হয়ে এখনও জীবন যাপন করছেন তাদেরও এই পন্থা অবলম্বনের সময় শেষ হয়ে এসেছে। কারন এখন ফিতনার এমন চরম অবস্থা ধারন করেছে যে বনে জংগলেও ফিতনা প্রবেশ করেছে , পাহাড় পর্বতেও আর নিরাপদে ফিতনাহীন পরিবেশে থাকা সম্ভব নয়, নিজের ঘরেও আধ্যাতিক পরিবেশ সৃষ্টি আর সম্বব নয় । কারন বাস্তবতা হল- ফিতনা আজ মক্কা মদীনা ব্যাতীত সর্বস্থানেই পিপীলিকার ন্যায় প্রবেশ করেছে এমনকি বর্তমানে নুন্যত্তম ইমানদার ব্যাক্তির পিঠও আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে, হক্ব বাতিল দুটো পরস্পর এমনভাবে বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে যে দুটোর যেকোন একটির চির অবসান না করা পর্যন্ত কেউই ক্ষান্ত হবে না । ইসলামকে দুনিয়া থেকে চিরতরে মিটিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে মাষ্টার প্লান করা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। সবচেয়ে বড় কথা হল দুনিয়াত্যাগী আধ্যাতিক ব্যাক্তিবর্গরা যদি তাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে ফিতনা হতে বাচতে পারত তবে ১টা কথা ছিল কিন্তু তারাও ফিতনা হতে বাচতে সক্ষম হচ্ছে না তাই এখন সমস্ত মুসলিম উম্মাকে সমাজের মধ্যেই অবস্থান পূর্বক কুরান-হাদিসের উপর এক হওয়া ছারা আর কোন উপায় নাই, যারা ঘুমিয়ে ছিল তাদেরও ঘুম ভাংগানোর ব্যাবস্থা বিশ্বে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়ে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা করেছেন। তাই এখন আর হাদিসের বর্ননা অনুযায়ি খলীফাবিহিন অবস্থায় ও ফিতনা হতে বাচাতে নিজেকে সমাজ হতে বিচ্ছিন্ন রেখে চলা কিছুতেই হক্ব পন্থা হচ্ছে না বলে এটাও আর জায়েজ নেই ।
দ্বীনুল ইসলামকে সুফীইজমের মত মেনে চলে সাধারনত ৩ শ্রেনীর লোক যেমন- ১ম শ্রেনীর আছে যারা অতীতে সঠিক পথে ছিল কিন্তু বেশ কিছুদিন হল তারাও ভ্রান্ততার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে , ২য় শ্রেনীর লোক আছে যারা ভ্রান্ত বা ভন্ড , আর ৩য় প্রকার লোক যারা আছে এদের সংখ্যাই বেশী। এরা সর্ব সাধারন এবং দুনিয়ালোভী মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত । এরা সাধারনত ইসলাম ধর্মকে ভালভাবে না জানার কারনে এবং দুনিয়ার লোভ বেশী থাকার কারনে নিজেরা ইচ্ছে করেই জ্ঞানার্জন করে না আর ধোকায় পরে মনে করে- জানলে মানতে হবে বেশী, তার চেয়ে কম জেনে কম মেনে চলা বুদ্ধিমানের কাজ । এদের যতটুকু ইসলামিক জ্ঞান তৈরী হয় তার প্রায় সবই বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল হতে বা অন্যের কাছ থেকে শুনে শুনে । অল্প বিদ্যা