আজকে রুটি নিয়ে আলোচনা করবো আপনাদের সাথে। কেউ কেউ ভাবতে পারেন- ভাতে মাছে বাঙালির রুটির দরকার টা কি? তাহলে এর উত্তর টা হলো- আমি মাঝে মাঝে ডিফারেন্ট ফুড ট্রই করি, যার ধারাবাহিকতায় আজকের এই পোষ্ট।
আজ আপনাদের শোনাবো ফ্রেন্চ একরকম রুটির কথা - ডাক নাম "বাগেট" (/baˈɡɛt/) baguette- যার অর্থ- লাঠি। এই রুটি সাধারনত ০.৯ -১.৫ মিটার লম্বা হয়। আর ব্যস হয়- ৫-৬ সে.মি.। BAGUETTES- ফ্রেন্চদের খুবই প্রিয় নাস্তর রুটি। ইতিহাস খুঁজলে মোটামুটি ১৮'শ শতাব্দি থেকে এই রুটি সম্পর্কে জানতেপারা যায়। সকাল সকাল ফ্রেন্চরা এই রুটি কাগজে মুড়িয়ে বগলদাবা করে বেকারি থেকে ঘরে ফিরে। প্যরিসের রাস্তাঘাট সে সময় বাগেটের গন্ধে মম করে, বিশেষ করে শনি- রবি বার সকাল বেলা।
ময়দা, পানি, ইস্ট আর লবনের সমন্বয়ে যে এমন মজার রুটি বানানো সম্ভব- সেটা আমার অজানা ছিলো। যাই হোক, জানার পর থেকে বানানোর চেস্টা শুরু হলো। বেশ কয়েক বার চেস্টা করেও খুব একটা সফল হতেপারলাম না। কারন- স্বাদ, গন্ধ, রং, মচমচা ভাব- কোনোটাই আসল বাগেটের মতো হচ্ছিলো না। পরে বুঝলাম কারন টা কি।
আনিস বউয়াসার ভাষ্যমতে (যে কিনা ২০০৮ সালের বেস্ট বাগেট ইন প্যরিস প্রতিযোগীতার বিজয়ী ) বাগেটের ডো তে ৭৫% হাইড্রেশন দরকার (মানে ময়দা আর পানির অনুপাত) অল্প পরিমানে ইস্ট, ১ ঘন্টা আচ্ছা মতো মথতে হবে, সেই সাথে ফোল্ড করতে হবে ৩ বার। তার পর ফ্রিজে রাখতে হবে ২১ ঘন্টা। তার পর সেই বাগেট কে ৪৮০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের ওভেনে বেক করতে হবে। কেউ কেউ ময়দার মিশ্রনের সাথে নিজের সৃস্টশীলতার মিশ্রন ঘটান সামান্য মধু, অ্যনচভি, ড্রাই ফ্রুট, রসুন বা সিক্রেট উপাদান জোগ করে।
বাগেট আলোচনায় যার নাম না বললেই না - অস্ট্রীয়ান অফিসার আগস্ট জেং। তার হাত ধরেই আধুনিক বাগেটের উৎপত্তি। আগস্ট জেং কে ভিয়েনা ব্রেডের (আরেক দিন এই রুটির আলোচনা করার আশা রাখি) প্রবর্তক ও বলা হয়।
উপাদান: ময়দা, পানি, ইস্ট আর লবন। এই ৪টা উপাদান মিশিয়ে একেক বেকার একেক রকম স্বাদের বাগেট তৈরী করে - স্বাদ, গন্ধ, রং আর বৈচিত্রে যারা সম্পূর্ন আলাদা। শধুমাত্র রুটি তৈরীর পানির তাপমাত্রার তারতম্যের জন্য রুটির স্বাদ, এবং রঙের পার্থক্য তৈরী হয়। উষ্ন পানি আর উষ্ন পরিবেশে ময়দার মিশ্রনটা তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে যায়, কিন্তু সেটা স্বাদে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। আন্য দিকে, পানি টা যদি ঠান্ডা হয় (যাকে বলে কোল্ড রিট্রেডিং), তাহলে ময়দার মিশ্রন তৈরীতে সময় বেশী লাগে কিন্তু স্বাদে এবং ফ্লেভার হয় অনন্য।
১৯৪৪ সালে Le Grand Prix de la Baguette নামের বাগেট তৈরীর প্রতিযোগীতা শুরু হয় ফ্রান্সে। প্রতি বছর গড়ে ২০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহন করে। বিজয়ী প্রতিযোগী পায় ৪০০০ ইউরো সাথে ১ বছর ফ্রান্সের প্রসিডেন্টে কে বাগেট সাপ্লইয়ের দূর্লোভ সম্মান। ফ্রান্সের মানুষ দিনে গড়ে অর্ধেক বাগেট খায়, অর্থাৎ দিনে তারা ৩০ মিলিয়ান বাগেট তৈরী করে।
বাগেটেরে স্বাদ আর ফ্লেভারের কথা নাই বললাম আজ কারন শেষকরা কঠিন হয়ে যাবে। তবে আমার ভাললাগে বাটার বা অ্যভোকার্ডো (অ্যভোকার্ডোর সাথেসাথে একটু গোল মরিচিের গুড়া মিলিয়ে পেস্ট বানিয়ে সেটা) দিয়ে।
তথ্য সূত্র:
Wikipedia
Fresh Loaf
pop Culture
YouTube
YouTube-2
ছবি: অর্ন্তজাল
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৮:৩৩