somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অপূর্ব আহমেদ জুয়েল
আমি অতি সাধারন একটা মানুষ …………পৃথীবির প্রতিটি মানুষের কিছু আশা-আকাঙ্কা থাকে, থাকে সীমাহিন স্বপ্ন। যেখানে সে তার জীবনকে সাজায় একিবারে নিজের মত করে। আমারো তেমন একান্ত কিছু স্বপ্ন আছে, যা আমাকে ভালো কিছু করার প্রেরনা যোগায়।

যুদ্ধ থামাতে পুতিনকে যে চাপ দিতে পারেন সি চিন পিং

২০ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






পরিপক্ব হয়ে ওঠাটাই সবকিছু’—শেক্‌সপিয়ারের ‘কিং লিয়ার’ নাটকের সংলাপ এটি। আন্তর্জাতিক সংঘাত নিরসনের ক্ষেত্রে এটি চরম সত্য একটি বিষয়। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো সমঝোতা করতে সম্মত হলেই কোনো চুক্তি কেবল বাস্তব রূপ পেতে পারে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ বন্ধের জন্য এখন এই সত্যটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছে এখন সংঘাত বন্ধের অনেক কারণ রয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁর দেশের হাজারো নাগরিক নিহত হয়েছেন, কয়েকটি প্রধান শহরের বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন এবং ইউক্রেনের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে গেছে। যদিও সময় যত গড়াচ্ছে, নিজ দেশে জেলেনস্কির অবস্থান তত সুসংহত হচ্ছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক ক্ষমতা তাঁর বাড়ছে। তবে সেটা যেকোনো মূল্যে নয়।


ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার প্রচেষ্টা থেকে জেলেনস্কি এরই মধ্যে সরে এসেছেন। তবে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি তিনি না-ও দিতে পারেন। এখন ক্রিমিয়ার রাষ্ট্রনৈতিক মর্যাদা কী হতে পারে, সে ব্যাপারে রাশিয়া ও ইউক্রেন ভিন্ন অবস্থানের মধ্যেও একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে। তাইওয়ানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন অর্ধশতাব্দী ধরে যেটা মেনে চলেছে। একইভাবে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র’-এর স্বীকৃতি জেলেনস্কি না-ও দিতে পারেন। কিন্তু সেখানে অনেকটা স্বায়ত্তশাসন তিনি দিতে পারেন।

এখন প্রশ্ন হলো, যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য এটা কি যথেষ্ট? তিনি ইউক্রেনকে নাৎসিবাদের হাত থেকে মুক্ত করার দাবি তুলেছেন। এর অর্থ হচ্ছে জেলেনস্কির শাসনের অবসান। একই সঙ্গে পুতিন ইউক্রেনকে পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের দাবিও করেছেন। তবে তিনি এই প্রশ্নও করেছেন, ইউক্রেন কি ‘প্রকৃত কোনো রাষ্ট্র’? পুতিনের এই প্রশ্ন থেকে যে বিষয়টি এড়ানোর উপায় নেই সেটি হলো, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের বৈধ একটি সরকারের সঙ্গে সহাবস্থানে কতটা আগ্রহী পুতিন?

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চীনের নেতাদের বোঝা উচিত যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের এক সন্ধিক্ষণে তারা দাঁড়িয়ে আছে। যদি চীন এখন পুতিনের পক্ষ নেয় এবং রাশিয়াকে সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখে, তবে স্বল্প মেয়াদে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে। দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর শত্রুতার মুখে পড়তে হবে।
এই পরিস্থিতি তাহলে কী করে বদলাবে? আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পরিপক্ব একটা পরিস্থিতি তাহলে কীভাবে তৈরি হবে? যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে বিপুল সামরিক ও অর্থনৈতিক ব্যয়, সেটা থেকে পুতিন যদি যুদ্ধবিরতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজি হন, তখন পশ্চিমাদের নীতি কী হওয়া উচিত?

যদিও এ রকম কিছু বাস্তবে ঘটা বেশ কঠিন। কেননা, পুতিন এ ধরনের কাজকে তাঁর দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখতে চাইবেন। তিনি মনে করতে পারেন, এতে করে রাশিয়ায় তাঁর শাসনের বিরোধী শক্তি রাস্তায় নেমে আসবে, এমনটা মনে করতে পারেন তিনি। বিকল্প হচ্ছে, একটা মীমাংসায় পৌঁছাতে পুতিনের ওপর চাপ প্রয়োগ করা। এ ধরনের চাপ নিচ থেকে আসতে পারে। রুশ সংস্করণে যেটাকে ‘গণক্ষমতা’ বলা হয়। এ ক্ষেত্রে জনগণকে নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে দিতে হবে। অথবা চাপটি পাশ থেকে আসতে হবে। পুতিনের সঙ্গে আরও যাঁরা ক্ষমতা ভাগাভাগি করছেন, তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, পুতিন রাশিয়ার আরও সর্বনাশ করার আগে তাঁর হাত থেকে রাশিয়াকে মুক্ত করতে হবে। গণগ্রেপ্তার ও তথ্য নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রথমটি এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আর দ্বিতীয় ঘটনাটি না ঘটার আগে কারও পক্ষে সেটা জানা সম্ভব নয়।