ভয়ংকরি হওয়ায় এরা ইসলাম ধর্মকে এক আজব ধরনের সুফীইজমের মত মনে করে। আর সেই ভয়ংকর জাহান্নামী হবার মুল মন্ত্র দুটি হল একই পাপ ২য় বার বা বার বার করলে ক্ষমা পাওয়া যায় না এবং ইসলাম অনুযায়ি চলা মানে হল সম্পুর্ন সুফী হয়ে যাওয়া বা ১টি পাপও না করে সম্পূর্নরুপে দুনিয়াবিমুখ আধ্যাতিক হয়ে যাওয়া । যেহেতু এরকম গুন শুধু নবী রসুলদেরই থাকে কেননা তারা হলো সমস্ত মানুষের অনুসরনীয় ব্যাক্তিত্ব , আর ধর্ম যেহেতু সরাসরি নবী রসুলগন হতেই এসেছে তাই সবাই ধর্মের জ্ঞান কম অর্জন করায় মনে করে- ইসলাম অনুযায়ি চলা মানে একদম হুবহু ই নবীদের মতই চলা। কিন্তু ইসলামের জ্ঞান ভালভাবে অর্জন করলে জানা যায় ইসলাম অনুযায়ি চলা বলতে প্রতিটা ব্যাক্তিরই সমর্থ ও পরিবেশ অনুযায়ি আলাদা আলাদা ভাবে চলা বুঝায় । কিন্তু দুনিয়াটাকে বেশী প্রধান্য দিতে গিয়ে সর্ব সাধারনরা সবসময়ই ভাবে- কিভাবে পরকালে কোনমতে পার পাওয়া যায় দুনিয়াদারী খায়েশ মিটে করেও । তাই ইচ্ছে করেই ধর্মের ভিতর নিজেদেরকে বেশী ডুবাতে চায় না । এজন্য তারা ফরজ ধার্মিক জ্ঞানটুকুও অর্জন করে না । আর তাই যেহেতু দুনিয়ার মত কঠিন পরীক্ষার জায়গায় যখন তারা দেখে পাপ না করে কিছুতেই চলা সম্ভব হচ্ছে না, তখনই তারা নিজেদের হায়াতটাকে দীর্ঘ মনে করে বুড়ো বয়সে সুফী হবার অটল সিদ্ধান্ত গ্রহন করে কারন তারা ভাবে পাপ আর ধর্ম এক সাথে চলতে পারে না বা কিছু পাপ করতে থাকাবস্থায় ইসলাম অনুযায়ি চলা ঠিক নয় । অথচ পাপ কাজ করা এবং ক্ষমা চাওয়া এই দুটোই ধর্ম এর ১ম ভিত্তি । তাছারা ভবিষ্যতে কে কি করবে তার সবকিছুই আল্লাহ সুবঃ পূর্বেই লিখে রেখেছেন আর পাপ করার প্রবনতার স্রষ্টা এবং পাপের স্রষ্টাও তিনিই(কুরানের স্পষ্ট আয়াত দ্বারা প্রমানিত), পাপকে সৃষ্টি করার প্রধান উদ্দেশ্যই হল পাপ হতে ক্ষমা চেয়ে অনুতপ্ত হয়ে বান্দা তাঁর মুখী হবে এবং তিনি সন্তুষ্ট হবেন, অথচ ৩ নাম্বার সু্ফীবাদীরা মনে করে যে পাপ না করে এবং করলেও শেষের দিকে শুধু ১বারই ক্ষমা চেয়ে আল্লাহ সুবঃ কে সন্তুষ্ট করবে। অনেকটা আল্লাহ সুবঃ এর সাথে তারা যেন জিহাদ করে যে পাপ তারা কিছুতেই করবে না অন্তত্য এখন না পারলেও বুড়ো বয়সে অবশ্যই সুফী হবে, অথচ আল্লাহ সুবঃ এমনভাবে প্লান করে রেখেছেন যে মানুষ সর্ব সময়ই দুনিয়াতে পাপ বা ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত থাকবে। এর অর্থ দ্বারায় ৩ নাম্বার সুফিবাদীরা জীবনের একটা বিশাল অংশই কাটাবে পাপ হতে ক্ষমা না চাইতে চাইতে, বেনামাজী হয়ে এবং ভোগ বিলাসিতার মধ্যে আর "শেষ ভাল যার সব ভাল তার" সুত্রের উপর ভিত্তি করে আল্লাহর সাথে