somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে বুশের পরাজয়

০৯ ই নভেম্বর, ২০০৬ রাত ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের নিম্নক প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেছে ডেমোক্রেটিক পার্টি। দীর্ঘ 12 বছর পর প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হলো। এছাড়া কংগ্রেসের উচ্চক সিনেটেও বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। 100 আসনের সিনেটে ডেমোক্রেটিক পার্টি এরই মধ্যে জিতে গেছে 47টিতে। এছাড়া দুটি আসনে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। এ দুটি আসন পেলে সিনেটেও তাদের প্রাধান্য থাকবে। কেননা বিজয়ী দু'জন স্ব্বতন্ত্র প্রার্থীও ডেমোক্র্যাট সমর্থক। সিনেটের ফল যাই হোক না কেন, প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের বিপুল বিজয়ের ফলেই এবার মার্কিন আইনসভায় ভারসাম্য ফিরে আসার সম্ভ্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কেননা ডেমোক্র্যাটদের পাশ কাটিয়ে এখন আর প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের প েকোনো বিলই পাস করানো সম্ভ্ভব হবে না। ইরাক যুদ্ধ ও দুর্নীতির কারণে বুশের এ ভরাডুবি হয়েছে বলে বিভিন্ন জরিপে জানা গেছে। এ নির্বাচনকে ইরাক ইসু্যতে গণভোট হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতারাও বলছেন, জনগণ পরিবর্তনের প েরায় দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ ও ইরাক ইসু্যতে নতুন দিক-নির্দেশনা চায় জনগণ। প্রেসিডেন্ট বুশের গলায়ও এখন নরম সুর। ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে বহুল আলোচিত এ মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত 435 আসনের প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পেয়েছে 227টি। নিরঙ্কুুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার 218টি আসন। প্রতিনিধি পরিষদে তাদের আসন সংখ্যা ছিল 203। এবার রিপাবলিকান পার্টি পেয়েছে 193টি আসন। গতবারের চেয়ে তাদের আসন কমেছে 39টি। এখনো 15টি আসনের ফলফল পাওয়া যায়নি। এবার প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার হবেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো নারীর প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পদে আসীন হওয়াটা এই প্রথম। দীর্ঘ 12 বছর মার্কিন কংগ্রেসের উভয়ক দখলে ছিল রিপাবলিকানদের। এ সুযোগে তারা বিরোধী দলের মতামতের তোয়াক্কা না করেই পাস করিয়ে নিয়েছেন অনেক রণশীল আইন। দেশটির রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি হয়ে পড়েছিল ভারসাম্যহীন। মঙ্গলবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে হাউস তথা প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের নিরঙ্কুুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে এেেত্র ভারসাম্য ফিরে আসার সম্ভ্ভাবনা রয়েছে। কেননা কংগ্রেসের কোনো একটি করে অনুমোদন ছাড়া কোনো বিল পাস করা যাবে না। ফলে প্রেসিডেন্ট বুশকে এখন ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে আপস করে চলতে হবে।
এদিকে সিনেটেও এবার ভালো ফল করেছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। রিপাবলিকানদের হাত থেকে তারা ছিনিয়ে নিয়েছে 3টি আসন। 100 আসনের সিনেটে এরই মধ্যে ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছেন 47টি। রিপাবলিকানদের আসন 6টি কমে দাঁড়িয়েছে 49। দুটি আসনে জিতেছেন ডেমোক্র্যাট সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বাকি আছে দুটি আসনের ফল। এর মধ্যে ভার্জিনিয়ার 99 শতাংশ ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জিম ওয়েব প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান রিপাবলিকান সিনেটর জর্জ অ্যালেনের চেয়ে 8 হাজার ভোটে এগিয়ে আছেন। এ আসনে ভোট পুনর্গণনার দাবি তুলেছেন রিপাবলিকানরা। এেেত্র এ আসনের চড়ান্ত ফল ঘোষণায় কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। ভার্জিনিয়ার আইনে দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান এক শতাংশের কম হলে সম্ভ্ভাব্য পরাজিত প্রার্থী ভোট পুনর্গণনার আবেদন করতে পারেন। অন্যদিকে মনটানা সিনেট আসনে 90 শতাংশ কাউন্টির ভোট গণনায় দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট জন টেস্দ্বার প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান রিপাবলিকান সিনেটের কনরাড বার্নসের চেয়ে আড়াই হাজার ভোটে এগিয়ে আছেন। ভোটযন্ত্রে ত্রুটির কারণে এ আসনের চূড়ান্ত ফল পেতে দেরি হচ্ছে। এ দুই আসনের যে কোনো একটি ডেমোক্র্যাটদের দখলে গেলেও সিনেটে উভয় দলের শক্তি হবে সমান।
যে কারণে এই পরাজয় ইরাক যুদ্ধ নিয়ে মার্কিনিদের অসন্তোষই মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের পরাজয়ের মূল কারণ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতি ও যৌন কেলেঙ্কারির ইসু্য। এছাড়া বুশ প্রশাসনের অর্থনৈতিক নীতিও মার্কিনিদের মনঃপূত হয়নি। বিভিন্ন জরিপে বিষয়টি স্পস্ট হয়ে উঠেছে।
হতাশ বুশ মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভরাডুবিতে কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন বুশ। তাৎণিকভাবে তিনি সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। এমনকি জনসমওে আসেননি। তবে তার মুখপাত্রের মাধ্যমে তিনি ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে সমঝোতা করে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র টনি স্টেস্না এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, আমরা ধরে নিচ্ছি যে, ডেমোক্র্যাটরা হাউসের নিয়ন্ত্রণ লাভ করবে। আমরা ইরাক যুদ্ধে জয়ের প্রসঙ্গসহ বিভিন্ন ইসু্যতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার অপোয় আছি। 'নয়া দিকনির্দেশনা চায় জাতি' এদিকে প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য এ এক বিরাট বিজয়। এটি স্পস্ট যে, ইরাক যুদ্ধের বিষয়ে জনগণ নতুন দিক-নির্দেশনা চায়। সিনেটে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা হ্যারি রিড বলেন, জনগণ তাদের কথা জানিয়ে দিয়েছে। তারা চায় পরিবর্তন। তাদের প্রত্যাশা ও দাবি অনুযায়ী জাতীয় ও ইরাক ইসু্যতে নতুন নির্দেশনা পেতে যাচ্ছেন তারা। গভর্নর পদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার পথে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর গভর্নর পদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাটরা। মঙ্গলবারের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের দখলে থাকা 6টি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর পদে ডেমোক্র্যাটরা জয়লাভ করেছেন। দীর্ঘ 12 বছর পর গভর্নর পদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।
ভোট গণনার অগ্রগতি পর্যালোচনা করে ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ব্রায়ান নেইমি বলেন, নিশ্চিতভাবে বলা যায় 50টির মধ্যে 26 কিংবা তার চেয়েও বেশি অঙ্গরাজ্যে জয়ী হতে চলেছি আমরা।
রিপাবলিকানদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া অঙ্গরাজ্যগুলো হলো আরকানসাস, কলোরাডো, ম্যারিল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস,নিউইয়র্ক ও ওহাইও। প্রবাসী বাংলাদেশীরা খুশি নিউজ ওয়ার্ল্ড জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রায় 99 শতাংশই ডেমোক্র্যাট সমর্থক। ফলে ডেমোক্র্যাটদের বিজয়ে তারা খুবই খুশি। ইমিগ্রেশন ইসু্যতে ডেমোত্রক্র্যাটরা যে উদ্যোগের কথা বলছেন, তাতে অনেকেই উপকৃত হবেন। এটাই বাংলাদেশীসহ ইমিগ্র্যান্টদের খুশির মূল কারণ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×