somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে স্বপ্ন আজো ভাবায়

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শহুরে ব্যাস্ত জীবন দিন দিন মানুষ আকৃতির মেশিনে রুপান্তরিত করছে আমাকে।নিজের স্বকীয়তা প্রায় হারাতে বসেছি।হারাতে বসেছি ভবঘূরে ছন্নছাড়া হয়ে অপার রহস্যময় মানব জীবনের গভীরে ডুবে থাকার আনন্দ।কত দিন রোদেলা অলস দুপুরের স্থির নিরবতা উপভোগ করিনা।কতই না প্রিয় ছিল তপ্ত অলস দুপুরগুলো।নিরব রাতে ঝি ঝি পোকার গা ছমছম করা ডাক শুনতে শুনতে গ্রামের কোন রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার এডভেঞ্চার আজ আর মনেই পরে না।অথবা কোন বৃদ্ধ গাছের পাশ কেটে রাতের বেলা হেঁটে যাবার সময় গা ছমছমে ভৌতিক অনুভূতিই বা কোথায় যেন হারিয়ে গেল।গ্রামের রাস্তার ব্রেক বিহীন ভটভটি গাড়ীর তেল পোড়া যে গন্ধ আমাকে নেশাগ্রস্থ করত তা আর পাই না কোথাও।ভেজা খড়ের গাদার গন্ধই বা কোথায় হারাল।গোছল করার নামে বৃষ্টিতে ভিজে গায়ে কাঁদা মাখাই না সে তো অনেক দিন।এমন অসংখ্য মৌলিক অনুভূতি আজ বিলুপ্ত প্রায়।
তবু কিছু মানুষ দেখেছি চারপাশে যারা শত যান্ত্রিক ব্যাস্ততার ভেতরে নিজের স্বকীয় মৌলিকতা ধরে রাখতে পেরেছেন। ব্যাস্ততার ভীরে একটু সুযোগ পেলেই নিজের মানবীয় মৌলিকতা জানান দেন। একজন কর্মব্যাস্ত নারীর কথা বলি।যিনি শহরের অনেক ব্যাস্ত মানুষের মতই সারাদিন অফিসে কাজ করে গৌধূলি বেলায় বাসে উঠার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
এমন একটি অস্থির ক্লান্ত সময়ে কেও কি ভাবতে পারে হাসি,আনন্দ বা শৈশবের ছেলেমানুষি করার কথা।কিন্তু আমি দেখেছি ঐ নারীকে ।তিনি সত্যিই অবাক করেছেন আমাকে।এই শহরের অনেক ব্যাস্ত একটি রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়েছি বাসে উঠার আশায়।এই সব রাস্তার মোড়ে সর্প হাতে টাকা চেয়ে বেড়ায় দলবেঁধে ঘুরে বেড়ানো কিছু মেয়ে।টাকা না দিলে সাপের ভয় দেখায়। এযুগে এসেও তারা যাযাবর।তারা এখন শহুরে বেঁদে।যথারীতি ঐ নারী ও তাদের আক্রমনের স্বীকার।উনি বারবার বলে যাচ্ছেন বিরক্ত করো না।কে শোনে কার কথা।সর্প এতক্ষন কৌটার ভেতর ছিল।এখন কৌটার ডাকনা খুলে দিয়ে ঐ নারীর সর্পভীতি বাড়ানোর চেষ্টায় মনযোগী হল নাছোড়বান্দা বেঁদের দল।তারপর যা হল তা সত্যিই অবাক করার মত।নারীর সর্পভীতি তুলনামূলক বেশী ,এই প্রচলিত ধারনা জয় করে তিনি কৌটা সহ সাপকে বেঁদেনীর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে নিজের পার্সে ভরে হাসি মুখে হাঁটতে লাগলেন যেন কিছুই হয়নি।কি অদ্ভুত ব্যাপার।বেঁদেনীরা তো হতভম্ব।তারা এমন অভিঙ্গতায় হয়ত ভুলেও পরেনি কখনও।ঐদিকে তিনি তো হাঁসিমুখে হেঁটে চলেছেন।বেঁদেনীরা অনুরোধ করে বলতে লাগল ,আমার টেকা লাগব না গো ,সাপটা দিয়া দেইন ,বইন না বালা।তিনি বললেন ,না ,সাপটা পছন্দ হয়ছে আমার।বাসায় নিয়ে পুষব।অনেক অনুনয় বিনয় শেষে ফিরিয়ে দিলেন সাপটি।বেঁদেনীরা কোনমতে সাপ নিয়ে ভাগল।আমি উনার কাছে যেয়ে কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করলাম ,আপু কি করলেন এটা?উনি হেসে বললেন ,কেন?আপনি সাপ ভয় পান?তারপর বললেন ,আমার হাজব্যান্ড সাপ ভয় করে।ভাবলাম সাপটা নিয়ে রাতে ওকে ভয় দেখাব।কিন্তু নিয়ে গেল তো।এরপর আবার পেলে সত্যিই নিয়ে যাব।
এই আপু সত্যিই পেরছেন অনেক ব্যাস্ততার ভীরেও প্রানবন্ত রাখতে নিজেকে।
আসলে আমাদের শত বছরের সভ্য সংস্কৃতি যেখানে আধুনিক নামধারী সব ভিন্ন সংস্কৃতির প্রভাবে বিলুপ্ত প্রায় সেখানে নিজের হারানো মৌলিকতা ফিরে পাওয়া বড় দায়।তাইতো অনেকে অনেক কিছু পেয়েও ভোগে শূ্ন্যতায়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×