ধোকাবাজীর উদ্দেশ্যে শেষ জীবনে মহা ১টি তওবা করে একদম সুফী হবার পরিকল্পনা করবে। আর এরাই হল এই উপমহাদেশের বিশেষ করে বাংলাদেশের আম মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। এদের ধারনা ধর্মের উপর চলা মানে পাপ একদমই না করে চলা। তাই যদি হয় তবে কিন্তু ধর্মের আসল উদ্দেশ্যই বিফলে যায়, যেহেতু ধর্ম মানেই মানুষকে দুনিয়াতে পাঠিয়ে পাপ পুন্যের মাধ্যমে পরীক্ষা করা এবং ভুল করে পাপ করলে ক্ষমা চাওয়া এবং বেশী বেশী পুন্যের কাজ করা, এই দুই প্রধান ভিত্তির উপরেই কিন্তু ধর্ম দ্বারিয়ে আছে। তাছারা ১ম মানুষ আদম আঃ হতে শুরু করে প্রায় সকল নবীই পাপ করে ক্ষমা লাভের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করেছেন অথচ তিনারা জন্মগত ও প্রকৃতিগতভাবে নিষ্পাপ ছিলেন। পাপ পুন্য দ্বারাই যেহেতু দুনিয়াতে পরীক্ষা চলতে থাকে আর এই পরীক্ষা চলতে থাকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাই একেবারেই নিষ্পাপ হয়ে দুনিয়াতে আরো বেশীদিন বেঁচে থাকার দরকার কি ? তখনই মরে যাওয়া উচিত। অবশ্য ইচ্ছে করে আজীবন পাপ করতে থাকা আর মাফ চাইতে থাকা চলবে না, যথা সাধ্য চেষ্টা করতে হবে পাপ হতে দূরে থাকার তবে ভুল বশ্বত বা বাধ্য হলে ক্ষমা চেয়ে ধর্মের উপরে চলতে থাকতে হবে বিশেষ করে ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ চালু রাখতেই হবে এতে করে অটোমেটিক্যালী পাপ মাফ হতে থাকবে এমনকি ছোটখাট গুনাহের জন্য মাফও চাইতে হবে না শুধুমাত্র জামাতে পায়ে হেটে আসা এবং অজুর মাধ্যমেই এগুলো মাফ হতে থাকে আর নামাজের মাধ্যমে তো আরও বেশী যেমনঃ- নবী সঃ বলেন" তোমাদের কারো বাড়ির সামনে যদি ১টি নদী থাকে আর ঐ নদীতে সে যদি দৈনিক ৫ বার গোসল করে তবে কি তার শরীরে কোন ময়লা থাকতে পারে ? সাহাবীরা বললেন- না । নবী সাঃ বললেন- ঠিক একইভাবে ৫ ওয়াক্ত নামাজও বান্দার গোনাহ মোচন করে নিষ্পাপ বানিয়ে দেয়"। অতএব কখনই ভাবা যাবে না যে, যেদিন কোন পাপই না করার যোগ্যতা অর্জন করব সেদিন হতেই ধর্মের উপরে চলা শুরু করব ।
যেসব ধোকায় পরে মানুষ গনহারে জাহান্নামী হয় সেরকম আরেকটি কমন ধোকা হল- একই পাপ পাপ বার বার করলে ক্ষমা পাওয়া কঠিন। এই ধোকাটি তৈরী হয় ইসলাম সম্পর্কে অল্প জানার দরুন । যেমন- অনেক হুজুরই বলে থাকে আপনি তওবা করবেন ঠিক আছে কিন্তু তওবা কবুল হবার শর্ত হল আপনি ঐ পাপ আর জীবনেও করবেন না তার ওয়াদাও করতে হবে। যদিও এরকম এক্সটাভাবে তওবার পর ওয়াদা করার কোন দলিল নেই বা এটার প্রয়োজনও নেই কেননা তওবা করে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমেই অটোমেটিক্যালীই সেই ওয়াদাও