somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক হাতে পারমাণবিক বোমা আরেক হাতে ভিক্ষার থালা! আহারে "পেয়ারা পাকিস্তান"!!

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাকিস্তানের যে অর্থনৈতিক দুরবস্থা চলছে এটা বলতে গেলে তাদের প্রাপ্যই ছিল। বছরের পর বছর যে ভুল পথে চলছিলো একটা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ সেই ভুল পথে চলার মাশুল এখন হাড়ে হাড়ে গুনছে পাকিস্তান। একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ধরে কথাটা বলা যায়। সেটা হল কোনও দেশে যখন তার অন্যান্য খাতের তুলনায় সামরিক খাত বেশী গুরুত্ব পেয়ে থাকে তখন সেই দেশের অর্থনীতির ওপর একটা বড় চাপ পড়া বলা যায় অবধারিত হয়ে থাকে। যেমন হালের সোভিয়েত ইউনিয়নের কথাই বলা যায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন যে এভাবে হঠাৎ করে ধ্বসে পড়েছিলো তার একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে সামরিক খাতে অতিরিক্ত ব্যয়। এটা করতে গিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন অর্থনীতির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর বিকাশের প্রতি তেমন গুরুত্ব দেয়নি। সেকারণে একসময় অর্থনীতির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে শুরু করেছিলো, স্থবির হয়ে পড়তে শুরু করেছিলো এবং একটা সময় মূলত আফগানিস্তান যুদ্ধে অতিমাত্রায় ব্যয় ও পরাজয়ের কারণে তাকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের একমাত্র কারণ এটা নয়। সেসব নিয়ে আরেকদিন বরং আলোচনা করা যাবে। কিন্তু কথা হচ্ছে, অর্থনীতি যারা একটু হলেও পড়ে এসেছেন তারা নিশ্চয় জেনে থাকবেন যে সামরিক খাত হচ্ছে একটা অনুৎপাদনশীল খাত। এখানে আপনি ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করলে সেই ১০ কোটি টাকা সহজে উঠে আসবে না। উপরন্তু এই এতো টাকা বিনিয়োগ করে আপনি যা যা সামরিক সরঞ্জাম কিনলেন সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আপনাকে আরও টাকা ঢালতে হবে এর পেছনে। কথা হচ্ছে যদি অর্থনীতি শক্তিশালী থাকে আর আপনার দেশ যদি যথেষ্ট ধনী হয় তাহলে এই যে ব্যয় হচ্ছে সামরিক খাতে সেটা আপনি পুষিয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু যেদেশ অর্থনৈতিকভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল তার পক্ষে সামরিক খাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ রীতিমতো আত্মঘাতী ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সামরিক খাতে কোনও দেশকে ব্যয় করতে হলে এজন্য যথেষ্ট বুঝেশুনে ব্যয় করতে হয়। যদিও যে কোনও দেশের প্রতিরক্ষা খাতে একবারেই ব্যয় না করলে চলে না তবে কথা হচ্ছে এই প্রতিরক্ষা খাত তথা সামরিক খাতে ব্যয় এবং অর্থনীতির অন্যান্য খাতে ব্যয় এর মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখতে হয়। নইলে বিপদ। এই ভারসাম্য পাকিস্তান কখনোই রাখে নি। আর এখন তার মাশুল গুনছে। আবার তার সাথে সে পারমাণবিক শক্তি অর্জন করে ফেলেছে।
