somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ: প্রশ্ন নয়, গর্ব ও চেতনার উত্তরাধিকার

২৬ শে আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন প্রশ্ন করা যাবে না, এই বাক্যটি অনেকের কানে অদ্ভুত শোনাতে পারে। গণতন্ত্রে প্রশ্ন করা তো নাগরিকের অধিকার , তাহলে কেন মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে নিষেধ করা হচ্ছে ।

এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ইতিহাসে, অনুভব করতে হবে সেই বেদনাদায়ক দিনগুলোর ভয়াবহতা এবং উপলব্ধি করতে হবে এ জাতির জন্ম কেমন রক্তঝরা পথ পেরিয়ে হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধঃ একটি জাতির জন্ম
১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, বাংলাদেশ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন, গণহত্যা, ধর্ষণ, গ্রাম-নগর ধ্বংস এই সবকিছু পেরিয়ে দেশের লাখ লাখ মানুষ নিজের জীবন দিয়ে তৈরি করেছে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড।

এ যুদ্ধ ছিল অস্তিত্বের, ছিল ন্যায়ের। এখানে প্রশ্ন নেই, এখানে কেবল উত্তরাধিকার রয়েছে গৌরবের, আত্মত্যাগের, আর জাতীয় চেতনার।

প্রশ্ন নয়, অপপ্রচার রুখে দাঁড়ানো জরুরিঃ
প্রশ্ন, শব্দটি যখন ইতিহাসচর্চায় আসে, তখন তা গবেষণা, অনুসন্ধান, ও বিশ্লেষণের হাতিয়ার হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে 'প্রশ্ন' অনেক সময় আরেকটি রূপ নেয় অস্বীকার, বিকৃতি, কিংবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের হাতিয়ার হয়ে ওঠে।

যখন কেউ প্রশ্ন তোলে, মুক্তিযুদ্ধ কি আদৌ প্রয়োজন ছিল? কিংবা এত মানুষ আসলেই মারা গিয়েছিল, তখন এটি আর ইতিহাসচর্চা থাকে না, বরং শহীদদের আত্মত্যাগে সরাসরি আঘাত হয়ে দাঁড়ায়। তখনই বলা হয়, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না।

মুক্তিযুদ্ধ, কোনো বিতর্ক নয়, এক আদর্শঃ
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানে কি আমরা বলছি সেই মা'দের কষ্টকে মিথ্যা প্রমাণ করতে চাই, যাঁদের চোখের সামনে সন্তান শহীদ হয়েছিল না কি সেই নারীকে অস্বীকার করতে চাই, যিনি পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতার শিকার হয়েছিলেন । না, তা হতে পারে না।
তাই যখন বলা হয় মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নাতীত, তখন সেটা কোনো কর্তৃত্ববাদী অবস্থান নয় বরং ইতিহাসের রক্তচিহ্নিত সত্যকে রক্ষার একটি জাতিগত দায়।

প্রজন্ম বদলায়, ইতিহাসচর্চার ধরণও বদলায়। তবে এমন কিছু সত্য আছে যা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সেই সত্যগুলোর একটি।

আমরা প্রশ্ন করতে পারি কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন হবে, কিভাবে শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া যাবে।

কিন্তু আমরা প্রশ্ন তুলতে পারি না মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা, তার প্রয়োজনীয়তা, মৃতের সংখ্যা, ধর্ষিতের সংখ্যা কিংবা তার সত্যতাকে নিয়ে।

কারণ, এ যুদ্ধ ছিল আমাদের অস্তিত্বের, এই ইতিহাস আমাদের আত্মপরিচয়ের।

এটা প্রশ্ন নয়, এটা আমাদের চেতনা।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৪৮
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×