হয়ে যাচ্ছে । আর কোন পাপ বা কোন কাজ জীবনেও আর করব না এরকম ওয়াদাবদ্ধ আল্লাহ সুবহানার নিকট করলে তার পেছনে একটা এক্সট্রা শয়তান লেগে যায় যার কাজই হবে- কি করে তার সেই ওয়াদা ভংগ করা যায়। আর তওবা করার সময় মনে মনে এমনিই আকাংক্ষা রাখতে হবে যে এটি আর করব না এবং তওবার পর আর সেটি না করার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে বাদবাকী আল্লাহ পাকের ইচ্ছা। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ইসলাম সম্পর্কে অল্প জানার কারনে সাধারন মানুষগুলো ভাবে যেহেতু একই পাপ পাপ বার বার করলে ক্ষমা পাওয়া কঠিন তাই যেসব পাপ সমাজে চলতে গিয়ে আমি বার বার করতে বাধ্য হব সেসব পাপের জন্য আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে তওবাকে মশকারার জিনিস বানাবো না, তার চেয়ে যখন আমার ঐ পাপ কাজ করার প্রয়োজন একেবারেই শেষ হয়ে যাবে তখনই একদম পাক সাফ হয়ে প্রয়োজনে হজ্ব করে শিশুর মত কাঁদতে কাঁদতে ক্ষমা চাইব, আল্লাহ বিশেষ দয়ালু, নিশ্চয় তওবা কবুল করবেনই। এর পুর্বে যেসব পাপ কাজ করার আর সম্ভাবনা নেই শুধু সেগুলোর জন্যই ক্ষমা চাইব , অথচ এরকম ব্যাক্তি কি নিজের হায়াতের গ্যারান্টি দিতে পারবে ? যদি সেই বাদ না দেয়া পাপ কাজ বড় ধরনের পাপ হয় আর তওবা করার পূর্বেই তার মৃত্যু এসে যায় তবে তাকে সেই গোনাহের জন্য পরকালে অবশ্যই জাহান্নাম ভোগ করতে হবে । অথচ প্রত্যহ ৫ বার সলাত নামক ইবাদতের মাধ্যমে সব পাপের ক্ষমা চাওয়ার ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে সবার জন্যই দৈনিক ৫টি বিভিন্ন সময়ে। আর সবচেয়ে মারাত্বক ব্যাপার হল বাধ্যগত বাদ না দেয়া সেই পাপ কাজগুলোর কিছু এমনও আছে যে, যার কারনে সেই ব্যাক্তি নামাজও পড়ে না , সে ভাবে যে নামাজও পড়ব আবার পাপও করব এটা নিশ্চয় আরো বড় অপরাধ তাই সে ইচ্ছে করে নামাজ ত্যাগ করে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে ভাবে- আগে পাপ কাজ ত্যাগ করে ফেরেশতা হই তারপর সালার কায়েম করব, এই ধরনের চেষ্টা আল্লাহর কথার বিরুদ্ধ বা তাঁর সিস্টেমের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হয় কেননা তিনি বলেন সুরা বাকারায় "নিশ্চয় নামাজ মানুষকে পাপ কাজ হতে বাচিয়ে দেয় এবং দিবে" । তাহলে ঐ ব্যাক্তি কিন্তু নামাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে পাপ কাজ বাদ না দিয়ে নামাজ ছারাই আগেই পাপ কাজ বাদ দিয়ে তারপর সুফী হয়ে নামাজ পড়বে এই প্লান করে শয়তানের ধোকায় পরে আল্লাহ সুবঃ এর আয়াতের উলটো চলছে । এছারাও অনেকে এমন কিছু পাপ কাজ আছে যেসব পাপ কাজ করলে কোন