বিগত ৩০ বছরে মাকি©ন প্রেসিডেন্টদের সন্ত্রাসী তৎপরতা
বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যুদ্ধবাজ রাষ্ট্র, মানবতা ও মানবাধিকারের শক্রু, বিশ্বের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সামরিক আগ্রাসনে বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত। মানবতা ও মানবাধিকার আজ ধুকরে ধুকরে কেঁদে মরছে। মানবতা ধ্বংস ও দস্যু গিরির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজ বিশ্বের সুপার পাওয়ার এ পরিনত হয়েছে। এ সুপার পাওয়ার হওয়ার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে এক রক্তাক্ত ইতিহাস। বিগত ৩০ বছরে ৫ জন মার্কিন প্রেসিডেন্টে তাদের শাসনকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে সমস্ত আগ্রাসন চালিয়েছে এবং সেটার পিছনে আন্তর্জাতিক সমর্থন কতটুকু ছিল তা নিয়ে সংবাদ সংস্থা এপি একটি বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে উঠে এসেছে সামরিক আগ্রাসন ও মানবতা ধ্বংসের বিভিন্ন দিক । নিম্নে রোনাল্ড থেকে বারাক ওবামা পর্যন্ত সামরিক আগ্রাসনের যৎকিঞ্চিত বিবরণ দেওয়া হলো।
রোনাল্ড রিগ্যান
রোনাল্ড রিগ্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ তম প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান (১৯৮১-১৯৮৯) ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম সামরিক আগ্রাসন পরিচালনা করেন লেবাননে। তিন জাতির শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে লেবাননে মার্কিন সেনা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ১৯৮৩ সালে লেবাননে সামরিক ব্যারাকে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে এতে ২৯৯ জন মার্কিন ও ফরাসি সেনা নিহত হয়। এর প্রতিশোধ হিসেবে সেখানে সীমিত পরিসরে বিমান হামলা চালানোর জন্য নির্দেশ দেন রোনাল্ড রিগ্যান। ১৯৮৩ সালেই রিগ্যান আবারও সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দেন গ্রানাডায়। সেখানে সামরিক অভূত্থানে ক্ষমতাসীন সরকারের পতন হলে জাতিসংঘ এবং ব্রিটেনের আপত্তি সত্বেও ক্যারিবীয় দ্বীপের ৬টি দেশের সমর্থন নিয়ে রোনাল্ড রিগ্যান সামরিক হামলা চালান।এরপরে আসে লিবিয়ার পালা। ১৯৮৬ সালে বার্লিনে একটি ডিস্কোবারে বোমা হামলা চালানো হয় এতে ৭৯ আমেরিকান নাগরিক আহত এবং ২ জন নিহত হয়। এই হামলার জন্য লিবিয়ার তৎকালিন প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে দায়ী করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান সেখানে সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। (যদিও হামলায় গাদ্দাফির সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দিতে পারেনি।) এই হামলায় মার্কিন মিত্রদেশ যুক্তরাজ্যের পুর্ণ সমর্থন ছিল। তবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তাদের এই সামরিক আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানায়।
জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ
রিগ্যানের পরে (১৯৮৯–১৯৯৩)যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণ করেন ৪১ তম প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ। ক্ষমতা গ্রহন করেই তিনি পূর্বসূরীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে একের পর এক দেশে সামরিক আগ্রাসন চালাতে থাকেন। ক্ষমতা গ্রহনের প্রথম বছরেই(১৯৮৯)তিনি সামরিক আগ্রাসন চালান পানামায়। একনায়ক ম্যানুয়েল নোরিয়েগার সরকার মাদকদ্রব্য পাচারে জড়িত এই অজুহাতে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে বুশ সেখানে ২৬ হাজার মার্কিন সৈন্য প্রেরণ করেন। আক্রমন শুরু হওয়ার পূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পানামা যুদ্ধ ঘোষণা করলে এক মার্কিন সৈন্য নিহত হয়। ১৯৯১ সালে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ আবারও সামরিক আগ্রাসন চালান ইরাকে। সাদ্দাম সরকার কুয়েত দখল করে নিলে কুয়েত থেকে তাদের হটিয়ে দিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও ৩৩ টি মিত্র দেশের সমর্থন নিয়ে ইরাকে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন বুশ। যে আগ্রাসনের প্রভাব আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইরাক।এরপর আসে সোমালিয়া। ১৯৯২ সালে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবিক সাহায্য প্রদানের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে সোমালিয়ায় সৈন্য প্রেরণ করেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ।
বিল ক্লিনটন
জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের পরে ৪২ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণ করেন উইলিয়াম জেফারসন বিল ক্লিনটন( ১৯৯৩-২০০১)। আগের দুই প্রেসিডেন্টের তুলনায় কম আগ্রাসী ছিলেন তিনি। তবুও তার সময়েও থেমে থাকেনি সামরিক আগ্রাসন।১৯৯৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশকে হত্যার চক্রান্তে জড়িত থাকার অজুহাতে ইরাকের গোয়েন্দা সদর দপ্তরে ক্রুজ মিশাইল হামলা চালান তিনি। এতে বাগদাদে অব¯িহত সং¯হাটির কার্যালয় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ১৯৯৩ সালে আবারও সোমালিয়ায় অভিযান পরিচালনা করার নির্দেশ দেন ক্লিনটন। সোমালিয়ার নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সেখানে ¯িহতিশীলতা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও অন্য ৩৫ দেশের সমর্থন নিয়ে সোমালিয়ায় সৈন্য প্রেরণ করেন তিনি।এরপরে ১৯৯৪ সালে হাইতিতে সৈন্য প্রেরণ করে ক্লিনটন। হাইতির নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সেখানে ¯িহতিশীলতা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন নিয়ে সেখানে সৈন্য প্রেরণ করেন তিনি। এরপরে আসে বসনিয়ার পালা। (১৯৯৪-১৯৯৬)ন্যাটো বাহিনীর সমর্থন নিয়ে বসনিয়াতে ১৮ মাস ধরে বিমান হামলা পরিচালনা করেন ক্লিনটন। তার নির্দেশেই জাতিসংঘের অনুরোধে সেখানকার সার্বদের বিরুদ্ধে কামান, সাজোয়া যান, বোমা হামলা ও ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায় মার্কিন সেনা বাহিনী।১৯৯৬ সালে আবারও ইরাকে সামরিক হামলা চালান ক্লিনটন। ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসরত সংখ্যালঘু কুর্দীদের রক্ষা ও তাদের উপরে সাদ্দাম হোসেনের রাসায়নিক হামলার অজুহাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনক্রমে ইরাকের নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুতে ক্রুজ মিশাইল হামলা চালান এবং জাতিসংঘের সহায়তায় ইরাকের দক্ষিনাঞ্চলে নো-ফ্লাইজোন প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।১৯৯৮ সালে সুদান ও আফগানিস্তানে হামলা চালান ক্লিনটন। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি ও তাঞ্জানিয়ায় মার্কিন দুতাবাসে বোমা হামলা করে ২২০ জন মানুষ হত্যার (যাদের মধ্যে ৯ জন মার্কিন নাগরিক)সাথে জড়িত থাকার অজুহাতে আফগানিস্তান ও সুদানে এই হামলা চালান হয়।১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শকদের বেধে দেওয়া নিয়ম মেনে চলতে সাদ্দাম হোসেনকে বাধ্য করতে আবারও ইরাকে মিসাইল ও বিমান হামলা পরিচালনার নির্দেশ দেন ক্লিনটন।
১৯৯৯ সালে আসে কসোভোর পালা। এবার যুগো¯¬াভিয়ার সৈন্য বাহিনীকে লক্ষ্য করে মিসাইল ও বিমান হামলার নির্দেশ দেন ক্লিনটন। এই হামলায় ন্যাটো বাহিনীও অংশ নেয়।
জর্জ ডব্লিউ বুশ
ক্লিনটনের পরে ৪৩ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন জর্জ ডব্লিউ বুশ(২০০১-২০০৯)। মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে আগ্রাসী ও যুদ্ধবাজ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনে কর হয় তাকে। ২০০১ সালে সন্ত্রাসী আক্রমনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গর্বের প্রতীক টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরে এই ঘটনায় আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের জড়িত থাকার অভিযোগ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং লাদেনকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবী জানায় আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে আফগান কর্তৃপক্ষ তাকে আমেরিকার হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানালে জাতিসংঘের অনুমোদন নিয়ে ন্যাটো বাহিনী এবং অন্য ৪৮ টি দেশের সহায়তায় আফগানিস্তানে হামলা চালায় আমেরিকা। আজও শেষ হয়নি সেই যুদ্ধ।২০০৩ সালে আবারও ইরাকে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। ইরাক পারমানবিক অস্ত্র তৈরী করছে এমন অমুলক অজুহাতে জাতিসংঘ ও অন্য ৪৮টি দেশের সমর্থন নিয়ে ইরাকে হামলা চালান তিনি। যদিও এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে সরানো।
বারাক ওবামা
জর্জ ডব্লিউ বুশের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন বারাক ওবামা। তার সময়ে সামরিক আগ্রাসন তুলনা মূলক কম হলেও একে বারে থেমে থাকেনি। পূর্বসূরি বুশের শুরু করা ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধ তিনি সফলতার সাথে তার দুই মেয়াদে চালিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি নতুন করে বেশ কিছু দেশে আগ্রাসন পরিচালনাও করেছেন। ২০১১ সালে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ থামানোর জন্য জাতিসংঘের অনুমোদন ক্রমে লিবিয়ায় মিসাইল ও বিমান হামলার অনুমোদন দেন বারাক ওবামা। এমনকি সেখানে নো-ফ্লাইজোনও প্রতিষ্ঠা করে মার্কিন বাহিনী। ২০১১ সালে লাদেনকে হত্যা করার জন্য পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে কমান্ডো অভিযান পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করেন বারাক ওবামা। ওই অভিযানে কমান্ডো হামলায় লাদেন নিহত হন। এবার বারাক ওবামার নতুন মিশন সিরিয়া। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থামানো এবং আসাদ সরকার বিদ্রোহীদের উপরে রাসায়নিক হামলা করেছে এই অজুহাতে সিরিয়ায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘ ও মিত্রদেশগুলোর সমর্থন পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাদের অনুমোদন না পেলেও একাই সিরিয়ায় হামলা চালাতে বদ্ধপরিকর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
