somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'একমুঠো বর্ণমালা চাই'

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বইখানা অনন্ত- যৌবনা- যদি তেমন বই হয়।"

স্কুল জীবনে সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি বইয়ে কবি-দার্শনিক ওমর খৈয়াম এর উক্তিটি পড়েছিলাম । বই পড়ার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তিনি এ কথা গুলি লিখেছিলেন। সত্যিকার অর্থেই একটি ভালো বই অনেক ভাবনার খোরাক যোগাতে পারে। মানুষের মন, আবেগ পরিবর্তনশীল। একেক বয়সে বা একেক সময়ে একেক ধরনের বই মনকে টানে, পড়তে ভালো লাগে। আবার কোন কোন প্রয়োজনে ও মানুষকে কিছু বই পড়তে হয়।

সময়ের সাথে হয়তো সেই সব নির্দিষ্ট বইয়ের প্রয়োজন ও ফুরিয়ে যায়। কিন্তু ভালো বইগুলি প্রকৃত পক্ষেই অনন্ত যৌবনা। যেগুলোর প্রয়োজন কখনোই ফুরিয়ে যাবে না। আচ্ছা মানুষ কি অনন্ত যৌবনা..? এবার যদি লেখকের অন্য কথাটি নিয়ে ভাবি। রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে। উনি খাবারের স্থায়িত্ব বা মানুষের সৌন্দর্য যে ক্ষনস্থায়ী সেটা বোঝাতে বলেছেন। অথচ এই ক্ষণস্থায়ী যৌবনের প্রিয়/প্রিয়ার পেছনে ছুটতে গিয়ে বোকা মানুষ অনন্ত যৌবনের সঠিক পথ হারাচ্ছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাঙালী ও বিশেষ একটা দিনে রুটি, মদের মতোই ক্ষণস্থায়ী একটা প্রিয় বা প্রিয়ার পেছনে একটা দিন ব্যয় করে। অবশ্য একটা দিন বললে ভুল বলা হবে। একটা দিনকে সেলিব্রেট করার জন্য অনেক গুলো দিনের প্ল্যানিং থাকে। কি পরবে, কিভাবে প্রিয় মানুষটির জন্য সাজবে, কোথায় যাবে, কি খাবে, রেস্টুরেন্টের আলো আঁধারি পরিবেশে কি কি বলবে... সর্বোপরি প্রিয় মানুষটিকে খুশি করার জন্য কি গিফট দেবে... এ ধরনের কত কত প্ল্যান..!
গিফট বা উপহারের কথা আসলেই আমার মনে ‘বই’ এর সংগ্রহ তালিকা উকিঝুকি মারে, এখন আবার চলছে ভাষার মাস, বই মেলার মাস। মজার ব্যাপার হচ্ছে এইবারই প্রথম চট্টগ্রামে এত বড় আকারে সুন্দর বইমেলার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। ধন্যবাদ তাদেরকে।



এবার আসি একটা বইয়ের গল্প বা শানে নুযুল নিয়ে। প্রাণের মানুষ, শ্রদ্ধা আর ভালবাসার মানুষ প্রিয় হান্নান স্যার। মোহাম্মদ আশরাফুল গনি হান্নান, আমাদের ফোর এইচ গ্রুপের মাননীয় DGM স্যার। পোশাক শিল্পের মত এত বড় কাজের জায়গায় সর্বোচ্চ স্থানে আশিন থেকে ; অজস্র কাজের মাঝে অবিরাম লেখনীর চর্চা করে যেতে দেখে স্যার আমাদের অবাক করে। সাধনা ও নিষ্ঠা থাকলে যে অনেক কিছু করা যায়; তা স্যারকে দেখেই শিখা যায়। আমার দেখা বহু গুণেগুনাম্ভিত একজন মানুষ, যার কাছে প্রতিনিয়ত শুধু শেখাই যায়। সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই ভাষার মাসে স্যারের নতুন পরিচিতি হল লেখক হিসাবে। এই অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বলাকা প্রকাশন থেকে স্যারের প্রথম কবিতার বই 'একমুঠো বর্ণমালা চাই' প্রকাশিত হল। অসংখ্য শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন স্যারের জন্য।

এই বইয়ের অনেক কবিতার সাক্ষি আমি, স্যার যখন লিখতেন বা কোন লেখা শেষ করতেন তখন সর্ব প্রথম আমিই জানতাম কারন স্যারের একেবেরেই সামনের ডেস্কে বসে আমি কাজ করতাম। কোন লেখা হলেই জানাতেন স্যার। খুব সমসাময়িক বিষয়ে তিনি ঝরঝরে বাংলায় লিখতে পছন্দ করেন।

যা কিছু পঠিত তা পাঠ্য, আর পটভূমি জানা থাকলে তা হয়ে উঠে সুখপাঠ্য। স্যারের অধিকাংশ কবিতাই বিভিন্ন ঘটনা, অনুঘটনার পটভূমিকায় উপমা-উৎপ্রেক্ষার বহিঃপ্রকাশ যার কিঞ্চিৎ কবিতা পাঠেই জ্ঞাত হয়। শাব্দিক প্রাঞ্জলতা রচনার বড়গুণ যা এই বইয়ে রক্ষিত হয়েছে। প্রচ্ছদ, বাঁধাই সবই উন্নত মানের যা বইটিকে দিয়েছে ওজস্বী ভিত্তি। স্যারের বিদেহী কবিতা, পোশাক শিল্পের বর্তমান- ভবিষ্যৎ, ইথিউপিয়া রাষ্ট্র, ভ্রমণ কাহিনী, প্রবন্ধ ইত্যাদি প্রকাশনার প্রতীক্ষায় রইলাম।



যাই হউক এই বইয়ের সাথে সামান্য হলেও আমি জড়িত, স্যারের বইয়ের ফ্লাপে যেই সুন্দর ছবি খানা জুড়ে দেওয়া হয়েছে এই ছবি খানা আমার হাতেই তোলা। এই ছবিটা স্যারের প্রথম বইয়ে ব্যাবহার করেছেন বলে স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ। ফিরে আসি উপহারের বিষয়ে, উপহারের জন্য বরাবরই বই আমার পছন্দের তালিকায়। তাই স্যারের প্রথম বই নাকি প্রথম প্রেমেরি মতন যদিও প্রেমের সরাসরি কোন কবিতা নেই, কিন্তু সমসাময়িক ২০৮ টি কবিতা নিয়ে ২০৮ পৃষ্টার দৃষ্টি নন্দন বই কিনে ফেললাম ১০ কপি। স্যারের সাথে সরাসরি কাজ করেছি প্রায় ১০ বছরের ও অধিক সময়। গত জানুয়ারিতে ট্রান্সফার হয়ে কারখানা ব্যাবস্থাপক হিসেবে দায়িত্য নেওয়ার পর স্যারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ নেই কিন্তু প্রতিনিয়ত মিস করি স্যারকে। এই ১০ কপি বই কালকে অফিস কলিগদের উপহার হিসেবে দেব, কারন বর্তমান কাজের জায়গায় আর বেশিদিন নেই, আবার ট্রান্সফার হয়ে অন্য কোন কারখানার দায়িত্য নিতে ফরমান এসেগেছে কিছুটা।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৬
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×