ইবাদতই কবুল হবে না এই তথ্য জানার পর তারা নামাজকে সাধারন একটি ইবাদতের কাতারে ফেলে নামাজ স্বইচ্ছায় ত্যাগ করে হাদিস অনুযায়ি কাফের হয়ে বসে থাকে আর মনে মনে ভাবে নামাজ না পড়লেও আমার দিলে ঈমান ঠিকই আছে । অথচ নামাজ কোন সাধারন ইবাদত নয় বা শুধুই ইবাদতও নয় এর দ্বারা মুসলমান ও কাফের এর পৃথকীকরন করা হয় । এবারে আসল কথায় আসা যাক- আল্লাহ সুবহানা তায়লা কি সত্যিই একই পাপ বার বার ক্ষমা করতে অপারগ ? না তা তো নয়ই বরং আল্লাহর একটি নাম হল – গাফফার যার অর্থ হল বার বার ক্ষমাকারী বা অতিরিক্ত/অতিব ক্ষমাকারী তাছারা আল্লাহ বলেন- বান্দা আমার সম্পর্কে যেরকম ধারনা পোষন করে আমি তার কাছে সেরকমই হয়ে থাকি তাই আল্লাহ সুবঃ এর গাফফার নাম হলেও যদি কোন ব্যাক্তি ভাবে যে একই পাপ বার বার করলে বোধ হয় তিনি ক্ষমা করবেন না তবে কিন্তু আল্লাহ সুবঃ শুধু তার কাছেই সেরকমই আচরন করবেন । তাই আসুন আমরা ইসলামের জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি ৫ওয়াক্ত সলাত কায়েমের মাধ্যমে এবং সলাত ছারাও বেশী বেশী আল্লাহ সুবহানাতায়লার কাছে ক্ষমা চাই কেননা নবী সঃ এর আগের পিছের সব পাপই মাফ করা হয়েছে জেনেও তিনি প্রতিদিনই অসংখ্যবার তওবা প্রার্থনা করেছেন। আবার কেউ যখন কোন আমল নিজেই করা শুরু করে তখন সেই বান্দারও ফরজ হয়ে যায় সেই আমল এর দাওয়াত তার নিকট আত্বিয় হতে শুরু করে সমর্থ অনুযায়ি অন্যদেরকেও সেই কাজের দাওয়াত দেয়া । কিন্তু এই দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রেও অনেকে ভাবে যে আমি আগে সম্পুর্ন সুফী হই তারপর দাওয়াত দিব । এত কিছুর পরেও যদি কেউ সম্পূর্ন নিষ্পাপ না হয়ে সৎ কাজের দাওয়াত দেয়ার জন্য কোন ব্যাক্তির নিকট গেলে সে বলবে -১মতঃ যে (আপনি যা যা বলছেন তা তো আপনি নিজেই মানেন না) তাই ইসলামের নিয়ম হল-যে যতটুকু আমল করে বা মানে, তার ততটুকুরই দাওয়াত দিতে হবে যেসব আমল এখনো সে শুরু করেনি সেগুলোর দাওয়াত দেয়া যাবে না তবে যদি কেউ ইচ্ছে করে জানতে আসে আর তার তা জানা থাকলে তাকে তো আর ঐ আমল মানা শুরু করা হয়নি বলে চুপ করে থাকবে না । তাছারা ২য়তঃ একথাও বলার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি যে-(আপনি মাত্র এই ১টি/২টি আমল করে আমাকে তা করার জন্য দাওয়াত দিচ্ছেন অথচ আপনার আরও অনেক খারাপ দিক আছে, সেগুলো সংশোধন করে তারপর আসুন অথবা আরও কত গুরুত্বপুর্ণ ভাল কাজ আছে যেগুলো এখনো করেননি, সেগুলো করে তারপর মানুষদের বলতে আসলে ভাল মানাবে, মোটকথা নিজে পরিপূর্ণ ভালমানুষ হয়ে তারপর যদি আমাদের তাগিদ দেন তখন বিবেচনা করব) অর্থাৎ শয়তানের অসওসার কারনে মানুষগুলো দাওয়াতদাতার অন্নান্য ভুলগুলোও খুজবে। যেমন- কোন বেনামাজী ব্যাক্তিকে যদি দাড়িবিহীন নামাজী ব্যাক্তি নামাজের কথা বলে, তবে সে নামাজী ব্যাক্তিটির দাড়ি না রাখার ভুল ধরবে।