হঠাত্ জেগে ওঠে ঘুমনগরীর রাজকন্যা..
চোখ না খুলেই ভাবে
আজ যদি অন্যরকম কিছু হতো!
তারপর চারপাশে চেয়ে স্তব্ধ বিস্ময়ে দেখে
তার রূপার চাদরে ঢাকা সোনার পালঙ্ক উধাও
সে শুয়ে আছে কচি ঘাসের কোমল সজ্জায়।
মাথার উপর নেই দূর্বোধ্য নকশা করা কড়িকাঠ
তার বদলে নাগালের বাইরে আশ্চর্য নীল আকাশ..
জানালার রাশভারী রেশমী ঝালর মেঘ হয়ে ভাসে,
পারস্য গালিচার জায়গায় অজস্র গোলাপের ঢল।
তার ঘুম ভাঙ্গানো তানপুরা কোথায় গেলো?
রঙধনু রঙা পাখিরা তাকে ঘিরে গাইছে জেগে থাকার গান..
দূরের বাতাস উড়িয়ে আনে জলের ঘ্রাণ।
এবার নিজের দিকে তাকায় সে
ফুল আর প্রজাপতি গহনায় মিশে আছে প্রকৃতির ভালোবাসা,
সবুজ লতাপাতার আচ্ছাদনে সে নিজেই যেন নির্জন বুনোফুল!
নিজেকে প্রশ্ন করে, এই বেঁচে থাকা স্বপ্নে নয়তো?
ঠিক তখনি বহুদূর থেকে ভেসে আসে তানপুরার সুর
কি ভীষণ অশুভ দুঃস্বপ্নময় বাস্তবতার ডাক...
আরো একবার ঘুম ভাঙ্গে রাজকন্যার
চিরচেনা প্রাসাদে
পারস্য গালিচা আর রেশমী ঝালরে ঘেরা কামরায়
সোনার পালঙ্কে!
অসংখ্য অলঙ্কার এবং রত্নখচিত পোষাকের অসহ্য আবরণে..
চিরচেনা আভিজাত্য ভেদ করে মাথা তোলে বিষাদ
দীর্ঘশ্বাস হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বদ্ধ ঘরের আনাচে কানাচে॥
[আমাদেরও রয়েছে স্বপ্ন এবং দুঃস্বপ্নের দিনরাত। রয়েছে আনন্দ, বিষাদ, কল্পনা আর বাস্তবতা। আমরাও বন্দি ব্যস্ততায়, প্রথায়, যান্ত্রিকতায়...]