somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বর্ণের গহনায় নিজেকে সাজিয়ে তুলুন অপরূপ সাঁজে

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমেরিকান (Jewelry) এবং ব্রিটিশ (Jewellery) উচ্চারনের বানানে সে যাই পার্থক্য থাকুক না কেন, প্রগৌতিহাসিক থেকে বর্তমান যুগ – বিভিন্ন প্রকারের গহনার মধ্যে, স্বর্ণের গহনা পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই, বিশেষ করে নারীদের কাছে খুবই মূল্যবান। যদিও যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে বর্তমানে নানা রকমের মূল্যবান পাথর ও সবচাইতে মূল্যবান হিসেবে “হীরা” বিবেচনা করা হলেও, প্রাচীন যুগ থেকেই স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা খুবই মূল্যবান ব্যবহার্য জিনিস হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। বিভিন্ন উপলক্ষ অথবা বিশেষ কারনে প্রিয়জনকে স্বর্ণের গহনা উপহার দেওয়া হয়নি (সে যত অল্প পরিমানই হোক না কেন), এমন ব্যক্তি পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া সত্যিই খুব দুস্কর।

বিভিন্ন কারনবশত স্বর্ণ এবং স্বর্ণের গহনা ক্রয়ের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর প্রধান কয়েকটি কারন নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

মনস্তাত্তিকঃ প্রস্তর যুগ থেকেই স্বর্ণের গহনাকে অত্যন্ত মূল্যবান, সম্মানীয় এবং বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আর সেই ধারাবাহিকতায় ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় আজও স্বর্ণের গহনা সমাজের মান মর্যাদা ও বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আন্তর্জাতিক কারনঃ প্রতিটি দেশেই স্বর্ণের মজুতের উপর নির্ভর করে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যংকের রিজার্ভ হিসাব করা হয় এবং সে অনুযায়ী একটি দেশের মুদ্রার মান নির্ণয় করা হয়। এছাড়াও মুদ্রার তারল্যের কারনে সহজেই স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় একে একটি বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করা হয়।

রঙঃ স্বর্ণের রঙ প্রাকৃতিকভাবেই এমন একটি রঙ ধারন করে, যেটি অন্যান্য যেকোনো রঙ থেকেই অতুলনীয় ও অদ্বিতীয়। সাধারনভাবেই আমরা হলুদের কাছাকাছি যে রঙের স্বর্ণ দেখে থাকি, এই রঙের বাইরেও সারা বিশ্বে সাদা ও গোলাপ রঙের স্বর্ণ ও স্বর্ণের গহনার চাহিদা ব্যপকভাবে পরিলক্ষিত হয়।

বিশুদ্ধতাঃ অন্যান্য পাথরের তুলানয় সারা বিশ্বে স্বর্ণের বিশুদ্ধতার মান নির্দিষ্ট সংখ্যায় আন্তর্জাতিকভাবে নির্ণীত ও নিয়ন্ত্রিত হয় বিধায় এর বিশুদ্ধতা সম্পর্কে সহজে বিশ্বাস করা যায়।

রক্ষনাবেক্ষনঃ অন্যান্য গহনার তুলনায় স্বর্ণের গহনা খুব সহজেই রক্ষনাবেক্ষন, সংরক্ষন এবং ব্যবহার করা যায় বিধায় এটিও স্বর্ণের গহনার চাহিদার অন্যতম একটি কারন।

উপরোক্ত বিভিন্ন কারনে হয়তো আপনিও স্বর্ণ অথবা স্বর্ণের গহনা ক্রয়ে আগ্রহী হতে পারেন কিন্তু আপনার মনে হয়তো এর বিশুদ্ধতা নির্নয় নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন ও আগ্রহ থাকতে পারে। আসুন এবার আমরা জেনে নেই কিভাবে স্বর্ণের বিশুদ্ধতার মান নির্ণয় করা হয়।
স্বর্ণের বিশুদ্ধতা নির্ণয় ও প্রকাশের জন্য সাধারনত ২৪, ২২, ২১, ১৮, ১৪, ১০ এবং ৯ ক্যরেটের মান ব্যবহার কর হয়।

২৪ ক্যরেটঃ ২৪ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা ক্রয়, আপনার জন্য একটি ভাল সিদ্ধান্ত কারন এটি শুধু আপনার ক্রয় নয়, এটি আপনার জন্য ভবিষ্যতের একটি বিনিয়োগও বটে। কারন ২৪ ক্যরেটের মান ১০০ ভাগ বিশুদ্ধতার নির্দেশ করে। এই স্বর্ণের সাধারনত বার পাওয়া যায় এবং সাধারনত কোন স্বর্ণের গহনা পাওয়া যায় না। কারন এটি অপেক্ষাকৃত অধিক নরম এবং সহজেই এতে যেকোনো দাগ পড়ে আর এই কারনেই স্বর্ণের গহনা তৈরির সময় কিছু পরিমান খাঁদ মিশ্রণ করা হয়।

