somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুরচিতা-১

২৬ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৃস্টি আসবে ।
আসবে বলেই
আমি অপেক্ষায় ছিলাম।
এরই মাঝে
দু' বার
ঘড়ির কাঁটা বন্ধ হয়ে গেছে।
মাঝে কে যেনো একবার দরজায়
কড়া নেড়ে গেছে,
কারো অস্পস্ট গলা শুনতে পেলাম-
" খেয়ে নে !"।
মাঝে আরও এক সপ্তাহ কেটে গেলো
এখনো বলছে-
" খেয়ে নে...খেয়ে নে। "
মাঝে পরীক্ষার-ডেট চলে গেলো।
থাংক গড!
সিলেবাসটি আগেই হারিয়ে ফেলেছিলাম,
যেমনটি ভেবেছিলাম
সেভাবেই
আফসোসটি দ্রুত কেটে গেলো।
এখনো দরজার কড়া নেড়ে বলছে জননী-
" বৃস্টি আসবে....
বৃস্টি আসবে
খেয়ে নে রে পাগলা ছেলে
খেয়ে নে ! "।

আমি অ্যাডামেন্ট, অটল
আশ্বিন চলছে কেবল, তাতে কি?
মনোবল মেঘের মত জমছে ,
কাল-পরশু.....
বৃস্টি নিশ্চিত হবে
হবে প্রবল।
এর মাঝেই,
পানি ও কারেন্ট-এর বিল-গুলো দিবো,
স্কুল থেকে নামটা কাঁটাবো,
দেবাশীষের পাওনা টাকা-টাও ফিরিয়ে
দিবো দিবো বলে
এ জীবনে তক্ষনি দিবো।
এক মুঠ-চাল
ওর কাছ থেকে হাওলাৎ নিয়েছিলাম,
ভাবছি ওর মেস-এ ফিরে
ভূনা-খিচুড়ি রেঁধে আসবো।

বৃস্টি আসবেই,
আর একদিনো বাকি নেই।
দ্রুত। দ্রুত।
কাঁধ-ব্যাগটি গুছানো আছে।
ট্রেনের টিকেট কনফার্ম আছে দুটো।

সুরচিতা
কথা দিয়েছে আমায়-
" বৃস্টি আসবে। নির্ঘাৎ
আর আমরা একত্রে পালিয়ে যাবো। "
( মা এখনো ডাকছে---খেয়ে নে...খেয়ে নে....)।

স্টেশনে দাড়িয়ে ভাবছি
----খাওয়া হলো না।
তবে আগামী বর্ষায় নিশ্চয়ই ঘরে ফিরবো।
সেই কবেকার তুমি
জননী
হয়তো এখনো জানোনি-
সুরচিতা আমার মত পুচকি ছেলের সাথে মোটেই আসছে না ।
আমি স্কুল পলাতক,
খিদে পেটে,
"ট্রেন ছাড়তে দেরী আছে....
খেয়ে নে রে....
হায় বুক...
কি করিস রে সোনা-কপাল
জানিস যবে এ জগতে
তক্ষনি
ভালো ভাবে আর
সুরচিতা তখন অনার্স-এর ফাইনাল !!"

যাক গিয়ে!
বয়েশের ফারাকটা যতই থাক না কেনো ?
থাকবে না
আর বৃস্টি-বর্ষা মেঘের কবলে,
আসবে না জানি সুরচিতা
আমি নিজেকে নিয়ে সামলে
আর সামলে নিয়েছে
দ্রুত ছোটা ট্রেনটি
মুষল বৃস্টির প্রবলতা।

মা-কে দেয়া কথাটি রাখতে পারিনি
কত বর্ষা এলোগেলো, বাড়ি ফেরা হয়নি।
জননী নিশ্চয়ই এখনো ভুলেনি--
না খেয়েই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম
দ্রুত।
কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে ছোট,
বুক পকেটে ছিলো টিকেট কেনা দুটো
আর অপেক্ষায় ছিলাম..... ........না জানি কত?

ইতোমধ্যে, মা-র কাছ থেকে
চিঠি পেয়েছি চারখান।
জানলাম সুরচিতা পাশ করেছে
অনার্সের অভিযান,
জানলাম দেবাশীষ-দা এখনো মেস-এ পরে আছে
আর হেলালের গ্যারেজটা বিক্রি হয়ে গেছে।
জানলাম....আরো কত কি
নাকের ডগায় মাইনাস-টু ফ্রেম বসাতে হবে শিঘরি,
আর জানাচ্ছে বহু কিছুই আমাকে পৃথিবী।
তবে জানে কি সুরচিতা?.....
আমি আছি আগেরই মত----ওর থেকে
ছ'বছর-তিন-মাস-ছোট,
তবু তারই প্রেমে বিশন্ন আপাতত।

তাই মাঝে মাঝে
বিশন্ন কোনো রাতে
আমারও জানতে ইচ্ছা করে-
সেই কবেকার তুমি
আজও কি আছো সেই একি,
যতবার নিখুত কলপনায়
জরিয়েছি তোমায়
নম্যাড বা ভ্যাগাবন্ড থাকার
চির পন টাকে
রাখতে পারিনি।
যখন কোনো নির্জন
গিরিপথ বা জলপথ পেরুতাম
তোমায় সাথে নিয়ে আসবার
ইচ্ছেটা বেরে যেতো ততবার
তোমার ফিরিয়ে দেয়া আংটি-টা
চেয়ে নিশসন্গতার সাথে
আপোস করে নিতাম।
তোমার মখমোল ওরনাটি
না বলেই নিয়ে এসেছিলাম,
যে রাত দেবদারু গাছের নিচে কাটিয়েছিলাম
সেখানেই হারিয়ে ফেলি।

চারদিন আগে
মল্লিকাদের বাড়ী থেকে চিঠি পেয়েছি,
বড়পক্খ দুদিন বাদেই তোমায় নিয়ে যাবে।
সেই কবেকার তুমি
কাল অন্যের প্রিয়া হয়ে যাবে।
আমি প্রায় ফিরতে নিয়েছিলাম
এই পৃথিবী আমায় ফিরতে দেয়নি,
শুধুই দেখিয়ে ছিলো
সুদুরে এক শালবন।
ওটার লোভে এগিয়ে গেলাম আরও কিছু দুর,
তখনি আকাশ থেকে আবার
বৃষ্টি পরতে শুরু করলো,
মনে হচ্ছে বৃষ্টি হওয়াটাই যুতসই
অতয়েব
হচ্ছে না আর আমার
বাড়ী ফেরা
হচ্ছে না ফেরা
তোমাদের শহরে
বধয়
আর কখনই।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×