আরেকটি পথ খোলা আছে। সেটি হলো, চীন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এখন পুতিনকে সমঝোতায় পৌঁছাতে চাপ প্রয়োগ করতে পারেন। এটা সত্য যে চীনারা প্রকাশ্যে নিজেদের ভাগ্যকে পুতিনের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে। তারা ইউক্রেন সংকটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করে, এমনকি রাশিয়ার ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারও তারা করে। সি চিন এই হিসাবও কষতে পারেন, এশিয়ার বদলে যুক্তরাষ্ট্র যে ইউরোপে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে, তাতে চীনের জন্য ভালোই হয়েছে। আবার একই সঙ্গে এটাও সত্য যে পুতিনের আগ্রাসনের ব্যাপারে সি চিন খুশি নন। কেননা, এটা চীনের পররাষ্ট্রনীতির লঙ্ঘন। চীন কোনো দেশের সার্বভৌমত্বকে চূড়ান্ত বলে মনে করে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে অপছন্দ করে। পুতিন পশ্চিমকে বিভক্ত করার বদলে সোভিয়েত ইউনিয়নের আদলে একীভূত করার প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। ফলে ইউরোপে অর্থনৈতিক বিস্তারে চীনের যে পরিকল্পনা, সেটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার কোভিড-পরবর্তী ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চীনের প্রচেষ্টা বড় ধাক্কা খেয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে।


চীনের নীতি সহজে পরিবর্তন হওয়া খুব কঠিন। তবে এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টা জারি রাখা প্রয়োজন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে চীনকে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বস্ত করতে পারে যে তারা ‘এক চীন’ নীতিকে সমর্থন করে। জো বাইডেন প্রশাসন ট্রাম্প আমলে চীনের ওপর আরোপ করা বাণিজ্য শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে পারে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে চীনের যে স্বভাব, তা বদলাতে এটা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, বরং যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে এই সদিচ্ছাও দেখাতে হবে যে তারা চীনের সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে কৌশলগত সংলাপে বসতে চায়।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চীনের নেতাদের বোঝা উচিত যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের এক সন্ধিক্ষণে তারা দাঁড়িয়ে আছে। যদি চীন এখন পুতিনের পক্ষ নেয় এবং রাশিয়াকে সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখে, তবে স্বল্প মেয়াদে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে। দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর শত্রুতার মুখে পড়তে হবে।

সি চিন পিং তাঁর অবস্থান বদলাবেন কি না, সেটা জানার কোনো উপায় নেই। তিনি যদি সেটা করেন, তাহলে পুতিন সমঝোতায় আসতে বাধ্য হবেন। চীনের সমর্থন ছাড়া পুতিনের অবস্থান আরও বেশি নাজুক হবে।
পরিপক্ব হয়ে ওঠাটাই সবকিছু’—শেক্‌সপিয়ারের ‘কিং লিয়ার’ নাটকের সংলাপ এটি। আন্তর্জাতিক সংঘাত নিরসনের ক্ষেত্রে এটি চরম সত্য একটি বিষয়। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো সমঝোতা করতে সম্মত হলেই কোনো চুক্তি কেবল বাস্তব রূপ পেতে পারে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ বন্ধের জন্য এখন এই সত্যটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছে এখন সংঘাত বন্ধের অনেক কারণ রয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁর দেশের হাজারো নাগরিক নিহত হয়েছেন, কয়েকটি প্রধান শহরের বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন এবং ইউক্রেনের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে গেছে। যদিও সময় যত গড়াচ্ছে, নিজ দেশে জেলেনস্কির অবস্থান তত সুসংহত হচ্ছে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক ক্ষমতা তাঁর বাড়ছে। তবে সেটা যেকোনো মূল্যে নয়।


ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার প্রচেষ্টা থেকে জেলেনস্কি এরই মধ্যে সরে এসেছেন। তবে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি তিনি না-ও দিতে পারেন। এখন ক্রিমিয়ার রাষ্ট্রনৈতিক মর্যাদা কী হতে পারে, সে ব্যাপারে রাশিয়া ও ইউক্রেন ভিন্ন অবস্থানের মধ্যেও একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে। তাইওয়ানের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন অর্ধশতাব্দী ধরে যেটা মেনে চলেছে। একইভাবে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র’-এর স্বীকৃতি জেলেনস্কি না-ও দিতে পারেন। কিন্তু সেখানে অনেকটা স্বায়ত্তশাসন তিনি দিতে পারেন।

এখন প্রশ্ন হলো, যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য এটা কি যথেষ্ট? তিনি ইউক্রেনকে নাৎসিবাদের হাত থেকে মুক্ত করার দাবি তুলেছেন। এর অর্থ হচ্ছে জেলেনস্কির শাসনের অবসান। একই সঙ্গে পুতিন ইউক্রেনকে পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের দাবিও করেছেন। তবে তিনি এই প্রশ্নও করেছেন, ইউক্রেন কি ‘প্রকৃত কোনো রাষ্ট্র’? পুতিনের এই প্রশ্ন থেকে যে বিষয়টি এড়ানোর উপায় নেই সেটি হলো, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের বৈধ একটি সরকারের সঙ্গে সহাবস্থানে কতটা আগ্রহী পুতিন?

