ইসলাম নিমূলে নব্য ক্রুসেড
বিশ্বব্যাপী মাকিন সাম্রাজ্যবাদের দস্যুবৃত্তির খতিয়ান
মাকিন সাম্রাজ্যবাদের প্রধান পেশা হলো বিশ্বব্যাপী দস্যুবৃত্তি চালানো। পাঁচশত বছর আগে আমেরিকা আবিস্কার হওয়ার পর রেড ইন্ডিয়ানদের নিমূলের জন্য যে দস্যুতা মাকিনীরা শুরু করেছিল আজ তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। দস্যুবৃত্তির মাধ্যমে দেশে দেশে লুন্ঠনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে আমেরিকা তার অবৈধ লালসার সফল বাস্তবায়ন পরিচালনা করছে।তাদের সেই দস্যুবৃত্তির আংশিক খতিয়ান মুসলিম যুব সমাজের উদ্দেশ্যে পেশ করা হলো।
১. ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের শেষভাগে নিজেদের পারমানবিক শক্তি প্রদশনের হীন উদ্দেশ্যে ৬ ও ৯ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে দুটো পারমানবিক বোমা ফেলে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে গণহত্যা।
২. ১৯৪৯ সালে সি আই এ’র মদদে সামরিক অভ্যুত্থানে সিরিয়ার নিবাচিত সরকারকে উৎখাত করা হয়।
৩. ১৯৫০-৫২ সালে কোরিয়া যুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়াকে অস্ত্রসহ সমথন যোগায় আমেরিকা এবং সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
৪. ১৯৫৩ সালে ব্রিটিশ তেল কোম্পানী জাতীয়করণকারী ইরানের মোসাদ্দেক সরকার উৎখাত করে আমেরিকার অনুগত রেজা শাহ পাহলভী সরকারকে ক্ষমতায় বসায়।
৫. ১৯৫৮ সালে স্থিতিশীলতা আনার অজুহাতে লেবাননে মাকিন সৈন্য অবতরণ করে।
৬. ১৯৬০ সালে কথিত বিপজ্জনক ব্যক্তি লুকিয়ে আছে, তাকে ধরার অজুহাতে ডোমেনিক রিপাবলিকে মাকিন সৈন্য সরাসরি হানা দেয়।
৭. ১৯৬০ সালের এই দশকের গোড়ার দিকে ইরাকি নেতা আব্দুল কাশিমকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যথ হয়।
৮. ১৯৬২ সালে কিউবায় রাশিয়া মিসাইল বেস স্থাপনের উদ্যোগ নিলে যুদ্ধাসাজে আটলান্টিক সাগরে নেমে যায় আমেরিকা।এবং হত্যার চেষ্টা করে ফিদেল ক্যাস্টোকে।
৯. ১৯৬৩ সালে কমিউনিষ্টদের হত্যার জন্য ইরাকের বাথ পাটিকে তালিকা প্রদান এবং নিমমভাবে তা বাস্তবায়ন।
১০. ১৯৬৩ সালে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্টোকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যথ হয়।
১১. ১৯৬৩ সালে ডোমিনিকান রিপাবলিককে জুয়ান বসক সরকারকে হটানোর জন্য মিলিটারি ক্যু করে সফল হয়।
১২. ১৯৬৩ সালে ভিয়েতনামে নগো দিন দিয়েমকে হত্যার সহায়তা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সফল হয়।
১৩ ১৯৬৩ সালে ইকুলেহর-এ কালোস জুলিও এরোসেমেনা সরকারকে উচ্ছেদ করে।
১৪. ১৯৬৪ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা।এই যুদ্ধে মাকিন সৈন্যরা লক্ষ লক্ষ নাপাম বোমা নিক্ষেপ করে লাখ লাখ ভিয়েতনামীকে গনহত্যা করে।
১৫. ১৯৬৪ সালে চিলিতে সালভাদের আইয়েনদেকে নিবাচনে পরাজিত করার জন্য যুদ্ধুফাদো ফ্রেইকে ২ কোটি ডলার সাহায্য দান করে সফল হয়।
১৬. ১৯৬৪ সালে উরগুয়ে,পেরু,ব্রাজিল-এ বিরোধীদের দমন করার জন্য পুলিশ এবং ইনটেলিজেন্স কমীদের হত্যা।
১৭. ১৯৬৪ সালে কঙ্গোতে প্যাট্রিস লুমুম্বার অনুগত বিদ্রোহীদের পরাজিত করার জন্য সামরিক এবং আথিক সাহায্য দান করে সফল হয়।
১৮. ১৯৬৪-৬৭ সালে দক্ষিণ ভিয়েতনামে ভিয়েতকংদের রাজনৈতিক ভিত্তিমূল নিমূল করার জন্য ২০ হাজার এর বেশি গণহত্যা চালানো (ফিনিক্স প্রোগ্রাম) আংশিক সফল হয়।
১৯. ১৯৬৪-৭০ সালে উত্তর ভিয়েতনামে নুং উপজাতি এবং আমেরিকান বিশেষ বাহিনীর অন্তঘাত এবং অ্যামবুশের প্রচেষ্টা চালায়।
২০. ১৯৬৫ সালে কম্বোডিয়ায় মাকিন যুক্তরাষ্ট্র বোমা হামলা চালায়।
২১. ১৯৬৫-৭১ সালে লাওসে অন্তঘাত ও অ্যামবুশ (অপারেশন শাইনিল ব্রাস ও প্রেয়েরী কায়ার) অমীমাংসিত রেখে দেয়।
২২. ১৯৬৫ সালে ইন্দোনেশিয়াতে সুকনো সরকার উচ্ছেদের জন্য প্রচার অভিযান সংগঠিত করে।৫ লাখ এর বেশি কমিউনিষ্ট হত্যার সহায়তা পরিবেশ সৃষ্টি করে সফল হয়।
২৩. ১৯৬৫ সালে থাইল্যান্ডে পাথেট লাওন্ডে এর বিরুদ্ধে লাওয়েসিয়াম সরকারের পক্ষে ১৭ হাজার ভাড়াদে সৈন্য নিয়োগ করে সফল হয়।
২৪. ১৯৬৭ সালে বলিভিয়াতে চে-গুয়েতাভারাকে প্রেফতারের ব্যাপারে সাহায্য করে সফল হয়।
২৫. ১৯৬৭ সালে গ্রিস-এ রাজা কনসটাটিনের সিংহাসন ত্যাগের পর জজ পাপানড্রি সরকারকে উচ্ছেদ এবং কনেল জজ পাপাডোপুলোসে এর সামরিক সরকার স্থাপনে অথ সাহায্য করে সফল হয়।
২৬. ১৯৬৭ সালে নিরাপত্তা পরিষদে ইসরাইলের প্রতি ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখলকৃত ভূখন্ড ফিরিয়ে দেয়ার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের উপযুপরি ভেটো প্রদান।
২৭. ১৯৬৯-৭০ সালে কম্বোডিয়ার ভিয়েতকংদের আশ্রয়স্থল ধ্বংসের জন্য বোমা বষণ করে।শেষ পযন্ত ১৯৭৫ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধে পরাজয় বরণ করে পশ্চাদপসারণ করে।
২৮. ১৯৭৩ সালে মিসর ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে ইসরাইলকে সামরিক সহযোগিতা দান।
২৯. ১৯৭৩-৭৮ সালে আফগানিস্তানে নূর মোহাম্মদ তারিককে প্রতিহত করার জন্য মোহাম্মদ দাউদ সরকারকে আথিক ও সামরিক সহযোগিতা প্রদান করে ব্যথ হয়।
৩০. ১৯৭৫ সালে পতুগালে ভাস্কো ডোস সান্টোস গন্ডলভেস সরকারকে উচ্ছেদ করে।
৩১. ১৯৭৫ সালে অ্যাঙ্গোলাতে অ্যাঙ্গোলার গৃহযুদ্ধে পপুলার মুভমেন্টকে পরাস্ত করতে সামরিক সাহায্য দান করে ব্যথ হয়।
৩২. ১৯৭৬ সালে অষ্টেলিয়াতে গঘ হুইলামের শ্রমিক সরকারকে উৎখাতের জন্য প্রচারণা এবং রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে সফল হয়।
৩৩. ১৯৭৬-৭৯ সালে জ্যামাইকাতে মাইকেল ম্যানলি সরকারকে উচ্ছেদের জন্য মিলিটারি ক্যু সংগঠনের চেষ্টা করে এবং তিনবার হত্যা প্রচেষ্টা করে ব্যথ হয়।
৩৪. ১৯৭৬-৭৯ সালে ইরানে শাহ বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হলে আমেরিকা সে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে।এবং জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে ভূমিকা রাখতে যেয়ে এক পযায়ে সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টা চালিয়ে ব্যথ হয়।
৩৫. ১৯৭৯ সালে আফগান রাশিয়া যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা।১৯৮৯ সালে রাশিয়া পরাজিত হলে আফগান থেকে সরে আসে আমেরিকা।
৩৬. ১৯৭৯ সালে সিকেলেস এ ফ্রান্ক এনবাট রেনের সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করে ব্যথ হয়।
৩৭. ১৯৭৯-৮০ সালে জ্যামাইকাতে মাইকেল ম্যানলির সরকারকে উৎখাতের জন্য অথনৈতিক চাপ সৃষ্টি, নিবাচনে হারাবার জন্য প্রচারাভিযান এবং বিক্ষোভ প্রদশন করে সফল হয়।
৩৮. ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে হাফিজুল্লাহ উচ্ছেদে বিদ্রোহীদের সাহায্য দান।
৩৯. ১৯৮০ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীকে উত্যক্ত করার জন্য বিদ্রোহীদের সামরিক সাহায্য প্রদান।
৪০. ১৯৮০ সালে গ্রানাডাতে মরিস বিশপের সরকার উচ্ছেদের জন্য সামরিক ক্যুর চেষ্টা চালিয়ে ব্যথ হয়।
৪১. ১৯৮০ সালে ডমিনিকাতে অলিভার সেরাফিনকে পরাস্ত করতে ইউজেনা চালসকে আথিক সাহায্যে দান করে সফল হয়।
৪২. ১৯৮০ সালে গায়ানাতে ফরবেস বানহ্যাম সরকারের ক্ষমতা সূদৃঢ় করার জন্য বিরোধী দলীয় নেতা ওয়াল্টার রডনিকে হত্যায় উৎসাহ প্রদান করে সফল হয়।
৪৩. ১৯৮০-৮৮ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে আমেরিকা প্রকাশ্যে ইরাকের পক্ষ অবলম্বন করে কুটনৈতিক সম্পক স্থাপনের মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহ করে এবং পারস্য সাগরে অবস্থানকারী মাকিন জাহাজ থেকে ইরানী যাত্রীবাহী বিমান লক্ষ্য করে গুলি করলে ২৯০জন যাত্রী নিহত হয়।
৪৪. ১৯৮১-৮৮ সালে লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি সরকারকে উচ্ছেদের জন্য লিবিয়া উপকুলে সামরিক মহড়া চালিয়ে গাদ্দাফীকে উস্কানী প্রদান এবং দুটি লিবীয় বিমান গুলি করে ভূপাতিত করে ।
৪৫. ১৯৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহযোগিতায় সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাঈল লেবাননে অভিয়ান চালিয়ে ১০ হাজার লোককে গণহত্যা করে।
৪৬. ১৯৮২ সালে গুয়েতামালায় অ্যাঞ্জেলা অ্যানিবাল গুয়েভারার সরকারকে উচ্ছেদে মিলিটারী ক্যু সংঘঠিত করে সফল হয়।
৪৭. ১৯৮২ সালে বলিভিয়ার সেলসো টোররেলিওর সরকারকে উচ্ছেদের জন্য মিলিটারি ক্যু সংগঠিত করে সফল হয়।
৪৮. ১৯৮২-৮৩ সালে সুরিনামে কনেল ডেসি বুটেস এর সরকারকে উৎখাতের জন্য তিনবার চেষ্টা চালিয়ে ব্যথ হয়।
৪৯. ১৯৮৬ সালে লিবীয় টহল বোটে হামলা করে ৭২জনকে হত্যা করে।
৫০. বালিনে বোমা হামলার অভিযোগে ১৯৮৮ সালে লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফীর বাস ভবনে হামলা চালিয়ে পালক কন্যা সহ শতাধিক লোক হত্যা করে।
৫১. ১৯৮৯ সালে পানামায় মাকিন সেনাবাহিনী হানা দেয় এবং মাদক চোরাচালানের অভিযোগে প্রেসিডেন্ট নরিয়েগাকে অপহরণ করে।
৫২. ১৯৯০-৯১ সালে ইরাকের কুয়েত অভিযানের পর সংকটের কুটনৈতিক সমাধান প্রত্যাখান করে। কুয়েতকে দখলমুক্ত করার নামে ইরাককে শায়েস্তা করার জন্য জাতিসংঘের তথাকথিত অনুমোদন নিয়ে উপসাগরীয় যুদ্ধে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্বে ১ লাখ ৩৫ হাজার ইরাকীকে গণহত্যা।যুদ্ধে আত্মসমপকারী হাজার হাজার ইরাকী সৈন্যকে ট্যাংকের নীচে পিষ্ট করে যুক্তরাষ্ট্র।
