দ্রুত দেখে নেই আশপাশের অবস্থা আর আ্যলার্ম। খুব স্বাভাবিক গলা রেখে জিেগ্গস করি, তুমি ঠিক আছো? সে আমার হাত ধরে নিয়ে যায় দরজার কাছে। আমি বলি দরজা এখন খোলা যাবেনা। সে তবু হাত ধরে রাখে। খারাপ কিছুর জন্য প্রস্তুত হই। খোলা হাত কে শক্ত করে রাখি নিজেকে রক্ষার প্রয়োজনে। রেগে গেলে ওরা ভয়ংকর শক্তিশালি হয়ে ওঠে। সে কিছু বলে না। আস্তে করে হাত ছেড়ে দৌড়ে অন্য দিকে চলে যায়।
এবার সে আগের থেকে শান্ত অনেক। এখন তার শান্তনা কেই ভয় পেয়ে যাই আমি। শরীর খারাপ? কিংবা বড় কোন ঝামেলা বাধাবে এবার?
ডাক্তার কে ফোন করি। জানা হয় তার ঔষধ বদলে গেছে। খুব শক্ত ঔষধ খাচ্ছে এখন। কারন এতো বেশী চন্চল সে। ক্ষতিকর তার নিজের বা আশপাশের সবার জন্য। ঔষধ খুব ভালো কাজ করছে। তাই সে দরজা খুলে গাড়ির সামনে পড়ে যাচ্ছেনা। ক্লান্ত করে দিচ্ছেনা অন্যান্য দের।
আমি বোকার মতো জিগগেশ করি, ওতো কিছু খেতেও পারছেনা। খেতে গিয়ে আমার কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ছে। ঔষধের সাইড এফেক্ট নাতো?
ডাক্তার আমাকে বোঝাতে গিয়ে হাসেন। বলেন ওহে তরুন, ভাগ্য ভালো তুমি ডাক্তার নও। নাহলে এখুনি বুঝিয়ে দিতাম চিকিতসা বিগগান কাকে বলে।
সে মহা আনন্দে ছুটে বেড়াচ্ছে এখান থেকে ওখানে। আমিও ছুটছি সাথে সাথে। চেষ্টা করছি যেন গাছের পাতা খেয়ে না নেয়। লুকিয়ে কিছু মুখে দিয়ে দেয় একটা। ধরা পড়ে হেসে দৌড় দেয় অন্য দিকে।
যেন বাচ্চা খেলা করছে এক। বাচ্চাই তো। আঠারো হয়েছে শুধু। খুব সুন্দর সে। হাসলে মনে হয় দেবশিশু।
হঠাৎ এক হাত কামড়ে অন্য হাত ঢুকিয়ে দেয় ট্রাউজারের পকেটে। আরো সুন্দর করে হাসতে থাকে। প্রচন্ড বিরক্ত হই আমি। এ সমস্যা টা নতুন। তার মা লিখে দিয়েছেন সে প্রতি সন্ধায় এমন করবে। তাকে যেন এই সময় তার রুমে নিয়ে শুইয়ে রাখা হয়।
আমি তাকে ভেতরে নিতে চাইছি। পারছিনা। সে মাঝে মাঝে পকেট থেকে হাত বের করে আমার হাত ধরছে। কিছু একটা দেখাতে চাইছে। গা ঘিনঘিন করছে আমার। একা রেখেও যেতে পারছিনা। সে ক্ষতিকর নিজের বা আশপাশের সবার জন্য।
কদিন আগে তার এবং বাকি সবার নিরাপত্তা নিশ্চি্ত করা হয়েছে। পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হবে দুরে কোথাও। এরকম অন্য ছেলে মেয়ে দের সাথে।
সব জায়গা থেকে মত চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমি লিখলাম, তার শারীরিক অবস্থা পরিবার জন্য খুবই দুশ্চিনতা এবং দী্রঘ অসুবিধার কারণ হতে পারে।
সত্যি কথাই লিখলাম। সবরকম সুবিধা থাকার পরও তাকে দেখাশোনা করা সত্যিই কষ্টের। শুধু তার জন্ম তারিখ লেখার সময় লেখা ধীর হয়ে গেলো। আঠারো মাতরো আঠারো সে। অনেক ছোট। এ সময়টায় পরিবারের সাথে থাকা খুব দরকার তার।
দেবশিশু আমাদের এখানে আর আসেনা। এরকম নিরাপদ ব্যাবস্থা রেখে আসার কোন দরকার ও নেই। আমরা মাঝে মাঝে ঝামেলার কথা বলতে গেলে তার উদাহরন দেই। একটা বাচ্চা ছেলে তার সমস্ত ঝামেলা নিয়ে আমাদের নিরাপদ করে গেছে। স্বস্তি দিয়ে গেছে।
কদিন আগে অন্য একটা ফাইল খুজতে দেখি তার ফাইল টা নেই। একজন জানালো সে যেহেতু আসছেনা আর তার তথ্যের কোন দরকার ও নেই। সে ও তার ফাইল আরকাইভে চলে গেছে। আমরা এখন নিরাপদে কাজ করি
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০০৭ বিকাল ৩:৩৯