আওয়ামী লীগের কার্যক্রম তো নিষিদ্ধ হল। অনেক আলোচনা সমালোচনা চারিদিকে। থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কথা আছে যেগুলো এড়ানো যায়না। আফটার অল,অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত ঠিক এদেশের আমজনতার ম্যাণ্ডেট নিয়ে হয়নি, এটা অনেকটাই রাজনৈতিক কারণে তাদের একক সিদ্ধান্ত একথা যেমন সত্যি তেমনি একথাও সত্যি যে এহেন সিদ্ধান্ত হয়তো আওয়ামী লীগের জন্য শাপে বর হয়েও দেখা দিতে পারে। কোনও রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে জনতুষ্টি করে কাজকারবার চালানোর ফল সব সময় ভালোর দিকে যায় না একথাও সত্যি। কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়। আওয়ামী লীগ যে ধারার রাজনীতি করে গেছে বিগত দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে তাতে করে এদেশের গণতন্ত্র সাংঘাতিকভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। এমনিতেই এদেশে গণতন্ত্র সত্যিকার অর্থে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যদিও সত্যিকারের গণতন্ত্র কি সেটা অনেকটাই তর্কসাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু তারপরও এদেশে যেটুকু গণতন্ত্র ছিল আওয়ামী লীগের শাসনামলে সেটা ভীষণ রকমের ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। তাদের ফ্যাসিস্ট শাসন, উন্নয়নের নামে লুটপাট, পুকুর চুরি, অর্থপাচার, চেতনার ব্যবসা আর নিষ্ঠুরভাবে নিজের দেশের স্বার্থকে ভারতের স্বার্থে বিকিয়ে দেয়া সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছুই নেই। বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতার দুর্বৃত্তায়ন কায়েম করে, ভয়াবহ রকমের অগণতান্ত্রিক শাসন চালিয়ে গণতন্ত্রের সমস্ত ভিত্তি, সমস্ত পরিবেশ ধংস করে দেশের রাজনীতির পরিবেশ যেভাবে যারপরনাই ক্ষতিগ্রস্থ করে গেছে আওয়ামী লীগ তার কোনও তুলনা নেই। একমাত্র কঠিন রকমের আওয়ামী দলকানা ছাড়া এই সত্য সবাই স্বীকার করবে। কথা হচ্ছে এই যে রাজনৈতিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে আর যে গণতন্ত্রহীন একটা পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে এর জন্য যদি আওয়ামী লীগ দায়ী না হয় তাহলে দায়ী কে? এই যে গণতন্ত্র ভয়াবহভাবে বিনষ্ট হয়েছে, গণতন্ত্রের পরিবেশটাই ধংস হয়ে গেছে সেখানে ইউনুসের সরকারই থাক আর যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক সামনে তাতে করে গণতন্ত্র এদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে এই প্রত্যাশা আসলেই কিভাবে করা সম্ভব? এবং এই প্রত্যাশা করেন কিভাবে? যে অগণতান্ত্রিক শাসন আওয়ামী লীগ এতকাল চালিয়ে গেছে সেই অগণতান্ত্রিক শাসনের শিকার কেউ যে হবেন না বা কোনও রাজনৈতিক দল যে তার শিকার হবে না এটাও বা আশা করেন কিভাবে?
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৪৪