৫৩.১৯৯২ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে সোমালিয়ায় মাকিন সৈন্য প্রেরণ করেন আমেরিকা।
৫৪. ১৯৯৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশকে হত্যার চক্রান্তে জড়িত থাকার অজুহাতে ইরাকের গোয়েন্দা সদর দপ্তরে ক্রুজ মিশাইল হামলা চালান আমেরিকা। এতে বাগদাদে অবস্হিত সংস্হাটির কার্যালয় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
৫৫. ১৯৯৩ সালে আবারও সোমালিয়ায় অভিযান পরিচালনা করেন আমেরিকা। সোমালিয়ার নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সেখানে স্হিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার অজুহাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও অন্য ৩৫ দেশের সমর্থন নিয়ে সোমালিয়ায় সৈন্য প্রেরণ করেন যুক্তরাষ্ট্র।
৫৬. ১৯৯৪ সালে হাইতিতে সৈন্য প্রেরণ করে আমেরিকা। হাইতির নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সেখানে স্হিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার অজুহাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন নিয়ে সেখানে সৈন্য প্রেরণ করেন যুক্তরাষ্ট্র।
৫৭. ১৯৯৪-১৯৯৬ ন্যাটো বাহিনীর সমর্থন নিয়ে বসনিয়াতে ১৮ মাস ধরে বিমান হামলা পরিচালনা করেন আমেরিকা। সেখানকার সার্বদের কামান, সাজোয়া যান, বোমা হামলা ও ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায় মার্কিন সেনা বাহিনী।
৫৮. ১৯৯৬ সালে আবারও ইরাকে সামরিক হামলা চালান আমেরিকা।সাদ্দাম হোসেনের রাসায়নিক হামলার অজুহাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনক্রমে ইরাকের নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুতে ক্রুজ মিশাইল হামলা চালান
৫৯. ১৯৯৮ সালে সুদান ও আফগানিস্তানে হামলা চালান আমেরিকা। কেনিয়ার ও তাঞ্জানিয়ায় মার্কিন দুতাবাসে বোমা হামলা সাথে জড়িত থাকার অজুহাতে আফগানিস্তান ও সুদানে এই হামলা চালান হয়।
৬০. ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শকদের বেধে দেওয়া নিয়ম মেনে চলতে সাদ্দাম হোসেনকে বাধ্য করতে আবারও ইরাকে মিসাইল ও বিমান হামলা পরিচালনার করে আমেরিকা।
৬১. ১৯৯৮ সালে তাঞ্জানিয়া ও কোরিয়ান মাকিন দূতাবাসে বোমা হামলার পর কোন প্রকার প্রমাণ ছাড়াই এক তরফা দোষারোপ করে সুদানের ওষুধ কারখানা ধ্বংস করা হয়।দাবি করা হয়েছিল, ওই কারখানায় রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করা হয়। কিন্তু পরে যুক্তরাষ্ট্রই সেখানে রাসায়নিক অস্ত্র না থাকার কথা স্বীকার করে।
৬২. ১৯৯৯ সালে যুগোস্লাভিয়ার সৈন্য বাহিনীকে লক্ষ্য করে মিসাইল ও বিমান হামলার চালায় আমেরিকা। এই হামলায় ন্যাটো বাহিনীও অংশ নেয়।
৬৩. ২০০১ সালে মুসলিম বিশ্বে আগ্রাসনের ক্ষেত্র তৈরির জন্য পরিকল্পিতভাবে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩ হাজার মানুষ হত্যা করে আমেরিকা।
৬৪. ২০০১ সালে সেই বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে হামলার অজুহাত তুলে ইসলামিক রাষ্ট্র আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানে পরিচালনা করে আমেরিকা।
৬৫. ২০০৩ সালে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্বে ইরাকে সামরিক আগ্রাসন পরিচালনা করে।এতে এ পযন্ত ২৭ লাখের অধিক মুসলমানকে ব্যাপক গণহত্যা চালানো হয়।
৬৬. ২০১১ সালে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ থামানোর জন্য জাতিসংঘের অনুমোদন ক্রমে লিবিয়ায় মিসাইল ও বিমান হামলা চালায় আমেরিকা।গৃহযুদ্ধ লাগানো জন্য বিদ্রোহীদের আথিক ও সামরিক সহযোগিতা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
৬৭. ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে লাদেনকে নিমমভাবে হত্যা করে আমেরিকা।
৬৮. ২০১২ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদেকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিমান হামলা আমেরিকা।এবং সেখানকার বিদ্রোহীদের আথিক ও সামরিক সহযোহিতা প্রদান।
৬৯. ২০১৩ সালে মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নিবাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিআইএ ও মোসাদের সহযোগিতায়।এবং ব্রাদারহুড নিমূলের নামে হাজার হাজার নিরীহ ব্রাদারহুড কমীকে হত্যা করা হয়।
৭০. ২০১৪ সালে মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের আথিক ও সামরিক সহযোগিতায় ফিলিস্তিনে হামাস নিমূলের নামে ব্যাপক গণহত্যা চালানো হচ্ছে।
টুইন টাওয়ারে বিমান হামলাঃ নব্য ক্রুসেডের ঘোষনা
আমেরিকার বিশ্ব সন্ত্রাসের আরেক জ্বলন্ত প্রমাণ হলো টুইন টাওয়ার বা বিশ্ব বাণিজ্য ধ্বংস করা। উদ্দ্যেশ্য মুসলিম বিশ্বে আগ্রাসনের কেন্দ্র তৈরি এবং নব্য ক্রুসেডের যাত্রা শুরু করা। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে বিমান হামলা। এতে হাজার খানিক মানুষ মারা যায়। কিন্তু ৬ হাজার ইহুদীর একজনও সেদিন মারা যান নি। কারণ এ হামলা হয়েছিলো ইহুদী ও মাকিন যৌথ প্রযোজনায়। টাগেট মুসলিম বিশ্বে হামলা নাটক তৈরি। যা পরবতীতে প্রমাণিত হয়েছে। নয় এগারোর ভয়াল সন্ত্রাসী হামলার এক দর্শক পূর্তিতে বিবিসি, রঢটার, এএফপি পরিবেশিত সংবাদ হচ্ছে: “আসলে কি ঘটেছিল ২০০১ এর দিনে? সত্যিই কি আল কায়েদা সে দিন মার্কিন শৌর্যে আঘাত হেনেছিল নাকি সবই পাতানো। ‘আমেরিকান ফ্রি প্রেস উইকলি’ তে প্রকাশিত এক রির্পোটে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৯/১১ এ নিউ ইয়কে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। ৯/১১ এর ঘটনায় ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এর সম্পৃক্ততার পক্ষে ‘নিউ ইর্য়ক টাইমস’ আরও কিছু তথ্য উল্লেখ করেছে। এতে বলা হয় টুইন টাওয়ারে হামলার খবরে ফ্লাইট ১১ এবং ফ্লাইট ১৭৫ এর যাত্রী পাচঁ ইসরাইলী নাগরিকদের আনন্দ উল্লাস তাদের সন্দেহের সৃষ্টি করে। এসব ইসরাইলীদের ৭১ দিন কারাবাসের পর মোসাদ মুক্ত করে নিয়ে যায়। উইকলি’তে উল্লেখ করেছে যে, হোয়াইট হাউজের নির্দেশে সি আই এ ৯/১১ এর ঘটনায় ইসরাইল গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এজেন্টদের সম্পৃক্ত থাকবে বিষয়টি গোপন করেছে। কেননা ৯/১১ এর পুরো বিমান হামলার ঘটনাটিই সিআইএ মোসাদ এর যৌথ প্রযোজনায় ঘটানো হয়েছে। এর লক্ষ্য ছিল আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের নেতৃত্বে ইরাক ও আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালানোর পটভূমি তৈরি করা (সূত্র-দৈনিক সংগ্রাম)। ৯/১১ এর একাদশ বার্ষিকীতে মার্কিন খ্যাতনামা রাজনৈতিক বিশ্লেষক মার্ক ড্যানকফ প্রেস টিভিতে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন-২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে এবং সেনা সদন দপ্তর পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পপনাকারী হচ্ছে ইহুদীবাদী ইসরাইল। এ হামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইসরাইলই এর সঙ্গে জড়িত ছিল। তিনি যথেষ্ট খোলামেলাভাবে বলেন-আমি বিশ্বাস করি ৯/১১ র ঘটনা ছিল অভ্যন্তরীণ ও সাজানো ঘটনা। মানুষ যদি একটু ঘনিষ্ঠভাবে খেয়াল করে তাহলে দেখতে পাবেন ইসরাইলের সে উদ্দেশ্য ছিল, তাদের হাতে সে উপায় ছিল, তাদের সে সুযোগ ছিল, এটা করার জন্য তাদের সে পরিমান অর্থ সম্পদ ছিল, তাদের অভ্যন্তরীণ সে যোগাযোগ ছিল এবং সর্বোপরি আমেরিকার গণমাধ্যমে ইসরাইলের লোকজন ছিল। মার্কিন সরকারও এই হামলার ঘটনার পর তাদেরকে সেভাবে সুরক্ষা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন-মনে হয় ৯/১১র দু:খজনক হামলার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কোনোদিন হবে না কারণ মার্কিন গণমাধ্যম এবং পররাষ্ট্রনীতি এমন কিছু ব্যক্তি ও থিংক ট্যাংক নিয়ন্ত্রন করে যাদের এগুলোতে একচেটিয়া প্রভাব রয়েছে এবং ইসরাইলী জাতির সঙ্গে এদের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মার্ক ড্যানকফ বলেন-যারা ১১ বছর আগের এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাইবেন তারা আমেরিকায় দেশদ্রোহী বলে পরিচিত হবেন।