সময়ের বিবর্তনে বিশ্বের সুপার পাওয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজ পতনের পথে। কারণ জুলুম নির্যাতন কখনো চিরস্থায়ী হয় না। আজকের বিশ্ব প্রেক্ষাপটে দস্যু ভিত্তির রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজ এতটাই দূর্বল হয়ে পড়েছে যে, কারো সহযোগীতা ছাড়া এখন আর একা আগ্রাসন পরিচালনা করতে পারছে না। সিরিয়া আগ্রাসনের ঘোষনা দিয়েও পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । আর মার্কিন সমাজের মধ্যে যে পচন ধরেছে তা মার্কিন সামরিক বাহিনীতেও সংক্রমিত হয়েছে। ব্যাপক বেকারত্ব আর অর্থনীতি ধশের ব্যাপকতায় বিপর্যস্ত মার্কিন সমাজ। ধিরে ধিরে শক্তি হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে বর্তমান সময়ে আলোচিত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ,যেমন নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। তাইতো বিশ্ববাসী আজ অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে মার্কিন দস্যুদের পতনের দিকে।
লুণ্ঠনের নিষ্ঠুরতা: জাতিসংঘ মহাসচিবকে পর্যন্ত হত্যা
সম্পদ লুট করে নেয়ার ষড়যন্ত্র কতো গভীর, কতো নিষ্ঠুর! আর দাগ হ্যামারশোল্ডের মৃত্যু? সদ্য স্বাধীন কঙ্গোয় গৃহযুদ্ধ যাতে না বাধে, সে জন্য সে দেশে ছুটে গিয়েছিলেন সে সময়ের জাতিসংঘ মহাসচিব। আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৬১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে বহনকারী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। মারা যান সুইডেনের অভিজাত পরিবার থেকে আসা এ মানুষটি। যিনি শান্তির জন্য কাজ করতেন, বড় শক্তিদের চোখ রাঙানির ধার ধারতেন না, ছোট ছোট দেশের স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করতেন। সে বিশাল দুর্ঘটনা আজও রহস্যাবৃত্ত। নানা তথ্য থেকে প্রশ্ন দেখা দেয় তার বিমানটি কি গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল? আজ আবার এ প্রশ্ন উঠেছে। দ্যাগ হ্যামারশোল্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কেনেডি ‘আমাদের শতাব্দীর সবচেয়ে মহান রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তিনি এ যাবত একমাত্র ব্যক্তি, যাকে মৃত্যুর পরে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়। আজও তিনি সুইডেনে জাতীয় বীরের সম্মানে অভিষিক্ত। জাতিসংঘের প্রথম নারী আন্ডার সেক্রেটারি ডেম মার্গারেট আনসটি বলেছেন, হ্যামারশোল্ডের কাজের ধরনের কারণে তার সঙ্গে বিরোধ বাধে তাদের, যারা জাতিসংঘকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কঙ্গোতে বড় প্রশ্ন ছিল দক্ষিণের কাটাঙ্গা প্রদেশ কে নিয়ন্ত্রণ করবে? প্রদেশটি তামা, ইউরেনিয়াম ও টিন সম্পদে সমৃদ্ধ। শোম্বের বিচ্ছিন্নতাবাদকে মদদ দেয় বেলজিয়াম। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রও মদদ দেয়। কাটাঙ্গায় ছিল এসব দেশের স্বার্থ, সেখানকার খনিতে। আর হ্যামারশোল্ডের সমর্থন ছিল কঙ্গোর নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি। সে সরকার প্যাট্রিস লুমুমবার সরকার। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থ জানায়, লুমুমবা সরকারকে। কাটাঙ্গায় নেয়া হয় অন্য দেশ থেকে ভাড়াটে সৈন্য। প্রভুদের মদদে বিপুল অস্ত্রেসজ্জিত সে ভাড়াটে বাহিনীর সামনে অসহায় হয়ে পড়ে সেখানে অবস্থানরত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী। হ্যামারশোল্ড চেষ্টা করছিলেন কঙ্গোর কেন্দ্রীয় সরকার আর শোম্বের মধ্যে আলোচনা করে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে। যে রাতে হ্যামারশোল্ডের বিমান রহস্যজনকভাবে ‘বিধ্বস্ত’ হয় সে রাতে শোম্বের সঙ্গে তার আলোচনায় বসার কথা ছিল। সে ঘটনার প্রায় ৩০ বছর পরে, ১৯৯২ সালে দু’ব্যক্তি ব্রিটেনের দৈনিক গার্ডিয়ানকে চিঠি লিখে জানান, ভাড়াটে সৈন্যরা বিমানটিকে গুলি করেছিল। এ দু’ব্যক্তি হচ্ছেন বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঠিক আগে ও ঠিক পরে কাটাঙ্গায় কর্মরত জাতিসংঘের দুজন প্রতিনিধি। দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিসিয়েশন কমিশনের প্রধান