দু'টি ছবি দেখুন। এই দুই চরিত্রের মধ্যে কী কী পার্থক্য? একজন পুরুষ, অন্যজন নারী। একজন ভারতের, অন্যজন বাংলাদেশের। একজন চিরস্থলের বাসিন্দা, অন্যজন বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের। এটুকুই তো? মিল রয়েছে দু'জনের দিন যাপনেই। নিঃস্ব দু'জনের দিন কাটে একই হালে। বামের জনের ছবিসহ প্রতিবেদন এসেছে ভারতের কাগজে। সেখানে বলা হয়েছে, ঘরের একদিকে শুকনো কলাপাতা দিয়ে ঘেরা। অন্যদিকে ভাঙাচোরা পাটখড়ির বেড়া। অন্য দুদিক খোলা। একটু বৃষ্টি হলেই ঝর ঝরা হয়ে যাওয়া টিনের চাল গড়িয়ে পানি পড়ে। ঘরের এক কোণে খড়ের গাদা আর চটের চাদরের ওপর শুয়ে কাঁতরাচ্ছেন এক কংকালসার বৃদ্ধ। বার্ধক্যজনিত অসুখে তিনি শয্যাশায়ী। আত্মীয় কিংবা পড়শীরা দু'মুঠো ভাত দিলে পেট ভরাতে পারেন। তা না হলে অনাহারেই থাকতে হয় তাকে। ঘটনাটি আমাদের পাশর্্ববর্তী দেশ ভারতের। ঘটনাটি শুনে আশ্চর্য হয়েছেন ভারতের সিপিএম কোচবিহার রাজ্যের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য তমসের আলী। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন বয়স্কভাতার টাকা ও ত্রান দেয়ার। আমাদের দেশের এই ডানের জনকে নিয়েও সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। জসিমুন্নেছা নামের এই বৃদ্ধা থাকেন রাজশাহীর চরখিদিরপুরে। ছেলেমেয়ে সব মারা গেছে। শতায়ু এই বৃদ্ধা থাকেন নাতির কাছে। দুবেলা দুমুঠো অন্ন জোটে না। হাত পাতেন মানুষের কাছে। চরে তেমন মানুষও বা কই? তার অর্ধেকেরও কম বয়সী দু'জন পাড়ায় বয়স্কভাতা পেলেও তিনি পান না। তাই তার প্রশ্ন, কতো বয়স হলে বয়স্কভাতা পাওয়া যায়?
কী, এবার কি আর কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়? যায়, সেটা দৃষ্টিভঙ্গীর। খবর প্রকাশের পর পরই বামের জনের েেত্র সেখানকার রাজনৈতিক নেতাদের টনক নড়েছে। কিন্তু আমাদের ডানের জনের খোঁজ-খবরটুকুও করার প্রয়োজন বোধ করেননি আমাদের কোনো মহামহিম নেতা!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