কারণ অজানা তথ্য বের হয়ে যাবার ভয়ে! পাকিস্তানী দৈনিক উন্মতের সঙ্গে (২৮-১১-০১) সাক্ষাতকারে ওসামা বিন লাদের বলেছিলেন-‘ইতিপূর্বে আমি বলেছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় আমি জড়িত নই। মুসলিম হিসাবে আমি যথা সম্ভব মিথ্যাকে এড়িয়ে থাকার চেষ্টা করি। এ হামলাগুলো সর্ম্পকে আমি কোনো কিছু জানতাম না। তা ছাড়া নিরীহ মহিলা শিশু ও অন্যান্য মানুষের হত্যাকান্ডেকে আমি প্রশংসনীয় ব্যাপার বলে মনে করি না। নিরীহ মহিলা শিশু ও অন্য লোকজনকে ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকার জন্য ইসলামের কঠোর নির্দেশ আছে। যুদ্ধের ক্ষেত্রেও এই নীতি প্রযোজ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই মহিলা, শিশু ও সাধারণ মানুষের সাথে সব ধরণের দুর্ব্যবহার করে যাচ্ছে। ৯/১১র পরিকল্পিত এঘটনা যে মুসলিম বিশ্বে আগ্রসনের ক্ষেত্র বানানোর জন্যই সাজানো হয়েছে তা বুঝাতে হলে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে আগের ইতিহাসে। ১৯৯০ সালে ২ আগষ্ট ইরাকের নিজস্ব সীমানায় তৈল কুপ খননের অভিযোগে সাদ্দাম হোসেন কুয়েত দখল করে। তখন প্রেসিডেন্ট বুশ সিনিয়র ইরাকের বিরুদ্ধে স্থল আক্রমনের পায়তারা শুরু করে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ এতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। তখনই দৃশ্যপটে এক প্রত্যক্ষদর্শীকৈ সাক্ষী হিসাবে আনা হয়। ইউএস কংগ্রেশনাল কমিটির এক সভায় মিড়িয়ার সামনে ১৫ বছর বয়সী এক কুয়েতী মেয়েকে হাজির করা হয়। মেয়েটি কান্নজড়িত কন্ঠে মিড়িয়ার সামনে বলেন-ইরাকী সৈন্যরা হাসপাতালে প্রবেশ করল ইনকিউবেটরে শায়িত শিশুদের তুলে নিল, তারপর ইনকিউবেটর নিয়ে গেল আর অসহায় শিশুগুলো ছটফটিয়ে মারা গেল। এ কথা শুনে আমেরিকার জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। ফলাফল যুদ্ধের প্রতি সমর্থন। এটাই ছিল একটি টার্নিন পয়েন্ট। শুরু হলো অপারেশন ডিজাট স্টম বা প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ। ১ লাখ ৩৫ হাজার ইরাকী প্রাণ হারালো। ১০ বছরের অবরোধে ১০ মিলিয়ন নাগরিক যাদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ অপুষ্টিতে মারা গেল। কি ভয়াবহ চক্রান্ত। যুদ্ধের মধ্যে ইনবিউবেটরে কোন শিশু মৃত্যুর রির্পোট আমরা কোন মিডিয়ায় দেখিনি, ওই মেয়েটি ছাড়া। পরে কানাডিয়ান ভ্রডকাষ্টিন কর্পোরেশন এ চক্রান্তের রহস্য উদঘাটন করে। তারা নাম ঠিকানা সহ ছবি প্রকাশ করে দেখায় যে, এ মেয়েটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত কুয়েতী রাষ্ট্রদূতের কন্যা। আরেকটি সাক্ষাতকারে মিডিয়ায় কুয়েতী এক লোক বলছে ‘আমি নিজ হাতে ৪০ টি নবজাতক কবর দিয়েছি, যাদেরকে ইনকিউবেটর থেকে বের করে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তৎকালিন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বললেন-কুয়েতকে জাতিগতভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্যই ইনকিউবেটর থেকে নবজাতক শিশুদেরকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এরকম আরো অনেকেই এ চক্রন্তে জড়িত ছিল। আমি বলব একটি চক্রান্তই এ জন্য মেকি সংগঠন, মিথ্যা প্রমানাদি এবং মিথ্যা তথ্যাদি সবই সংগ্রহ করা হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় নতুন রাষ্ট্রনায়ক জর্জ ডব্লিউ বুশ জুনিয়র উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সেই চক্রান্তকে আরো বিস্তৃত করেন। উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বজুড়ে ভূরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা করা এবং সেই সাথে ব্যক্তিগতভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখা (সূত্র-কানাডিয়ান টিভি সাংবাদিক বেরি জেড উইকার এর অনুসন্ধান)। বিখ্যাত মার্কিন টিভি ব্যক্তিত্ব জিমি ওয়ালটার বলেন-গবেষনায় দেখা দেখা যায়, কলিন পাওয়ার হচ্ছে এ চক্রান্তের মূল হোতা বা শিল্পী। সেই সময় হোয়াইট হাউজে এক সেনা সমাবেশে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া একটি ছবি দেখিয়ে বলা হয় সৌদি সীমান্তে ইরাক হাজার হাজার ট্যাংক মোতায়েন করেছে সৌদি আরব আক্রমনের উদ্দ্যেশ্য। অথচ ঠিক সেই সময়ে রাশিয়ায় পরিচালিত স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা যায় সেখানে কোন ট্যাংক ও নেই। কয়েক বছর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কলিন পাওয়ার সেখানে কোন ট্যাংক না থাকার কথা স্বীকার করেন। একটি নির্জলা মিথ্যার উপর ভর করে তিনি যুদ্ধ শুরু করেন।
‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’র নামে স্টিং অপারেশনের ফাঁদে ফেলে মুসলিম নিযাতন
স্টিং অপারেশন হচ্ছে, অপরাধ করার মানসিকতা কিংবা ইচ্ছা অন্তরে লালন করে এমন সন্দেহভাজন যেকোনো ব্যক্তিকে পরিকল্পিতভাবে ছদ্ম-সাহায্য ও উৎসাহ প্রদানপূর্বক তার অপরাধ সংঘটনের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে তাকে অকুস্থলেই আটক করা হয়। এ অপারেশনে ভিকটিম গ্রেপ্তার হওয়ার আগ মূহূর্ত পর্যন্ত বুঝতেই পারে না যে তাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। ফলে তার অপরাধ করার ইন্টেন্ট বা ইচ্ছাও আর পূরণ হয়না। সেপ্টেম্বরের নাইন ইলেভেনের আগেও স্টিং অপারেশন চলত, তবে সেই ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে অদ্যাবধি সাবেক বুশ আমলের কথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’র নামে যুক্তরাষ্ট্রে এফবিআই কর্তৃক আন্ডারকভার অপারেশন বা স্টিং অপারেশন আরো বেগবান হয়েছে। এই অপারেশনের ফাঁদে পড়ে অনেককেই দুর্ভাগ্যক্রমে আমেরিকায় জেল খাটতে হচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক রেজোয়ান ফেরদৌসকে আমেরিকার পেন্টাগন ও কংগ্রেস ভবনে হামলার ষড়যন্ত্রের দায়ে ১৭ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। আবার অন্যদিকে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার সুযোগে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হওয়া বাংলাদেশি নাগরিক রেজওয়ানুল আহসান নাফিস নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বোমা হামলার ষড়যন্ত্রের দায়ে তাকেও ৩০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। দুজনকেই স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে এফবিআই গ্রেপ্তার করে।যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বিশ্বজুড়ে ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’র নামে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মুসলমানদের ওপর অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে এবং মুসলিম দেশগুলোকে যেভাবে একের পর এক ধ্বংস করে সেখানকার সম্পদ লুণ্ঠন করা হচ্ছে তাতে করে যেকোনো প্রকৃত মুসলমানের মধ্যে মার্কিন বিরোধী মনোভাব তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক। বর্তমানে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সর্বোপরি একাধিপত্য, ধ্বংসলীলা, সম্পদ লুণ্ঠন, নির্যাতন ও প্রতারণার অবশ্যম্ভাবী প্রতিক্রিয়ারূপে এ জাতীয় মানসিকতার উন্মেষ ঘটতে পারে।
জানা যায় যে, নাফিস নিউ ইয়র্কের গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থাপনায় হামলা চালানোর ‘ইচ্ছে’ নিয়ে নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এফবিআই নাফিসের মনের এই ইচ্ছের খবর কীভাবে পেল সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা না গেলেও তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার মানসিক অবস্থার বিষয়ে অবগত হয়ে তারা নিজেদের একজন আন্ডারকভার এজেন্টকে নাফিসের কাছে পাঠায় গত জুন মাসে। সে বন্ধুবেশে নাফিসের কাছ থেকে তার সুপ্ত ইচ্ছেটির বিষয়ে নিশ্চিত হয়। তখন সে আল-কায়েদা জঙ্গি বলে আরেকজন ব্যক্তির সাথে নাফিসকে পরিচয় করিয়ে দেয় তার ইচ্ছেপূরণের সক্রিয় অভিযাত্রী হিসেবে। এই দ্বিতীয় ব্যক্তিটিও এফবিআইয়ের গুপ্তচর। এভাবে কয়েকজনের সাথে পরিচিত হবার পর নাফিস এ জাতীয় অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা সম্পন্নের সক্ষমতা অর্জনের বিষয়ে অবহিত হয় এবং নিজের পরিকল্পনাকে সে অনুযায়ী এগিয়ে নিতে থাকে। এদিকে এই ছদ্ম-জঙ্গিরাই নাফিসকে শিখিয়ে-পড়িয়ে পরিকল্পনা কার্যকরের বিষয়ে সাহায্য করতে থাকে এবং তাকে যানবাহন, বিস্ফোরক সহ প্রয়োজনীয় সব রসদের যোগান দেয়। কিন্তু যে বিস্ফোরক তাকে সরবরাহ করা হয় তা ছিল ভূয়া, অকার্যকর। সুতরাং নাফিস তার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ব্যর্থ হয় এবং এমন একটি অবস্থায় পূর্বপরিকল্পনামতো তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোটামুটি এটাই হচ্ছে এফবিআইয়ের ভাষ্য।
এখানে গ্রেপ্তার অভিযান যেটি পরিচালনা করা হয় সেটা মূলত সম্পন্ন হয় স্টিং অপারেশন হিসেবে। অর্থাৎ প্রকৃত কোনো সন্ত্রাসীর সম্ভাব্য অভিযান পরিচালনার সংবাদ পেয়ে তাকে গ্রেপ্তারের পরিবর্তে এখানে একজন ‘সন্দেহভাজন’কে সন্ত্রাসী হিসেবে গড়ে তুলে নিয়ে তাকে দিয়ে একটি অভিযান পরিচালনার নাটক মঞ্চস্থ করিয়ে তারপর আটক করা হয়। এই পদ্ধতি নিয়ে ইতোমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মহলে। বলা হচ্ছে নাফিসের অভিপ্রায়ের কথা জানতে পেরে সেখানেই কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাকে এ কাজ থেকে বিরত রেখে যখন সম্মানজনকভাবে বিষয়টির সমাধান করা যেতো তখন সে কাজ না করে কেন এভাবে তাকে সন্ত্রাসী বানিয়ে তারপর গ্রেপ্তারের মাধ্যমে এই সন্ত্রাসবিরোধী নাটকের হৈচৈ তোলা হচ্ছে। বস্তুত এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন ব্যবস্থা অথবা এফবিআইকে দোষারোপের কিছু আছে বলে মনে হয় না। যারা এভাবে পুরো বিষয়টির সমালোচনা করছেন হয় তারা মনে করেন নতুবা সাধারণ মানুষের কাছে উপস্থাপন করতে চাইছেন যে, মার্কিন এই গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সন্তুষ্টদের দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। এখানে মানুষকে ‘হেদায়েত’ করে ‘সৎপথে’ পরিচালনার ব্যবস্থা করা হয়!