ছিলেন ডেজমন্ড টুটু। এ নোবেল বিজয়ীর নেতৃত্বাধীন এ কমিশন ১৯৯৮ সালে আটটি চিঠি প্রকাশ করে। এসব চিঠি থেকে দেখা যায়, ওই বিমানটি নষ্ট করার কাজে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তৎকালে শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী শাসন ব্যবস্থাধীন দক্ষিণ আফ্রিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জড়িত ছিল। চার বছর পরে সুইডেনের সাহায্যকর্মী গোরান রিওর্কডাল গবেষণা করেছেন বিষয়টি নিয়ে। এ বিষয়ে সম্প্রতি বই লিখেছেন ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ সুসান উইলিয়ামস। বইটির নাম হু কিলড হ্যামারশোল্ড। তারা দুজনেই এ উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, বিমানটিকে হয়তো গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। এসব তথ্য মূল ধারার ব্রিটিশ তথ্য মাধ্যম বিবিসি পরিবেশন করেছে। কত বিচিত্র, কত রহস্যময়, কত নির্মম, কত ষড়যন্ত্রপূর্ণ সম্পদ লুট করে মুনাফাবাজির জগত।
দেশে দেশে সন্ত্রাস তৈরি ও পৃষ্টপোষকতা প্রদান
দেশে দেশে সন্ত্রাসী দল ও গ্রুপ সৃষ্টিতে মার্কিন সরকারের ভূমিকা অনস্বীকায©। মার্কিন সরকার যে বহু দেশে এ ধরনের গ্রুপের মাধ্যমে প্রক্সি ওয়ার বা পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে তা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির এই যুগে কারো কাছেই অজানা নয়। যেমন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য আলকায়দা ও তালেবান সৃষ্টিতে মার্কিন সরকারের ভূমিকার কথা সবাই জানে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের ব্যবহারের জন্য দেশে দেশে প্রচারণার মহাপরিকল্পনা নিয়েছিল। ব্রেজনস্কি পরিকল্পনা হিসেবে খ্যাত ওই পরিকল্পনার আলোকে আরব যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দেয়াসহ সব ধরনের সহায়তা দিত মার্কিন সরকার। তালেবানদের বিনামূল্যে অস্ত্র দিত আমেরিকা। ইরাকেও মার্কিন সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে সাদ্দাম সরকারের পতন ঘটানো হয়। এরপর দেশটিতে ক্ষমতা-শূন্যতার সুযোগে আমেরিকা নানা গোত্রের মধ্যে গড়ে তোলে সশস্ত্র নানা গ্রুপ। মূলত এইসব গ্রুপই বর্তমানে সন্ত্রাসী দল আলকায়দা হিসেবে পরিচিত। আমেরিকা ছাড়াও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে ওয়াশিংটনের সেবাদাস সরকারগুলো ইরাকে তৎপর সন্ত্রাসী দলগুলোকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকা লিবিয়ার গাদ্দাফি সরকারসহ বর্তমান সরকারের বিরোধী কয়েকটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে বিপুল অস্ত্র দিয়ে কার্যত দেশটির বিরুদ্ধে প্রক্সি ওয়ার চালিয়ে যাচ্ছে। নাম ও পরিচয় এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন এইসব গোষ্ঠী দেশটিকে ক্রমেই লিবীয় জনগণের জন্য নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। আর সিরিয়া হচ্ছে মার্কিন সরকারের সন্ত্রাস-বান্ধব নীতির সবচেয়ে উর্বর ক্ষেত্র।সেখানে জিহাদের নামে সন্ত্রাসী হামলায় তৎপর বহু সন্ত্রাসী গ্রুপকে অস্ত্র ও অর্থসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়েও নিজ লক্ষ্য হাসিলে ব্যর্থ হয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউজ ইসরাইল বিরোধী আরব এই দেশটির আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে লেলিয়ে দেয়ার পর এখন নিজেই তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। কলসী থেকে বেরিয়ে পড়া দৈত্যের মত এইসব সন্ত্রাসী গ্রুপকে বশে আনা এখন মার্কিন সরকারের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
দেশে দেশে সন্ত্রাসী কম©কান্ডের জন্য বিশেষ বাহিনী মোতায়েন
প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ গত শতাব্দীতেই শেষ হয়ে গেছে। তৃতীয় কোনো বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়নি। তাই বলে বিশ্বে শান্তি আসেনি, যুদ্ধ চলছেই। বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘাত, সংঘর্ষ ও গৃহযুদ্ধের কথা মাথায় রেখে অথবা না রেখেও বলা যায়, বিশ্বের কোথাও না কোথাও ঠিক এ মুহূর্তে একজন হলেও মার্কিন কমান্ডো 'যুদ্ধ' চালিয়ে যাচ্ছে। নিজ জনগণেরও অজ্ঞাতসারে মার্কিন সেনাবাহিনীর মধ্য থেকে একটি গোপন বাহিনী বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে অপারেশন চালাচ্ছে। পেন্টাগনের নব্য পাওয়ার এলিটদের ইচ্ছা এবং নির্দেশনায় পরিচালিত এ বৈশ্বিক যুদ্ধের আকার ও ব্যাপ্তি কতটা তা কখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে গত মে মাসে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরার জন্য পরিচালিত গোপন মার্কিন সেনা অভিযানের পর বিষয়টির ওপর খানিকটা আলো পড়ে। তাতেও অবশ্য বিষয়টি পুরোপুরি প্রকাশিত হয় না।