somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসি ভালোবাসি

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেব্রুয়ারি বা ফাল্গুন ভালোবাসার মাস। পহেলা ফাল্গুন আমাদের ভালোবাসা দিবস। ১৪ ফেব্রুয়ারি 'বিশ্ব ভালোবাসা দিবস'। ভালোবাসার মানুষটিকে বিশেষভাবে জানানোর দিন_ কতটা ভালোবাসি, কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে। প্রথমত এটা সীমাবদ্ধ ছিল পশ্চিমা দুনিয়ায়, এখন প্রায় সারাবিশ্বেই উদযাপিত হয় 'ভালোবাসা দিবস'। সুন্দর কিছু এভাবেই বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে যায়।
ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনস ডে শব্দটি এসেছে লাতিন ওয়ার্ড ভ্যালোর (ঠঅখঙজ) থেকে, যার ইংরেজি প্রতিশব্দ (ঈঙটজঅএঊ) বা সাহসী। সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের নাম থেকেই এ ভ্যালেন্টাইনস ডে শব্দটি এসেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে এই ভ্যালেন্টাইন? কোনো বিশেষ একজন নয়। তার মধ্যে একজন হলেন 'ভ্যালেন্টাইন রোম'। রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস মনে করতেন বিবাহিত, পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ সৈনিকের চেয়ে অবিবাহিত ও শৃঙ্খলমুক্ত যুবকরা সৈনিক হিসেবে বেশি পারদর্শী হয়। তাই বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল যুবকদের জন্য। ভ্যালেন্টাইন গোপনে গির্জায় প্রেমিক যুবকদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে সাহায্য করতেন। বলা হয়ে থাকে, এই ভ্যালেন্টাইনই লিখেছিলেন প্রথম ভ্যালেন্টাইন নোট। জেলে থাকা অবস্থায় পড়েছিলেন জেলারের কন্যার প্রেমে। ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর অর্থাৎ তাকে মাটিতে পুঁতে রাখার আগে তিনি তার প্রেমিকাকে চিঠি লিখে গিয়েছিলেন এবং যেখানে স্বাক্ষর করেছিলেন, 'ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন' বা 'ইতি তোমার ভ্যালেন্টাইন' বলে। আজ পর্যন্ত চলছে এ প্রচলন। আরও কয়েকজন ভ্যালেন্টাইন একই তারিখে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে সমাধিস্থ হয়েছিলেন।
অনেকেই মনে করেন ভ্যালেন্টাইনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতেই অর্থাৎ ২৭০ খ্রিস্টাব্দে ভ্যালেন্টাইনস দিবস বা ভালোবাসা দিবস প্রথম উদযাপিত হয়। রোমানরা তখন ফেব্রুয়ারি মাসে 'লুপারসিলিয়া', বিশেষ করে ১৫ ফেব্রুয়ারি 'উর্বরতা ও পরিশুদ্ধতা'র জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করত। তাই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এটি গির্জায় উদযাপন শুরু করলেও ৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে পোপ জিলাসিয়াস, খ্রিস্টান ও রোমান জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই ১৪ ফেব্রুয়ারিকে 'ভ্যালেনটাইনস ডে' হিসেবে আখ্যা দেন। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রচলিত অনুষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সে তখন প্রচলিত ছিল যে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পাখিরা তাদের সঙ্গী নির্বাচন করে, তাই ১৪ ফেব্রুয়ারিই হবে 'ভালোবাসা দিবস'। এভাবেই শুরু। কোথায়, কখন, কীভাবে, কেন শুরু হয়েছিল এসব না ভেবে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ১৪ ফেব্রুয়ারি পরিচিতি পেল ভালোবাসার দিন হিসেবে।
আমাদের সংস্কৃতিতেও সেই আবহমানকাল ধরে ফাল্গুন মাসকে ভালোবাসার মাস বলা হয়। ফাল্গুন এলেই আমরা গাই 'ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে'। মেতে উঠি বসন্ত উৎসবে। সঙ্গে সঙ্গে ১৯৮৮ সাল থেকে আমাদের দেশেও পালিত হচ্ছে 'ভ্যালেন্টাইনস ডে' বা 'বিশ্ব ভালোবাসা দিবস'। আজ সারাবিশ্বেই পালিত হচ্ছে এ দিনটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে এবং যথারীতি নতুনের পথে থাকে সমালোচনার কাঁটা বিছানো। এমনকি মানুষ যখন প্রথম লিখতে শুরু করল, প্লেটোর মতো দার্শনিক বিরোধিতা করেছিলেন মানুষের স্মরণশক্তি লোপ পাওয়ার আশঙ্কায়। পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে ভালোবাসা দিবসকেও বিধর্মীয় বা অপসংস্কৃতি বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তা দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এ শুধু নতুনের চির পুরনো পথচলা।
আমি শুধু একটি কথাই বলব, হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি-কাটাকাটির অস্থিরতায় ভরে গেছে এ পৃথিবী। অন্যের জীবন এমনকি নিজের জীবনের প্রতি মায়া হারিয়ে ফেলেছে মানুষ। বিশ্বায়নের এ যুগে নিরবচ্ছিন্ন থাকা সম্ভব নয়। সবকিছুরই ছায়া এসে পড়ে আমাদের জীবনে। প্রভাবিত করে আমাদের আমাদের নতুন প্রজন্মকে। আর এমন অবক্ষয়ের যুগে কেউ যদি ভালোবাসার বাণী নিয়ে আসে তা গ্রহণ করতে আমাদের সংশয় কেন?
সৌজনে সমকালের সেলিমা তাসনীম ছন্দা..........
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:৪৪
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×