আর দাড়িওয়ালা ব্যাক্তি নামাজের তাগিদ দিলে অনেকে আবার তার ব্যাক্তিগত অন্নান্য ভুলও ধরতে পারে, যেন তার পরিপূর্ন ফেরেশতার মত হয়ে তারপর দাওয়াত দেয়া উচিত ছিল। এক্ষেত্রে করনিয় হল, তাকে বলতে হবে যে- একজন মানুষ কখনই হঠাত করেই পরিপুর্ন ভালমানুষে রুপান্তরিত হতে পারে না, ধীরে ধীরে ভাল হতে হয়। আর নবী(সঃ)ব্যাতীত সব মানুষেরই ভুল থাকবেই। আল্লাহ(সুবঃ)১মাত্র তাঁকেই অনুসরন করতে বলেছেন আর অন্য কাউকে নয়। সুতারাং পরিপুর্ন মানুষ হিসাবে নবী(সঃ)কে দেখ ও অনুসরন কর । আমাকে দেখার ও অনুসরন করার দরকার নেই, কিন্তু আমি যেটার দাওয়াত দিচ্ছি সেটা আমিও মানি কিনা সেটা দেখ। অন্যগুলো দেখার দরকার নেই। অন্নান্য ভুলগুলো যেদিন শুধরাবে সেদিন সেগুলোরও দাওয়াত দিতে আসব ইনশাহ আল্লাহ, এর আগে নয়। আর পরিপুর্ন ভাল হয়েই যদি দাওয়াত দেয়ার নিয়ম হয় তবে নবী(সঃ) ছারা আর কেউ দাওয়াত দিতে পারবে না, কারন তিনি ব্যাতীত সবারই কোন না কোন ভুল থাকবেই এমনকি পূর্ববর্তী নবীদেরও ভুল ছিল। তাহলে কেউই যেহেতু পরিপুর্ন নয়, তাই কেউ আর দাওয়াত না দিয়ে ঘরে বসে আজীবন তপস্যা করে যাবে পরিপুর্ন হবার জন্য, কিন্তু মৃত্যু এসে যাবে তবু সে পরিপুর্ন ভালমানুষ হতে পারবে না আর দাওয়াত দেয়াও হবে না। অথচ সে পরিপুর্ন না হলেও তার অনেক ভাল আমল ছিল যেগুলো সে তার প্রতিবেশিদের জানালে তারাও উপকৃত হতে পারত আর আমি যদি তাকে দাওয়াত না দিয়ে ঘরে বসে পরিপুর্ন ভাল হবার তপস্যা করতে থাকি আর আপনার তার আগেই মৃত্যু এসে যায় তবে কেয়ামতে মাঠে আপনি ঠিকই আমাকে দোষীর কাঠগড়ায় ফেলবেন আর বলবেন যে ঐ ব্যাক্তির জানা ছিল এবং সে নিজে আমলও করত কিন্তু আমাকে কোনদিন জানাতে আসেনি। আর আল্লাহ সুবঃ কুরানে বলেন- একটি আয়াত হলেও অন্যের কাছে পৌছাও যদি তোমার তা জানা থাকে । তাছারা নবী(সঃ) মৃত্যুর পর এ দায়িত্ব সকল উম্মতের, যে যতটুকু আমল করে সে ততটুকুর দাওয়াত অন্যদের মাঝেও পৌছাবে, মানুষ হিসাবে পরিপুর্ন ভালমানুষ হওয়া সম্ভব না হলেও আল্লাহর দয়ার কারনে তাকে ক্ষমা করা হবে, এমনকি নবী (সঃ) ও আল্লাহর দয়ার উপর নির্ভর করবে। ৩য়তঃ মানুষগুলো বলতে পারে- (নিজের চরকায় তেল দাও বা নিজের কাজ নিজে কর আমাদের নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলবে) তখন তাকে বলতে হবে যে, মুসলমানদের কাজই হল দাওয়াত দেয়া বস্তুত তোমাকে দাওয়াত দেয়ার মাধ্যমে আমি নিজেরই কাজ করছি। আর এগুলো মানুষ এজন্য বলে যে- সে হয়ত জানে না বা পছন্দ করে না তাই। সত্তিকার্থে মানুষের মাঝে সৎ কাজের আদেশ অসত কাজের নিষেধ করতে গেলেই বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পরতে হয়।