অবশ্য সংঘাতপূর্ণ আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ফোর্স মোতায়েন তো প্রকাশ্যে হয়েছে। আর এখন ক্রমে ক্রমে এ কথাও চাপা থাকছে না যে, ইয়েমেন, সুদান ও সোমালিয়ার মতো তীব্র সংঘাতপূর্ণ দেশেও ওই ফোর্স কাজ করছে, যদিও সারা বিশ্বে তাদের কর্মতৎপরতার খবর এখনো অন্ধকারে ঢাকা পড়ে আছে। ২০১০ সালে 'ওয়াশিংটন পোস্ট' পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, বিশ্বের ৭৫টি দেশে আমেরিকান স্পেশাল ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। বুশ শাসনকালের শেষদিকে এরকম দেশের সংখ্যা ছিল ৬০টি। স্পেশাল অপারেশন কমান্ডের মুখপাত্র বলেন, ২০১১ সাল শেষ হওয়ার আগেই এ রকম দেশের সংখ্যা দাঁড়াবে ১২০টি। তার ভাষায়, 'আমরা অনেক বড় কিছু করছি বা করেছি_ আফগানিস্তান এবং ইরাকের চেয়ে অনেক বড়।' বিশ্বের ৬০ শতাংশ দেশে নিজেদের সামরিক উপস্থিতির কথা এভাবে খোলামেলা আগে কখনো স্বীকার করেনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যদিয়ে এ সত্যটিই প্রমাণিত হয়ে গেলো যে, পেন্টাগনের যুদ্ধবাজ কর্তারা বিশ্বের প্রতিটি কোণায় গোপন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইরানে ইসলামি বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর তেহরানে একদল ছাত্র আমেরিকান দূতাবাস অবরোধ করে কর্মীদের জিম্মি করে। জিম্মি উদ্ধারের নানা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমেরিকা গোপনে একটি সামরিক বিমান পাঠায়। কিন্তু বিমানটি ইরানে ঢুকেই বিধ্বস্ত হলে আটজন মার্কিন সৈন্য প্রাণ হারায়। ফলে অভিযানটির গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যায় এবং অভিযানটি ব্যথ ©হয়। এটা ছিল আশির দশকের ঘটনা। ওই ব্যর্থতার গ্লানি থেকে ১৯৮৭ সালে জন্ম হয় ইউএস স্পেশাল অপারেশনস কমান্ড। ভিয়েতনামে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর মার্কিন বাহিনী তখন খুবই শান্ত। তারা ভুগছে অর্থসংকটে। এমন দুঃসময়ে হঠাৎ স্পেশাল ফোর্স পেল আলাদা বাড়ি, বিপুল বাজেট এবং একজন চার তারকা খচিত জেনারেলের নেতৃত্ব। সেই থেকে তারা সহযোগী বাহিনী হিসেবে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সশস্ত্র বাহিনীর সব শাখা থেকে লোকজন নিয়ে গড়ে ওঠা বাহিনীটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে স্পেশালাইজড ও অতি গোপন মিশনগুলো বাস্তবায়ন করে চলেছে। ওইসব মিশনের মধ্যে ছিল গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান, শত্রুপক্ষ সম্পর্কে ব্যাপক অনুসন্ধান, গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ, বিদেশি সেনাদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধে পাল্টা অভিযান পরিচালনা। স্পেশাল ফোর্সে কারা আছে? এতে আছে সশস্ত্রবাহিনীগুলোর মাথার লোকজন। যেমন সেনাবাহিনীর 'গ্রিন ব্যারেট' ও 'রেঞ্জাররা', নেভি সিলস, এয়ারফোর্সের এয়ার কমান্ডো, মেরিন কোরের বিভিন্ন স্পেশাল অপারেশনস টিম। তারা ছাড়াও আছে স্পেশালাইজড হেলিকপ্টার ক্রু, বোট টিম, প্যারা রেসকিউম্যান, বেসামরিক কর্মী_ এমনকি ব্যাটলফিল্ড এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও আবহাওয়া কর্মী পর্যন্ত। স্পেশাল ফোর্সেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে জয়েন্ট স্পেশাল অপারেশনস কমান্ড (জেএসওসি)। এ গোপন সাব-কমান্ডটির প্রাথমিক কাজই হলো সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত এবং হত্যা করা। এই কমান্ডটি প্রেসিডেন্টের অধীনে পরিচালিত হয় এবং তার কাছেই তাদের কাজকর্মের রিপোর্ট দিয়ে থাকে। তাদের রয়েছে একটি গ্লোবাল হিট লিস্ট_ ওই লিস্টে থাকে বিশ্বের কোথায় কাদের কখন কিভাবে হত্যা করা হবে তাদের তালিকা। তবে ওই লিস্টে স্বদেশী মার্কিনীদের নামও থাকে। এরা একটি আইন বহির্ভূত কিল। ক্যাপচার (খুন করো অথবা বন্দী করো) অভিযান চালিয়ে থাকে। সাবেক গোয়েন্দা উপদেষ্টা সিআইএ হবু পরিচালক, চার তারকা বিশিষ্ট জেনারেল ডেভিড পেট্রাউস (বর্তমানে সিআইএর প্রধান) ওই শাখাটিকে বলেছেন, 'এটি প্রায় শিল্পোত্তীর্ণ খুনে মেশিন'। তবে শুধু জেএসওসি নয়, নীরব যুদ্ধের অংশ হিসেবে সোমালিয়া, পাকিস্তান ও ইয়েমেনে একই রকম গুপ্তহত্যা ও মানুষবিহীন বিমান থেকে বোমা ফেলে হত্যাকান্ডচালিয়ে যাচ্ছে নেভি সিলস ও সেনাবাহিনীর ডেল্টা ফোর্সের মতো কমান্ডো ইউনিটগুলোও। ওই হত্যাকান্ড গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএও জড়িত থাকে। এর বাইরে জেএসওসি বিশ্বব্যাপী অসংখ্য গোপন কারাগার প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে বন্দীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করা হয়। শোনা যায়, ইরাকে ১৫টি ' আফগানিস্তানে ওইরকম ২০টি কারাগার রয়েছে। এবং এ বছরের গোড়ার দিকে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে স্পেশাল