কিন্তু এটিই তো একমাত্র উদাহরণ নয়। সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী এই ধরনের স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে ফাঁদ তৈরি করে গত দশ বছরে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশী। বিচারে তাদের সবাইকেই কারাদণ্ড ভোগ করতে হচ্ছে। ২০০৪ সালে মোহাম্মদ হোসেন নামের একজন বাংলাদেশী ইমামকে এ ধরনের নাশকতামূলক পরিকল্পনায় গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে অপরাধ স্বীকার করার কারণে তুলনামূলক লঘু দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় সে পনের বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী পরিকল্পনার অভিযোগে ২০০৯ সালে এহসানুল সাদেকী নামের এক বাংলাদেশী যুবককে সতের বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ম্যাসাচুসেটসে বড় হওয়া বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রেজওয়ান ফেরদৌস নামের আর এক যুবককেও সতের বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সে এখন আটলান্টার কারাগারে সাজা ভোগ করছে। এভাবে স্টিং অপারেশনের নামে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমেরিকা তার আজীবনের মুসলিম বিদ্বেষ লালসা পুরণ করতেছে।
আমেরিকার এবার যুদ্ধ মুসলমানদের বিরুদ্ধে
মাকিনীরা আজীবনই ইসলাম বিদ্বেষী। মাকিন সরকার বিশ্বের অনেক দেশেই মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তবে এবার খোদ আমেরিকা বসবাসকারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধ শুরু হয়েছে। কমিঠি অফ স্টপ এফবিআই রিপ্রেশন বা এফবিআই নিযাতন বিরোধী কমিটির সদস্য জো লোসবাকের এ কথা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি নারী রাসমিয়ে ওদেহেক আটক করেন মাকিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির গোয়েন্দারা। ৪৫ বছর আগে ইহুদীবাদী ইসরাইলের সামরিক আদালতে বিনা বিচারে ওদেহেকে আটক করেছিল। এ বিষয়টি মাকিন নাগরিকত্বের আবেদন পত্রে উল্লেখ করেনি বলে অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। ইরানের ইংরেজি নিউজ চ্যানেল প্রেস টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে লোসবাকের বলেন, দখলদার ইসরাইলীদের আইন এখন আমেরিকায় বাস্তবায়নের কাজে হাত দিয়েছে মাকিন সরকার। রাসমিয়ে ওদেহেক আটকের ঘটনা একটি জ্বলন্ত উদাহারণ। কমিটি অফ স্টপ এফবিআই রিপ্রেশন এ ধরণের গ্রেফতারের কঠোর নিন্দা করছে। আমেরিকায় বসবাসরত মুসলমানদের বিরুদ্ধে মাকি©ন সরকার কেন এ জাতীয় তৎপরতার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে তারও কারণ ব্যাখ্যা করেন লোসবাকের। তিনি বলেন, মুসলমান এবং আরব দেশগুলোর বিরুদ্ধে অসংখ্য লড়াইয়ে লিপ্ত রয়েছে ওয়াশিংটন এবং ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলী দখলদারিত্বকেও সমথন করছে আমেরিকা। কাজেই সারা বিশ্বের মুসলমানদের হয়রানী করার পর এখন নিজ দেশের মুসলমান নাগরিকদের ও আর বাদ রাখতে চায় না ওয়াশিংটন। খোদ আমেরিকায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে লোসবাকের বলেন, গত ১০ বছর ধরে মুসলমানদের লক্ষ্য করেই আমেরিকায় সব বিদ্বেষী কমকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণের নামে পুলিশে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে
ভীতিকর সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হলো পর্দা। দেখানো হলো একের পর এক কিছু ভয়ঙ্কর দৃশ্য। খ্রিষ্টানদের ধরে ধরে মাথায় গুলি করছে মুসলিম সন্ত্রাসীরা, রাস্তায় গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে পড়ে রয়েছে ছিন্নভিন্ন লাশ, সারিবদ্ধভাবে শায়িত শিশুর বিভৎস লাশ। এর পাশাপাশি আরেক দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, হোয়াইট হাউজের মাথায় পতপত করে উড়ছে ইসলামি পতাকা।নেপথ্যে ধারা বর্ণনায় গম্ভীর আওয়াজ শুনা যাচ্ছে: ‘এই হলো আমেরিকায় ক্রমবর্ধমান মুসলিমদের আসল কর্মকাণ্ড’, ‘আমেরিকায় অনুপ্রবেশ এবং কর্তৃত্ব করার কৌশল... এটাই হলো সেই যুদ্ধ যার ব্যাপারে তুমি কিছুই জানো না।’এটা হলো ফিচার ফিল্মের সমান দৈঘ্যের একটি তথ্যচিত্র। নাম দেওয়া হয়েছে ‘ দ্য থার্ড জিহাদ’ বা ‘তৃতীয় ধর্মযুদ্ধ’। চলচ্চিত্রের ‘দ্য ১৪০০- ইয়ার ওয়ার’ পর্বে বর্ণনা করা হয়েছে তিনটি পর্যায়ের জিহাদ রয়েছে: নবী মোহাম্মদের সময় প্রথম, দ্বিতীয়টি মধ্যযুগে এবং তৃতীয় জিহাদ এখন পশ্চিমে যা এখন শুরু হয়েছে।নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সহস্রাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এটি দেখানো হয়েছে। এর মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে এই নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে।৭২ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি ক্ল্যারিঅন ফান্ড নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বোর্ডে রয়েছেন সিআইএ’র একজন সাবেক কর্মকর্তা এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী।তবে ক্ল্যারিঅন ফান্ডের অর্থায়নে মুসলিমদের আক্রমণ করে এরকম চলচ্চিত্র নির্মাণ এই প্রথম নয়। এর আগে তারা ‘ওয়ার অন দ্য ওয়েস্ট’ নামে একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেছিল। এতে সব ধরনের সহযোগিতা করে ক্যাসিনো মুঘল শেলডন অ্যাডেলসন। এই ব্যক্তি ইসরায়েলের বড় সমর্থক।তবে প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এরকম আক্রমণাত্মক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী চলার খবর ২০১১ সালের জানুয়ারিতে জানাজানি হয়ে যায়। কিন্তু একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা তা অস্বীকার করেন। পরে অবশ্য ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভুলবশত মিনিট দুই গুটিকয়েক কর্মকর্তাকে ওই ধরনের দৃশ্য দেখানো হয়েছিল।এর এক বছর পর এখন যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অধিকার আইনের ভিত্তিতে পুলিশ বিভাগ থেকে এমন কিছু নথিপত্র পাওয়া গেছে যা আরেকটি গুরুতর সত্য ঘটনা উন্মোচিত করে। দ্য থার্ড জিহাদ চলচ্চিত্রে পুলিশ কমিশনার রেমন্ড ডব্লিউ ক্যালির সাক্ষাতকার রয়েছে।পুলিশের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, এক বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণে চলচ্চিত্রটি ধারাবাহিকভাবে টানা তিন মাস দেখানো হয়েছে।এর দর্শক ছিলেন কমপক্ষে এক হাজার ৪৮৯ জন পুলিশ কর্মকর্তা, এদের মধ্যে লেফটেন্যান্ট থেকে গোয়েন্দা এবং টহল পুলিশ কর্মকর্তারা ছিলেন।২০১১ সালের ২৩ মার্চ একাডেমির কমান্ডার জানিয়েছিলেন, তথ্যচিত্রটি প্রদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন- ৬৮ জন লেফটেন্যান্ট, ১৫৯ জন সারজেন্ট, ৩১ জন গোয়েন্দা এবং এক হাজার ২৩১ জন টহল পুলিশের কর্মকর্তা। কিন্তু পুলিশ বিভাগ কখনই এই তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি।নিউইয়র্ক নগরীতে বসবাসকারী বিশাল মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে যাওয়া পুলিশ বিভাগের দ্বন্দ্ব বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এই খবর সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। নিছক সন্দেহের বশে মুসলিম সম্প্রদায়ের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি এবং আগ্রাসি গোয়েন্দাগিরির কারণে মুসলিমরা পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ। কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে কখনই ভুল স্বীকার করেনি বরং সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্রের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তারা এটা করছে বলে তাদের দাবি।এ ঘটনার পর সিটি কাউন্সিলের সদস্য, নাগরিক অধিকার আইনজীবী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা অভিযোগ করে বলছেন, পুলিশ বিভাগ নাগরিক অধিকার পদদলিত করেছে। তারা দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশের মাটিতে গুপ্তচর বৃত্তির রীতি পার্থক্যবোধক সীমারেখা অস্পষ্ট করে তুলেছে। পুলিশ মুসিলমদের মধ্যে ভীতির বীজ বপন করেছে।নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের দি ব্রেনান সেন্টার ফর জাস্টিসের পরিচালক ফায়জা প্যাটেল বলেন, ‘এ ব্যাপারে পুলিশ বিভাগের প্রতিক্রিয়া ছিল সরাসরি প্রত্যাখান আর তাদের কাছ থেকে তথ্য বের করতে রীতিমত সংগ্রাম করতে হয়েছে।’যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অধিকার আইনের সহায়তায় এই প্রতিষ্ঠানটিই তথ্যচিত্রটির ব্যাপারে নথি এবং তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করেছে। ফায়জা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মকর্তাদের তথ্যচিত্রটি ঠিকই প্রদর্শন করেছিল কিন্তু জানতে চাইলে আমাদের কাছে তারা পাথরের দেয়ালের মতো নিরুত্তোর ছিল।’দি ভিলেজ ভয়েস’র কলামিস্ট টম রবিন্স পুলিশ বিভাগের এই কাণ্ডের খবর প্রথম প্রকাশ করেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে এমন পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা অবশ্য নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, এমিনকি ইউনিভার্সিটিগুলোতে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিভাগের পাঠ্যসূচি নির্ধারণের কৌশল এবং হলিউডের অনেক চলচ্চিত্রও এই প্রোপাগান্ডায় জড়িত রয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরাদের গবেষণার ধরণও তাই। বড় বড় করপোরেট কোম্পানি অর্থায়নে এরা মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে গবেষণা নিবন্ধ বের করে যেখানে কোম্পানির স্বার্থ সুপ্রতিষ্ঠিত থাকে। এদের মধ্যে বেশিরভাগের আচরণই সাংবাদিকসুলভ। এরা প্রকৃত অবস্থা বুঝার চেষ্টা করে না। গবেষণার জন্য নির্ভর করে পশ্চিম লেখকদেরই কিছু বই পুস্তক। একারণে মুসলিম মানসিকতা বুঝা তাদের পক্ষে দুসাধ্য। এদের সবচে বড় যে সীমাবদ্ধতা তা হলো, এরা আরবি ভাষাই জানে না। সুতরাং গবেষণা যতোটুকু হয় তা একেবারেই মার্কিন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যা পক্ষপাতিত্ব দোষে দুষ্ট হতে বাধ্য। (বাংলানিউজ)
