চেতনা ব্যবসায়ীদের শিক্ষা ব্যবস্থার একাল-সেকাল
---------------------------------------------------
১৯৭২-৭৫: চেতনাধারী বাকশালীরা যে শুধু এই সময় গণতন্ত্র হত্যা, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস, বা জাতিকে ভারতের গোলাম বানিয়েছিল তা নয়, তার চেয়েও বড় ক্ষতি করেছিল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা (মেরুদণ্ড) ভেঙ্গে দিয়ে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও যুদ্ধের কারণে ৭১-এর গোটা বছর দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। কিন্তু লেখাপড়া না হলে কি হবে মানবহিতৈষী মুজিব কোন ক্লাস, পরীক্ষা না নিয়েই পরবর্তী ক্লাসে প্রমশনের ব্যবস্থা করেন। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা এমনকি মেডিক্যাল কলেজের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা না নিয়েই অটো-পাসের ব্যবস্থা করা হয়। এ খবর দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বিদেশেও হইচই পড়ে যায়। ফল দাঁড়ালো এই, ব্র্যাকেট বন্দী হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশী ডিগ্রি বিদেশে মুল্য হারাল, ইজ্জত হারাল শিক্ষিতরা। এমনকি ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের মেডিক্যাল কলেজগুলোর স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেয়।
১৯৯৬-২০০১: মুজিব আমলে স্কুল-কলেজগুলোতে ছাত্রলীগের ছেলেদের জন্য নকল করা এক প্রকার বৈধ অধিকারে পরিণত হয়েছিল। এই ভাবে নকল সারা দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সেই অবস্থা আশির দশক পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। নব্বই-এর দশকের প্রথমার্ধে নকলের উপদ্রব মোটামুটি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসা সম্ভব হলেও প্রথম হাসিনার সরকারের আমলে সেটা নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় এবং গোটা দেশে তা মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়ে। হাসিনার সরকার আরেক টার্মের জন্য ক্ষমতায় এলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা ভেবে দেশের শিক্ষিত মহল সেই সময় আতঙ্কিত না হয়ে পারেনি। যাহোক সেটা আর ঘটেনি। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে নকল উৎখাতে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন এক ঐতিহাসিক ভুমিকা পালন করেন।
২০০৯-২০১৩: বর্তমান সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থার হালচাল নিয়ে কমবেশি সবাই অবগত। তার পরও নিচে আজকের পত্রিকার একটি খবরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
"জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের পর এবার ফাঁস হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও। গতকাল বৃহস্পতিবার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রেই গ্রহণ করা হয়েছে বাংলা পরীক্ষা। আগের দিন গণিত প্রশ্নও ফাঁস হয়েছিল। আগামী ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। রাজধানীর বেশ কিছু অভিভাবক ‘নয়া দিগন্ত’কে জানান, শুধু গণিত আর বাংলাই নয়, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার সব বিষয়ের প্রশ্নই ফাঁস হয়ে গেছে বলে আমরা শুনেছি। এখন কোথায় প্রশ্ন পাওয়া যাচ্ছে তার পেছনেই ছুটছেন অভিভাবকেরা। এ দিকে ‘প্রশ্নপত্র’ ফাঁস হওয়া নিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। যে সব অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীর কাছে প্রশ্ন পৌঁছেছে বা পেয়েছেন তারা বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। পরীক্ষা শেষে তারা ও শিক্ষার্থীরা হাসি মুখে কেন্দ্র থেকে বের হতে দেখা গেছে"।
--- সুত্রঃ নয়াদিগন্ত।
এ সরকারের আমলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা থেকে শুরু করে জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি, বিএসসিসহ যত পাবলিক পরীক্ষা আছে তার কোনটাই প্রশ্নপত্র ফাঁস ছাড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে এমন নজীর পাওয়া কঠিন। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষাগুলোর অবস্থাও তাই। বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির পরিক্ষারতো কথাই নেই। এ সরকার ক্ষমতায় এসেই ঘোষণা দিয়েছে সরকারী চাকরী একমাত্র ছাত্রলীগ-যুবলীগের জন্য বরাদ্দ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




