somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরাহ উইনফ্রের একটি গনসচেতনতামূলক শো এবং আমার উপলব্ধি

১৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টক শো টাইপ কোন অনুষ্ঠানে আমার আগ্রহ একটু কম। কিন্তু অপরাহ উইনফ্রে শো আমি পারতপক্ষে মিস করি না। এর প্রত্যকটা অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন দিক এতো সুন্দর করে তুলে আনে, খুব ভাল লাগে। আজ চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে উইনফ্রের তেমনই একটা শো পেলাম। অনুষ্ঠানটার বিষয়বস্তু হল মধ্যবয়সি মহিলাদের এইচ আই, ভিতে আক্রান্ত হওয়া এবং তা থেকে প্রতিরক্ষার উপায়।

ঘটনাটা টেক্সাসের। ৫০ উর্ধ ডায়ানের ভাষ্যতে- সে ও তার স্বামী ফিলিপ পাডোর ১৭ বছরের দাম্পত্য জীবন। আর্থিক সংকটের কারনে তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু। এক পর্যায়ে ডায়ান ফোন কলের সূত্র ধরে আবিষ্কার করে ফিলিপ অন্য মেয়ের প্রতি আক্রিষ্ট হয়ে পড়েছে। একে একে ডায়ান জানতে পারে ফিলিপের সাথে কম করে হলেও ২০টা মহিলার সম্পর্ক। এসময় ডায়ান এসটিপি টেস্ট করলে এইস,আই,ভি পজেটিভ ধরা পড়ে। ডায়ান সিদ্ধান্ত নেয়, সম্পর্কে জড়িত অন্য সব মহিলাকে যে করেই হোক এব্যাপারে অবগত করবে। প্রথমেই ফোন করে সুজানা নামের মহিলাকে। টেস্টে তারটাও পজিটিভ আসে। এরপর সুজানা ও ডায়ান মিলে ফোন করতে থাকে। ঐ সবগুলো মহিলারই এইডস ধরা পড়ে। তারপর তারা ব্যাপারটা পুলিশকে জানায়। ফিলিপ এর আগেই একবার শারিরীক অসুস্থতার কারনে চেক-আপ করিয়েছিল তাতে তার এইডস ধরা পড়ে, যদিও সে সেটা গোপন করে রেখেছিল। তাই কোর্টের ভাষ্যমতে “মরনাস্ত্র বহন (destructive weapons ঠিক এটায় বল্ল)এবং অন্যদেরকে মৃত্যমুখে ঠেলে দেয়ার অপরাধে ফিলিপকে ৪৫ জেল ধার্য করা হয়। ফিলিপের কথা হল- সে নির্দোষ, কারণ সেও কোন মহিলা দ্বারা প্রথমে আক্রান্ত হয়েছে।

সেই মহিলাদের মধ্যে ৫জন শোতে উপস্থিত হয়ে অপরাহের সাথে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে থাকে। এরা কেউই দেহ পসারিনী না, বরং তদের প্রত্যকেরি ১২,১৫,২০ বছরের সংসার ছিল। ফিলিপের সাথে বার/রেস্টুরেন্টে প্রথম পরিচয় হয় ওদের। এক মহিলা বলে- তার আগের স্বামী যথেষ্ট ভাল ছিল, কিন্তু অনেকটা ফ্যান্টাসি হিসাবে তার ফিলিপের কাছে যাওয়া। আর এক মহিলা বলতে থাকে- এইচ,আই,ভি পজেটিভ শোনার পর তার বাচ্চারা মাহারা হতে যাচ্ছে এটা ভেবে সে খুব দুঃখিত হয়েছিল। অপর মহিলা বলে- সে এইচ,আই,ভি আক্রান্ত প্রথম জানতে পারে যখন তার ছেলের বন্ধু টিভি-পেপারের নিউজে দেখে ছেলেকে ফোন করে জানায় ফিলিপের খবর । ছেলে মাকে সান্তনা দেয়, ্কারন ছেলেটা আগেই তার মার সাথে ফিলিপের সম্পর্কের কথা জানত, (হায় রে দুনিয়া)।
এরপর তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তারা কেন কন্ডম ব্যাবহার করেনি। প্রত্যেকেই বলে সুস্বাস্থের অধিকারি ফিলিপের সুন্দর মার্জিত ব্যবহারে তারা মুগ্ধ হয়, তারা সন্দেহই করতে পারেনি সে এইচ,আই,ভি বাহক হতে পারে। একজন বলে আক্রান্তদেরকে কোন ভাবেই দোষ দেওয়া যায় না, কারন কেউ গুলি করতে থাকলে বুলেট প্রুফ জ্যাকেটও অনেক সময় ব্যার্থ হয়।

পরিশেষে অপরাহ উইনফ্রে একটা স্লোগান দিয়ে অনুষ্ঠানটা শেষ করে দিল। তা হল “মেয়েরায় কন্ডম নিজেদের সাথে রাখবে” এটায় একমাত্র বাচার পথ।

অবশেষে আমার অভিব্যক্তিঃ

একেই বলে পশ্চিমা জীবন ব্যাবস্থা!!! অনুষ্ঠান্টাতে কয়েক জায়গায়ই আমি তব্দা খেলাম। প্রথমত, ব্যাক্তি স্বাধীনতা এদেরকে কোথায় নামিয়ে দিয়েছে!!! সমাজ, পরিবার, নিজের সন্তান কোনকিছুকেই তোয়াক্কা করার প্রয়োজন বোধ করছেনা। দ্বিতীয়ত, এরা প্রত্যেকেই চোখের পানি ফেলল আর বল্ল - এটায় ওদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। কিন্তু পরিস্কার হল না কোনটাকে ওরা ভুল বলল অবাধ যৌনাচার, এইডসে আক্রান্ত হওয়া নাকি কন্ডম ব্যাবহার না করা। কারন পুরো অনুষ্ঠানে কেউ মুখের ফাক দিয়েও উচ্চারণ করল না যৌন জীবনে সংযমী হওয়া উচিৎ। এরা জানে না রোগ কোথায়, আর অষুধইবা দিতে হবে কোথায়!!!

পরিশেষে বলব, যারা মনে করে মানুষের জীবনে ধর্মীয় কোন বিধি নিষেধ থাকা উচিত না ভোগই জীবনের লক্ষ্য, এইসব স্বেচ্ছাচারিতা নীতি তাদেরকে কোথায় নামিয়ে দিতে পারে তা ভাববার বিষয়।
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×