somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিনটি মন কেমন করা অনু গল্প

০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কুকুর কাহিনী
সন্ধ্যার পর পাশের হোলসেল মার্কেটে গিয়েছি সংসারের টুকটাক জিনিস কিনতে আমরা দুজন বুড়ো বুড়ি । সেই মার্কেটের পাশ দিয়ে এলাকার একটি রাস্তা গিয়ে মিশেছে বড় রাস্তায়। যার ওইপাশে আরেকটি শপিং সেন্টার। সেই হোলসেল মার্কেটের সামনের দিকে বিশাল চত্বর যেখানে গাড়ি পার্কিং ছাড়াও খোলা জায়গা। আমরা সাইড রাস্তা দিয়ে ঢুকতেই দেখি এক জোড়া ছেলে মেয়ে একটি কুকুরের সাথে লুকোচুরি খেলছে। ওকে রেখে এদিক ওদিক দৌড়ে যাচ্ছে। আর কুকুরটাও ওদের খুজে বের করছে। আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি। একটু পর ওরা কুকুরটিকে একটু দুরে নিয়ে রেখেই চোখের পলকে দৌড়ে রাস্তা পার হয়ে পাশের শপিং সেন্টারের কাচের দরজা খুলে ঢুকে গেলো। কুকুরটা দৌড়ে গেল ঠিকই কিন্ত আর তাদের খুজে পেলো না। পাবেও না কারন ওখান থেকে উল্টো দিক দিয়ে বের হয়ে যাবার অনেক দরজা আছে। কুকুরটা পাগলের মত একবার এদিকে ওদিকে যাচ্ছে, দরজা ঠেলেতো আর ভেতরে ঢুকতে পারছে না সেই অবোলা প্রানিটি। আমরা দাঁড়িয়ে রইলাম দেখার জন্য ওরা ফিরে আসে কি না? নাহ নেই নেই নেই তার মালকিনদের দেখা, আমার সংগী জানালো "বুঝেছো ওরা তাকে জন্মের মত পরিত্যাগ করে গেলো"। আমার যে কি ভীষণ কষ্ট লাগছিলো তা বলার মত নয়। কিছু না কিনেই ফিরে আসলাম।


বিড়াল কাহিনী
বিকেলের দিকে পার্কে হাটতে গিয়েছি। এক চক্কর দিয়ে আসতেই দুর থেকে দেখি অদুরে সদ্য চোখ ফোটা ছোট্ট এক বিড়াল ছানা দুজন বিদেশি ছেলের পা বেয়ে উঠতে চেষ্টা করছে আর মিউ মিউ করছে। ছেলে দুটো তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আমি কাছাকাছি আসতেই ছেলে দুটো বিড়াল ছানাকে রেখে এগিয়ে গেল গেটের দিকে। আমি তখন ছানাটাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি দ্রুততার সাথে। বিড়াল ছানাটি করুন স্বরে মিউ মিউ করতে করতে আমার পিছু পিছু আসতে লাগলো। আমি বারবার পিছন ফিরে দেখছি সে দৌড়ে আসতে
চেষ্টা করছে। একসময় হাল ছেড়ে বসে পরলো আর আমার দিকে এমন করুনভাবে চেয়ে রইলো যা আমি লিখে বোঝাতে পারবো না। এটা বেশ আগের ঘটনা, আমি ব্লগে অনেকের মন্তব্যে বলেছিও। কিন্ত আজও আমি তার সেই তাকিয়ে থাকাটা ভুলতে পারি নি। পরদিন পার্কের কেয়ার টেকারকে জিজ্ঞেস করলাম ছানাটার কথা। সে বল্লো সে জানে না।


পাখি কাহিনি
বুনো পাখিদের প্রতি আমার ভালোবাসার কথা অনেকেই জানেন। দেশের বাইরে থাকলে ফোনে প্রথম প্রশ্ন থাকে পাখিগুলোকে খেতে দিয়েছে নাকি? আর নিজে থাকলে তো কথাই নাই। তাদের ভালোলাগার খাবার দেই নিয়মিত দিনে তিন চারবার। কয়েক মাস আগে নীচ তালা থেকে অভিযোগ আসলো আমরা কি পাখি পালি নাকি? পাখির খাবার উড়ে গিয়ে তাদের বারান্দা নোংরা করছে। কিছু দিন বন্ধ রেখে আবার একটু আধটু দেয়া শুরু করলাম। কিন্ত কাল গৃহকর্তা নিজে ফোন করলো আমার কর্তাকে। সেই একই অভিযোগ। ও বল্লো থাক আর দিও না, ওনাদের যখন সমস্যা হচ্ছে। আজ সকাল থেকে দিনভর একের পর এক টিয়া, বুলবুলি, শালিকরা খালি থালা সামনে নিয়ে চেচামেচি করছে বারান্দার গ্রীলের সাথে বেধে দেয়া ডালে বসে। আবার ক্যা ক্যা করতে করতে উকি দিয়ে দিয়ে দরজার ভেতরে আমাকে দেখে শালিকগুলো। আমার যে কি কষ্ট হচ্ছে বলার না। কিন্ত শহুরে জীবনে এমন হাত পা বাধা হয়েই হয়তো চলতে হবে। কিন্ত আমার শিকলি কাটা স্বাধীন পাখিদের কি হবে?


প্রথম ও দ্বিতীয় ছবিটি নেট।
তৃতীয়টি আমার মোবাইলে আমার তোলা।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:২৮
৫৩টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×