somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কলিমুদ্দি দফাদার
“কলিমদ্দিকে আবার দেখা যায় ষোলই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাজারের চা স্টলে। তার সঙ্গীরা সবাই মুক্তি, সে-ই শুধু তার পুরনো সরকারি পোশাকে সকলের পরিচিত কলিমদ্দি দফাদার।”

চেরি ব্লোসোম উৎসব!সারি সারি সাকুরা গাছের মায়াবী এক স্বর্গপুরী্(কোরিয়া ডায়েরী)

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দীর্ঘ দিন পর ব্লগে এসে ড্রাফটে জমা থাকা অসমাপ্ত এই ভ্রমন কাহিনী পেলাম। ২০১৭ এর মাঝামাঝি কোন একটা সময়ে চেরি উৎসবটি দেখতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে জমে থাকা হাজারো অতীতের সুন্দর কিছু চিএ মনে পড়ে গেল।

কোরিয়াতে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বসন্ত। শীতে সাধারণত কোরিয়ানরা ভালুকের মত নিদ্রায় চলে যায়।ঘরে পরিবারের সাথে বেশি সময় কাটাতে পছন্দ করে আর বিস্তর খাবার-দাবার আর সজু খেয়ে মাতাল থাকে। বসন্ত ই কোরিয়ানদের জন্য ভ্রমনের আদর্শ সময়। বসন্ত নিয়ে ও তাদের উৎসবের ও শেষ নেই। সিউলের ইউহিদো flower festival ছাড়া আরো কিছু উৎসব হয়। কিন্তু এর মধ্যে অন্যতম প্রধান এবং আকর্ষণীয় হল জিনহে চেরি ব্লোসোম উৎসব। প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে কোরিয়ান সহ প্রায় ২ মিলিয়ন পর্যটক আসে এই উৎসব দেখত।এই ফেস্টিবালটি হয় সিউল থেকে ৩৪০ কি.মি. দূরে জিনহে শহরে।

একটি ট্যুর প্যাকেজ খুব কম খরচে একদিনের জন্য চলে গেলাম এই উৎসবটি দেখতে।খুব ভোরে সকাল ৬ টায় বাস আর শুরু থেকেই হাল্কা ঝিরঝির বৃষ্টি। ৩৪০ কি.মি. দূরের পথ যোগাযোগ ব্যবস্হা ভাল হওয়ার বৃষ্টি উপেক্ষা করে মোটামুটি ৫ ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম। কোরিয়াতে ৭৫% ভুমিই পাহাড়ী বনাঞ্চল, এরপরে ও পাহাড় কেটে এত সুন্দর রাস্তা-ঘাট সত্যি অবাক করার মত। আরো অবাক করা বিষয় জিনহে শহরে প্রবেশর পুর্বে,একটি নদীর পাশে থাকা দুটি পাহাড়কে দীর্ঘ সেতুর মাধ্যমে সংযোগ করা হয়েছে। ভুমি থেকে এত উপরে সেতুটির অবস্হান কোরিয়ান প্রযুক্তির একটি অনবদ্য নিদর্শন। এছাড়া সেতুটি তৈরী হওয়ার ফলে জিনহে শহরে পর্যটন এবং অর্থনৈতিক বিকাশ চোখে পড়ার মত। সেতুটির উপর দিয়ে বাসটি যাওয়ার সময়, নদীর থাকা ছোট ছোট দ্বীপগুলোর মনোমুগ্ধর এক দৃশ্য চোখে পড়ে।



বাস থেকে নেমেই যতদুর চোখ যায় অবাক হয়ে চেয়েছিলাম। ৫ ঘন্টার ক্লান্তি যেন ৫ সেকেন্ড উড়ে গেল। সারি সারি চেরি গাছের অপরুপ দৃশ্য আর রাস্তায় পড়ে থাকা সাকুরা গাছের পাতা যেন শিল্পীর হাতের ক্যানভাসে আঁকা ছবি।



রোমান্স সেতু : জিনহে শহরে চেরি উৎসবের প্রধান আকর্ষণ রোমান্স সেতু। নিচ দিয়ে বয়ে চলা ছোট একটি খাল উপরে কাঠের সেতু। খালের পাশ দিয়ে পর্যটকদের চলার সুবিধা জন্য প্রাচীন কোরিয়ার ঐতিহ্যগত নকশায় তৈরী করা হয় কাঠের সাকো। তরুন কপোত-কপোতিদের আধিক্য বেশি থাকায় খুব সম্ভবত সেতুটির নাম রোমান্স।







নেভাল একাডেমি বেস:এই শহরটির গড়ে তোলা হয় নৌবাহিনীর বেস হিসেবে। সেই কোরিয়ান রাজ শাসনের শুরু থেকে জাপানিজ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য এখানে প্রথম নৌবাহিনীর বেস বানানো হয়। বর্তমানে কোরিয়ার বৃহৎ নেভাল বেস এবং মেরিন জাদুঘরটি এখানে অবস্হিত। পিক সিজনে নৌবাহিনীর কর্মীরা volunteer হিসেবে কাজ করে পর্যটকদের সুবিধার জন্য। আয়তনে নেভাল বেসটি অনেক বড় হওয়ার এর ভিতরে পরিচালিত হয় সাটল বাস সার্ভিস।





লোকাল খাবার এবং জিনহে সিটি জংশন: পর্যটন মৌসুমে হাজারো রকমের সি-ফুঁড এবং বাহারী রকমের খাবার রাস্তার পাশে বিক্রি করা হয়। সস্তায় এত রকমের খাবারের জন্য হাজারো পর্যটকের ভির হয়।



গুগল এবং অনন্য ওয়েবসাইটে জিনহে চেরি উৎসব নাম দিয়ে খুঁজলে সারি সারি সাকুরা গাছের মধ্যে দিয়ে ট্রেনে যাওয়ার একটা ছবি পাবেন। জিনহে সিটি জংশনের কাছে এই বিখ্যাত ছবিটি কিন্তু আপনি হবহু সেই রকমই দেখতে পারবেন বাস্তবে। কোন ফটোশপ ছাড়া ও যে এত সুন্দর জায়গা হতে পারে হয়তো না দেখলে বুঝতাম না।



রাতের জিনহে সিটি সাজে অন্যরকম এক সৌন্দর্য। রোমান্স সেতুতে খালের পাশে সারি সারি চেরি গাছগুলোতে রাতের বেলা হয় লাইট উৎসব। আলোর খেলায় সাকুরা গাছগুলোর সৌন্দর্য যেন আরো ফুটে উঠে। এক দিনের প্যাকেজ হওয়ার সন্ধার আগে ফিরতে হয় আমার। রাতের আলো-আঁধারের সৌন্দর্য লাইট উৎসব দেখার সৌভাগ্য আর হয়ে ওঠে নী।





প্রথম কয়েকটি ছবি নিজ হাতে তোলা। বৃষ্টির দিন ক্যামেরার লাইট কম পাওয়াতে বাকিগুলো গুগল থেকে নেওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০২৫ রাত ৩:৩২
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×