এক ময়মনসিংহনিবাসীর ঢাকা-খুলনা ভ্রমণনামা-১(ঢাকা পর্ব)
আমার প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয়ে গেল । এতদিন জানতাম আমি একটু অন্তর্মুখী । কিন্তু আমার চাইতেও যে আরো “অলসদেহ, ক্লীষ্টগতি, গৃহের প্রতি টান......” লোক থাকতে পারে তা প্রথম এক্সপেরিয়েন্স করলাম । মেজাজ টেজাজ খারাপ করে বসে আছি এমন সময় একজন খুলনা যাওয়ার প্রস্তাব পাড়ল, আমাদের একজন নাকি প্রায়ই খুলনা যায় । আমার নতুন জায়গা দেখা নিয়েই কথা । তাই আমি একবাক্যে রাজি হয়ে গেলাম ।
১৮ তারিখে ২৬ তারিখের ট্রেনের টিকেট কাটলাম । ট্রেন করে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা ছিল আমার মতে ভুল । চার জনের ট্রেনের টিকেট কাটা হল । ২৬ তারিখ ভোর চারটার সময় ঢাকার ট্রেন ধরার জন্য বাসা থেকে বের হলাম । ট্রেন ছাড়ল প্রায় পাঁচটার দিকে । ট্রেনের নোংরা গন্ধ, ভীড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেতে ট্রেনে যাওয়ার ভীমরতি যার মাথায় চেপেছিল তাকে বকতে লাগলাম । দুঃখের ব্যাপার এই যে, যার কারণে ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সে নিজেই শেষ সময়ে ভ্রমণদল থেকে নিজেকে পরিস্কার করে নিয়েছিল । ট্রেনের ভিতরের জঘন্য পরিবেশে আমার একপর্যায়ে দমবন্ধ হয়ে আসছিল, মনে হচ্ছিল নাগরিক জীবনের বিড়ম্বনা নিয়ে নির্মিত কোন ভারিক্কি আর্ট মুভির একটা চরিত্র আমি!!! উফফফ!!!
ঢাকায় পৌঁছলাম সাড়ে আটটার দিকে । নাস্তা খাওয়ার সময় মাথায় ভূত চাপল বসুন্ধরা সিটিতে সিনেমা দেখতে যাওয়া হবে । যেই ভাবা সেই কাজ, কিন্তু বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে দেখা গেল সিনেপ্লেক্স তো বটেই, সাথে ফুড কোর্টও বন্ধ! কিছু ছেলেপিলে এসে নিরাশ মুখে ফিরে যাচ্ছে । তো বাকি পোলাপান মোবাইল ও শার্টের দোকান ঘুরে দেখতে দেখতে আমি কাছেই এক খালার বাসায় গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে আসলাম ।
এরপরে দুপুরে গেলাম নভোথিয়েটার । মনের ভুলে মনে হয় আমি নিজেই অথবা অন্য কেউ নভোথিয়েটারের কথা উঠে পড়েছিল । আমাদের এক সদস্যের মাথায় যেন ভূত চেপে গেল, আজ সে নভোথিয়েটারের শো দেখেই ছাড়বে । প্রায় এক দেড় ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে সে চারটা টিকিট সংগ্রহ করেই ছাড়ল । এদিকে আমি আমার বিশাল ব্যাগ নিয়ে পড়েছি বিড়ম্বনায় । বসুন্ধরা সিটিতেও গার্ড আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল “মামা, ব্যাগে এত কি?” । আর কিছু না চারদিনের জন্য জামা-কাপড় নিয়ে আসাতেই এত ভয়ংকর দেখাচ্ছিল ব্যাগটাকে । যাই হোক, সিনবাদ সেজে ব্যাগ-দৈত্য ঠেলতে ঠেলতে নভোথিয়েটারের ভিতরে আমি হামাইলাম(মানে প্রবেশ করলাম, এখানে “চুমা” খাওয়ার কথা বলা হয়নাই) । নভোথিয়েটারে বাংলাদেশ সরকারের গুনগান গাওয়া পূর্বক নানা কিসিমের গ্রহতারা দেখানো হল । আমাদের সাথের একজনের জ্যোতির্বিজ্ঞানে আগ্রহ আছে, সে নানা হিন্ট দিল । তবে একটা জিনিস বলতেই হবে, নভোথিয়েটারের বিশাল পাতিল(!) আর বিশাল প্রজেক্টরটা আসলেই চরম জিনিস । ভালোই কেটেছে সেই সময়টা ।
নভোথিয়েটার থেকে বেরিয়ে একটা জ্বালার মাঝে পড়লাম । একে ত সিএনজি পাচ্ছি না, তার ওপরে......(না থাক, এই অংশটা বরং বাদ দিই......) । যাই হোক, কোনমতে সিএনজি করে কমলাপুর রেলস্টেশন গিয়ে পৌঁছলাম । সন্ধ্যা সাতটার দিকে ট্রেন ছাড়ার কথা । আমাদের শখের জ্যোতির্বিদ ইতিমধ্যেই ঢাকার বাসায় চলে গেছে(তার খুলনা যাওয়ার কথা ছিল না ।) সাড়ে ছয়টার দিকে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছানোর একটু পরেই এক ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম । জানা গেল ট্রেন লেট করবে । ট্রেন আসল প্রায় নয়টার দিকে । এর মাঝে কমলাপুর রেলস্টেশন মুখস্থ হয়ে গেছে মনে হয় । যাই হোক, অবশেষে ট্রেন মাঝারে স্বীয় গাত্র সেঁধাইয়া দিতে সমর্থ হইলাম আমরা তিনজন ।
(নভোথিয়েটারের ছবিটা ছাড়া বাকি ফটোগুলো আমার বন্ধুর তোলা)
ট্রেন এ সেই ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেনের মত দমবন্ধ পরিবেশ না থাকলেও খুব একটা স্বস্তিতে থাকার উপায়ও নেই । চিত্রা এক্সপ্রেস নামের এই ট্রেনের জানালার নিচের অংশ বন্ধ, খুব সম্ভবত নিরাপত্তার জন্য এই কাজ করা হয়েছে, কাজেই বাতাস কিছুটা আসলেও সেটা মার্কামারা আর্ট মুভির মত মাথার উপর দিয়েই চলে গেছে ।
ট্রেনের ভিতরে ভ্যাপসা গরম, পিঠ ঘেমে নেয়ে যাচ্ছে । ট্রেনের সিটে হেলান দিতে গিয়ে খেয়াল করলাম, সিট নামছে ত নামছেই, তাই সোজা হয়ে যাই আবার । অনেক ইতস্তত করার পর একবার হেলাতেই থাকি, এবার থেমে গেল । সকাল নয়টার দিকে খুলনা রেলস্টেশনে থামার আগে কিভাবে যে ঘুমাইলাম বুঝলাম না । ঈদের পরে লাইনে ট্রেনের খুব চাপ থাকায় ট্রেন যে কতবার থামছে তার হিসাব নাই । আর তখনি ঘুম ভাংত আমার আর আমি ভাবতাম, এত কস্ট করে খুলনা ঘুরতে আসার সিদ্ধান্তটা কি তাহলে ভুল?
(চলবে)
সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো
রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে
ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদ না কী মার্কেট!
চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷
আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন