somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাতু মালয়েশিয়া - ৫

১৬ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব-
Click This Link

কে এল সি সি মসজিদ

শুক্রবার জুমা পড়ার জন্য আমরা গেলাম কে এল সি সি মসজিদে। অফিশিয়াল নাম ''মসজিদ আস সায়াকিরিন''। টুইন টাওয়ারের সাথেই যে পার্ক আছে তার মধ্যে মসজিদটি। আগে এখানে ৬ হাজার লোক নামাজ পড়তে পারতেন। ২০০৯ সালে সম্প্রসারণের ফলে এখন ১২ হাজার লোক একসাথে নামাজ পড়তে পারেন। এখানে দুটি ফ্লোর।

ঢুকে দোতলায় বসে পড়ি। ওয়াজ করছিলেন একজন মালয়ী ভাষায়। সামনে এলসিডি মনিটরে তার ছবি দেখা যাচ্ছিলো। সাথে স্ক্রলে দেখাচ্ছিলো ''সালামাত দাতাং মসজিদ আস সায়াকিরিন''। নীচে নামাজের সময়সূচি। ওয়াজের সময় কোন আয়াত পড়লে আরবীতে আয়াতটি দেখায়, সাথে বাহাসা মালয়ুতে অনুবাদ। আশে পাশে তাকিয়ে দেখি মালয়ী লোকজন অল্পই। বেশীর ভাগই আমাদের মতো বিদেশী। ট্যুরিস্ট এলাকায় বলে ট্যুরিস্টদেরই প্রাধান্য। আমার পাশে এক মালয়ী সুন্নত পড়ার পর হাত মিলালেন।

ওয়াজের পর আজান দিলো। এরপর সবাই সুন্নত পড়লেন। এরপর খুতবার আজান হলো। এমন সুমধুর আজান আমি খুব কম শুনেছি। এরপর খুতবা দিলেন বাহাসা মালায়ুতে। শুধু কুরান বা হাদীসের অংশটুকু আরবীতে পড়লেন। পরের খুতবাটি অবশ্য আরবীতেই দিলেন। যেখানে কুরানের মুনাজাতের আয়াতগুলো আছে সেটা পড়ার সময় দেখলাম সবাই মুনাজাতের ভঙ্গিতে হাত তুললেন।

জামায়াতে ইমামতি করলেন মাঝ বয়সী একজন ইমাম। অদ্ভুত সুরেলা কন্ঠ। আমার কানে যেন এখনো সেটা বাজছে। সাউণ্ড সিস্টেমটা দারুন। মনে হয় শব্দ আসছে ইমামের দিক থেকে। সুরা ফতিহা পড়ার পর ইমামের নেতৃত্বে সবাই সমস্বরে পড়লেন ''আমিন !''

রুকুতে যাবার আগে নিয়তের সময়ের মতো করে হাত তোলেন সবাই। বাকী সব সিস্টেম আমাদের মতো। শুক্রবার অফিস খোলা থাকে বলে সবাই অফিসের পোষাকেই নামাজ পড়তে আসেন।

ঢাকায় যেমন একটু পরপরই মসজিদ চোখে পড়ে কুয়ালা লামপুরে সেটা পড়ে না। অনেক দূরে দূরে মসজিদ। এ নিয়ে আমার এক সহকর্মী বললেন, এটা মুসলিম প্রধান দেশ অথচ মসজিদ এতো কম ! আমার প্রথম যেটা মনে হলো সেটা হচ্ছে ওখানকার জনসংখ্যা কম। এর ভেতর আছে চীনা আর ভারতীয়রা। তারপরও খটকা গেলো না। পরে জানলাম প্রতিটা বহুতল ভবনেই নামাজের জায়গা আছে। ওটা না রাখলে বিল্ডিংয়ের প্ল্যানই পাশ হয় না।

পন্য মূল্য বৃদ্ধিতে মুদ্রাস্ফিতির আশঙ্কা

এক বছরের ব্যবধানে মালয়েশিয়ায় দেখলাম জিনিসপত্রের দাম বেশ বেড়েছে। এখানকার স্টার-এ লিখেছে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধি, ডিজেলের ওপর প্রদত্ত ভর্তুকি প্রত্যাহারের জন্যই দাম বেড়েছে। তাই অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মুদ্রাস্ফিতি বাড়ার আশঙ্কা করছেন। বাংলাদেশের তুলনায় সেখানে আরেকটা কারণে দাম বেশী মনে হয়। সেটা টাকার দাম পড়ে যাওয়া। যে জিনিস গতবছর ৫ রিঙিতে কিনেছি সেটা বাংলাদেশী টাকায় এক শ' টাকা পড়েছে। সেটার দাম এবার ৭ রিঙিত। রিঙিতের দাম বেড়ে ২৫/২৬ টাকা হয়ে পড়ায় বাংলাদেশী মুদ্রায় তার দাম পড়ে যাচ্ছে ১৭৬/৭৭ টাকা অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুন। ফলে এবারের শপিং ঠিক জমেনি।

জ্যাম এবং ভীড় বৃদ্ধি

কুয়ালা লামপুরের রাস্তায় এবার জ্যাম অনেক বেড়ে গেছে।ট্যুরিস্ট মৌসুমের কারণেই বেশী। তবে গতবারও একই মৌসুমে গিয়েছিলাম। এবার ভিড় বেশী লাগলো। হয়তো ট্যুরিস্ট বেড়েছে। গাড়ীও বেড়েছে। গতবার দেখেছি অফিসে আসা যাওয়ার সময় অর সন্ধ্যার পর ভীড় বেশী। এবার দেখলাম সেটা দিনব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার নামাজের সময় থেকে বাকী দিন সবচেয়ে বেশী ভীড় থাকে।

কুয়ালা লামপুরের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বিশ্ব মানের। বিশেষত: লাইট রেল ট্রানজিট (এলআরটি) আর মনোরেল। গতবার মজা করে ঘুরেছি। সিট পেতে সমস্যা হয়নি। এবার দেখি ওগুলোতেও ভীড় বেড়েছে। বেশীর ভাগ দিন সিট পাইনি। দাঁড়িয়ে ভ্রমন করতে হয়েছে। বেজিংয়ের পাবলিক ট্রান্সপোর্টের দশা হয়ে যাচ্ছে কুয়ালা লামপুরের !

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:১২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×