বিশ্ব সন্ত্রাসের আরেক নাম সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ
ইহুদী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী চক্র ইসলাম নির্মূলে বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের বাহানায় দশ বছর মেয়াদী ‘অপারেশন নোবেল ঈগল’ নামে এক অভিযান পরিচালনা করে। এর আওতায় সম্ভবনাময় মুসলিম দেশ গুলোকে সন্ত্রাসের কালো তালিকাভূক্ত করা হয়। বিভিন্ন ইসলামী দল, সংগঠন ও ব্যক্তিত্বকে সন্ত্রাসী তালিকাভূক্ত করা হয়। এরই অংশ হিসাবে আফগানিস্তান ও ইরাকে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হলো। জনগণের ভোটে নির্বাচিত বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে না দেওয়া। মুসলিম বিশ্বের দেশে দেশে অনুগতদের ক্ষমতায় বসানো। ইসলাম বিরোধী শক্তি গুলোকে পৃষ্টপোষকতা দান। বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রে অনুগতদের লালন পালন। সম্ভাব্য মুসলিম নেতা নেত্রী, জ্ঞানী ও বিজ্ঞানীদের গোপনে হত্যা মিশন কার্যক্রম পরিচালনা।
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষমূলক অপরাধ’ বেড়েই চলেছে
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১০ সালে মুসলমানদের বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘বিদ্বেষমূলক অপরাধ’ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। প্রকাশিত দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর এক পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১০ সালে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৬০টিতে দাঁড়িয়েছে। আগের বছরে এই ধরনের অপরাধের সংখ্যা ছিল ১০৭টি।( এএফপি ওয়াশিংটন) মার্কিন আইন ও বিচারমন্ত্রী এরিক হোল্ডার স্বীকার করেছেন যে, তাদের দেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বর্ণ-বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ১১ই সেপ্টেম্বরের বিপর্যয়কর দুর্ঘটনা মার্কিনীদের ওপর এবং সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর ভয়াবহ আঘাত হেনেছে। যদিও মুসলমানরাও মার্কিন জনগণের সাথে ঐ দুর্ঘটনালব্ধ দুঃখ-কষ্ট লাঘব করার ক্ষেত্রে সমানভাবে অংশ নিয়েছে। মার্কিন আইন ও বিচারমন্ত্রী মুসলমানদের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্য বৃদ্ধির ঘটনায় হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন, এ রকম পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রদেশগুলোতে জীবনযাপন করা মুসলমানদের জন্যে দুরূহ হয়ে দাঁড়াবে। একটি মার্কিন গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণার ফলাফলের প্রতি ইঙ্গিত করে এরিক হোল্ডার বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য ধর্মের তুলনায় মুসলমানরাই সবচেয়ে বেশি বর্ণ বৈষম্যের শিকার। পু নামক একটি গবেষণা কেন্দ্র পরিচালিত জনমত জরিপে দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি দশজন নাগরিকের মধ্যে ছয়জনই বিশ্বাস করে, তাদের দেশে ইহুদি, প্রোটেস্টান্ট এবং নাস্তিকদের তুলনায় মুসলমানরাই বেশি বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার।
মাকিন গোয়েন্দাদের হয়রানির শিকার নিরীহ আমেরিকান মুসলমান
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ তাদের দাবি, সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের নামে এফবিআই অনেক সময় নিরীহ মানুষদের হয়রানি করে৷ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের কিছু তথ্য তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)-এর মুখপাত্র আন্দ্রেয়া প্রাসো বলেন, ‘‘এফবিআই প্রায়ই এমন লোকদের ‘শিকার' বানায় তদন্ত শুরুর আগে যাদের সন্ত্রাসের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না৷ তারা প্রায়ই ধর্মীয় বা জাতীয় পরিচয় বিবেচনায় নিয়ে মানুষগুলোকে ধরে৷ এটা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন৷'' এইচআরডাব্লিউ-র প্রতিবেদন অনুযায়ী ‘নাইন ইলেভেন'-এর পর থেকে গত ১৩ বছরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৫০০ লোককে বিচারের মুখোমুখি করেছে এফবিআই৷ তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মুসলমান৷ এক সংবাদ সম্মেলনে ২৭টি মামলার বর্ণনা দিয়ে আন্দ্রেয়া প্রাসো জানান, এফবিআই-এর এমন তৎপরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মুসলমানই এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন৷ সরকারের প্রতি ভীতি নিয়ে বসবাস করছেন তারা৷'' প্রতিবেদনে এফবিআই-এর বিরুদ্ধে ঘুস দিয়ে দরিদ্র মানুষকে সন্ত্রাস নির্মূল মামলায় জড়ানোর অভিযোগও তুলেছে এইচআরডাব্লিউ৷ মানসিকভাবে সুস্থ নন এমন লোকদের মামলায় জড়ানোর অভিযোগও রয়েছে এফবিআই-এর বিরুদ্ধে৷ কখনো কখনো এফবিআই-এর গোপন তথ্য সরবরাহকারীরা ঢুকে পড়েন মসজিদে৷ সেখানে দরিদ্র কোনো মানুষকে ধরে তার কাছ থেকে সন্ত্রাস নির্মূল কার্যক্রমে সহায়তা চান৷ মোটা অঙ্কের বিনিময়ে কেউ এফবিআই-এর ছক অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হলে মামলা সাজাতে আর কোনো সমস্যা থাকে না৷ আন্দ্রেয়াস প্রাসো জানান, এমন পরিস্থিতিতে খুব আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা৷
ওসামা বিন লাদেন হত্যাকান্ড :
ইহুদী মার্কিন যৌথ প্রযোজনায় টুইন টাওয়ারে হামলার নাটক সাজিয়ে আর এ ঘটনার জন্য ওসামা বিন লাদেনকে দায়ী করে ইসলামী রাষ্ট্র আফগানিস্তানকে ধ্বংস করে দেয়া হলো। আর এক্ষেত্রেও মিডিয়াকে কাজে লাগানো হয়েছে। অথচ ২০০৫ সালে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি স্বীকার করেন-লাদেন কোথায় সে সর্ম্পকে তারা ধারণা রাখেন। কিন্তু কৌশলগত কারণে তাকে আটক করা হচ্ছে না। তার যুক্তি লাদেন ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় জড়িত এ অভিযোগের সপক্ষে তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ নেই। ফলে তাকে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করা হলে তিনি মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন। অথচ তখন লাদেনও স্বীকার করেছিলেন এ ঘটনায় তিনি কিছুই জানেন না। অথচ সেই টুইন টাওয়ারের ঘটনাকে পূঁজি করে মুসলমানদের সন্ত্রাসী হিসাবে তকমা লাগানো হয়েছে, অথচ আসল সন্ত্রাসী কারা তা প্রামাণিত হয়েছে। সে কারণে প্রমাণ ফাঁস হওয়ার ভয়ে ওসামা বিন লাদেনকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি না করে হত্যা করে লাশ পর্যন্ত গুম করে ফেলা হয়েছে। কারণ লাদেন বেঁচে থাকলে তাদের অনেক গোপন কথা ফাঁস হয়ে যেতো।
দেশে দেশে মার্কিন ঔদ্ধত্য
আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে বিশেষ মার্কিন দূত মার্ক গ্রসম্যানের সঙ্গে ১৬ সেপ্টেম্বর কথাবার্তার পর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারি জানান, পাকিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ড্রোন বা চালকবিহীন বিমান হামলা বন্ধের জন্য তিনি তাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন (ডেইলি স্টার, ১৭.৯.২০১২)।
এই দাবি পাকিস্তান অনেক দিন থেকেই জানিয়ে আসছে কিন্তু তার দ্বারা কোনো কাজ হয়নি। পাকিস্তান সরকারের কোনো অনুমতি ছাড়া অর্থাৎ পাকিস্তানের ভূখণ্ড এবং আকাশে চড়াও হয়ে তারা এই বিমান হামলা নিয়মিতভাবেই পাকিস্তানের অভ্যন্তরে চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের মুখোশধারী ও ইচ্ছামতো পরদেশ আক্রমণকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা যে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের ওপরই হামলা এতে সন্দেহ নেই। গণতন্ত্র রক্ষার নামে দেশের পর দেশে তারা হামলা চালায় নিজেদের প্রয়োজনে। এই সাম্রাজ্যবাদী হামলা আফগানিস্তান, ইরাক, পাকিস্তান, লিবিয়া ইত্যাদি দেশে সাম্প্রতিক সময়ে তারা চালিয়ে এসেছে, এখনও চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইরানে হামলা করার হুমকিও দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অন্য দেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্বকে হিসাবের মধ্যে গণ্য করার প্রয়োজন তাদের হয় না। জোর যার মুলুক তার এই ভিত্তিতেই তারা নিজেদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নির্ধারণ ও কার্যকর করতেই নিযুক্ত থাকে।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট 'বিনীতভাবেই' মার্কিন বিশেষ দূতের কাছে ড্রোন হামলা বন্ধে দাবি জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে এই ধরনের হামলা একটি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণারই শামিল। কিন্তু পাকিস্তান এমনই দেশ যে, একে যুদ্ধ ঘোষণা মনে না করে তারা বন্ধুমূলক দাবি মার্কিন সরকারের কাছে জানাচ্ছে তাদের সামরিক হামলা বন্ধের জন্য! এই দেশটি নিজেদের কোন অবস্থায় এনে দাঁড় করিয়েছে এর থেকেই সেটা বোঝা যায়। ইতিপূর্বে ড্রোন হামলায় ২৪ জন পাকিস্তানি সৈন্য ওয়াজিরিস্তানে নিহত হওয়ার পর তারা দেশের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে ন্যাটোর সরবরাহ লাইন বন্ধ করেছিল। এই লাইন খুলে দেওয়ার জন্য তারা মার্কিন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিল ক্ষমা প্রার্থনার। কিন্তু পরদেশে সামরিক হামলা চালানোর 'তুচ্ছ' কারণে মার্কিন সরকার তাদের ওপর নির্ভরশীল দেশের কাছে ক্ষমা চাইবে এটা তাদের জাতীয় সম্মানের বরখেলাপ বলেই তারা মনে করে। কাজেই সরবরাহ লাইন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও তারা ক্ষমা চায়নি। মধ্য এশিয়ার দুই-একটি দেশের মধ্য দিয়ে তারা সরবরাহ চালু রাখলেও তার পরিমাণ কম এবং ব্যয় বেশি হচ্ছিল। সে ক্ষেত্রেও অসুবিধা দেখা দেওয়ায় তারা শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করে তাদের পররাষ্ট্র সচিব হিলারি ক্লিনটন এ ব্যাপারে 'দুঃখ প্রকাশ' করে সরবরাহ লাইন তাদের জন্য উন্মুক্ত করতে বলেন! এই 'দুঃখ প্রকাশে' সন্তুষ্ট হয়ে পাকিস্তান সরকার সরবরাহ লাইন আবার ন্যাটো অর্থাৎ দৃশ্যত মার্কিন সরকারের কাছে উন্মুক্ত করে। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করার বিষয় যে, সীমান্ত এলাকায় শত শত শিশু, বৃদ্ধ, নারীসহ সাধারণ নাগরিক নিহত হতে থাকলেও তারা ন্যাটোর সরবরাহ লাইন বন্ধ করেনি। সেটা বন্ধ করেছিল মাত্র ২৪ জন সৈন্য নিহত হওয়ার পর। আবার এভাবে সরবরাহ লাইন খুলে দেওয়ার শর্ত হিসেবে তারা ড্রোন হামলা একেবারে বন্ধ করার দাবি না জানিয়ে শুধু ২৪ জন সৈন্য হত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার দাবি করেছিল! এর থেকেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরিত্র এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর তাদের নির্ভরশীলতার মাত্রা ভালোভাবেই বোঝা যায়। এর থেকে বোঝা যায় যে, দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়েও তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। অন্য কোনো দেশ তাদের ওপর এই ধরনের সামান্য হামলা করলে তারা শোরগোল তুলে ফাটাফাটি করতে পারে; কিন্তু মার্কিন হামলার বিরুদ্ধে তাদের সে রকম প্রতিক্রিয়া নেই! এই হামলার অধিকার তারা নিজেদের দাসত্বের কারণে তাদের দিয়ে রেখেছে! পাকিস্তানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের কিছু অবনতি সাম্প্রতিককালে হলেও এটা তারা ভালোভাবেই জানে এবং জানে বলেই তারা পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে পাকিস্তান এলাকার মধ্যে ঢুকে বেপরোয়াভাবেই তাদের ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিক দিয়েই গাদ্দাফির লিবিয়া, সিরিয়া এবং ইরানের মতো দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের পার্থক্য। সামরিক হামলার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সর্বপ্রধান ফ্যাসিস্ট সহযোগী রাষ্ট্র ইসরায়েল ইরানকে হুমকি দিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের এই হুমকির কাছে বিন্দুমাত্র নতি স্বীকার না করে ইরান সবসময়ই খুব স্পষ্টভাবে উভয় রাষ্ট্রকেই পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছে যে, তাদের দ্বারা ইরান আক্রান্ত হলে তারা ইসরায়েলকে ধূলিসাৎ এবং মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক স্থাপনাগুলোতে মিসাইল আক্রমণ পরিচালনা করবে। ইসরায়েল ইরান আক্রমণের জন্য অস্থির চুলকানি সত্ত্ব্বেও এ কারণেই বাস্তবত ইরান আক্রমণ করতে সক্ষম হচ্ছে না। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সারা উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভ এবং নানা পরিবর্তনের কারণে তাদের সাম্রাজ্যবাদী থাবা ক্রমশ ও দ্রুত আলগা হয়ে আসছে। এই অবস্থায় ইরান আক্রমণ করলে তাদের বিরুদ্ধে যে দাবানল সমগ্র অঞ্চলজুড়ে সৃষ্টি হবে তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আমূলভাবে পরিবর্তিত হওয়ার ষোলআনা সম্ভাবনা।
এসব ইরান সরকারের ভালোভাবেই জানা আছে। কাজেই প্রকাশ্যেই একথা বলতে তাদের অসুবিধা নেই যে, সিরিয়া ও লেবাননে তাদের সামরিক উপস্থিতি আছে। এই মর্মে তাদের গার্ডস কমান্ডার জেনারেল মাহমুদ আলী জাফারি ১৬ সেপ্টেম্বর এক ব্যতিক্রমী সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, কুদস বাহিনী নামে গার্ডস বাহিনীর এক বিশেষ বাহিনী লেবানন ও সিরিয়ায় সক্রিয় আছে (ডেইলি স্টার, ১৭.৯.২১২)।
তাদের কাজ হচ্ছে সিরিয়ায় বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত সিরীয় বাহিনীকে 'পরামশ©' দেওয়া। কিন্তু 'পরামর্শ' দেওয়ার কথা বলা হলেও লেবানন ও সিরিয়ায় ইরানের সামরিক উপস্থিতি যে আছে এটা প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলনে বলা সম্ভব হতো না, যদি ইরান মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনসহ ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী এবং সৌদি আরব ও কুয়েতের মতো দেশের দুর্বল হতে থাকা বিষয়টি উপলব্ধি না করত।
গার্ডস কমান্ডার জেনারেল জাফারি সংবাদ সম্মেলনে বেশ স্পষ্ট ভাষাতেই বলেন যে, সিরিয়াকে সাহায্য করতে পারায় তারা গর্বিত। তিনি আরও বলেন, ইরানের ওপর কোনো আক্রমণ হলে তার পাল্টা হিসেবে তেলসমৃদ্ধ উপসাগরে হরমুজ প্রণালি, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো এবং ইসরায়েল আক্রান্ত হবে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে বিশাল আকারে তেল সংকট দেখা দেবে। এই সঙ্গে তিনি বলেন, সেই অবস্থায় বাহরাইন, কুয়েত ও সৌদি আরবে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোও ইরানের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। ফলে ইসরায়েলের অস্তিত্ব বলেও আর কিছু থাকবে না।
সিরিয়ায় সামরিক আগ্রাসনের অজুহাত খুঁজছে আমেরিকা
আফগানিস্তার, ইরাক, লিবিয়ার পর এবার সিরিয়া আগ্রাসনের প্রতিক্ষায় মাকি©ন যুক্তরাষ্ট্র। উদ্দেশ্য একটাই ইরান আগ্রাসনের ক্ষেত্র তৈ করা এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাঈল বিরোধী শক্তি নিমূ©ল করা।সিরিয়ায় ভাড়াটে খুনি ও আল-কায়েদার পক্ষ হয়ে বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসনের অজুহাত খুঁজছে আমেরিকা। ইরানের ইংরেজি ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভিকে দেয়া সাক্ষাতকারে এ মন্তব্য করেছেন কানাডার ‘স্টপ দ্য ওয়ার’ সংগঠনের নেতা কেন স্টোন। তিনি বলেন, ইরাকের সাদ্দাম সরকারের কাছে গণ-বিধ্বংসী মারণাস্ত্র থাকার ধুয়া তুলে দেশটিতে সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছিল আমেরিকা। সিরিয়ায় আগ্রাসন চালানোর জন্য তারা এখন একই ধরনের অজুহাত খুঁজছে। বিদ্রোহীরা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যহার করেছে -এমন প্রমাণ পাওয়ার পরও কেন আমেরিকা তাদের জন্য রেড লাইন দিচ্ছে না এ প্রশ্নের জবাবে কেন স্টোন বলেন, ওয়াশিংটন বিদেশি মদদপুষ্ট বিদ্রোহীদের দিয়ে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারকে উতখাত করতে চায় বলেই তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো রেড লাইন ঘোষণা করছেন না। আবার বিদ্রোহীরা সরকারের কাছে হেরে যাচ্ছে সেটিও বিবেচনায় নিচ্ছে আমেরিকা। যার কারণে সত্য চেপে রেখে তারা সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ জন্য আমেরিকা ও মিত্রগোষ্ঠী সিরিয়ার জনগণের ওপর বিদ্রোহীদের দিয়ে হামলা চালিয়ে উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নিয়ে বাশার আসাদ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর আড়ালে তারা সিরিয়ার জনগণকে মানবিক সাহায্য দেয়ার কথা বলছে- যদিও সিরিয়ার জনগণ তা চায় না। অথচ এগুলো না করেও কূটনৈতিক ও সংলাপের মাধ্যমে সিরিয়া সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন কেন স্টোন। সিরিয়ায় রাসয়িনক অস্ত্র ব্যবহারের মিথ্যা দাবি তুলে ইসরাইলকে মূলত সিরিয়ায় হামলার চালানোর পথ করে দেয়া হয়েছে- সাবেক বুশ প্রশাসনের এক কর্মকর্তার এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন কেন স্টোন। তিনি বলেন, “আমি নিজেও বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখেছি যাতে দেখা যায়- পশ্চিমা ও পারস্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর স্বার্থে যেসব ভাড়াটে খুনি কাজ করছে তারা নমুনা হিসেবে খরগোশের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে। পাশাপাশি সিরিয়ার ওপর ইসরাইল যে হামলা চালিয়েছে তা দামস্কের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক সব আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন কানাডাভিত্তিক এ বিশ্লেষক। (রেডিও তেহরান/এসআই/৬)
মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবার নিউ ইয়র্কের মসজিদ ও ইসলামী সংগঠনগুলোকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের’ তালিকাভূক্ত করছে
বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস গণহত্যা ও মানবাধিকার লংঘনের প্রধান অনুগঠক শীর্ষ যুদ্ধপরাধী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবার তাদের নিজের দেশের মুসলিমদের মসজিদ ও সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী তালিকা ভূক্ত করে নিজেরাই প্রামাণ করল বিশ্বের প্রধান সন্ত্রাসী তারা। তাদের হাতে তাদের নিজের দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়রাও নিরাপদ নয়। মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা খ্যাত এ কুখ্যাত দেশ প্রতি বছর সারা বিশ্বের দেশগুলোর মানবাধিকার লংঘনের রির্পোট প্রকাশ করলেও তারাই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লংঘনের রেকর্ড করে। অথচ তারা নিজের দেশেই সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার হরন করেছে চলেছে সর্বত্র। এর জলন্ত নজির মসজিদকে সন্ত্রাসের তালিকা ভূক্ত করা। নিউ ইয়র্কের পুলিশ বেশ কিছু মসজিদকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নামাজি (মুসল্লি), ইমাম ও তার খুতবার ওপর গোয়েন্দাগিরি করেছে পুলিশ। পুরো মসজিদটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার ফলে কোনো সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ ছাড়াই পুলিশ এসব মসজিদের নামাজি (মুসল্লি), ইমাম ও তার খুতবার ওপর গোয়েন্দাগিরি করতে পেরেছে। পুলিশের গোপন নথিতে দেখা যায়, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে সন্ত্রাসী হামলার পর অন্তত ডজনখানেক মসজিদ ও ইসলামী সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর বছরের পর বছর ধরে এসব মসজিদ ও ইসলামী সংগঠনের ওপর গোয়েন্দাগিরি করলেও এখন পর্যন্ত একটির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বার্তা সংস্থা এপির তথ্যে দেখা যায়, মসজিদকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ অনেক নিরাপরাধ মুসলমানের ওপর গোয়েন্দাগিরি বজায় রাখে। আমেরিকার নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত সংগঠনগুলো এবং দুটি মসজিদ কর্তৃপক্ষ একে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তারা বলেছে, এর ফলে নির্বিগ্নে মুসলমানরা ধর্ম পালন করতে পারেননি। তবে নিউ নিয়র্কের মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ এবং পুলিশ কমিশনার রেমন্ড কেলি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০০৩ সালের দিকে যেসব মসজিদকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তার একটি হলো ইসলামিক সোসাইটি অব বে রিজ। পুলিশের ওই তালিকার কথা জানার পর মসজিদটির একজন নেতা জেইন রিমাউই আপেক্ষ করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমি কখনো মুক্ত অনুভব করিনি।’কয়েক দশক আগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর থেকে যুক্তরাষ্টে আসা ৫৯ বছর বয়সী রিমাউই বলেন, ‘কেলি তোমাকে লানত। আমি একজন আমেরিকান।’আইনজীবী হিনা হাশমি বলেন, ‘এ ঘটনা প্রমাণ করছে- নিউ ইয়র্কের মুসলমানরা চরম ভীতির মধ্যে বাস করছে। বাসায় নামাজ পড়া থেকে বিবাহ অনুষ্ঠান-এমন কোনো জায়গা নেই যে নিউ ইয়র্কের পুলিশ মুসলমানদের ধর্মীয় ও ব্যক্তিগত জীবনের ওপর পক্ষপাতদুষ্ট গোয়েন্দাগিরি করেনি।’ (রেডিও তেহরান) মার্কিনীরা যে আসলেই ইসলাম বিদ্বেষী এর মাধাম্য তা আবারও প্রমাণিত হলো।
মালালাকে ঘিরে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নতুন চক্রান্ত
ফিলিস্তিনে ইহুদী আগ্রাসন, ইরাক আফগানিস্তানে ইহুদী মার্কিন বর্বরতা এবং বিশ্বব্যাপী নব্য ক্রুসেডের ইসলাম নিমূ©ল অভিযান, ইহুদী মিডিয়ার আগ্রাসন সব চাপিয়ে আজ ইহুদী মার্কিন পৃষ্টপোষকতায় হঠাৎ জিরো থেকে হিরো বনে যান পাকিস্তানী বাসিন্দা মালালা।
মিডিয়ার কল্যাণে হঠাত করেই সুকন্যা, নারীবাদী ও বিশ্ববিখ্যাত বণে যাওয়া মালালা ইউসুফ জাইয়ের পরিচয় নিয়ে এখন প্রশ্ন তুলেছে খোদ মিডিয়াই। আসলে কে এই মালালা ? সে আসলে পাকিস্তানের কোনো বাসিন্দা, না অন্য কেউ? কোনো কল্পকাহিনীর নায়িকা? মালালার সম্বন্ধে জানতে বিস্তর অনুসন্ধান চালিয়েছে পাকিস্তানের ডন পত্রিকা। সেই অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে মালালা সম্বন্ধে অনেক অজানা তথ্য।
২০১২ এর ৯ অক্টোবর স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মালালার উপর হামলা হয় পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায়। ঐ হামলায় মালালা ও তার তিন সহপাঠী গুরুতর আহত হয়। এর পরই রাতারাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে মালালার খবর। মালালা হয়ে ওঠে সাহসের প্রতীক। ব্রিটেনে কয়েক মাসের চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে সে। আবার হামলা হতে পারে-এ আশঙ্কায় মালালা সপরিবারে স্থায়ী হয় ব্রিটেনে।সংবাদমাধ্যমের দৌড়াত্বে এসব কথা এখন সবাই জানে। তবে নতুন খবর দিয়েছে পাকিস্তানের ডন পত্রিকা। ডনের ব্লগে নাদিম ফারুক পারাচা দাবি করেছেন, মালালাকে নিয়ে অনেক আগে একটি 'নাটকের পাণ্ডলিপি' সাজানো হয়েছিল। গত বছরের অক্টোবরে সেটারই সফল মঞ্চায়ন হয়েছে।
মালালার ঘটনা খতিয়ে দেখতে গত এপ্রিলে ডনের পক্ষ থেকে একদল সাংবাদিক পাঠানো হয় সোয়াতে। পাঁচ মাস অনুসন্ধান চালায় তারা। নানা তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে। সোয়াতের চিকিত্সক ইমতিয়াজ আলী খানজাইয জানান, মালালার জন্ম আসলে সোয়াতে নয়। সে পশতু গোত্রেরও নয়, সে আসলে ককেশীয়। ইমতিয়াজ বলেন, 'কানের সমস্যা নিয়ে মালালা বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোটবেলায় আমার ক্লিনিকে এসেছিল। মালালার ওপর হামলার খবর শোনার পর আমার কাছে থাকা তার কানের ময়লার নমুনা বের করে পরীক্ষা করি।' ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে ইমতিয়াজ দাবি করেন, মালালা আসলে ককেশীয়। খুব সম্ভবত সে পোল্যান্ডের বাসিন্দা। এরপর তিনি মালালার বাবাকে ডেকে পাঠান এবং বলেন, Íআমি মালালার আসল পরিচয় জানি। শুনে মালালার বাবা জিয়াউদ্দিন ইউসুফজাই ঘাবড়ে গিয়ে বলেন, এ কথা আমি যেন জনসম্মুখে না বলি। আমি তাঁকে বলি, 'আপনি যদি সত্য ঘটনা খুলে বলেন তবে কাউকে বলবো না'।"
মালালার বাবার বরাত দিয়ে ইমতিয়াজ জানান, মালালার আসল নাম জেন। ১৯৯৭ সালে হাঙ্গেরির একটি খ্রিস্টান মিশনারি দম্পতির ঘরে তার জন্ম। ২০০২ সালে ওই দম্পতি সোয়াতে আসে এবং মালালার বর্তমান মা-বাবাকে গোপনে ধর্মান্তরিত করে মালালাকে তাঁদের কাছে দত্তক দেয়। ইমতিয়াজ আরো জানান, গত জানুয়ারিতে এ বিষয়ে তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। আইএসআইয়ের কোন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে সেটাও জানান।
ইমতিয়াজের কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ওই আইএসআই কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেন ডনের সাংবাদিকরা। নাম ও পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সাক্ষাতের সময় ওই কর্মকর্তা স্পাইডারম্যানের মুখোশ পরে ছিলেন। তিনি দাবি করেন, মালালার ওপর হামলার ঘটনাটি ছিল সাজানো। উত্তর ওয়াজিরিস্তানে অভিযান চালানোর অজুহাত হিসেবে আইএসআই ও যুক্তরাষ্ট্রমিলে 'মালালা নাটক' সাজিয়ে ছিল। কারণ ওই এলাকা খনিজ সম্পদে খুবই সমৃদ্ধ। এসব খনিজ সম্পদের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নজর অনেক দিনের। আর ওই এলাকাটি ইসলামী আদিবাসী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই কর্মকর্তা তার দাবীর পক্ষে টুইটারে আইএসআই ও সিআইএ কর্মকর্তাদের মধ্যে মালালা নিয়ে কথোপকথনের কিছু অংশও সাংবাদিকদের দেখান।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, মালালার আসল মা-বাবার সঙ্গে আইএসআই কর্মকর্তাদের প্রথম থেকেই যোগাযোগ ছিল। গোয়েন্দাদের সমর্থনে মালালা ব্লগে তালেবানবিরোধী ও নারী শিক্ষার পক্ষে লেখালেখি শুরু করে। এরপরই তালেবান তাকে লেখালেখি বন্ধ করতে বলে এবং হামলার হুমকি দেয়। এ সুযোগই নেয় আইএসআই ও সিআইএ। ইতালীয় বংশোদ্ভূত রবার্ট নামের একজনকে মালালার ওপর সাজানো হামলা চালানোর জন্য নির্বাচিত করে তারা। ঘটনার দিন রবার্টকে গুলিবিহীন একটি অস্ত্র দেওয়া হয়। রবার্ট মালালার স্কুলের গাড়ি থামিয়ে জেন নামে ডাকতে শুরু করে। গাড়িতে থাকা সহপাঠীরা ঘটনা বুঝে ওঠার আগেই মালালা দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করে, 'আপনি কী আমাকে খুঁজছেন।' এরপর মালালা তার স্কুল ব্যাগটি রবার্টের দিকে ছুড়ে বলে, 'বোকা তুমি আমাকেই খুজছ।' এরপরই বরার্ট মালালাকে গুলি করে। এ সময় মালালা তার কাছে থাকা টমেটো সস কৌশলে মাথা ও মুখে লাগায়। এর কিছুক্ষণ পরই একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থল থেকে মালালাকে নিয়ে যায়।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনার পর যে মেয়েটিকে হাসপাতালে দেখানো হয়েছে সে আসলে মালালা নয়, ওটা ছিল একটি বালিশ। ঘটনার পর সোয়াতের একটি পাহাড়ে বাঞ্জি জাম্পিংয়ে ব্যস্ত ছিল আসল মালালা। এ ধরনের বেশ কয়েটি ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের দেন।
এসব তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে ডন মালালা বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবী করেছে। একই সঙ্গে তারা এ নিয়ে জাতিসংঘের পূর্ণ তদন্তের দাবি করেছে। এ কথাই প্রমানিত হয়েছে মালালাকে আসলে সৃষ্টি করা হয়েছে সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থের জন্য ।
* মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে “সর্বাত্মক লড়াই” শিরোনামে একটি কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে:
যুক্তরাষ্ট্রের এক সামরিক প্রশিক্ষণ কলেজে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ‘সর্বাত্মক লড়াই’ শিরোনামে একটি কোর্স পরিচালনা করা হচ্ছে। ভার্জিনিয়ার জয়েন্ট ফোর্সেস স্টাফ কলেজে এই বির্তকিত কোর্সটি পড়ানো হতো। এতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের পাশাপাশি ইসলামের পবিত্রতম নগরী মক্কার ওপর সম্ভব্য পরমানু বোমা হামলার কথা বলা হয়েছে। পেন্টগন অবশ্যই প্রকাশিত সকল তথ্য সত্য বলে স্বীকার করেছে। গত এপ্রিলে ভার্জিনিয়ার জয়েন্ট ফোর্সেস স্টাফ কলেজের এক প্রশিক্ষনার্থী এই কোর্সটির ব্যাপারে প্রথম আপত্তি তোলেন। এরপর কোর্সটি বাতিল করা হয় বলে জানানো হয়।
* মুসলিমদের চরিত্র নষ্টের জন্য পর্ণো সন্ত্রাসের ব্যাপকতা বৃদ্ধি :
বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের আশা ভরসার প্রতিক যুব সমাজকে যৌন সন্ত্রাসী বানানোর নিমিত্তে, তাদের চরিত্রকে ধ্বংস করে দেওয়ার মানসে, মনুষত্যষে গলাটিপে হত্যা করে পশু শক্তিকে জাগানোর জন্যই পরিকল্পিতভাবে মুসলিম বিশ্বে পর্ণো উপকরণসমূহ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মার্কিন আয়ের বৃহত্তম অংশ আসে এ সর্বনাশা পর্ণো ইন্ডাষ্ট্রি থেকে। ইন্টারনেটে মোটামোটি ৩৭২ মিলিয়ন পর্ণওয়েব পেজ রয়েছে। এর মধ্যে ৩% ইংল্যান্ডের, ৪% জার্মানীর আর বাকী ৮৯% আমেরিকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চরিত্র নষ্টের এ পর্ণো ইন্ডাষ্ট্রি থেকে বাৎসরিক ৯৬.৭ বিলিয়ন ডলার আয় করে। যুক্তরাষ্ট্রের বাৎসরিক আয় ১৩.৩৩ বিলিয়ন ডলার। বাৎসরিক আয়েল দিক থেকে মিলিতভাবে মাইক্রোসফ্ট,গুগল, আমাজান,ইবে, ইয়াহু, এপল, নেটফ্লিকর এবং আর্থলিংক এর চেয়েও পর্ণো ইন্ডাষ্ট্রি বড়। যুক্তরাষ্ট্রের বাৎসরিক খাত ওয়ারি পর্ণো আয় : মুভি বিক্রি ও ভাড়া- ৩.৬২ ইন্টারনেট- ২.৮৪ ক্যাবল (ডিশ) মোবাইল/ফোন সেক্স-২.১৯ এক্সোটিক জ্যাস ক্লাস-২.০০ চটি সাহিত্য-১.৭৩ ম্যাগাজিন-০.৯৫। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সেকেন্ডে ৮৯ ডলার ব্যয় করা হয় পর্ণ্য। প্রতিদিন গড়ে ২৬০ টি নতুন পর্ণো সাইট তৈরি করা হয়। এছাড়া প্রতি ৩৯ মিনিটে একটি পর্ণো ভিডিও তৈরি করা হয়। ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারনেট পর্ণো হতে ২.৮৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এছাড়া দুনিয়ার সবগুলো ওয়েভসাইটের মধ্যে ১২% পর্ণো ওয়েভ সাইট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পর্ণো সন্ত্রাসের সংক্ষিপ্ত ফলাফল :
১. ইন্টারনেটে যত ডাউনলোড হয় তারে মধ্যে ৩৫% পর্ণো ডাউনলোড।
২. প্রতি সেকেন্ডে ২৮,২৫৮ ইন্টারনেট ইউজার ইন্টারনেটে পর্ণো দেখে থাকে।
৩. ইন্টারনেটে পর্ণো ব্যবহারের হার-পুরুষ ৭২% নারী ২৮%।
৪. সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা মানে অফিস আওয়ারে ৭০% ইন্টারনেটে পর্ণো দেখা হয়।
সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সুরার নাম যেমন,ফাতেহা, মুহাম্মদসহ নানা সুরার নামে এবং বিভিন্ন ইসলামী নাম দিয়ে পর্ণো সাইট বানানো হচ্ছে। এছাড়া বিদেশী বিভিন্ন ছবি ও ভিড়িও লিংক বিভিন্ন মুসলিম দেশের নামে দেয়া হচ্ছে। মার্কিন আগ্রাসিত আফগানিস্তান ও ইরাকে ক্ষিভিন্ন কারগারের মুসলিম বন্দীদের সাথে জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন চালিয়ে সেগুলো ইন্টারনেটে বিভিন্ন মুসলিম নাম দিয়ে আপলোড করা হচ্ছে। ধিক! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধিক!!।
* দেশে দেশে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সামরিক আগ্রাসন ঃ-
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ভিত্তিহীন ও ডাহা মিথ্যা দাবীর ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশে যে সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে তার ভুরি ভুরি নজীর ও দৃষ্টান্ত বিদ্যমান আছে। পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ ও সে দেশ জবরদখল করে। বিবিসি বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ সাংবাদিক জনাব সিরাজুর রহমান প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী প্রায় ১২ থেকে ১৩ লাখ নিরীহ ইরাকীকে তারা হত্যা করেছে (এক জীবন এক ইতিহাস, ভূমিকার ৪র্থ পৃষ্ঠা দ্র.)।অথচ আজ (২০১৩ সাল) পর্যন্ত ইরাকে সেই নিষিদ্ধ পারমাণবিক অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায় নি। তাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উক্ত দাবী যে সর্বৈব মিথ্যা ছিলো তা আজ প্রমাণিত। ঠিক একইভাবে ১৮৯৮ সালে মিথ্যা অভিযোগ ও দাবীর ভিত্তিতে তদানীন্তন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার স্পেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছিল। গত বিংশ শতাব্দীর দীর্ঘ ১৩-১৪ বছরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – ভিয়েতনাম যুদ্ধও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সাজানো সিনারিও-এর ভিত্তিতে সংঘটিত হয়েছিল যাতে প্রায় ষাট লাখ হতভাগ্য ভিয়েতনামী আগ্রাসী ও দখলদার মার্কিন সেনাবাহিনী ও মার্কিনীদের ভাড়াটে চরদের হাতে প্রাণ হারিয়েছিল। কিন্তু আজও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেই রক্ত পিপাসু ও ষড়যন্ত্রকারী স্বভাব ও চরিত্রের বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয় নি।
* ক্যালিফোনিয়ার এক পাদ্রীর ভাষ্য:
ক্যালিফোনিয়ার এক পাদ্রী বলেছেন-১৮৯০ খিস্ট্রাব্দ থেকে রীতিমত বৈজ্ঞানিক উপায়ে দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের নির্মূল করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয়, কিন্তু বর্তমানে ১৯৯০ খিস্ট্রাব্দ চলছে মুসলমানদের সংখ্যা তো কমেই নি বরং প্রতিদিন বেড়ে চলেছে। পাদ্রী আরো বলেন-আমি রেকর্ড অনুযায়ী কথা বলছি। বর্তমানে ইহুদী ও খিস্ট্রান বিশেষজ্ঞগণ হতবাক হচ্ছে যে, মুসলমানদের নির্মূল করার জন্য সকল প্রকার চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র চালানোর পরও তাদেরকে নির্মূল করা যায়নি।’ (সূত্র-সুন্নাতে রাসুল ও আধুনিক বিজ্ঞান পৃষ্টা-৭৫)
* বিশ্ব নবীকে নিয়ে চলচ্চিত্র, কার্টুন ও ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ:
মানবতার বন্ধু বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা) মুসলমানদের সবচেয়ে প্রিয় পাত্র। বলতে গেলে প্রাণের চেয়ে প্রিয়। তিনি শুধু মুসলমানদের কাছেই নয় অমুসলিমদের কাছেও জনপ্রিয়। তাই এবার ইসলাম নির্মূলের পদক্ষেপ হিসেবে প্রিয় নবীকে টার্গেট করে শুরু হয়েছে নির্লজ্জ মিথ্যাচারের ভয়ংকর খেলা। প্রিয় নবীকে নিয়ে কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর এবার প্রিয় নবীজীর সবচেয়ে পবিত্রতম চরিত্রকে কলংক লেপনের নিমিত্তে নির্মিত হলো ‘ইনোসেন্স অব মুসলিম’ নামের রুচিহীন চলচ্চিত্র। যা চরম বিকৃত ও বিদ্বেষপূর্ণ। ৫৬ বছর বয়স্ক চরমপন্থী ইহুদীবাদী নির্মাতা স্যাম ভেসেলি দুই ঘন্টার এই চলচ্চিত্রটি নির্মান করেন। ১১ সেপ্টেম্বরের সেই মিথ্যাচারকে পুঁজি করে ১৪ মিনিটের কিছু অংশ আরবি ও ইংরেজী ভাষায় ইন্টারনেটে পোস্ট করা হয়। এর পর পরই এ চলচ্চিত্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মুসলিম জাহানে প্রতিবাদের জড় ওঠে। উত্তেজিত জনতা দেশে দেশে মার্কিন দুতাবাসে হামলা চালায়। ধিকৃত সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অর্ধশতাধিক মুসলমান শাহাদাত বরণ করেন। এটি দেখে আসলে কোন মুসলমানের ধৈর্য্য ধারণ করা কঠিন। উক্ত সিনেমায় রাসুল (সা) এর ব্যক্তিগত চরিত্রে কালিমা লেপনের ব্যর্থ চেষ্ঠা করা হয়েছে। নবী করিম (সা ) কে নারী লিপ্সু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এক সাথে একাধিক নারীর সাথে শয্যাগ্রহণকারী হিসেবেও দেখানো হয়েছে। স্ত্রীদের কর্তৃক নবী (সা) কে জুতাপেটা করার দৃশ্যও সংযোজন করা হয়েছে। নবী (সা) কে অমুসলিম নিধনকারী হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে। নবী (সা) কে কখনো দাড়িবিহীন সন্ত্রাসী হিসেবে আবার কখনো জুব্বা গায়ে ভন্ড চরিত্রে উপস্থাপন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় মুহাম্মদ (সা) এর একান্ত প্রিয় সাহাবী হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত ওমর (রা) সহ অন্যসাহাবীদেরকেও চরমভাবে অপমান করা হয়েছে। নবীর স্ত্রীদেরও উপস্থাপন করা হয়েছে বেপর্দা ও নগ্ন ভাবে। মূলত: মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার ইতিবাচক পরিবর্তন যেটা ইহুদী-মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদী চক্রের চক্ষুশোলে পরিণত হয়েছে, সেটাকে পরিবর্তন এবং বিশ্বব্যাপী মুসলমান ও ইসলামকে সহিংস ধর্ম হিসেবে প্রমাণের জন্যই মিডিয়া সন্ত্রাসের এ ভয়ংকর চক্রান্তে নেমেছে তারা। অথচ এ ঘৃণ্য চলচ্চিত্রটির পরিচালক নিজেই একজন ভন্ড প্রতারক। ব্যাংক চেক জালিয়াতিতে তিনি বর্তমানে কারাদন্ড ভোগ করে চলেছেন। আর চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছেও প্রতারণার মাধ্যমে। আর এ প্রতারণার অভিযোগে ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে চলচ্চিত্রটির এক অভিনেত্রী প্রতারণার মামলা করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে শুধু মুসলিম ও ইসলামের বিরুদ্ধে কালিমা লেপনের ভয়ংকর মিডিয়া সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে পরিকল্পিত ভাবে। এর আগেও ডেনিশ এবং স্পেনের একটি পত্রিকায় রাসুল (সা) কে নিয়ে চরম অবমাননাকর কার্টুন ও ব্যঙ্গচিত্র চাপানো হয়েছিল যা খুবই নির্ন্দনীয়। ঘৃণ্য এসব অপতৎপরতা শেষ না হতেই ইহুদী-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী চক্র এবার মুসলিম বিদ্বেষী বিজ্ঞাপন প্রচারে নেমেছে। এ ঘৃণ্য বিজ্ঞাপনকে আইনগত বৈধ করার জন্যই ইহুদী মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদীদের পক্ষ থেকে আদালতের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। আদালতের এক বিচারক রায়ে বলেছেন-আমেরিকার সংবিধানে বর্ণিত বাক স্বাধীনতার আওতায় এ বিজ্ঞাপন দেয়া যেতে পারে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে নিউ ইর্য়ক সাবওয়ের ১০টি স্টেশনে এ ঘৃণ্য বিজ্ঞাপনের প্রচার চালানো হয়। এসব বিজ্ঞাপনে বলা হয়-“সভ্য মানুষের সাথে বর্বরদের লড়াইয়ে সভ্য মানুষকে সমর্থন দিন। ইসরাইলকে সমর্থন করুন, জিহাদীদের পরাজিত করুন।” (ভূতের মুখে রাম রাম !!) উক্ত ঘৃণ্য চক্রাত্রের মূল হোতা স্বামী পরিত্যক্তা পামেলা গেলার হুক্কার দিয়ে বলেছেন-‘দেয়ার ক্ষমতা আছে বলে এ বিজ্ঞাপন আমি দিয়েছি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি ইসলাম অবমাননার জন্য লড়াই করে যাবো।’ এদিকে পামেলা গোষ্ঠীর প্রকাশ্যে মুসলিম বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদী নজরদারী সংস্থা এসপিএলসি।