somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শত্রুকে কাছে টানলেন মহিউদ্দিন !

২৮ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ৮:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজনীতিতে নাকি শেষ কথা বলে কিছু নেই ! চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক ঘটনায় তা আরেকবার প্রমান হল। একদিনে যে মেরুকরণ হল তা রীতিমত অভাবনীয়। আর এতেই রাতারাতি পাল্টে গেল দলে গ্রুপিংয়ের চালচিত্র। একদিনের মধ্যে দুই গ্রুপের বিলুপ্তি, প্রভাবশালী চার নেতার পক্ষ পরিবর্তনসহ ঘটেছে নাটকীয় ঘটনা। দলের সভাপতি সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কব্জা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে গেলেন তার ঘনিষ্টজন দলের যুগ্ম সম্পাদক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিন এবং কোষাধ্যক্ষ সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। তারা দুজন এবার জোট বেধেঁছেন দলের সিনিয়র সহ সভাপতি সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম বিএসসির সঙ্গে !!!
শুক্রবার রাতে এই তিন প্রভাবশালী নেতা প্রথমবারের মত ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওয়ার্ড আ’লীগ নেতাদের সঙ্গে সভা করেন। কিছুটা কোনঠাসা মহিউদ্দিন চৌধুরী উপায়ন্তর না দেখে শরনাপন্ন হলেন রাজনীতিতে তার চিরশত্রু হিসেবে পরিচিত আ. জ. ম. নাছির উদ্দিনকে। দীর্ঘ ২৪ বছরের দ্বন্দ্ব কোন্দল মিটিয়ে মহিউদ্দিন ও নাছির ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাবেশ করেন গত শুক্রবার। পুরনো বিরোধ ভুলে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি এম এ লতিফ।
এখন নগর আওয়ামী লীগ চার গ্রুপ থেকে হয়ে গেল দুই গ্রুপ। সংখ্যায় কমলেও প্রকৃতপক্ষে বিরোধ, দ্বন্দ্ব কোন্দল আরো বেড়ে গেল। বিএসসি-আফসার-ছালামের নেতৃত্বে এক গ্রুপ এবং মহিউদ্দিন-নাছির-লতিফের নেতৃত্বে আরেক গ্রুপ।
এদিকে নাটকীয় মেরুকরনের দিনই একসময়কার গুরু মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে মূখ খুলেছেন প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিন। শুক্রবার রাতে সার্কিট হাউসে ৪১ টি ওয়ার্ডের সভাপতি সাধারন সম্পাদক এবং সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে এক সভায় তিনি সব জড়তা কাটিয়ে গুরুর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ঝাড়লেন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকান্ডে চরম ক্ষুব্ধ ডা. আফসারুল বলেন, 'এত সুসংগঠিত দল শুধুমাত্র এক ব্যাক্তির (মহিউদ্দিন) কারণে তছনছ হয়ে যাচ্ছে। আমরা দীর্ঘদিনের নৈরাজ্য এবং দাম্ভিকতামুক্ত সংগঠন চাই।'
তিনি আরো বলেন, কারো সঙ্গে আলোচনা না করে এক ব্যক্তির ইচ্ছায় যা খুশি করা যাবে না। মহিউদ্দিন চৌধুরী কেন মেয়র নির্বাচনে হেরেছেন তা সবাই জানে।
সভায় দলের সিনিয়র সহ সভাপতি সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম বিএসসিও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন। দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্দে কাজ করা ব্যক্তির শাস্তি ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত তার সঙ্গে কোন ঐক্য নয়।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর বলয় থেকে বেরিয়ে প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিন এবং সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম দলের সিনিয়র সহ সভাপতি সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম বিএসসির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগে এই গ্রুপটি আরো শক্তিশালী হল। মেয়র নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ছাড়াও দ্বন্দ্ব কোন্দল বিরোধ ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে গত কিছুদিন ধরে দলে কোনঠাসা মহিউদ্দিন উপায়ন্তর না দেখে আজম নাছিরের সঙ্গে তার ২৪ বছরের বিরোধের অবসান ঘটান। একইভাবে লতিফের সঙ্গেও বিরোধ মিটিয়ে নিজ গ্রুপে টানেন। যদিও নাছির এবং লতিফ দুজনই নগর আওয়ামী লীগে কোন পদে নেই। গত সংসদ নির্বাচনে লতিফের বিরোধিতা করেছিলেন মহিউদ্দিন, এটা সবাই জানেন। ওই আসনে মহিউদ্দিনের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন দলের যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম সুজন। আর নগরীর রাজনীতিতে আজম নাছিরের অস্তিত্ব বা প্রভাবের কথা স্বীকারই করা দুরে থাক এমনকি নাছিরের নামও শুনতে পারতেন না একসময়কার প্রতাপশালী নেতা মহিউদ্দিন।
কিন্ত দলে এবং সার্বিক রাজনীতিতে একাধিপত্য ক্রমেই খর্ব হতে থাকার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি রক্ষাকবচ হিসেবে পুরনো দুই প্রতিপক্ষকে কাছে টেনে নিলেন। তবে শেষ রক্ষা হয় কিনা কে জানে।
রাজনীতিতে তো আবার আগাম কিছু বলাও মুশকিল !!!
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×