---২য় ভাগ----
৩) একটি প্রচলিত কথা আছে যে " হুজুকে বাংগালী"। এই কথাটির শতভাগ প্রমান পাওয়া যায় শুধুমাত্র বাংগালী জাতির মাঝেই। বাংগালীদের মাঝে বিভিন্ন জ্ঞানী-গুনী এবং সচেতন মহল, বাংগালীর যেকোন কিছুতেই না বুঝেই মাত্রারিক্ত হুজুগে হবার অভ্যাসকে চরম নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরতে হুজুকে বাংগালী পরিভাষাটি ব্যাবহার করেছেন। যদি বাংগালী ভাল কোনকিছুতে এমন হুজুগে স্বভাব দেখাত তবে অবশ্যই ভাল ছিল কিন্তু অতীতে অনেকেই বাংগালীদের মাঝে ভাল অনেক কিছুতেই হুজুগ তুলতে চেষ্টা করেছিল কিন্তু এইসব মংগলময় ক্ষেত্রের বেলায় বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই হুজুকে বাংগালীদের কোন সারাই মেলেনি বর্তমানে তো আরো মেলে না তবে অমংগলময় কোন ক্ষেত্রে বাংগালীরা কিভাবে যে এত্ত হুজুগে হয়ে উঠে তার উত্তর আজও মেলেনি। একথা যদি কারও অবিশ্বাস্য মনে হয় তবে সে বাংগালীদের নিয়ে একটা ছোটখাট পরীক্ষন করতে পারে তবে যে বা যারা পরীক্ষন করবে তাদেরকে অবশ্যই সত্যিকারের ভাল-মন্দ সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে কেননা কেউ যদি সংস্কৃতি একটি ভাল জিনিস মনে করে অশ্লীল যাত্রাপালার আয়োজন করে এবং দেখে অনেক বাংগালীই এতে হুজুগ দেখাচ্ছে তবে কিন্তু সে বাংগালী সম্পর্কে উল্টো ধারনা পাবে আর যাদের সত্যিকারের ভাল-মন্দ বোধ রয়েছে তারা কিন্তু অবশ্যই দেখতে পাবে যে খারাপীতে বাংগালীরা কিভাবে হুজুগে হয়ে উঠে যদিও বিশ্বের অন্নান্য প্রান্তেও এমন দেখা যায় কিন্তু বাংগালীদের ক্ষেত্রেই এমন বেশী হয় বলে এই জাতির নামই দেয়া হয়েছে "হুজুগে বাংগালী" আর এই হুজুগ যেহেতু বেশীরভাগ খারাপ ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র হয়ে থাকে তাই জাতিগতভাবে বাংগালীর এটাও একটা অপরাধ প্রবনতা হিসেবে গন্য করতে হবে।
৪) অপরকে ঠকানোর স্বভাব যেন বাংগালীর জাতিগত একটি স্বভাব, প্রায় সিংহভাগ বাংগালীই অন্যকে ঠকানোর বেলায় তোয়াক্কা পর্যন্ত করে না উপরন্তু এই কাজ করতে পারলে নিজেকে আরো বুদ্ধিমান ভাবে। বাংগালীর এভাবে একে অন্যকে ঠকানোর পালা এক ধরনের চক্রাকারে চলতে থাকে বিশেষ করে এই বাংলাদেশে। আর সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হল এটি বুঝার পরেও তারা অপরকে ঠকানো ছারে না। বাংলাদেশীদের এই অপরাধ প্রবনতাটি ভালভাবে বুঝতে নিম্নে বর্নিত ঘটনাচক্রটি পড়তে হবে যা অনলাইন হতে সংগৃহীত করা হয়েছে---
গফুর মিয়া এই শহরের একজন দুধ বিক্রেতা.. তিনি চিকন বুদ্ধির বাঙালি, তাই ১০ লিটার দুধে ৫ লিটার পানি মিশিয়ে ১৫ লিটার করলেন। সামান্য বুদ্ধিতে পাক্কা পাঁচ লিটার লাভ!! খুশিতে চোখ চকচক করে ওঠে তার..
দুধ বিক্রির টাকা পকেটে নিয়ে তিনি চাল কিনতে যান সাবু মুদির দোকানে। সাবু মুদি তাকে 'অতি উত্তম চাউল' 'এরকম চাউল কোথাও পাইবেন না' ইত্যাদি বলে শেষে পাথর মেশানো চাল বিক্রি করে। ওজনেও আধা কেজি কম দেয় 'কত লাভ করে ফেললাম' ভেবে বেজায় খুশি সাবু মুদি লাভের টাকা নিয়ে বাজারে যায় মাছ কিনতে.. মাছ বিক্রেতা সুরুজ মিয়া তাকে ফরমালিন মেশানো পচা মাছ ধরিয়ে দেয় কেনা দামের দ্বিগুন মূল্যে। তার লাভ করতে হবে না..
কিছুক্ষণ পরে সুরুজ মিয়ার কাছে খবর আসে, "তার ছেলেটা এক্সিডেন্ট করেছে" দ্রুত সে তার ছেলেকে হাসপাতালে নেয়। হাসপাতালের একজন ধান্দাবাজ দালাল "ভালো চিকিৎসা'র ব্যবস্থা করে দেবার কথা বলে ভংচং বুঝিয়ে সুরুজ মিয়ার কাছ থেকে ভালো পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়.. সেই ধান্দাবাজ বাড়ি ফেরার পথে পড়ে ছিনতাইকারীর হাতে।
ছিনতাইকারী তার পেটে ছুরি মেরে সব টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয়। পালিয়ে যাবার সময় ছিনতাইকারী ধরা পড়ে পুলিশের
হাতে। পেদানি দিয়ে সব টাকা নিয়ে নেয় পুলিশ। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা বা ভিক্টিমের কাছে ফেরত দেয়া কোনটাই করেন না পুলিশ অফিসার। সেই পুলিশের ছেলে আবার হয়ে পড়ে ইয়াবা আসক্ত.. মাদকের পেছনে টাকা ঢেলে
প্রতিনিয়ত সে খালি করে দেয় বাবার পকেট...আর মাদক বিক্রেতা সেই টাকায় হয়তো কিনতে থাকে গফুর মিয়ার সেই
পানি মেশানো দুধ..।
এভাবেই বাংগালীরা প্রতিনিয়ত একে অপরের ক্ষতি করে চলেছে যা কিনা বিশ্ব-শান্তির জন্য এক ধরনের হুমকি জাতিগত অপরাধ প্রবনতায়।
৫) এই জাতির আরেকটি প্রবনতা হল- কেউ কাউকে খুব শয়তান, টাউট, চালাক ইত্যাদি আখ্যা দিলে রাগ না করে মনে মনে উল্টো আরও খুশি হয়ে থাকে। একটা জাতি কতটুকু নিম্ন পর্যায়ে গেলে এরকম খারাপ বিশেষণে গর্ববোধ করতে পারে?
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