২২ ক্যরেটঃ ২২ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা একটি অত্যন্ত ভাল সিদ্ধান্ত কারন এটি ৯০-৯২ ভাগ বিশুদ্ধতার নির্দেশ করে। আর এ কারনেই এর গহনা টেকসই হয়ে থাকে এবং দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। এর রঙ এবং উজ্জল আভার কারনে এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এর সবচেয় বড় সুবিধা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ব্যবহারের পরও সাধারন পরিষ্কারক দিয়ে পরিষ্কার করলেই তা নতুনের মত দেখা যায় এবং এর রঙ অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয়।

২১ ক্যরেটঃ ২১ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা ৮৫-৮৭ ভাগ বিশুদ্ধতার নির্দেশ করে। স্বর্ণের পরিমান কিছুটা কম হলেও এর রঙ এবং স্থায়িত্ব প্রায় ২২ ক্যরেটের সমান।

১৮ ক্যরেটঃ ১৮ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা পৃথিবীতে এখনও সবচেয় বেশি খুচরা বিক্রিত গহনা। কারন এটি ২২ ক্যরেট এবং ২১ ক্যরেটের তুলনায় অধিক টেকসই কিন্তু রঙের তারতম্যের কারনে অধিক সামর্থ্যশালী ব্যক্তিরা এ ধরনের স্বর্ণ ক্রয়ে আগ্রহী হয় না। ৭৫ শতাংশ স্বর্ণের সাথে অন্যান্য উপদানের মিশ্রণের কারনে মধ্যবিত্তের স্বাদ এবং সামর্থ্যের মধ্যে ১৮ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা অবশ্যই একটি ভাল পছন্দ। তবে দীর্ঘদিন ব্যবহারে এর রঙ নষ্ট হয়ে যায়।

১৪ ক্যরেটঃ ১৪ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা প্রায় ৫৮-৬২ শতাংশ স্বর্ণের সাথে অন্যান্য উপদানের মিশ্রণে তৈরি করা হয়। আর তাই এর রঙে বিশাল পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। অল্প কিছু দিন ব্যবহারের পরই এর আসল রঙ হারিয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে এতে কালো এবং সবুজ রঙ দেখা দেয়।

১০ ক্যরেটঃ ১০ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা সাধারনত স্বর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয় না। কিন্তু তারপরও স্বর্ণের আন্তর্জাতিক মান হিসেবে ১০ ক্যরেট স্বীকৃত। কারন এতে মাত্র ৪০ শতাংশ স্বর্ণের সাথে অন্যান্য উপদানের মিশ্রণই অধিক হয়ে থাকে। আর তাই এগুলো অপেক্ষাকৃত অধিক সস্তা হয়ে থাকে।

৯ ক্যরেটঃ ৯ ক্যরেটের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা সাধারনত এখন আর বিক্রয় হয় না। সাধারনত মাত্র ৩৭.৫ শতাংশ স্বর্ণের সাথে অন্যান্য উপদানের মিশ্রণ করা হয়। দেখতে এটি অধিক উজ্জল হলেও খুবই অল্প ব্যবহারেই এর মূল রঙ হারিয়ে যায়।

উপরোক্ত বিভিন্ন মানের সাথে আপনার পছন্দের নকশা এবং পাথরের সমন্বয়ে গহনা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি আপনার নিকটস্থ এবং বিশ্বাসযোগ্য দোকান থেকে ক্রয়ের ব্যপারে অধিক মনোযোগ প্রদান করবেন। আর যদি স্বনামধন্য কোন কোম্পানির শো-রুম বা দোকান থেকে আপনি স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা ক্রয় করেন তাহলে আপনি অপেক্ষাকৃত নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।

আপনার নিকটস্থ এবং নির্ভরযোগ্য স্বর্ণের দোকানের তালিকা আপনি নিচের লিঙ্ক থেকে খুঁজে পেতে পারেনঃ

http://www.exchangebangladesh.com/category-second.php?l=Wedding-Jewellery-Accessories
http://www.exchangebangladesh.com/category-second.php?l=Jewellers
http://www.exchangebangladesh.com/category-zone.php?l=Fashion-Jewellery&sl=Fashion-Jewellery

বিয়ের এই মৌসুমে আপনাদের স্বর্ণ বা স্বর্ণের গহনা ক্রয়ের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×