প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাধাঁর স্বপ্ন দেখেছিল কিশোরী গার্মেন্টস কর্মী তাসলিমা (১৫)। সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রেমিকের ডাকে ঘর ছাড়তেও দ্বিধা করেননি। ঘর বাঁধা তো হলই না, উল্টো প্রেমিকসহ চার বখাটে সন্ত্রাসীর পাশবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ওই কিশোরী। শনিবার রাতে গণধর্ষন করে তাকে নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণা পাহাড় থেকে ফেলে দেয় বখাটেরা। মুমূর্ষু অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
হতভাগ্য তাসলিমা নগরীর দেওয়ানহাট মোড়ে অবস্থিত কাস গামেন্টসের কর্মী। সে খুলশী থানাধীন লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকায় বড় বোনের বাসায় থাকে। এলাকায় বখাটে ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত স্বপন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাসলিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে দু’মাস আগে। শনিবার রাতে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে স্বপনের ডাকে সাড়া দিয়ে সে বাসার কাউকে কিছু না বলে ঘুরতে বের হয়। স্বপন তাকে কৌশলে মতিঝর্ণা পাহাড়ের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে ওত পেতে ছিল স্বপনের তিন সহযোগী। তারা সবাই কিশোরী তাসলিমার মূখ বেঁধে পাশবিক নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে কিশোরীকে পাহাড়ের উপর থেকে ফেলে দেয়। অজ্ঞান অবস্থায় সে পড়ে বহুজাতিক কোম্পানি গ্ল¬্যাক্সো স্মিথক্লাইন বিচামের উৎপাদন কর্মকর্তা আবদুস সাত্তারের বাসার টিনের চালের ওপর। মর্মান্তিক এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান- ‘গভীর রাতে টিনের চালে বিকট শব্দ শুনে পরিবারের সবাই আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ি। বাসা থেকে বেরিয়ে টিনের চালে আলো ফেলে দেখি একটি মেয়ে লাশের মত পড়ে আছে।’ তিনি এবং মেয়েটির বড় বোনের স্বামী রবিউল হোসেন মিলে অজ্ঞান অবস্থায় মেয়েটিকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। চমেক পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল জাকির হোসেন জানান- ‘ভোররাতে জ্ঞান ফেরার পর ধর্ষণকারীদের নাম এবং ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে তাসলিমা। সে জানিয়েছে, মতিঝর্না পাহাড়ের ওপর নিয়ে স্বপন, বাবু, সুমন ও রুবেল নামে চারজন তাকে পাশবিক নির্যাতন করেছে। বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্র“তি দিয়ে প্রেমিক স্বপন তাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল।’ খুলশী থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন- ‘স্বপন ও তার তিন সহযোগী পালাক্রমে ওই কিশোরীকে ধর্ষন করে পাহাড়ের ওপর থেকে ফেলে দিয়েছে। স্বপনকে সে বিশ্বাস করে রাতে বের হলেও বখাটে স্বপন সে বিশ্বাসের মূল্য দেয়নি। অভিযুক্ত চারজনই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী।’ ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা পর হয়ে গেলেও রোববার (২ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। সন্ত্রাসীদের ভয়ে তাসলিমার পরিবার করবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে। ঘটনাটি সোমবার দেশের সব পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হবে....
প্রশ্ন হল, এই বর্বরতা...এই পাশবিকতার শেষ কোথায় ???