অপারেশনস কমান্ডের বিদায়ী প্রধান নেভি অ্যাডমিরাল এডিরক ওলসন উপগ্রহ থেকে তোলা রাত্রিকালীন ছবিতে পৃথিবীর দিকে আঙ্গুল তুলে বলেন, এ ছবিতে পৃথিবীর যে অংশ আলোকোজ্জ্বল, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেটাকেই মনে করা হতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা (এটি হচ্ছে পৃথিবীর উত্তর অংশের শিল্পোন্নত ভূভাগ)। তিনি বলেন, 'তবে এই একদশকে বিশ্ব অনেক বদলে গেছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের কৌলশগত অবস্থান ও পরিবর্তিত হয়েছে। আমরা এখন দক্ষিণ অংশে প্রতি মনোযোগি হয়েছি। কেননা পৃথিবীর এই অনালোকিত অংশ থেকে আমাদের প্রতি ক্রমাগত বেশি হুমকি আসছে। সিনেট কমিটিকে ওলসন ৫১টি দেশে স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ড মোতায়েন রয়েছে বলে জানালেও সংস্থার মুখপাত্র বলেন, ৫১ নয়, প্রকৃতপক্ষে ৭০টি দেশই তারা আছে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের অনুরোধেই তারা সেখানে গেছে। ওলসন বলেন, স্পশাল অপারেশন্স কমান্ড ৮৫ শতাংশ সৈন্যই মোতায়েন করা হয়েছে বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের ২০টি দেশে। দেশগুলো হলো, মিসর, ইরান, বাহরাইন, আফগানিস্তান, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, কাজাখস্তান, কিরঘিজিস্তান, লেবানন, পাকিস্তান, ওমান, কাতার, সিরিয়া, সৌদিআরব, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। অন্যরা ছড়িয়ে আছে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কোথাও সংখ্যায় কম, কোথায় আবার বিরাট বহরে। তবে কোন দেশে তাদের সৈন্য কাজ করছে তা স্পষ্টভাবে জানাতে নারাজ কমান্ড কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে কমান্ডের মুখপাত্র মার্টিন রোজ বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশই অনেক সময় চায় না বিষয়টি প্রকাশ হোক, হয়তো তাদের অভ্যন্তরীণ কারণে নয় তো আঞ্চলিক কারণে। তবে এটা এখন আর গোপন নেই যে, গিলস, বা ডেল্টা ফোর্সের মতো তথাকথিত 'বস্নক' স্পেশাল অপারেশন্স বাইহনীগুলো আফগানিস্তান, ইরাক, পাকিস্তান ও ইয়েমেনে 'কিল/ক্যাপচার' (খুন করো অথবা বন্দী করো) অভিযান দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি গ্রিন ব্যারেটস ও রেঞ্জারসের মতো 'হোয়াইট' ফোর্সগুলো বিভিন্ন দেশেল সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছে যাতে তারা আলকায়েদা ও অন্যান্য জঙ্গি গ্রুপকে দমন করার সক্ষমতা অর্জন করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ফিলিপাইনে জামে ইসলামিয়া ও আবু সায়াফের মতো বিদ্রোহী দলগুলোকে দমনের জন্য দেশটির সশস্ত্রবাহিনীগুলোর ৬০০ জন সদস্যকে প্রতিবছর প্রশিক্ষণ দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।এতে তাদের বার্ষিক ব্যয় হয় ৫ কোটি ডলার। স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ড, পেন্টাগণ এবং স্পেশাল অপারেশন্স মিসনের একটি ডাটাবেজে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে মার্কিন অনুসন্ধানী সাংবাদিক টারা ম্যাককেলভি দেখিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দক্ষ সেনারা ২০১০ সালে বেলিজ, ব্রাজিল, বুলগেরিয়া, বুরকিনাফাসো, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, মালি, নরওয়ে, পানামা ও পোল্যান্ডে যৌথ প্রশিক্ষণ মহড়া করেছে। ২০১১ সালে এ পর্যন্ত ওইরকম প্রশিক্ষণ মহড়া চলেছে ডোমিনিকান রিপাবলিক, জর্ডান, রুমানিয়া, সেনেগাল, দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ডে। যেসব দেশে স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ডের সেনা মোতায়েন রয়েছে, মূলত সেসব দেশেই এসব প্রশিক্ষণ মহড়া দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালে ১২০টি দেশে ওই প্রশিক্ষণ মহড়া হবে বলে জানিয়েছেন কমান্ডের মুখপাত্র মার্টিন। অর্থাৎ কমপক্ষে ১২০টি দেশে আমেরিকান গোপন সেনারা পৌছে গেছে। আমেরিকার সাময়িক বলয়ে একসময় স্পেশাল অপারেশন্স ফোর্সের অবস্থান ছিল অনেকটা সতিনপুত্রের মতো- ছিল তেমন ক্ষমতা, না ছিল মর্যাদা। কিন্তু সেই দিন আর নেই। ফোর্সটি এখন শুধু লোকবল ও বিপুল বাজেটই পায়নি, এর ক্ষমতাও প্রভাব এখন বিশাল। ২০০২ সালে তাদের নিজস্ব জয়েন্ট টাস্কফোর্স গঠনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালে তারা গঠন করেছে নিজস্ব জয়েন্ট অ্যাকুইজিশন টাস্কফোর্স। নিজ সেনাদের জন্য বাজেট প্রণয়ন, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং সমরসজ্জার ওপর নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন বিভাগের জন্য সংরক্ষিত ক্ষমতার অংশীদারিত্ব, প্রতিটি প্রতিরক্ষা বাজেটে তাদের জন্য বরাদ্দ এবং কংগ্রেসে তার পক্ষে বক্তব্য রাখার জন্য প্রভাবশালী সদস্য সব মিলিলয়ে