যাই হোক, কথা হচ্ছে উচ্চ মাত্রার সামরিক শক্তি এমন নয় যে পাকিস্তান এর মতো দেশ সেটা হওয়ার অধিকার রাখে না। তবে কথা হচ্ছে এমন শক্তি অর্জন করতে হলে তাকে অতি অবশ্যই খুব শক্ত অর্থনীতির দেশ হতে হবে। যথেষ্ট ধনী একটা দেশ হতে হবে। তাহলে অর্থনীতির ওপর যে চাপটা থাকবে সেটা সে পুষিয়ে নিতে পারে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার রেঙ্কিং এ পাকিস্তানের অবস্থান বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে অন্যতম। আবার অন্যদিকে জি ডি পি প্রবৃদ্ধি থেকে শুরু করে মাথাপিছু আয় এসব গুরুত্বপূর্ণ বেশিরভাগ খাতেই তারা ভারত তো বটেই, বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে পড়েছে। সুতরাং কি পরিমাণ খরচ তারা সামরিক খাতে করে থাকে বুঝে দেখুন। এতোটা খরচ পশ্চিম ইউরোপ, রাশিয়া, আমেরিকা, চীন এর মতো শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ এর পক্ষেই মানায়। যদি ভারতের কথাও বলেন তাহলেও বলতে হবে তারাও এই সামরিক খাতে পাকিস্তানের মতোই প্রচুর খরচ করছে। এটাও তাদের অর্থনীতির ওপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করছে। তবে ভারতীয়রা পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর মতো অতোটা অমিতব্যয়ী নয়। সামরিক খাতে এতো ব্যয় করেও ভারত অর্থনীতির অন্যন্য খাতে যথেষ্ট বিনিয়োগ করে। সেজন্য পাকিস্তানের মতো দুরবস্থা তার হয়নি। তবুও ভারত পারমাণবিক শক্তি অর্জনসহ অন্যান্য যে সমস্ত খরচ সামরিক খাতে করে থাকে এতোটা খরচও তার অর্থনীতির ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করছে। সামরিক খাতে একদিকে পাকিস্তান আরেকদিকে চীন এর সাথে সামরিক খাতে প্রতিযোগিতা না করে ভারত যদি তার দেশের মানুষের কল্যাণে এতো টাকা ব্যয় করতো তাহলে তাদের অর্থনীতির চেহারাটা আরও অনেক ভালো হতো। খালি তারা বেঁচে যাচ্ছে তারা অনেক প্রোডাকটিভ একটা দেশ বলে। পাকিস্তান অতোটা প্রোডাকটিভ নয়। তবুও যে ভূত পাকিস্তানের ঘাড় আজকে মটকাচ্ছে সেই ভূত ভারতের ঘাড়ও যে মটকাবে না এমন কোনও কথা নেই। চীন এবং পাকিস্তানের সাথে পাল্লা দিয়ে ভারতও যেভাবে সামরিক খাতে তাক লাগানো ব্যয় করে বেড়াচ্ছে তার মূল্য একদিন তাকেও দিতে হবে। মোটকথা, পাকিস্তান এবং ভারত দুদেশই নিজেদের অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে সামরিক খাতে প্রতিযোগিতা করে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর পক্ষে এরকম সামরিক প্রতিযোগিতা আর সামরিক ব্যয় কখনোই মঙ্গল বয়ে আনেনি। আনবেও না। এখন বাংলাদেশ ওপথে না হাঁটলেই ভালো। এমনিতেই দেশের যা অবস্থা!!
তো? এতো কষ্ট করে এতো খরচ করে বানানো পারমাণবিক শক্তি শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের কি করলো? পারমানবিক বোমা বানিয়ে খুব তো তেজ দেখিয়েছিল, এখন সেই তেজ কোথায় পাকিস্তানের? এখন পারমানবিক বোমা ভেজে খাক পাকিস্তান!! দেখি কেমন পারমাণবিক বোমা ভাজা ভাজা করে খায়?
একদিন আমাদের রক্তগঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়ে মুছে দিতে চেয়েছিল ওরা। সেই ইতিহাস কখনো ভুলে যাই নি। ভোলা সম্ভব নয়।
আর এই পোস্টে ঐসব *** দের মতো মুসলিম ভাত্রিত্ববোধের ধুয়া তুলে ইনিয়ে বিনিয়ে পাকিস্তানের প্রতি দরদ দেখানোর চেষ্টা কেউ করলে তাকে উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে!!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:১৩
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×