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চীনের নেতাদের বোঝা উচিত যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের এক সন্ধিক্ষণে তারা দাঁড়িয়ে আছে। যদি চীন এখন পুতিনের পক্ষ নেয় এবং রাশিয়াকে সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখে, তবে স্বল্প মেয়াদে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে। দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর শত্রুতার মুখে পড়তে হবে।
এই পরিস্থিতি তাহলে কী করে বদলাবে? আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পরিপক্ব একটা পরিস্থিতি তাহলে কীভাবে তৈরি হবে? যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে বিপুল সামরিক ও অর্থনৈতিক ব্যয়, সেটা থেকে পুতিন যদি যুদ্ধবিরতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজি হন, তখন পশ্চিমাদের নীতি কী হওয়া উচিত?

যদিও এ রকম কিছু বাস্তবে ঘটা বেশ কঠিন। কেননা, পুতিন এ ধরনের কাজকে তাঁর দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখতে চাইবেন। তিনি মনে করতে পারেন, এতে করে রাশিয়ায় তাঁর শাসনের বিরোধী শক্তি রাস্তায় নেমে আসবে, এমনটা মনে করতে পারেন তিনি। বিকল্প হচ্ছে, একটা মীমাংসায় পৌঁছাতে পুতিনের ওপর চাপ প্রয়োগ করা। এ ধরনের চাপ নিচ থেকে আসতে পারে। রুশ সংস্করণে যেটাকে ‘গণক্ষমতা’ বলা হয়। এ ক্ষেত্রে জনগণকে নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে দিতে হবে। অথবা চাপটি পাশ থেকে আসতে হবে। পুতিনের সঙ্গে আরও যাঁরা ক্ষমতা ভাগাভাগি করছেন, তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, পুতিন রাশিয়ার আরও সর্বনাশ করার আগে তাঁর হাত থেকে রাশিয়াকে মুক্ত করতে হবে। গণগ্রেপ্তার ও তথ্য নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রথমটি এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আর দ্বিতীয় ঘটনাটি না ঘটার আগে কারও পক্ষে সেটা জানা সম্ভব নয়।

আরেকটি পথ খোলা আছে। সেটি হলো, চীন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এখন পুতিনকে সমঝোতায় পৌঁছাতে চাপ প্রয়োগ করতে পারেন। এটা সত্য যে চীনারা প্রকাশ্যে নিজেদের ভাগ্যকে পুতিনের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে। তারা ইউক্রেন সংকটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করে, এমনকি রাশিয়ার ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচারও তারা করে। সি চিন এই হিসাবও কষতে পারেন, এশিয়ার বদলে যুক্তরাষ্ট্র যে ইউরোপে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে, তাতে চীনের জন্য ভালোই হয়েছে। আবার একই সঙ্গে এটাও সত্য যে পুতিনের আগ্রাসনের ব্যাপারে সি চিন খুশি নন। কেননা, এটা চীনের পররাষ্ট্রনীতির লঙ্ঘন। চীন কোনো দেশের সার্বভৌমত্বকে চূড়ান্ত বলে মনে করে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে অপছন্দ করে। পুতিন পশ্চিমকে বিভক্ত করার বদলে সোভিয়েত ইউনিয়নের আদলে একীভূত করার প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। ফলে ইউরোপে অর্থনৈতিক বিস্তারে চীনের যে পরিকল্পনা, সেটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার কোভিড-পরবর্তী ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চীনের প্রচেষ্টা বড় ধাক্কা খেয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে।


চীনের নীতি সহজে পরিবর্তন হওয়া খুব কঠিন। তবে এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টা জারি রাখা প্রয়োজন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে চীনকে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বস্ত করতে পারে যে তারা ‘এক চীন’ নীতিকে সমর্থন করে। জো বাইডেন প্রশাসন ট্রাম্প আমলে চীনের ওপর আরোপ করা বাণিজ্য শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে পারে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে চীনের যে স্বভাব, তা বদলাতে এটা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, বরং যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে এই সদিচ্ছাও দেখাতে হবে যে তারা চীনের সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে কৌশলগত সংলাপে বসতে চায়।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চীনের নেতাদের বোঝা উচিত যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের এক সন্ধিক্ষণে তারা দাঁড়িয়ে আছে। যদি চীন এখন পুতিনের পক্ষ নেয় এবং রাশিয়াকে সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখে, তবে স্বল্প মেয়াদে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে। দীর্ঘ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর শত্রুতার মুখে পড়তে হবে।

সি চিন পিং তাঁর অবস্থান বদলাবেন কি না, সেটা জানার কোনো উপায় নেই। তিনি যদি সেটা করেন, তাহলে পুতিন সমঝোতায় আসতে বাধ্য হবেন। চীনের সমর্থন ছাড়া পুতিনের অবস্থান আরও বেশি নাজুক হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১০:৫৮
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×