স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ড এখন পেন্টাগণে অসাধারণ ক্ষমতাধর খেলোয়াড়। ওই ক্ষমতা ব্যবহার করে তারা যে কোনো আমলাতন্ত্রিক লড়াইয়ে জয়লাভ করতে পারে। যেকোনো উচ্চপ্রযুক্তি কিনতে পারে। যেকোনো উচ্চ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা অবশ্যই চালানোর ক্ষমতা রাখে। বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর পেন্টাগণ পরিকল্পনা সমন্বয় করতে গিয়ে এই ফোর্সটি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে বিভিন্ন বিদেশি সরকারি সংস্থা এবং বিদেশি সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে। তাদের রয়েছে স্টিলথ হেলিকপ্টারের বিশাল ভান্ডার, বিমান, ড্রোন বিমান, উচ্চপ্রযুক্তি স্পিডবোট, মাইন প্রতিরোধী যানবাহন প্রভৃতি। সাবেক সমরতত্ত্ব বিদ চার্মাস জনসন সিআইএকে বলতেন, প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী। আর আজ একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে জে এসওসি, তারা কাজ করছে, প্রধান নির্বাহীর ব্যক্তিগত গুপ্তঘাতক দল' হিসেবে। আর এর মূল সংস্থা স্পেশাল অপারেশন্স কমান্ড কাজ করছে পেন্টাগণের পাওয়ার এলিট হিসেবে। অপারেশন্স কমান্ড চালিয়ে যাচ্ছে গোপন লড়াই ছোট বড় নানা ধরনের হত্যাকা-, বন্দী বা অপহরণ, নৈশকালীন অভিযান, বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি, যার কোনো খবরই মার্কিন জনগণ জানে না। আমেরিকানরা জানে ফ্লোরিডার ম্যাকডিল বিমান ঘাঁটিতে ওই বিশেষ বাহিনীর সদর দপ্তর অবস্থিত। তাদের বিশাল লোকবল, বাজেট ও উচ্চপ্রযুক্তির সমরসজ্জা সম্পর্কেও মার্কিন জনগণ জানে। কিন্তু জানে না বিশ্বের দেশে দেশে কখন কি করে বেড়ায় ওই বাহিনী, যেটি কানাডার নিয়মিত বাহিনীর প্রায় সমান এবং অনেক দেশের সেনাবাহিনীর চেয়ে বড়।বিশ্বের শতাধিক দেশে কেবল নিজ স্বার্থ ও জঙ্গি মনোবৃত্তি চরিতার্থ করার উগ্র নেশায় মত্ত হয়ে নীরব যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। তাই অ্যাডমিরাল ওসলান নির্দ্বিধায় বলতে পারেন, 'এটি হচ্ছে এমন এক বাহিনী, যারা সবচেয়ে কম যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করে, সবচেয়ে ক্ষিপ্র, উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন, কার্যকর উপদেশদাতা, প্রশিক্ষক, সমস্যা সমাধানকারী ও যোদ্ধা যা যে কোনো দেশের জন্যই কাম্য।
চাঁদ ধ্বংসের পরিকল্পনা ছিল আমেরিকার
সায়েন্স ফিকশন উপন্যাসের কোনো কাহিনীর মতো শোনালেও ঘটনাটি সত্যি, পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ এ চাঁদকেই উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি আমেরিকা।
পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হলে এভাবেই ধ্বংস হয়ে যেত চাঁদচাঁদহীন পৃথিবীর কথা ভাবুন তো একবার। গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে শীতল যুদ্ধের সময় রাশিয়াকে ভয় দেখাতেই মূলত এ বিরল পরিকল্পনার জাল বুনেছিল আমেরিকা। আর এ ঘটনাটি তারা ঘটাতে চেয়েছিল পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে। 'প্রজেক্ট এ-১১৯' নামে আমেরিকার গোপন এ উদ্যোগটি তখন সফল হলে হয়তো মানুষ হারাত তাদের প্রিয় চাঁদকে। চাঁদহীন পৃথিবীর ইতিহাসেও হয়তো আসত একটি বিশাল পরিবর্তন। বর্তমান প্রজন্ম হয়তো কেবল ইতিহাসের পাতায়ই দেখতে পেত মোহময়ী চাঁদকে। আর তার মদির আলো হতো রূপকথার কোনো কল্পলোক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির একনায়ক হিটলার এবং তার নাৎসি বাহিনীর পতন ঘটার পর পৃথিবীব্যাপী পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন রাষ্ট্রগুলো দুই দলে বিভক্ত হয়ে সূচনা করে এক সুদীর্ঘ স্নায়ুযুদ্ধের। মূলত বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী নতুন পৃথিবীতে একক আধিপত্য বিস্তার করাই লক্ষ্য ছিল এই দুই পক্ষের; যার একটি ছিল ন্যাটো কোয়ালিশন নিয়ে আমেরিকা আর অন্যটি ছিল কম্যুনিস্ট পৃথিবীকে নিয়ে রাশিয়ার। আর এ ঠান্ডা যুদ্ধের ব্যাপ্তি এবং ব্যাপকতা এতই বেশি ছিল যে, তাতে পৃথিবীর বাইরের মহাশূন্যও দুই দলের শক্তি প্রদর্শনের মাঠে পরিণত হয়। এক্ষেত্রে বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়ার পাশাপাশি সমানতালে চলতে থাকে মহাকাশে নিত্য-নতুন রকেট উৎক্ষেপণের প্রতিযোগিতাও। তবে এ প্রতিযোগিতা এমন এক চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় যে, রাশিয়াকে হঠাৎ চমকে দেয়ার মতো কিছু একটা করে দেখাতে আমেরিকা শেষ পর্যন্ত একটি গোপন সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে চাঁদকে উড়িয়ে দিলেও মন্দ হয় না! এতে রাশিয়া নির্ঘাত ভয় পেয়ে যাবে এবং আমেরিকার রাস্তা ছেড়ে দেবে; এই ছিল তাদের পরিকল্পনা। 'কার্ল স্যাগান' নামে আমেরিকার এক মহাকাশচারীর মাথা থেকেই প্রথম এ মহাবিধ্বংসী পরিকল্পনার সূত্রপাত। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গোপন কোনো এলাকা থেকে একটি মহাকাশ যান পারমাণবিক বোমার একটি ডিভাইস নিয়ে ২ লক্ষ ৩৮ হাজার মাইল পাড়ি দেয়ার জন্য চাঁদের পথে রওনা হবে। মহাকাশ যানের সঙ্গে থাকা একটি পরমাণু বোমা সংযোজন থাকবে। পরিকল্পনাকারীরা এক্ষেত্রে, ভারি বলে হাইড্রোজেন বোমার পরিবর্তে একটি অ্যাটম বোমা ব্যবহার করার চিন্তা করেছিল।