১ম সমস্যা হল এটাই যে- সাধারন মানুষগুলো সৎ কথা বলনে ওয়ালা ব্যাক্তিদেরকে সম্পুর্ন সুফি টাইপ বা ফেরেশতার মত পাক পবিত্র দেখতে চায়। এরকম না হলেই যেন সৎ কথা বলাও একটা অন্যায়। এই ধরনের চিন্তাধারা সুফিইজম বা সন্নাসীবাদ হতে উদ্ভুদ্ধ হয়েছে(খ্রীষ্টান,বৌদ্ধ ধর্মের অনুকরনে) যেটি ইসলাম মোটেও সমর্থন করে না। তাছারা দাওয়াতের ক্ষেত্রে এরকম সমস্যা নবীদের বেলাতেও হত, তারা নবীদেরও ভুল ধরত এবং অলৌকিক ক্ষমতা দেখতে চাইত। এমনকি আল্লাহর সংবাদ মানুষ কেন আনল ফেরেশতা আনলেই পারত, তখনও এধরনের চিন্তা চেতনা সাধারন মানুষদের মাঝে দেখা যেত। তাই দাওয়াত দেওয়ায় এ ধরনের যত সমস্যাই থাক না কেন উম্মতে মুহাম্মদিকে দাওয়াত ঠিকই দিতে হবে তবেই হবে শ্রেষ্ঠ উম্মত। দাওয়াত দেয়ার পরও না মানলে ইসলামে কোন জোর-যবর দস্তি নেই। আর এভাবেই একজন মুসলমানের দায়িত্ব হল জানা ও মানার পর পরই নিজের আপনজন ও পাড়া প্রতিবেশীসহ সমর্থ থাকলে পূরো পৃথিবীতেই যতদুর সম্ভব ইসলামকে ছরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা। এভাবে দাওয়াত দেয়া যে শুধু বড় সওয়াবের কাজ তাই না বরং সমর্থনুযায়ি দাওয়াত না দিলেই জবাবদিহীতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া অসম্ভব। কেননা দাওয়াত দেয়া প্রতিটি মুসলমানের ফরয দায়িত্ব। এখানে ১টি কথা মনে রাখা দরকার যে, দাওয়াত দেয়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট ধরা বাধা নিয়ম নেই, যে যেভাবে পারে সমর্থনুযায়ি অপরকে সর্বসময়ই দাওয়াত দেয়ার চেষ্টা করবে। এতে নিজের দায়িত্ব রক্ষার ও নেকী অর্জনের পাশাপাশি ইমানও মজবুত হবে। সত্যিকারার্থে নবী (স)ও তার সাহাবীদের এভাবেই বেশি ইমান মজবুত হত। কখনই তাদের শুধুই চার কালেমা পড়ে বা শুধুই জিকির করে ইমান পরিপক্ক হয়নি। আর উনাদের যেহেতু ইসলামের জ্ঞানার্জন এবং তা আমল ও তার দাওয়াত দেয়ার মাধ্যমে ইমানের পরিপুর্নতা এসেছিল তাই আমাদেরও ইমান আসবে সঠিক ইসলাম জানা, মানা ও তা অন্যদের মাঝে পৌছানোর মাধ্যমে। কেননা আমরা প্রতিটা দিন ও প্রতিটা মূহুর্ত আমাদের সাধারণ কিছু কথা ও কাজের মাধ্যমে অন্যদেরও পাপ কাজের দাওয়াত ঠিকই দিয়ে যাচ্ছি অনবরত, নিজেরই অজান্তে এবং ইসলাম না জানার কারনে আর দাওয়াত দেয়া শুধুই হুজুরদের দায়িত্ব মনে করে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×