তৎকালীন এ পরিকল্পনা সফল করার জন্য প্রধান দায়িত্বে থাকা পদার্থবিদ লিওনার্দো রাইফেল সংবাদ সংস্থা এপি'র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'পৃথিবী থেকে এই মহাবিস্ফোরণ দেখে রাশিয়া হয়তো ভয় পেয়ে দমে যেত, যা আমেরিকার জন্য ছিল মঙ্গলজনক এবং তা আমেরিকার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিত।' ৮৫ বছর বয়সী রাইফেল এক সময় 'আরমার রিসার্স ফাউন্ডেশন'র তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন, যা বর্তমানে 'ইলিয়ানস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি'র একটি অংশ। পরবর্তী সময়ে তিনি আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা 'নাসা'র সহকারী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ঘটনার স্মৃতিচারণে লিওনার্দো রাইফেল আরো বলেন, 'সব ঠিক থাকলে হয়তো ১৯৫৯ সালেই ঘটে যেত এ মহাবিস্ফোরণ। বিমান বাহিনী অবশ্য সে সময়ই আন্তঃমহাদেশীয় মিসাইল উৎক্ষেপণের কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম হয়েছিল।'
তবে অভিযান সফল না হলে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে কিংবা পৃথিবীতে অবস্থান করা মানুষের জন্য ঘটনাটি ক্ষতির কারণ হতে পারে, এই ভেবে আমেরিকার সামরিক বিভাগ তা নাকচ করে দেয়। আর এভাবেই অল্পের জন্য রক্ষা পায় পৃথিবীর নিরপরাধী উপগ্রহ চাঁদ। ওই বিস্ফোরণটি ঘটানো হলে হয়তো বিশাল এক প্রভাব পড়ত পৃথিবীর জলবায়ুর ওপরও। কারণ পৃথিবীর জলবায়ু অনেকাংশেই চাঁদের অবস্থানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সংস্থা এপির পক্ষ থেকে আমেরিকান বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা অবশ্য এটি নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অস্বীকার করে। (তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল)।
আইএসআইএল ইঙ্গ-মার্কিন-ইসরাইলি প্রকল্প
আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসএ’র সাবেক কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন তাঁর ফাঁস করা গোপন নথি-পত্র ও দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে জানিয়েছেন, মার্কিন, ব্রিটিশ ও ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার উদ্যোগে এবং তত্ত্বাবধানে সন্ত্রাসী দল আইএসআইএল গড়ে তোলা হয়েছে, এমনকি আইএসআইএল-এর স্বঘোষিত খলিফা আবুবকর আল বাগদাদিকে সামরিক ও ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। এই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হল মার্কিন এনএসএ, ইসরাইলের মোসাদ ও ব্রিটেনের এমআই-সিক্স। তিনি জানান, বাগদাদিকে ভাষণ দেয়া, ধর্মীয় শিক্ষা ও সামরিক বিষয়ে এক বছর ধরে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দেয় মোসাদ। (আবুবকর তার আসল নাম নয় বরং ছদ্মনাম এবং সে আসলে বাগদাদেরও অধিবাসী ছিল না।) স্নোডেন জানান, ‘বোলতা বা ভিমরুলের বাসা’ শীর্ষক একটি পরিকল্পনার আওতায় দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলকে রক্ষার জন্যই ইসলামী কিছু শ্লোগানের মোড়কে চরমপন্থী দল আইএসআইএল গড়ে তোলা হয়েছে যাতে সারা বিশ্ব থেকে সন্ত্রাসীদেরকে একটি বিশেষ অঞ্চলে সক্রিয় হতে আকৃষ্ট করা যায়। এইসব শ্লোগানের ভিত্তিতে এই গ্রুপ তার চিন্তার বিরোধী সব কিছুকে প্রত্যাখ্যান করে অথবা অন্য কোনো চিন্তাধারা-ভিত্তিক মতবাদকে প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করে। স্নোডেন আরো জানান, এই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে ইসরাইলকে রক্ষার একমাত্র উপায় হল তার সীমান্ত-সংলগ্ন দেশগুলোতে এমন একটি গ্রুপ বা দল সৃষ্টি করা যাতে দলটি ইসরাইলের অস্তিত্বের বৈধতা অস্বীকারকারী মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধেই তার অস্ত্র প্রয়োগ করে। সম্প্রতি ইরান ও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ছাড়াও বিশ্বের বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ও ওয়েবসাইট এই খবর প্রচার করেছে। উল্লেখ্য, স্নোডেনের আগে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-ফাইভের সাবেক কর্মকর্তা মিসেস অ্যানি ম্যাকোহনও এর আগে বলেছিলেন যে, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ও সন্ত্রাস টিকিয়ে রেখে অস্ত্র ব্যবসা প্রসারের জন্য মার্কিন সরকারই সৃষ্টি করেছে আইএসআইএল। (রেডিও তেহরান)